আল-আকসায় তুরস্ককে ঠেকাতে ইসরায়েল-সৌদি গোপন বৈঠক!
জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলমানদের পবিত্র স্থান আল-আকসায় তুরস্কের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে সেখানে সৌদি আরবের কর্তৃত্ব চায় ইসরায়েল। সে লক্ষ্যেই উভয় দেশের মধ্যে একাধিকবার গোপন বৈঠক হয়েছে। গত সোমবার ইসরায়েলি পত্রিকা ইসরায়েল হেয়মের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বায়তুল আকসাসহ জেরুজালের মুসলিম পবিত্র স্থানগুলো দেখাশুনার দায়িত্বে রয়েছে ইসলামিক ওয়াকফ কাউন্সিল। যে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে জর্ডান। এ প্রতিষ্ঠানে তুরস্কের অংশগ্রহণ বন্ধ করে সৌদি প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে চায় ইসরায়েল। সে লক্ষ্যেই গত ডিসেম্বর থেকে উভয় দেশের মধ্যে একাধিবার গোপন বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠক হয়েছে মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত ইসরায়েল-ফিলিস্তিন পরিকল্পনাকে সামনে রেখেই। যেটিকে ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা ‘শতাব্দীর চুক্তি’ আখ্যা দিয়েছেন।*
ইসরায়েল হেয়ম পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের উর্ধ্বতন কূটনীতিকরা জানান, ‘এগুলো ছিল অত্যন্ত গোপনীয় ও স্পর্শকাতার আলোচনা। একান্তভাবে বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদিআরবের গুটিকয় কূটনীতিক ও উর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসব আলোচনার লক্ষ্য ছিল শতাব্দির চুক্তিকে এগিয়ে নেয়া।’
ওই পত্রিকাটি আরো জানায়, জর্ডান কর্তৃপক্ষ ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছে, আল-আকসায় তুরস্কের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় ওয়াকফ প্রতিষ্ঠানটিতে সৌদি প্রতিনিধিত্ব মেনে নিতে তারা তাদের আগের অবস্থান থেকে সরে আসবে। এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে পবিত্র স্থানের জিম্মাদার হিসেবে জর্ডানের কর্তৃত্ব অব্যাহত থাকবে এবং সৌদি আরব পূর্ব জেরুজালেমে ইসলামি সংস্থাগুলোকে অর্থায়ন করবে। সেখান থেকে তুরস্কের অর্থায়ন বাতিল করা হবে।*
ইসরায়েল হায়েমকে একজন উর্ধ্বতন আরব কূটনীতিক বলেন, ‘যদি জর্ডানিরা তুর্কিদের আল-আকসায় কোন বাধা ছাড়াই কাজের সুযোগ করে দেয় তবে কয়েকবছর পর দেখা যাবে এখানে জার্ডানের কর্তৃত্ব আছে কাগজে-কলমে। এরদোগানকে ঠেকানোর জন্য তাদের প্রয়োজন সৌদি আরবের অর্থ ও প্রভাব।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলেরও লাভ আছে যদি তারা সৌদিকে সমর্থন দেয়। কারণ এতে তাদের পক্ষে শতাব্দির চুক্তি পরিকল্পনা এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। এর পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনেরও সমর্থন পাওয়া যাবে।’*
রিপোর্টে আরো বলা হয়, ওয়াকফ কমিটিতে সৌদি আরবকে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা দেয়া হবে, যাতে জর্ডানের মর্যাদা খর্ব না হয়। তবে গত দু’বছর যাবত সৌদি আরবের সঙ্গে ফিলিস্তিনের সম্পর্ক অনেকটা শীতল। কারণ তারা ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে সমর্থন দিচ্ছে, একইসঙ্গে ইসরায়েলের সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।
*