Announcement

Collapse
No announcement yet.

কারা যুগে যুগে ইতিহাস পরিবর্তন করেছিলো?

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কারা যুগে যুগে ইতিহাস পরিবর্তন করেছিলো?

    বনী ইসরায়েল জালুতের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য তাদের নবীর নিকট প্রার্থনা করলো, তিনি যেন একজন রাজা নিযুক্ত করেন যার নেতৃত্বে তারা লড়াই করবে
    ।।তখন তাদের নবী আল্লাহর নির্দেশে তালুত নামক ব্যক্তিকে রাজা হিসেবে নিযুক্ত করলো। কিন্তু বনী ইসরায়েল এটা মেনে নিতে পারলো না। তারা আপত্তি জানালো, তারা বলল তালুত কিভাবে নেতা হয়? সে তো দরিদ্র ও সাধারন একজন সৈনিক মাত্র।আল্লাহ তাদের আপত্তির জবাবে বললেনঃ

    قَالَ اِنَّ اللّٰهَ اصۡطَفٰىهُ عَلَیۡکُمۡ وَ زَادَهٗ بَسۡطَۃً فِی الۡعِلۡمِ وَ الۡجِسۡمِ


    নবী বলল, আল্লাহই তাকে মনোনীত করেছেন এবং তিনি তাকে (সকল প্রকার) জ্ঞানে এবং দেহে (পটুতায়) সমৃদ্ধ করেছেন।(সূরা বাকারা ২৪৭)

    আল্লাহ তালুত কে নিযুক্ত করেছেন কারন তার ইলম আছে ও দৈহিক ভাবে সে শক্তিশালী।খেয়াল করে দেখুন,স্বয়ং আল্লাহ নেতৃত্ব নির্বাচন করেছেন, আর এক্ষেত্রে দুটি গুনকেই সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়েছেন তা হলো ইলম ও দৈহিক শক্তি।আল্লাহ হলেন মহাজ্ঞানী, তিনি যে দুইটি গুন দেখে নেতৃত্ব নির্বাচন করেছেন সে দুইটি গুন অত্যান্ত তাৎপর্যপূর্ণ । এখন থেকে একটা একটা বিষয় প্রমানিত হয়, গনতন্ত্র দিয়ে সঠিক নেতৃত্ব ঠিক করা যায় না। স্বয়ং আল্লাহ তালুতকে সিলেক্ট করেছেন তবুও তালুত জনগনের দৃষ্টিতে ছিলো অযোগ্য।

    কিন্তু যিনি মহান জ্ঞানী তার নিকট ছিলো যোগ্য, অভিজ্ঞ।

    আমাদের নেতা হলেন বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সাঃ)। তিনিও ছিলেন শক্তিশালী।তিনি এতটাই শক্তিশালী ছিলেন যে,তৎকালীন আরবের শ্রেষ্ঠ কুস্তিগীরকে কুস্তিতে তিনি পরাজিত করেছেন।

    এ দুইটি ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয় নেতৃত্বের জন্য, ইসলামের বিজয়ের জন্য ইলম ও শারীরিক শক্তি খুবই প্রয়োজন।

    মনে করুন একটি শুকনো কাঠের টুকরোর মধ্যে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিলেন, আর একটি ভেজা ও কাঁচা কাঠের উপর কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিলেন। কোনটা বেশি জ্বলবে?

    একজন মুমিন ব্যক্তি শারীরিক শক্তি ও সাহস আছে, আর আরেক জন মুমিনের ইমান ও ইলম আছে তবে শারীরিক দূর্বল। এখন কে কাফেরদের বিরুদ্বে ইসলামের পক্ষে বেশি লড়াই করতে পারবে?

    এই পৃথিবীতে যতবার জালেমদের পতন হয়েছে ততবারই শক্তিশালী ও সাহসী মুমিনদের দ্বারাই পতন হয়েছে।


    প্রথমে মদীনা নিয়ে চিন্তা করুন, মদীনাতে ইসলামের প্রবেশের আগ থেকেই তারা ছিল যুদ্ববাজ। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রানপন লড়াই করতো। তারা আগ থেকে রক্তারক্তি, মারামারি, কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিলো, ইসলাম এসে তাদের যুদ্বের মোড় ঘুরিয়ে দিছে। আগে যে লড়াই নিজেরা করতো ইসলাম গ্রহনের পর তা তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে করতো।

    তারপর দেখুন তাতারিদের আগ্রাসনে যখন সবার অবস্থা খুবই শোচনীয়, যখন মুসলিম ও খ্রিষ্টানরা তাতারদের মোকাবিলা করার নূন্যতম সাহস করতো না।তখন মিশরের মামলুকদের নিকট আইন জালুতের যুদ্বে সর্বপ্রথম তাতারদের পরাজয় হয়। প্রশ্ন হলো মামলুক কারা?

    মিশরের সুলতান আস সালিহ আইয়ুব বিভিন্ন জায়গা থেকে খুব শক্তিশালী ও পরিশ্রমী দাস ক্রয় করতেন। তাদেরকে কঠোর ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে বড় করতেন ও ইলম শিক্ষা দিতেন। আর তারাই এক সময় হয়ে উঠেন মহান মুজাহিদ, যাদের দ্বারা আল্লাহ তাতারিদের পরাজিত করেছেন।

    এরপরে দেখুন, পৃথিবীতে উসমানীরা ছয়শ বছর শাসন করেছেন, কিন্তু তাদের শুরুটা কিভাবে হয়েছিল? তারাও ছিলো যাযাবর জাতি, সুনির্দিষ্ট কোন বসতি তাদের ছিলো না। তারাও ছিলো কঠিন পরিশ্রমী ও সাহসী। আর তারাই বিশ্বকে ছয়শ বছর শাসন করেছে।


    স্পেন কারা জয় করেছিলো? আফ্রিকার বার্বার জাতি তারিক বিন জিয়াদের নেতৃত্বে স্পেন জয় করেছিলো।তারিক বিন জিয়াদ নিজেও ছিলেন বার্বার জাতির অন্তর্ভুক্ত।

    আর বার্বার জাতিও ছিলো যোদ্বা জাতি। সাহসী ও শক্তিশালী জাতি।


    বর্তমান সময়ে মুসলিমদের হারানো ঐতিহ্য ও বিজয় আল্লাহ যাদের মাধ্যমে ফিরিয়ে দিচ্ছেন তারাও সাহসী, শক্তিশালী ও যোদ্বা জাতি।

    এ ঘটনাগুলো আমাদের যে শিক্ষা দেয় তা হলো বিলাসিতা,আরাম, আয়েশ আর দূর্বল শরীর দিয়ে বিজয় আসে না। জালিমদের পতন হয় না।

    যুগে যুগে ইতিহাসের গতিপথ তারাই পাল্টে দিয়েছে যাদের ইলম ছিলো, তাকওয়া ছিলো, আর যারা ছিলো শক্তিশালী, সাহসী ও পরিশ্রমী।

    কতটা পরিশ্রমী হলে সুলতান মুহাম্মদ আল ফাতিহের সৈন্যরা পানির জাহাজ ডাঙ্গায় চালিয়েছেন।যা শত্রুদের সকল যল্পনা কল্পনাকে হার মানিয়েছে।


    মানুষ যখন বিলাসী হয় অলস ও ভীতু হয় তখন সব কিছুতে সহজতা চায়। বিনা পরিশ্রম কিংবা স্বল্প পরিশ্রমে অনেক কিছু অর্জন করতে চায়। এ জন্যই আজ জিহাদ ও কিতালের পথ বাদ দিয়ে গনতন্ত্র বেঁচে নিচ্ছে। মূল সমস্যা গনতন্ত্র নয়, মূল সমস্যা হলো বাচ্চা প্রসবের যন্ত্রনা সহ্য করা ছাড়াই বাচ্চা জন্ম দেওয়ার চিন্তা।
    কিন্তু এটা কি আদৌ সম্ভব?

    আজও যদি দ্বীন বিজয় করতে হয় তাহলে বিলাসিতা ছাড়তে হবে, শারীরিক ও মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে।

    যারা শারীরিক ভাবে শক্তিশালী তাদেরকে দ্বীনকায়েমের কাজে আনার চেষ্টা করতে হবে। নরম মন আর নরম দেহ আর নরম কথা দিয়ে শত্রুকে পরাজিত করা সম্ভব নয়।

    সেনাবাহিনীতে কারা সান্স পায়? যে ছেলেটা ধনী পরিবারে জন্ম নিয়ে বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত সে কি সেনাবাহিনীতে সান্স পায়?

    বর্তমানে দেশে বড় বড় ডিগ্রিও অর্জন করছে দরিদ্র পরিবারের পরিশ্রমী ছেলেগুলোই।

    এটাই হলো বাস্তবতা, এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। ক্লাশে ফাষ্ট হওয়া দূর্বল ছেলেটা সবসময় চায় সম্মানের সাথে, শান্তিতে দুনিয়ায় কিভাবে বেঁচে থাকা যায়। আর শক্তিশালী ও সাহসী ছেলেগুলো সমাজের পাপিষ্ঠ নেতাদের পিছনে ছুটে, আর আমরা তাদের সবসময় ঘৃনার চোখে দেখি ও এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। তাদেরকে দ্বীনের পথে দাওয়াত খুব কমই দেওয়া হয়। আমাদের উচিত তাদেরকে দাওয়াত দেওয়া।তাদের মাঝে তাওহীদের বীজ বপন করা।



Working...
X