বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার যিনি সকল জগতের পালনকর্তা। শান্তি ও দরুদ বর্ষিত হোক সেই নবীর প্রতি, যিনি সমগ্র মানবজাতির জন্য রহমতরূপে প্রেরিত হয়েছেন—আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর পরিবার ও সমস্ত সাহাবায়ে কিরামের ওপর।গণতন্ত্রের ধোঁকা
দুধ পচলে দই হয়"দই কিন্তু দুধ নয়"! যাদের পেটে রোগ আছে, তারা দুধ হজম করতে পারে না। তাই "দই" তাদের কাংখিত রস! কিন্তু দইয়ের কোন অংশ যদি দুধে পতিত হয়, তাহলে দুধ নষ্ট হয়ে যায়। তদ্রূপ কোন ঈমানদারের ঈমানে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার কোন যদি অংশ পতিত হয়, তাহলে তার ঈমান দূষিত হয়।
অনুরূপভাবে ইসলাম+গণতন্ত্র = ইসলামী গণতন্ত্র অর্থাৎ যে ইসলামকে গণতন্ত্রের সাথে মিশ্রণ করেছে; সে তার ইসলামকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তাই "গণতান্ত্রিক ইসলাম" কোন ইসলাম নয় এবং ইসলামী গণতান্ত্রিক দল, কোন পরিপূর্ণ ইসলামী দল নয়।
সুতরাং ইসলামী গণতান্ত্রিক দলের কর্মকাণ্ডকে জিহাদী কর্মকাণ্ড এবং সময় ও সম্পদ ব্যয়কে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় মনে করে, তারা মিথ্যা আত্মতুষ্টিতে ভুগছে। ফলে তারা মুজাহিদ ভাইদের জঙ্গি, সংত্রাসী, মব টেরোরিস্ট, ইত্যাদি বলে লাঞ্ছিত করে।
গণতন্ত্রের ধোঁকা বুঝার জন্য ইসলামী গণতান্ত্রিক দলগুলোর প্রণিত গঠনতন্ত্রে দৃষ্টিপাতই যথেষ্ট।
যা জনগণের সামনে তারা প্রকাশ করে না, ফলে দেশের সরলমনা মুসলমানরা ধোঁকার গভীর সমুদ্রে নিমজ্জিত!
নিবন্ধন রক্ষায়; ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দু’বার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংশোধন আনে এবং দলের পূর্ব নাম ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়। নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে দলটি "গঠনতন্ত্র" থেকে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসুল প্রদর্শিত ইসলামি "রাষ্ট্রব্যবস্থার" কথা বাদ দিয়ে "গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার" কথা উল্লেখ করে!
সুতরাং নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে দলটি গঠনতন্ত্র থেকে আল্লাহ প্রদত্ত ও রসুল প্রদর্শিত ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার কথা বলেছে।
একই সঙ্গে নতুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে দলটি।
এছাড়া ‘আল্লাহ ব্যতীত কাহাকেও সয়ংসম্পুর্ণ বিধানদাতা ও আইন প্রণেতা মানিয়া লইবে না এবং আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁহার দেওয়া আইন পালনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয় এমন সকল আনুগত্য মানিয়া লইতে অস্বীকার করিবে’ এ নীতিটিও গঠনতন্ত্র থেকে বাদ পড়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর সংশোধিত গঠনতন্ত্রে এগুলো ছাড়াও বেশকিছু ভাষাগত ও তত্ত্বগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর অন্যতম হচ্ছে- সমাজের সর্বস্তরে খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টার বদলে "চরিত্রবান নেতৃত্ব" কথাটি সংযোজন।
ইসলামের শাসন কায়েমের ধর্মীয় উদ্দেশ্যপুর্ণ এবং সংবিধান এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) পরিপন্থি মোট ৮টি ধারা পরিবর্তন বা বিলুপ্ত করে, এই সংশোধিত গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার সংশোধিত এ গঠনতন্ত্রের মুদ্রিত কপি কমিশনে জমা দেন।
এতে ২০১২ সালের নভেম্বরে ৪৯ তম মূদ্রণ কথাটি উল্লেখ রয়েছে। প্রকাশক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমানের নাম। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া গঠনতন্ত্রের প্রতিটি পাতায় অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকারের নামের সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে।
এর আগেও নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রের ২ ধারার ৫ উপধারা, ধারা ৩, ৫ ধারার ৩ উপধারা, ৬ ধারার ৪ উপধারা, ৭ ধারার ১ থেকে ৪ উপধারা, ১১ ধারার ২ উপধারা ও ১৮ ধারার ৪ (চ) উপধারা সংশোধনের জন্য তাগিদ দেয়।
দলটির নিবন্ধনের সময়ও এসব ধারা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার তখন তাদের গঠনতন্ত্র থেকে কয়েকটি ধারা লাল কালি দিয়ে কেটে দিয়ে তা গঠনতন্ত্রের অংশ নয় মর্মে স্বাক্ষর করেন।
যে ধারাগুলো জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র থেকে বাদ দেয়া হয়েছে!
*** দলটির গঠনতন্ত্রের ২ ধারা ৫ উপধারার একাংশে বলা ছিল, ‘(আল্লাহ ব্যতীত) কাহাকেও সয়ংসম্পুর্ণ বিধানদাতা ও আইন প্রণেতা মানিয়া লইবে না এবং আল্লাহ্র আনুগত্য ও তাঁহার দেওয়া আইন পালনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয় এমন সকল আনুগত্য মানিয়া লইতে অস্বীকার করিবে।’ সংশোধিত গঠনতন্ত্রে এ অংশটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
*** ৩ ধারায় দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভূমিকাসহ ৪ টি উপধারাতে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল (সাঃ) প্রদর্শিত পথ থেকে দ্বীন (ইসলামী জীবন বিধান) কায়েমের প্রচেষ্টার কথা বলা ছিল। সেগুলো বাদ দিয়ে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা এবং মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন’ বাক্যটি সংযোজন করা হয়েছে।
*** ৫ ধারা ৩ উপধারায় বলা ছিল, ‘সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলামের সুবিচারপূর্ণ শাসন কায়েম করিয়া সমাজ হইতে সকল প্রকার জুলুম, শোষণ, দুর্নীতি ও অবিচারের অবসান ঘটাইবার আহ্বান জানাইবে। এ অংশ থেকে "ইসলামের" শব্দটি বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতি’ কথাটি সংযোজন করা হয়েছে।
*** ৬ ধারার ৪ উপধারায় বলা ছিল, ‘ইসলামের পুর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠাকল্পে গোটা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বাঞ্ছিত সংশোধন আনায়নের উদ্দেশ্যে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সরকার পরিবর্তন এবং সমাজের সর্বস্তরে সৎ ও খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টা করা। এ কথাগুলো থেকে "খোদাভীরু" শব্দটি বাদ দিয়ে "চরিত্রবান" শব্দটি যোগ করা হয়েছে।
*** ৭ধারার ১ থেকে ৪ উপধারায় জামায়াতের সদস্য হতে হলে ইসলামে বিশ্বাস ও শরীয়তের নির্ধারিত ফরজ ও ওয়াজিব আদায়ের শর্ত দেওয়া ছিল। এগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে।
*** ১১ ধারার ২ উপ ধারায় যে কোন অমুসলিম নাগরিক কয়েকটি শর্ত পুরণের মাধ্যমে জামায়াতের সদস্য হতে পারবে বলা ছিল। এ উপধারাটি দলের গঠনতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্যের সাথে সাংঘর্ষিক ও স্ব-বিরোধী বলে জানায় নির্বাচন কমিশন। জামায়াত এ উপধারাটি বিলুপ্ত করেছে।
*** জামায়াতের গঠনতন্ত্রের ১৮ ধারার ৪ (চ) উপধারায় বলা ছিল ‘আমীরে জামায়াত কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সহিত পরামর্শ করিয়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যকে (রুকনকে) কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য মনোনীত করিতে পারিবেন।’ এটি আরপিও পরিপন্থি মর্মে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন। সংশোধিত গঠনতন্ত্রে এ উপধারাটিও বিলুপ্ত করা হয়েছে।
জামায়াতের হ্যান্ডবিলে গণতন্ত্র!
জামায়াতের বর্তমান হ্যান্ডবিলে গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার গঠন ও সরকার সংশোধনের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। তা নিম্নরূপ:
১. সরকার সংশোধনের কাজ:
জামায়াত শাসন ব্যবস্থার সকল স্তরে অযোগ্য ও অসৎ নেতৃত্বের বদলে আল্লাহভীরু,(গঠনতন্ত্রে "আল্লাহভীরু" শব্দটি বাদ দিয়ে "চরিত্রবান" শব্দটি যোগ করা হয়েছে) সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব কায়েমের জন্য "গণতান্ত্রিক" পন্থায় চেষ্টা চালাচ্ছে।
২. সরকার গঠনের কর্মনীতি:
হুজুগ, সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে জাতি গঠনমূলক ও সমাজ পরিবর্তনের কাজ হতে পারে না। তাই জামায়াত "নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক" পথেই সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায়।
এখানে জামায়াত জিহাদকে "সন্ত্রাস", জিহাদী কর্মকাণ্ডকে "বিশৃঙ্খলা" এবং শরিয়া প্রতিষ্ঠার জন্য সময়-সম্পদ ব্যয় ও একতাবদ্ধ হওয়াকে "হুজুগ" অর্থাৎ (mob) মব বলে উপস্থাপন করেছ।
৩. জনকল্যাণমুখী আদর্শ রাষ্ট্র ও সরকার গঠনের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন।
অর্থাৎ জামায়াতের "আন্দোলন" কোরআন -সুন্নাহ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য নয়।
জামায়াত-ই-ইসলামীর রাজনীতিতে আরো কিছু ত্রুটি:
(১) তারা রাজনীতিকে জিহাদ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। (এটি মাওলানা মওদুদী প্রথম করেন)
(২) তারা ইকামতে দ্বীনের (ধর্ম প্রতিষ্ঠা) ধারণার অর্থকে একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় হ্রাস করে মারাত্মক ভুল করেছে।
(৩) দলটি তার আদর্শের সাথে আপস করেছে এবং ক্ষমতার রাজনীতিতে আরও মনোনিবেশ করেছে এবং ক্ষমতার জন্য ধর্মনিরপেক্ষ দল এবং জনগণের সাথে জোট করেছে।
(৪) মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত এমন এক দলের সমর্থন করেছিল এবং তার পক্ষে অস্ত্র নিয়েছিল যাকে আগে এরা "অমুসলিম "তাগুতি" (অত্যাচারী) সরকার" বলে অভিহিত করেছিল।
কোনো দলের "গঠনতন্ত্র" দেশের সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে সে দলের নিবন্ধন বাতিল হতে পারে। আরপিও’টর ৯০ এর সি ধারায় বলা হয়েছে- একটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের অযোগ্য হবে, যদি ওই দলের;
(ক) গঠনতন্ত্রের উদ্যেশ্যসমূহ সংবিধান পরিপন্থি হয়।
(খ) গঠনতন্ত্র ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, ভাষা ও লিঙ্গভেদে কোন বৈষম্য প্রতীয়মান হয়।
(গ) নাম, পতাকা, চিহ্ন বা অন্য কোন কর্মকান্ড দ্বারা সাম্প্রদায়িক ঐক্য বিনষ্ট হওয়ার কিংবা দেশকে বিচ্ছিন্নতার দিকে নিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
আর সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে এই মর্মে বলা হয়েছে যে, নাগরিকদের মধ্যে ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনিষ্ট করার উদ্দ্যেশে এবং ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ, জম্নস্থান বা ভাষার ক্ষেত্রে বৈষম্য সৃষ্টির জন্য কোন সমিতি বা সংঘ গঠন বা ওই ধরণের কোন সমিতি বা সংঘের সদস্য হওয়ার অধিকার কোন নাগরিকের থাকবে ন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নাম পরিবর্তন:
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (পূর্ব নাম ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন) ১৯৮৭ সালে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নামে প্রতিষ্ঠিত হলেও সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায়;
গত ২০/১১/২০০৮ তারিখে নাম পরিবর্তন করে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে "শাসনতন্ত্র" বাদ দিয়ে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নামে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয় এবং হাতপাখা প্রতীক লাভ করে। নাম পরিবর্তনের বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কেএম শরীয়াতুল্লাহ বলেন, আমাদের সব সহযোগী সংগঠনের নাম মূল দলের নামের সঙ্গে মিলিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে হিসেবে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের নাম পরিবর্তন করে, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ করা হয়েছে। আমাদের যুব ও শ্রমিক সংগঠনের নামও মূল দলের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হবে।
গত ০১/০৬/২০২৫ইং জামায়াতের নিবন্ধন বৈধতা পেয়েছে; যা ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দু’বার সংশোধিত গঠনতন্ত্রের উপর ভিত্তি করেই দেওয়া হয়েছে।
বি:দ্র: জামায়াতে ইসলামী যে সব ধারাগুলো তাদের গঠনতন্ত্র থেকে বাদ দিয়েছ। অন্যান্য সকল ইসলামী দলগুলো তাদের গঠনতন্ত্র থেকে উক্ত বিষয়গুলো বাদ দিয়েই গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করে এবং গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে মেনে নিয়েই ইসি থেকে দলের নিবন্ধন নিয়েছে। কারণ: আরপিও’টর ৯০ এর সি ধারায় বলা হয়েছে- একটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের অযোগ্য হবে, যদি ওই দলের; "গঠনতন্ত্রের" উদ্যেশ্যসমূহ সংবিধান পরিপন্থি হয়।
তাই প্রতিটি মুসলমানের আবশ্যকীয় কর্তব্য হলো সমস্ত গণতান্ত্রিক দল, শাসকগোষ্ঠী ও তার অনুসারীদেরকে প্রত্যাখ্যান করা ও তাদের কর্মসূচি-কর্মকাণ্ড বর্জন করে;
আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণিত "হক দলের"খোঁজ" করার মধ্যেই দুনিয়ার কল্যাণ ও আখিরাতে সফলতা নিহিত।
হক দল সম্পর্কীত হাদীস:
সাওবান (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ আমার উম্মতের একটি দল সর্বদাই হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। তাঁদের সঙ্গ ত্যাগ করে কেউ তাদের কোন অনিষ্ট করতে পারবে না। এমন কি এভাবে আল্লাহর আদেশ অর্থাৎ কিয়ামত এসে পড়বে আর তারা যেমনটি ছিল তেমনটিই থাকবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৭৯৭ ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মাতের একদল লোক সর্বদাই মানব জাতির উপর বিজয়ী থাকবে। এমন কি এভাবে তাদের কাছে আল্লাহর আদেশ এসে পড়বে, তাদের বিজয়ী থাকাবস্থায়। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৭৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
হক দলের বৈশিষ্ট্য সমূহ:
১. সর্বদাই হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে।
২. কেউ তাদের কোন অনিষ্ট করতে পারবে না।
৩. সর্বদাই মানব জাতির উপর বিজয়ী থাকবে।
৪. কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবে।
সুতরাং আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণিত "হক দল" এখনো পৃথিবীতে বিদ্যামান আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবে।
হে আমাদের রব! ধর্মনিরপেক্ষবাদ, গণতন্ত্রবাদ নামক জঘন্য নাপাকী-শিরকী ধর্ম, মতবাদ, জীবনাদর্শ, রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং তাগুতী শাসকগোষ্ঠী ও তার অনুসারী থেকে মুসলিম উম্মাহর ঈমান কে হিফাজত করুন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণিত "হক দল" এর সঙ্গী হওয়ার তাওফীক দান করুন -আমীন