
আল ফিরদাউসের সম্পাদক মুহতারাম ইবরাহীম হাসান হাফিযাহুল্লাহ’র কলাম:
গাজার রক্তাক্ত মাটিতে ফিলিস্তিনি জনগণের লাশের স্তূপ জমছে। ইসরায়েলি বোমার গর্জন আর শিশুদের কান্না মিলে এক অসহ্য কোলাহল তৈরি করেছে। এই ধ্বংসযজ্ঞের মাঝে ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথাকথিত ‘২০ দফা শান্তি প্রস্তাবনা’ এসেছে—একটা নোংরা ফাঁদ, যা মানবতার শত্রু বিশ্ব সন্ত্রাসী নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা। এটা শান্তির দলিল নয়, এটা ফিলিস্তিনের আত্মা ছিনিয়ে নেওয়ার, হামাসের প্রতিরোধ ভেঙে দেওয়ার, গাজাকে আমেরিকান-ইসরায়েলি দাসত্বের কারাগারে পরিণত করার নীলনকশা। হামাস নীরব—কারণ তারা জানে, এই প্রস্তাবনা তাদের ধ্বংসের ষড়যন্ত্র। আমরা, হামাসের পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলছি, হে আল্লাহর রাহের মুজাহিদিন! আপনারা সন্ত্রাসী আমেরিকা ও ইসরায়েলের মুখোশ খুলে ফেলুন! কাফেরদের লাঞ্ছিত-অপমানিত করুন।
সন্ত্রাস কারা? ইসরায়েল ও আমেরিকার রক্তাক্ত হাত
ট্রাম্পের প্রস্তাবনা গাজাকে ‘উগ্রবাদমুক্ত’ করার কথা বলে। কিন্তু প্রকৃত উগ্রবাদী কারা? ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েল ৬৬,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে—নারী, শিশু, বৃদ্ধ কেউ বাদ যায়নি। হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ সব ধ্বংস করেছে। এই গণহত্যার পৃষ্ঠপোষক আমেরিকা, যারা বছরে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সন্ত্রাসী ইসরায়েলকে দেয়। এটাই কি ‘শান্তি’? না, এটি সন্ত্রাস! ১৯৪৮-এর নাকবা থেকে শুরু করে গাজার অবরোধ—ফিলিস্তিনিরা খোলা জেলে বন্দি। হামাসের লড়াই একটি জাতির বেঁচে থাকার লড়াই। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি , হামাস গাজা বাসীর মুক্তির দূত! সন্ত্রাসী হলো ইসরায়েল, যারা জাতিগত নিধন চালায়, আর আমেরিকা, যারা এই অপরাধের ফাউন্ডার!
‘শান্তি’র ফাঁদ: ট্রাম্পের প্রস্তাবনা—দখলের নতুন নাম
ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবনা পড়লে মনে হয় ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘মানবিক’ পরিকল্পনা। কিন্তু এটা একটা নির্লজ্জ ফাঁদ। বন্দি মুক্তির কথা বলা হয়েছে—কিন্তু কেন ইসরায়েলের হাতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি? তারা কেন কারাগারে নির্যাতিত? হামাসকে ‘অস্ত্র সমর্পণ’ করতে বলা হচ্ছে—এটি আত্মসমর্পণের আহ্বান। গাজা ছেড়ে যাওয়ার ‘অফার’? এটি জোরপূর্বক বিতাড়নের ছদ্মবেশ! ‘প্রযুক্তিনির্ভর’ কমিটি, ট্রাম্পের ‘পিস বোর্ড’, আইএসএফ—এগুলো আমেরিকান-ইসরায়েলি দখলের নতুন রূপ। তারা গাজাকে দুবাইয়ের মতো কর্পোরেট জোন বানানোর পরিকল্পনা করেছে—যেখানে ফিলিস্তিনিরা শ্রমিক, আর আমেরিকান-ইসরায়েলি বিনিয়োগকারীরা মালিক।
প্রতিরোধই একমাত্র মুক্তির পথ
হামাস কেন লড়ছে? কারণ তাদের এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। গাজা অবরুদ্ধ—খাদ্য, ওষুধ, বিদ্যুৎ, সব নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল। এই অবরোধ ভাঙতে হামাস অস্ত্র তুলে নিয়েছে। তাদের সুড়ঙ্গ, তাদের অস্ত্র—এগুলো নিপীড়িত জাতির বেঁচে থাকার হাতিয়ার। ট্রাম্প বলছে ‘সুড়ঙ্গ ধ্বংস’—কিন্তু কেন? কারণ এই সুড়ঙ্গ দিয়ে হামাস ওষুধ, খাবার, আশা বয়ে আনে।
শহীদদের আত্মচিৎকার
গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রতিটি লাশ চিৎকার করে বলছে, “হামাস তোমরা লড়াই চালিয়ে যাও যতক্ষণ পর্যন্ত না সত্যিকারের যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হয়— যার মধ্য দিয়ে গাজা দখলমুক্ত হবে”। ইসরায়েলের বোমা, আমেরিকার ডলার, আর তাদের ‘শান্তি’র মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ফিলিস্তিনের আত্মাকে ভাঙতে পারবে না। হামাসের প্রতিটি যোদ্ধা একেকজন শহীদ—তাদের রক্ত ফিলিস্তিনের মুক্তির পথ রাঙিয়ে রাখবে।
হামাস থামবে না, ফিলিস্তিন হারবে না। প্রতিটি ধ্বংসস্তূপ থেকে বিদ্রোহ উঠবে, প্রতিটি শহীদের রক্তে মুক্তির আগুন জ্বলবে। আমরা হামাসের পাশে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করছি, হে মানবতার শত্রু বিশ্ব সন্ত্রাসী আমেরিকা, সন্ত্রাসী ইসরায়েল—তোমাদের সময় ফুরিয়ে আসছে! আল্লাহর ইচ্ছায়, ফিলিস্তিনের মুক্তি অতি নিকটে।
খুব শীঘ্রই মুজাহিদদের হুংকারে তোমাদের জুলুমের মসনদ তাসের ঘরের মতো ভেঙে যাবে ইনশাআল্লাহ।