সত্যিকারার্থে সাফল্য কী?
আমাদের মস্তিষ্কে সাফল্যের মাপকাঠি কী? অর্থকড়ির মধ্যেই সফলতা। প্রাচুর্যের মধ্যেই সফলতা। কাজের মধ্যেই সফলতা। প্রসিদ্ধির মাধ্যমে সফল হওয়া যায়। ক্ষমতার মধ্যেই সফলতা। এগুলোই হলো মাপকাঠি।
যে যতটা সম্পদশালী সে ততটা সফল। যে যতটা প্রসিদ্ধ সে ততটা সফল। যে শাসন ক্ষমতা পেয়ে গেল সে সফল। যার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বড় হয়ে গেল সে সফল। যে অনেক সম্পদ কামিয়ে ফেললো সে সফল। এগুলো হলো সত্যিকারার্থে বিভ্রম।
আপনার নিকট সফলতার সংজ্ঞা যেমন হবে, তা অর্জন করতে আপনার দৌড়ঝাঁপও তেমন হবে। আপনি সে অনুযায়ীয় শক্তি ব্যয় করবেন। দিনেরাতের পরিশ্রম সে অনুযায়ীই হবে। এটাই হলো মূল বিষয়, যাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
সফলতা সম্পদের মধ্যে নয়, সফলতা প্রসিদ্ধির মধ্যে নয়, সফলতা প্রাচুর্য, শক্তি ও শাসনের মধ্যে নয়। বরং সফলতা হলো ঈমানের মধ্যে, সৎকর্মের মধ্যে। হক ও সবরের ক্ষেত্রে পরষ্পরকে তাকিদ দেওয়ার মধ্যে। খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করুন, এই মনোভাব, এই মৌলিক ধারণা পাল্টে গেলেই মানুষের ভেতর পরিবর্তনের হাওয়া লেগে যায়।
এখন ফলাফল কী পেলেন?
সম্পদ দ্বারা যদি সফল হওয়া যেত, তাহলে কারুন সফল হতো। ক্ষমতা দ্বারা যদি সফল হওয়া যেত, তাহলে নমরুদ ও ফেরআউনও খুব সফল ছিল। সফলতা এগুলোর মাধ্যমে নয়। যদি মানুষ কারুনের মতো সম্পদের পাহাড়ও গড়ে তুলে, ফেরআউন ও নমরূদের মতো দুনিয়ায় ক্ষমতা, প্রভাব ও প্রাচূর্যের অধিকারীও হয়ে যায় তবুও সে ব্যর্থ, তার ধ্বংস অনিবার্য। আর আবু যর গিফারী সফল। হোকনা তার কোন সম্পদ ছিলনা। ঘর তো দূরের কথা কুঁড়েঘর পর্যন্ত ছিলনা।
রাসুল (স.) বলেছেন: আল্লাহর কিছু বান্দা এমন হয়, যারা কোন অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে চাইলে তাদের অনুমতি মিলে না। কোথাও যদি প্রস্তাব দেয়, তাহলে সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়। কোথাও যদি সুপারিশ করতে চায়, তার কথায় কেউ ভ্রুক্ষেপও করেনা। কিন্তু আল্লাহর নিকট তার এমন অবস্থান যে, যদি কোন বিষয়ে ভুলেও সে কসম কেটে বসে, আল্লাহ তার কসমের লাজ রাখেন।
এটাই হলো পার্থক্য।
খুব ভালোভাবে শুনে নিন, এই কথাগুলো মেনে নেওয়া খুব সহজ। শুনে সুবহানাল্লাহ বলাও খুব সহজ। কিন্তু এ অনুযায়ী নিজের মানসিকতা পাল্টে ফেলা খুবই কঠিন। কারণ আমরা আমাদের পরিবেশ থেকে প্রভাবিত হই। কোন বড় মহল দেখে একবারের জন্যও অন্তরে পুলক সৃষ্টি হবে। ২০ ফুট লম্বা একটি কার দ্রুতগতিতে আপনার পাশ কেটে গেল, এটি আপনার ভেতরটা নাড়িয়ে দেবে। মনে হতে থাকে, আরে এরা কত সৌভাগ্যবান, কত সফল! কিন্তু কে জানে! এই ব্যক্তিই সবচেয়ে দূর্ভাগা। হতে পারে এই ব্যক্তিই সবচে ব্যর্থ মানুষ। যদি মস্তিষ্কে এই কথা বসে যায় যে, সফলতা কী থেকে।
এই কারণে দেখুন কুরআনে বারবার বলা হয়েছে, أُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ এরাই তো সফল ব্যক্তি।
আজকেই নামাজে আপনি এই আয়াত শুনেছেন। یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا ارۡکَعُوۡا وَ اسۡجُدُوۡا وَ اعۡبُدُوۡا رَبَّکُمۡ وَ افۡعَلُوا الۡخَیۡرَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ হে ঈমানদারগণ! রুকু কর। সিজদা কর। তোমার প্রভুর ইবাদত কর। আর ভালো কাজ কর। যাতে তুমি সফল হয়ে যেতে পার। তো সফলতা কোন সব কাজে? এটিই হলো সবচেয়ে বড় শিক্ষা। এই কথাটিই যদি আমাদের অন্তরে গেড়ে যায় তাহলে জীবন বদলে যাবে। সকাল-সন্ধ্যা বদলে যাবে। পরিকল্পনা বদলে যাবে। দৌড়ঝাপের পথ পাল্টে পাবে। মূল্যবোধ বদলে যাবে। আজ যে জিনিস সবচে গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে, কাল তা সবচে সস্তা মনে হবে।
যেমন হাদীসে এসেছে, مالي وللدنيا আমার তোমাদের এই দুনিয়ার সাথে কী লেনদেন আছে? إنما مثلي ومثلُ الدُّنيا كراكبٍ استظلَّ تحت شجرةٍ ثم راحَ وتركها আমার উদাহারণ তো সে আরোহী ব্যক্তির ন্যায়, যে কিছু সময় গাছের নিচে আরাম করে, তারপর সে নিজের পথ ধরে। এই গাছের সাথে তার কোন স্থায়ী সম্পর্ক নেই। এটি তার ঘর-বাড়ি কিছুই নয়।
ঠিক একইভাবে এই দুনিয়া আমার ঘর নয়। দেখুন আমরা বলি, إنا لله وإنا إليه راجعون. আমরা তো মুসাফির। আমরা আল্লাহর নিকট থেকে এসেছি, তার দিকেই আবার ফিরে যেতে হবে। كن في الدنيا كأنك غريب أو عابر سبيل রাসুল বলেন: দুনিয়ায় সেভাবে চল, যেন তুমি অপরিচিত আগন্তুক কিংবা মুসাফির। কিন্তু এই পরিবর্তন কখন হবে? যখন এই আয়াত আমাদের অন্তরে বসে যাবে।
وَالْعَصْرِ. إِنَّ الْإِنْسَانَ لَفِي خُسْرٍ. اِلَّا
الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ تَوَاصَوۡا بِالۡحَقِّ ۬ۙ وَ تَوَاصَوۡا بِالصَّبر
এটিই হলো আসল কথা। আমি বলেছিলাম, আমি আপনাদের জানাবো কেন সাহাবারা এই আয়াত একে অপরকে সবসময় স্মরণ করিয়ে দিতেন। এই কারণে যে দেখুন, বরফ বর্ষণের সময় আপনি যদি বের হন তখন বরফ আপনার কাপড়ে জমে যাবে। তখন আপনি কাপড়কে ঝাড়া দেন যাতে বরফগুলো পড়ে যায়। এই দুনিয়ায় বসবাসের সময় যখন আমরা পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়ি তখন আমাদের ঈমানে ঝং ধরে যায়, বরফ জমে যায়। একে সবসময় ঝাঁকুনি দিয়ে রাখতে হয়, আর এই ঝাঁকুনির সবচে উত্তম পন্থা হলো, এটি স্মরণ রাখা যে সাফল্য এসবের মধ্যে নেই। রঙিন দুনিয়ার এই ঝলমল আলো, যে আলোতে তুমি ডুবে আছ, যা তোমাকে নিজের ভেতর গুম করে রেখেছে। গুম শব্দের কারণে ইকবালের সে কবিতা স্মরণে আসলো,
کافر کی یہ پہچان کہ آفاق میں گُم ہے
مومن کی یہ پہچان کہ گُم اس میں ہیں
কাফিরের পরিচয় হলো সে, দুনিয়ায় গুম হয়ে আছে। আর মুমিনের পরিচয় হলো দুনিয়া তার মাঝে গুম হয়ে আছে।
অতএব দুনিয়ায় যেন গুম হয়ে না যাও, হতভম্ব ও স্তম্ভিত হয়ে না যাও। দুনিয়ার ভালোবাসা যেন তোমায় কাবু করতে না পারে। এই কারণে কথাগুলো তাজা করতে থাক,
وَالْعَصْرِ. إِنّ الْإِنْسَانَ لَفِي خُسْرٍ. اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ
تَوَاصَوۡا بِالۡحَقِّ ۬ۙ وَ تَوَاصَوۡا بِالصَّبۡرِ
নিজের এই বিশ্বাসকে আবার স্মরণ করে নাও, আবার তাজা করে নাও যে, সফলতা এই অর্থকড়িতে নয়, সফলতা সম্পদে নয়, সফলতা শক্তিতে নয়, সফলতা এই প্রসিদ্ধিতে নই, সফলতা প্রাচুর্যে নয়।
সফলতা ঈমানে, সফলতা আছে সৎকর্মে, সফলতা হক ও সবরের ক্ষেত্রে পরষ্পরকে তাকিদ দেওয়ার মধ্যে। সফলতার জন্য এই চার জিনিস শর্ত।
সংগ্রহীত
ড. ইসরার আহমেদ (রহঃ) এর লেকচারের বঙ্গানুবাদ থেকে।
আমাদের মস্তিষ্কে সাফল্যের মাপকাঠি কী? অর্থকড়ির মধ্যেই সফলতা। প্রাচুর্যের মধ্যেই সফলতা। কাজের মধ্যেই সফলতা। প্রসিদ্ধির মাধ্যমে সফল হওয়া যায়। ক্ষমতার মধ্যেই সফলতা। এগুলোই হলো মাপকাঠি।
যে যতটা সম্পদশালী সে ততটা সফল। যে যতটা প্রসিদ্ধ সে ততটা সফল। যে শাসন ক্ষমতা পেয়ে গেল সে সফল। যার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বড় হয়ে গেল সে সফল। যে অনেক সম্পদ কামিয়ে ফেললো সে সফল। এগুলো হলো সত্যিকারার্থে বিভ্রম।
আপনার নিকট সফলতার সংজ্ঞা যেমন হবে, তা অর্জন করতে আপনার দৌড়ঝাঁপও তেমন হবে। আপনি সে অনুযায়ীয় শক্তি ব্যয় করবেন। দিনেরাতের পরিশ্রম সে অনুযায়ীই হবে। এটাই হলো মূল বিষয়, যাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
সফলতা সম্পদের মধ্যে নয়, সফলতা প্রসিদ্ধির মধ্যে নয়, সফলতা প্রাচুর্য, শক্তি ও শাসনের মধ্যে নয়। বরং সফলতা হলো ঈমানের মধ্যে, সৎকর্মের মধ্যে। হক ও সবরের ক্ষেত্রে পরষ্পরকে তাকিদ দেওয়ার মধ্যে। খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করুন, এই মনোভাব, এই মৌলিক ধারণা পাল্টে গেলেই মানুষের ভেতর পরিবর্তনের হাওয়া লেগে যায়।
এখন ফলাফল কী পেলেন?
সম্পদ দ্বারা যদি সফল হওয়া যেত, তাহলে কারুন সফল হতো। ক্ষমতা দ্বারা যদি সফল হওয়া যেত, তাহলে নমরুদ ও ফেরআউনও খুব সফল ছিল। সফলতা এগুলোর মাধ্যমে নয়। যদি মানুষ কারুনের মতো সম্পদের পাহাড়ও গড়ে তুলে, ফেরআউন ও নমরূদের মতো দুনিয়ায় ক্ষমতা, প্রভাব ও প্রাচূর্যের অধিকারীও হয়ে যায় তবুও সে ব্যর্থ, তার ধ্বংস অনিবার্য। আর আবু যর গিফারী সফল। হোকনা তার কোন সম্পদ ছিলনা। ঘর তো দূরের কথা কুঁড়েঘর পর্যন্ত ছিলনা।
রাসুল (স.) বলেছেন: আল্লাহর কিছু বান্দা এমন হয়, যারা কোন অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে চাইলে তাদের অনুমতি মিলে না। কোথাও যদি প্রস্তাব দেয়, তাহলে সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়। কোথাও যদি সুপারিশ করতে চায়, তার কথায় কেউ ভ্রুক্ষেপও করেনা। কিন্তু আল্লাহর নিকট তার এমন অবস্থান যে, যদি কোন বিষয়ে ভুলেও সে কসম কেটে বসে, আল্লাহ তার কসমের লাজ রাখেন।
এটাই হলো পার্থক্য।
খুব ভালোভাবে শুনে নিন, এই কথাগুলো মেনে নেওয়া খুব সহজ। শুনে সুবহানাল্লাহ বলাও খুব সহজ। কিন্তু এ অনুযায়ী নিজের মানসিকতা পাল্টে ফেলা খুবই কঠিন। কারণ আমরা আমাদের পরিবেশ থেকে প্রভাবিত হই। কোন বড় মহল দেখে একবারের জন্যও অন্তরে পুলক সৃষ্টি হবে। ২০ ফুট লম্বা একটি কার দ্রুতগতিতে আপনার পাশ কেটে গেল, এটি আপনার ভেতরটা নাড়িয়ে দেবে। মনে হতে থাকে, আরে এরা কত সৌভাগ্যবান, কত সফল! কিন্তু কে জানে! এই ব্যক্তিই সবচেয়ে দূর্ভাগা। হতে পারে এই ব্যক্তিই সবচে ব্যর্থ মানুষ। যদি মস্তিষ্কে এই কথা বসে যায় যে, সফলতা কী থেকে।
এই কারণে দেখুন কুরআনে বারবার বলা হয়েছে, أُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ এরাই তো সফল ব্যক্তি।
আজকেই নামাজে আপনি এই আয়াত শুনেছেন। یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا ارۡکَعُوۡا وَ اسۡجُدُوۡا وَ اعۡبُدُوۡا رَبَّکُمۡ وَ افۡعَلُوا الۡخَیۡرَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ হে ঈমানদারগণ! রুকু কর। সিজদা কর। তোমার প্রভুর ইবাদত কর। আর ভালো কাজ কর। যাতে তুমি সফল হয়ে যেতে পার। তো সফলতা কোন সব কাজে? এটিই হলো সবচেয়ে বড় শিক্ষা। এই কথাটিই যদি আমাদের অন্তরে গেড়ে যায় তাহলে জীবন বদলে যাবে। সকাল-সন্ধ্যা বদলে যাবে। পরিকল্পনা বদলে যাবে। দৌড়ঝাপের পথ পাল্টে পাবে। মূল্যবোধ বদলে যাবে। আজ যে জিনিস সবচে গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে, কাল তা সবচে সস্তা মনে হবে।
যেমন হাদীসে এসেছে, مالي وللدنيا আমার তোমাদের এই দুনিয়ার সাথে কী লেনদেন আছে? إنما مثلي ومثلُ الدُّنيا كراكبٍ استظلَّ تحت شجرةٍ ثم راحَ وتركها আমার উদাহারণ তো সে আরোহী ব্যক্তির ন্যায়, যে কিছু সময় গাছের নিচে আরাম করে, তারপর সে নিজের পথ ধরে। এই গাছের সাথে তার কোন স্থায়ী সম্পর্ক নেই। এটি তার ঘর-বাড়ি কিছুই নয়।
ঠিক একইভাবে এই দুনিয়া আমার ঘর নয়। দেখুন আমরা বলি, إنا لله وإنا إليه راجعون. আমরা তো মুসাফির। আমরা আল্লাহর নিকট থেকে এসেছি, তার দিকেই আবার ফিরে যেতে হবে। كن في الدنيا كأنك غريب أو عابر سبيل রাসুল বলেন: দুনিয়ায় সেভাবে চল, যেন তুমি অপরিচিত আগন্তুক কিংবা মুসাফির। কিন্তু এই পরিবর্তন কখন হবে? যখন এই আয়াত আমাদের অন্তরে বসে যাবে।
وَالْعَصْرِ. إِنَّ الْإِنْسَانَ لَفِي خُسْرٍ. اِلَّا
الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ تَوَاصَوۡا بِالۡحَقِّ ۬ۙ وَ تَوَاصَوۡا بِالصَّبر
এটিই হলো আসল কথা। আমি বলেছিলাম, আমি আপনাদের জানাবো কেন সাহাবারা এই আয়াত একে অপরকে সবসময় স্মরণ করিয়ে দিতেন। এই কারণে যে দেখুন, বরফ বর্ষণের সময় আপনি যদি বের হন তখন বরফ আপনার কাপড়ে জমে যাবে। তখন আপনি কাপড়কে ঝাড়া দেন যাতে বরফগুলো পড়ে যায়। এই দুনিয়ায় বসবাসের সময় যখন আমরা পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়ি তখন আমাদের ঈমানে ঝং ধরে যায়, বরফ জমে যায়। একে সবসময় ঝাঁকুনি দিয়ে রাখতে হয়, আর এই ঝাঁকুনির সবচে উত্তম পন্থা হলো, এটি স্মরণ রাখা যে সাফল্য এসবের মধ্যে নেই। রঙিন দুনিয়ার এই ঝলমল আলো, যে আলোতে তুমি ডুবে আছ, যা তোমাকে নিজের ভেতর গুম করে রেখেছে। গুম শব্দের কারণে ইকবালের সে কবিতা স্মরণে আসলো,
کافر کی یہ پہچان کہ آفاق میں گُم ہے
مومن کی یہ پہچان کہ گُم اس میں ہیں
কাফিরের পরিচয় হলো সে, দুনিয়ায় গুম হয়ে আছে। আর মুমিনের পরিচয় হলো দুনিয়া তার মাঝে গুম হয়ে আছে।
অতএব দুনিয়ায় যেন গুম হয়ে না যাও, হতভম্ব ও স্তম্ভিত হয়ে না যাও। দুনিয়ার ভালোবাসা যেন তোমায় কাবু করতে না পারে। এই কারণে কথাগুলো তাজা করতে থাক,
وَالْعَصْرِ. إِنّ الْإِنْسَانَ لَفِي خُسْرٍ. اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ
تَوَاصَوۡا بِالۡحَقِّ ۬ۙ وَ تَوَاصَوۡا بِالصَّبۡرِ
নিজের এই বিশ্বাসকে আবার স্মরণ করে নাও, আবার তাজা করে নাও যে, সফলতা এই অর্থকড়িতে নয়, সফলতা সম্পদে নয়, সফলতা শক্তিতে নয়, সফলতা এই প্রসিদ্ধিতে নই, সফলতা প্রাচুর্যে নয়।
সফলতা ঈমানে, সফলতা আছে সৎকর্মে, সফলতা হক ও সবরের ক্ষেত্রে পরষ্পরকে তাকিদ দেওয়ার মধ্যে। সফলতার জন্য এই চার জিনিস শর্ত।
সংগ্রহীত
ড. ইসরার আহমেদ (রহঃ) এর লেকচারের বঙ্গানুবাদ থেকে।