অ্যাবোটাবাদ ডকুমেন্ট সিরিজ
নথি নাম্বার: SOCOM-2012-0000009
-অজ্ঞাত কাউকে পাঠানো শায়খ উসামা বিন লাদেনের চিঠি
নথি নাম্বার: SOCOM-2012-0000009
-অজ্ঞাত কাউকে পাঠানো শায়খ উসামা বিন লাদেনের চিঠি
নথি নং: SOCOM-2012-0000009
প্রাপক: অজ্ঞাত (নাম উল্লেখ নেই)
নাম পরিবর্তনের প্রসঙ্গে:
... পরিশেষে, একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমি আপনাদের পরামর্শ কামনা করছি। বিষয়টি হলো ‘কায়িদাতুল জিহাদ’ নামটির পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের পেছনে বহুবিধ কারণ বিদ্যমান, যার প্রতিটিই বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। তন্মধ্যে প্রধান কয়েকটি কারণ নিচে তুলে ধরা হলো:
১. প্রথমত, সাধারণ মানুষের মুখে মুখে নামটি সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। পূর্ণ নামটি খুব কমই উচ্চারিত হয়; এর বদলে ‘আল-কায়েদা’ নামটিই অধিক ব্যবহৃত ও প্রচারিত। এর ফলে, আমরা যে মুসলিম উম্মাহর পক্ষ থেকে লড়াই করছি—এই অনুভূতির জায়গাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের শত্রুরাও সাধারণ মুসলিমদের বিভ্রান্ত করার সুযোগ পেয়ে যায়। তারা প্রচার করে যে, তাদের যুদ্ধ ইসলাম বা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়, বরং তাদের লড়াই কেবল ‘আল-কায়েদা’র বিরুদ্ধে—যাদেরকে তারা ইসলামের শিক্ষা থেকে বিচ্যুত ক্ষুদ্র একটি দল হিসেবে চিত্রিত করে।
অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এই কৌশলের পুনরাবৃত্তি বহুবার ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, ওবামা ঘোষণা করেছিল, “আমাদের লড়াই ইসলাম বা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়; আমাদের লড়াই হলো আল-কায়েদা সংগঠনের বিরুদ্ধে।” এখন সংগঠনের নামের সাথে যদি ‘ইসলাম’ বা ‘মুসলিম’ শব্দটি যুক্ত থাকত—যেমন ‘আল-হিজবুল ইসলামী’ বা ‘ইসলামী দল’—তবে শত্রুদের পক্ষে এমন ধোঁকাবাজি করা কঠিন হয়ে পড়ত।
বিগত দিনগুলোতে আমাদের কাছে আরও স্পষ্ট হয়েছে যে, পশ্চিমারা তাদের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ বা ‘War on Terror’ পরিভাষাটি থেকেও সরে এসেছে। এ বিষয়ে তারা আলোচনাও করেছে যে, এই নাম ব্যবহার করে তারা আর মুসলিমদের আমাদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করতে পারছে না। তারা উপলব্ধি করেছে, ‘War on Terror’-এর আসল অর্থ অধিকাংশ মানুষের কাছে উন্মোচিত হয়ে গেছে। মানুষ বুঝে গেছে যে, এটি মূলত ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ। বিশেষত ইরাক ও আফগানিস্তানে নিরীহ বেসামরিক মুসলিমদের ওপর তারা যে অবর্ণনীয় জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে এবং রক্ত গড়িয়েছে, তাতে মুসলিমদের আর কিছুই বুঝতে বাকি নেই। আল্লাহ আমাদের মুসলিম ভাইদের প্রতি রহম করুন।
এ প্রসঙ্গের আরেকটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো ‘হরকতুশ শাবাব আল-মুজাহিদীন’। আরবি ভাষায় অধিকাংশ সময়ই তাদের কেবল ‘হরকতুশ শাবাব’ (যুব আন্দোলন) নামে ডাকা হয়। ফলে নামের শেষে থাকা ‘জিহাদ’ ও ‘মুজাহিদীন’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশটি বাদ পড়ে যায়।
২. দ্বিতীয়ত, যেকোনো সংগঠন বা সংস্থার নাম থেকেই তার বার্তা ও আদর্শ ফুটে ওঠা উচিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নামগুলোই সেই সংস্থার পরিচয় বহন করে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা দেখতে পাই, ‘আল-কায়েদা’ নামটি কেবল একটি ‘সামরিক ঘাঁটি’র অর্থ প্রকাশ করে, যেখানে কিছু যোদ্ধা অবস্থান করছে। উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে আমাদের যে সুদূরপ্রসারী কর্মপ্রয়াস ও পরিকল্পনা রয়েছে, এই নামটিতে তার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায় না।
নাম নির্ধারণের প্রস্তাবনা:
ওপরে যা আলোচনা করা হলো, তার ভিত্তিতে আপনারা যদি উপযুক্ত কোনো নাম প্রস্তাব করেন এবং পরস্পরে পরামর্শ করেন, তবে তা কল্যাণকর হবে বলে মনে করি। এমন একটি নাম নির্বাচন করতে হবে, যা সংক্ষিপ্তভাবে বলা হলেও উম্মাহর সন্তানদের কাছে আমাদের প্রকৃত বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে। আমি কয়েকটি নাম প্রস্তাব করছি:
- তায়েফাতুত তাওহীদ ওয়াল জিহাদ (طائفة التوحيد والجهاد) — তাওহীদ ও জিহাদের দল।
- তায়েফাতুত তাওহীদ ওয়াদ দিফা আনিল ইসলাম (طائفة التوحيد والدفاع عن الإسلام) — তাওহীদ ও ইসলাম প্রতিরক্ষাকারী দল।
- জামাতুল ইআদাতিল খিলাফাতির রাশিদা (جماعة إعادة الخلافة الراشدة) — খেলাফতে রাশেদা পুনরুদ্ধারকারী দল।
- জামাআতু নুসরাতিল ইসলাম ওয়াল আকসা (جماعة نصرة الإسلام والأقصى) — ইসলাম ও আল-আকসাকে সাহায্যকারী দল।
- জামাতু ওয়াহদাতিল মুসলিমীন (جماعة وحدة المسلمين) — মুসলিম ঐক্যফ্রন্ট।
- আত-তানজিমুল জিহাদি লি-তাওহীদিল উম্মাহ্ ওয়া ইনকাজিহা (التنظيم الجهادي لتوحيد الأمة وإنقاذها) — উম্মাহর ঐক্য ও উত্তরণে নিবেদিত জিহাদি সংগঠন।
- আত-তানজিমুল জিহাদি লি-তাহারীরিল আকসা ওয়া তাওহীদিল উম্মাহ (التنظيم الجهادي لتحرير الأقصى وتوحيد الأمة) — আল-আকসার মুক্তি ও উম্মাহর ঐক্য সাধনে নিবেদিত জিহাদি সংগঠন।
- হিজবু তাওহীদিল উম্মাতিল ইসলামিয়া (حزب توحيد الأمة الإسلامية) — মুসলিম উম্মাহর ঐক্য সাধনে নিবেদিত দল।
- জামাআতু তাহরীরিল আকসা (جماعة تحرير الأقصى) — আল-আকসা মুক্তিকারী দল।
- জামাতু ইনকাজ-ওয়া-নাহদাতিল উম্মাহ (جماعة إنقاذ ونهضة الأمة) — উম্মাহর মুক্তি ও পুনর্জাগরণ সৃষ্টিকারী দল।
*****
Comment