কার ইশারায় হিন্দুত্ববাদীদের আড়াল করার চেষ্টা?

আল ফিরদাউস এর সম্পাদক মুহতারাম ইবরাহীম হাসান হাফিযাহুল্লাহ’র কলাম:
হিন্দুত্ববাদীদের ভয়াল থাবায় ক্ষত বিক্ষত পুরো দেশ। প্রতিদিনই হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের দ্বারা সংঘটিত ঘৃণ্য কাজ সমূহের নতুন নতুন খবর সামনে আসছে। কখনো মুসলিম নারী ও শিশু ধর্ষণ, কখনো কুরআন অবমাননা, কখনো রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তি ইত্যাদি। যেন তারা এক যুদ্ধে নেমেছে, যে কোন প্রকারে মুসলিমবঙ্গের ভূখণ্ড ও এখানকার মুসলিম অধিবাসীদেরকে ধ্বংস করতে চায়।
দুঃখজনক ব্যাপার হল এত সব ভয়ংকর অপরাধ করা সত্ত্বেও কোন এক অজানা কারণে তাদেরকে গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছেনা। বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে, পুলিশ সন্ত্রাসীদের অপরাধকে আড়াল করার জন্য উলটো মুসলিম ভুক্তভোগীদেরকেই অপরাধী সাজানোর অপচেষ্টা করেছে।
গাজীপুরের ১৩ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ অপরাধীকে বাঁচানোর জন্য পোস্ট করে এবং পুরো ব্যাপারটাকে প্রেমঘটিত ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে ধর্ষনের বিষয়টাকে আড়াল করার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, তদন্ত কর্মকর্তা কতৃক ধর্ষণের ঘটনাকে মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টা করা, ধর্ষিতার বাবাকে মিথ্যা জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা এবং সাদা কাগজে সাইন নেওয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে সেখানে।
বুয়েটের ঘটনায়ও এই চিত্র দেখা গেছে। ধর্ষককে গ্রেফতারের পরিবর্তে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করে জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে চাপের মুখে গ্রেফতার করা হলেও ধরণ দেখে মনে হয়েছে, এটি আসলে গ্রেফতার নয় বরং ধর্ষককে জনরোষ থেকে বাঁচাতে পুলিশি নিরাপত্তায় সেইফ হাউজে নিয়ে যাওয়া।
ইতিপূর্বে বিয়ানীবাজারে পুরোহিত কতৃক ১২ বছরের মুসলিম শিশু ধর্ষণ, হিন্দু ছেলে কতৃক নোয়াখালীর মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ করে পতিতালয়ে বিক্রি ইত্যাদি ঘটনায়ও পুলিশ রহস্যজনকভাবে নিরব ভূমিকা পালন করেছে।
শুধু পুলিশই নয় দেশের প্রধান সংবাদ মাধ্যমগুলোও অজানা কারণে এই ঘটনাগুলো নিয়ে কোন ধরণের সংবাদ প্রকাশ করেনি, রহস্যজনকভাবে নীরবতা পালন করেছে।
–
হাসিনা বিদায় নিলেও সর্বত্র এখনো হিন্দুত্ববাদীদের আধিপত্য অনেকটাই রয়ে গেছে। প্রশাসন, মিডিয়া, বিচারবিভাগ সবই এখনো তাদের দখলে। মুখে ভারতীয় আধিপত্যবাদ নির্মূল করার কথা বলা হলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে উলটো, নতুনরূপে নতুন পোশাকে ভারতীয় অধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা দৃশ্যমান হচ্ছে।
এই দেশে মুসলিমদের দ্বারা ছোট একটা ঘটনা ঘটলেও সবাই যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে হিন্দুত্ববাদীদের ক্ষেত্রে ঠিক সেভাবেই সবাই নীরবতা অবলম্বন করে, যেন কিছুই হয়নি।
যদি এভাবে চলতে থাকে; হিন্দুত্ববাদীরা প্রকাশ্যে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায় আর সরকার সেইফ এক্সিট দেয় তাহলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে । জনগণ যখন আইন নিজের হাতে তুলে নেবে তখন যেন কেউ জনগণকে দায়ী না করে। নিজেদের নীরবতা এবং সরকার ও প্রশাসনের নির্লিপ্ততাকেই দায়ী করে।