Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ ২

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ ২

    সাংবাদিক এড়িয়ে চলুন। তারা আপনার নাম-ঠিকানা সব রাখবে। আর পুলিশ বিভিন্ন সংবাদপত্রের কার্যালয়ের ডাটাবেজ থেকে আপনার ব্যাপারে তথ্য নিবে।
    এতকিছু করেও লাভ না হলে আপনার নামে সার্চ ওয়ারেন্ট আনবে। বাংলাদেশে অবশ্য এসব কিছু লাগে না। আইন অনুযায়ী, পর্দানশীন নারীর কক্ষে প্রবেশ নিষিদ্ধ হলেও বাংলাদেশের র্যাব নিয়মিত এই আইন অমান্য করে।

    অনেক সময় আপনার বাসার কোথায় কোন কক্ষ রয়েছে ইত্যাদি জানা পুলিশের জন্য জরুরি হয়। সেক্ষেত্রে পুলিশ আপনার ফ্ল্যাট বরাবর উপরে বা নিচের ফ্ল্যাট কৌশলে দেখতে যাবে। যেমনঃ আমরা বাসা ভাড়া নিতে এসেছি, আপনার রুমগুলো দেখা যাবে? কতজন মানুষ এই বাসায় থাকে জানার জন্য এনজিও বা মন্ত্রণালয় থেকে এসেছে দাবি করবে।

    এই অধ্যায়ের কিছু শিক্ষা-
    ১। মোবাইলে কোন জরিপের তথ্য চাইলে দিবেন না।
    ২। আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, পছন্দ- অপছন্দ কাউকে বলবেন না।
    ৩। আপনার ব্যাপারে পুলিশ যত জানবে তত ক্ষতি।

    অধ্যায় ২
    থানার পরিচিত কোন বন্ধুসুলভ (!!!) পুলিশ আপনার জন্য ক্ষতিকর । এই স্তর থেকেই যেকোনো তদন্ত শুরু হন। আপনার নিকটতম থানার কেউ আপনাকে চেনে কিনা সেটা চেক করা হয় । এরকম পরিচিত পুলিশ ২ ভাবে তৈরি হয়-
    ১। আপনি কোন অসুবিধায় পড়ে তার শরণাপন্ন হয়েছিলেন।
    ২। সে আপনাকে কোন অসুবিধা মনে করে আপনার কাছে এসেছিল।

    ১ম ক্ষেত্রে পরিচিত হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক । এতে ঝুঁকি তেমন নেই। তবে আপনার নামে কোন গ্রেফতারি পরওয়ানা, লাইসেন্স জনিত সমস্যা, মামলা ইত্যাদি থাকলে সেসব তাকে জানাবেন না। শুধু যতটুকু ঘটেছে ততটুকু বলবেন। ভদ্র ব্যবহার করবেন ও সম্মান দিবেন। নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করবেন যেন সে আপনাকে দ্রুতই ভুলে যায়। যদি পুলিশকে বাসায় ডাকেন (এদেশে এমন সাধারণত হয় না) তাহলে বেআইনি কিছু থাকলে আগেই লুকিয়ে রাখুন। যদি আপনার ব্যাপারে কোন স্পর্শকাতর তথ্য সে জানতে চায়, কৌশলে এড়িয়ে যান।

    ২য় ক্ষেত্রে বিষয়টা ঝুঁকিপূর্ণ । যদি আপনার বাসায় গিয়ে আপনাকে না পায়, ফোন দিলে বলবেন যে, আমি তো বাইরে আছি। কোথায় আছেন, কি করছেন এত কথা বাড়াবেন না। সব প্রশ্নের উত্তর ১-২ শব্দে দিন। যদি রাস্তায় আপনাকে আটকানো হয়, তাহলে ব্যস্ততা থাকলেও ক্রুদ্ধ হবেন না। বাংলাদেশে পুলিশের কাজে অসহযোগিতার অপরাধে গ্রেফতার করা যায়। এখন আপনি দোকানে বসে চা খেলেও পুলিশ দাবি করতেই পারে আপনি তাকে বাধা দিয়েছেন। এই আইন দিয়ে সবাইকে গ্রেফতার করা যায়। তারপর মামলা চলতেই থাকে।

    ২য় প্রকারের পুলিশ সাধারণত কাউকে জেলে ভরে দায়মুক্ত হতে চায়। কারণ সেও একটা চাকরি করে, বেতন পায়, ব্যস। এত ঝামেলায় অতিষ্ট হবার ইচ্ছা নেই। আপনি তার বিরক্তির কারণ হলে ফেসে যাবেন। বহু নিরপরাধ ব্যক্তি এজন্য জেলে আছেন; মানে, মামলা চলছে। আদালত হয়তো ছেড়ে দিবে, কিন্তু হয়রানি তো হলেন।

    পুলিশ কিসের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে?
    যখন তার boss একটা কেস ফাইল তার উপর চাপিয়ে দেয়, তখন দায়মুক্ত হতে সে ঐ এলাকায় ঘুরতে থাকে। আপনি যদি ঐ এলাকায় আগন্তুক হন, তাহলে গ্রেফতার হবেন। যেমনঃ কিছুদিন আগে অভিনেতা সাইফ আলী খান আক্রমণের শিকার হলে একজন বাংলাদেশীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যদিও সে অপরাধী বলে কোন প্রমাণ ছিল না। তার অপরাধ সে বহিরাগত এবং ঐ সময়ে নিকটবর্তী এলাকায় উপস্থিত ছিল।

    আপনি ঐ এলাকার হলে পুলিশ কি দেখবে? গায়ের রঙ। জ্বী, হ্যাঁ । দেখতে রাজপুত্রের মত হলে সহজে ইয়াবা ব্যবসা করা যায়। কারণ পুলিশ তাকে সন্দেহ করে না। এরপর রয়েছে চুলের দৈর্ঘ্য । লম্বা চুল হলে আপনি সন্দেহভাজন । আর সুন্নাতি বাবরি চুল হলে জঙ্গি।
    এছাড়া আপনার চেহারা আর পোশাক যদি ব্যাচেলর পয়েন্টের মারজুক রাসেল, মিশু আর জিয়াউল পলাশের মত হয়। তাহলে আপনি সন্দেহভাজন ; দাড়ি-টুপি থাকলে জঙ্গি।

    পাতা ৬৮, I cannot change the way you dress and wear your hair, because most of you would be unwilling to do so. In addition, changing your skin and sex is a little far-fetched. Nevertheless, if you want to fit a cop's preconceived image of a dirt bag, you have chosen your road.
    আমি আপনার পোশাক-পরিচ্ছদ ও চুল পরিবর্তন করতে পারব না, কারণ আপনাদের মধ্যে অধিকাংশই তা করতে অনিচ্ছুক হবে। তবুও, আপনি যদি নিজেকে পুলিশের মানসপটে চিত্রিত ময়লার ব্যাগ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি দায়ী। সুন্দর পরিপাটি পেশাদার পোশাক পরুন।

    রাস্তায় পুলিশের মুখে পড়লে কি করবেন?
    আমরা দ্বিতীয় ক্ষেত্রের পুলিশকে নিয়ে আলোচনা করব, অর্থাৎ পুলিশ আপনাকে অসুবিধা মনে করে আপনার কাছে এসেছিল। এ ধরনের সাক্ষাৎ যেন বিপদের কারণ না হয় এজন্য আপনাকে যে কাজটা করতে হবে তা হচ্ছে, আপনার থানার সবচেয়ে প্রভাবশালী অ্যাডভোকেট খুঁজে বের করতে হবে। ছোটখাটো উকিলকে পুলিশ কোন পাত্তা দেয় না। সাধারণত এরকম প্রভাবশালী অ্যাডভোকেট রাজনীতির সাথে জড়িত হয়ে থাকে। আপনার থানার মাফিয়া টাইপের রাজনৈতিক নেতা কোন এডভোকেটের শরণাপন্ন হন সেটা জানতে পারলে আপনার জন্য এই সমস্যার সমাধান করা সহজ হবে। সাধারণত বড় রাজনৈতিক দলের সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত থাকা এডভোকেটরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে তাদের শিকড় বিছিয়ে রাখে।

    এবার আপনি সেই এডভোকেটের অফিসে যান। তাকে বলুন যে, অতি শীঘ্রই আপনার হয়তো একটি আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। আর এ কারণে আপনি আগে থেকেই একজন ভালো এডভোকেট খোঁজার চেষ্টা করছেন। তবে তাকে বিস্তারিত কিছু বলার কোন প্রয়োজন নেই। তারপর তার সাথে গল্প গুজব করুন এবং তার ব্যাপারে বিভিন্ন তথ্য জেনে নিন। যেমন: তার শিক্ষাগত যোগ্যতা, তার ক্ষমতা, তার প্রভাব ইত্যাদি। ফিরে আসার সময় তার কাছ থেকে তার "অনেকগুলো" ভিজিটিং কার্ড নিয়ে আসুন।

    এবার আপনি কি করবেন?
    আপনি যেকোনো কারণেই হোক, অতি শীঘ্রই বা অদূর ভবিষ্যতে কোন অপারেশন সংগঠন করবেন; এর আগে রাস্তায় কিংবা থানায় কিংবা আপনার বাড়িতে পুলিশ এল বা আপনাকে পুলিশের সাথে দেখা করতে যেতে হল; এরকম ক্ষেত্রে কি কি হতে পারে?
    - হয়তো আপনি গাড়িতে আছেন; তখন স্বাভাবিক থাকুন; ভদ্র ভাষায় কথা বলুন; রাগান্বিত হবেন না।
    - যদি রাতের বেলা হয়, তাহলে গাড়ির ভেতরের বাতি জ্বালান। হাত স্টিয়ারিং হুইলের উপরে রাখুন যেন পুলিশ তা দেখতে পারে এবং বন্ধুসুলভ কন্ঠে কথা বলুন।
    - যদি আপনি হাটা অবস্থায় মুখোমুখি হন তাহলে কাধ সোজা রাখুন হাত কোমরের ওপরে রাখুন যেন হাতের তালু পরিষ্কার দেখা যায়। চোখে চোখ রেখে কথা বলুন, কথায় আত্মবিশ্বাস ফুটিয়ে তুলুন, মাঝে মাঝে চোখ অন্যদিকে ঘোরান, তবে একবারের বেশি নয়। মাথা হালকা কাত করে রাখুন, এতে বিনয় প্রকাশ পাবে। তার কথায় সম্মতিসূচক উত্তর দিন।

    পুলিশ আপনার সাথে তার প্রাথমিক কথাবার্তা; যেমন : আপনার পরিচয়, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি জানা শেষ হলে আপনার বক্তব্য শুরু করুন । জিজ্ঞাসা করুন, কেন আপনাকে থামানো হলো ? তার পক্ষ থেকে ইতস্তত বোধ প্রকাশ পায় কিনা তা লক্ষ্য করার চেষ্টা করুন । সে কি জবাব দেয় তা গুরুত্বের সাথে স্মরণ রাখুন।
    তাকে জিজ্ঞাসা করুন যে, আপনি এখন যেতে পারবেন কিনা। যদি সে বলে যে, আপনি ইচ্ছা করলে যেতে পারেন। তাহলে আপনি বলুন যে, তাহলে বিদায় নিচ্ছি । তার সাথে বেশি সময় থাকার চেষ্টা করবেন না।

    যদি সে আপনার পকেট কিংবা আপনার গাড়ি তল্লাশি চালাতে চায়। তাহলে বলুন যে, আপনার কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। আপনি এই মুহূর্তে সময় দিতে পারবেন না। কারণ যদি আপনার উপর জবরদস্তি করার ক্ষমতা তার থাকতো তাহলে সে তল্লাশি চালানোর জন্য অনুমতি চাইতো না।

    আপনার যদি কপাল খারাপ হয়; আর পুলিশ আপনাকে তল্লাশি চালাতে চায় । তাহলে এখনই মোক্ষম সময় আপনি সেই অ্যাডভোকেটের ভিজিটিং কার্ডটি বের করবেন এবং তাকে দিয়ে বলবেন যে, আমার উকিল আমাকে বলেছে যেন কোন সমস্যা হলে, আমি আপনাকে আমার সাথে যোগাযোগের নাম্বার এবং ঠিকানা ছাড়া আর অতিরিক্ত কথা না বলি। বিশেষ কোনো প্রয়োজন হলে, আপনি আমার উকিলের থেকে যেকোন তথ্য নিতে পারবেন। কথাগুলো যতটা নম্রতা ও ভদ্রতা বজায় রেখে বলা যায় সেভাবে বলুন।

    এই পর্যায়ে পুলিশ আপনার সাথে কথা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল ও প্রশ্ন করা শুরু করতে পারে। আপনি কোথায় গিয়েছিলেন, কোথায় যাচ্ছেন ইত্যাদি। কোনভাবেই তার টোপ গেলা যাবে না। সে আরও বিভিন্ন কৌশল খাটাতে পারে। যেমন- সে রাস্তাতেই একজন সাক্ষী হাজির করতে পারে । সে এসে বলবে, হ্যাঁ আমি তাকে চিনি এবং সে অমুক স্থানে অমুক অপরাধ সংঘটিত করেছে। এতে ঘাবড়ানো যাবে না। আপনি শুধু একটি কথাই বলবেন, আমি সত্যিই আপনাদের তথ্য এবং সহযোগিতা দ্বারা সাহায্য করতে ইচ্ছুক। কিন্তু আমার উকিল আমাকে কঠিনভাবে কথা বলতে নিষেধ করেছে । তাই আমি দুঃখিত। তবে আমার উকিল অবশ্যই আপনাদের সাথে কথা বলবে এবং যেকোনো বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা করবে।

    আপনাকে কথা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ আরো নানা কৌশল ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে এবং কোনভাবেই মিথ্যা বলা যাবে না। মিথ্যা বললে সে অবশ্যই আজ বা কাল সেটা ধরে ফেলবে এবং আদালতে এটাকে ইস্যু বানিয়ে আপনার গুরুদন্ড দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

    Nine times out ten, the conversation will stop there and Officer Friendly will be glad to get rid of you.
    ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে পুলিশ আপনাকে ছেড়ে দেবে এবং ছেড়ে দিতে পেরে খুশি হবে। কারণ তাকে এখন আপনাকে নিয়ে অতিরিক্ত ঝামেলা পোহাতে হবে না।

    লেখক এমন অনেক লোককে দেখেছেন, যারা কোনো কারণ ছাড়াই অহেতুক কোন গাড়ির মামলা খেয়েছে কিংবা জেলে গিয়েছে। কিন্তু অনেকেই যথাযথ অপরাধ করার পরেও এবং প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র পুলিশের মনে হুঁশিয়ারি সংকেত না জাগিয়ে পার পেয়ে গিয়েছে।
    কারণ পুলিশ সাধারণত সহজ সমাধান খুঁজে থাকে । কোনভাবে আপনার থেকে পরিত্রাণ পেয়ে নিকটে চায়ের দোকানে গিয়ে বসতে পারলেই; মন ফ্রেশ করার সুযোগ পেলেই; সন্তুষ্ট।

    পাশাপাশি আপনি অসহযোগিতা করার পিছনে একজন তৃতীয় পুরুষকে যুক্ত করেছেন; একজন উকিলকে। আর প্রায় সব পুলিশই জানে যে, বড় বড় অ্যাডভোকেটরা তাদের মক্কেলদের সরাসরি পুলিশের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন। পাশাপাশি পুলিশ এটাও জানে যে, আপনার নামে মামলা হলে মামলার একদম শুরু থেকেই একজন এডভোকেট জড়িত থাকবে। আর এসব এডভোকেট তখন শুরু থেকেই নানা প্রকারের এজহার, স্বাক্ষ্য, শুনানি, পদচ্যুতি ইত্যাদি নিয়ে লেগে যায়। আর এ সমস্ত কাজ পুলিশকে তার ছুটির দিনে করতে হয়। এই ঝামেলা কোন পুলিশ পোহাতে চায় না।

    ছুটির দিনে পুলিশ হয়তো ওভারটাইম পায় , কিন্তু এসব অ্যাডভোকেটরা পুলিশের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে। তাই ওভারটাইমের টাকায় পোষায় না। এ কারণে পুলিশ এসব ঝামেলায় জড়ায় না। যে ১০% ক্ষেত্রে আপনাকে জেলে যেতে হবে, সেক্ষেত্রে আপনার জন্য ভালো এবং খারাপ উভয় সংবাদ রয়েছে।

    দুঃসংবাদ হল, আপনাকে এমনিতেও জেলে যেতে হতো। কারণ নিশ্চয়ই পুলিশ শুরু থেকেই আপনাকে টানা হেচড়া করে জেলে নিতে আগ্রহী ছিল।
    সুসংবাদ হলো, বাকি বইটাতে আমি কিভাবে এই পরিস্থিতি থেকেও বের হয়ে আসা যায় তা আলোচনা করব।​


    প্রথম পর্ব - https://dawahilallah.com/forum/মূল-ফোরাম/মানহায/204791-জিজ্ঞাসাবাদ-কক্ষ-১
    Last edited by Rakibul Hassan; 2 days ago.
Working...
X