***Humanism-''মানবধর্ম''***
পশ্চিমা সভ্যতায় সবচেয়ে গৃহীত একটি মতবাদ হল হিউম্যানিজম। ''আমি একজন ধার্মিক হওয়ার আগে একজন মানুষ'' ''সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপর সত্য নাই'' '' সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ধর্ম হল মানবতা,মানবধর্ম যা মানুষকে ভালবাসতে শিখায়''-বিভিন্ন জায়গায় আপনি দেখবেন একজনকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে আপনার ধর্ম কি,তার উত্তর মানবতা- এই ধরণের কথাগুলা সেকুলার প্যারাডাইমে বেশ কমন কিছু উক্তি। হিউম্যানিজমকে একটা স্বতন্ত্র ধর্ম হিসেবে চিন্তা করা যায়, এটা নিয়ে তেমন কোন আপত্তি থাকার কথা না কারণ সেকুলার সংস্কৃতিতে এটিকে সরাসরি এভাবেই তুলে ধরা হয় বিভিন্ন রেটোরিকের মাধ্যমে। মানবধর্ম নিরপেক্ষ বলে দাবি করা হয় কিন্তু এর নিরপেক্ষতার স্বরূপ বোঝার জন্য একটা এক্সপেরিমেন্ট করেন,কিছুক্ষণের জন্য হিউম্যানিজমের ব্যাপারে সব ব্যাকগ্রাউনড ইনফরমেশন মাথা থেকে মুছে ফেলেন। এখন,
''মানবধর্ম নিজেকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে দাবি করে।মানবধর্ম নিজেকে নৈতিকতার একমাত্র সঠিক মানদণ্ড বলে বিশ্বাস করে, কোন কাজ ভাল-কোন কাজ খারাপ এইটা আপনাকে বলে দিবে মানবধর্ম,উচিত-অনুচিতের সংজ্ঞা হবে মানবধর্ম অনুসারে,মানবধর্ম দিবে নৈতিক বিধি-বিধান।মানবধর্ম দাবি করে পৃথিবীর সকল অনৈতিকতার উৎস মানবধর্মকে মেনে না নেয়া,মানবধর্মের অবাধ্যতা,পৃথিবীতে সুখ-শান্তি আসবে সর্বত্র মানবধর্ম প্রতিষ্ঠা পেলে।সকল রাষ্ট্রের আইনের ন্যায্যতা বিচার করা হবে মানবধর্মের মানদণ্ড অনুসারে,সকল রাষ্ট্র মানবধর্ম অনুসারে পরিচালিত হওয়া উচিত।মানবধর্ম ততক্ষণ পর্যন্তই ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দিবে যতক্ষণ পর্যন্ত কারোর ধর্ম পালন মানবধর্মের বিরোধীতা না করে,ধর্মকে প্রচারও করতে হবে মানবধর্মের সাথে সমর্থক করে।বাকস্বাধীনতা ততক্ষণ পর্যন্তই থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত মানবধর্মের নৈতিকতা নিয়ে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করে কিছু বলা না হচ্ছে।কোন পোশাকের স্বাধীনতা ততক্ষণ পর্যন্তই থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত তা মানবধর্মের জন্য ক্ষতিকর প্রতীয়মান না হয়।সারা বিশ্বজুড়ে যেভাবে সম্ভব মানবধর্মকে প্রচার করার চেষ্টা করা হবে। মিডিয়া,মিউজিক,মুভি,কালচার সবখানে মানবধর্মের প্রচার করা হবে, বিভিন্ন এনজিও,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রচার করবে মানবধর্ম।এমনকি বাচ্চাদের পাঠ্যপুস্তকেও প্রসার করানো হবে মানবধর্ম,ছোটবেলা থেকেই তাদের মানবধর্মের দীক্ষা দিয়ে বড় করা হবে,কোন পিতামাতা মানবধর্মের দীক্ষা নিতে বাধা দিলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।কোন রাষ্ট্র মানবধর্ম অনুসারে না চললে,মানবধর্মের বিরোধিতা করলে আন্তর্জাতিকভাবে সেই রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণে সামরিক অভিযান চালানো বৈধ,কোন রাষ্ট্রে জোরপূর্বক মানবধর্মের আইন বাস্তবায়ন করা বৈধ।কেউ মানবধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলে,মানবধর্মের শত্রুরূপে প্রকাশ পেলে তাকে হত্যা,বা সেই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বৈধ।মানবধর্মের রক্ষার্থে করা যুদ্ধের ফলাফলে লক্ষ লক্ষ নিরপরাধ মানুষ মারা গেলেও সেই যুদ্ধ বৈধ,সেই মৃত মানুষগুলো কোন মহান লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে করা যুদ্ধের কলেটোরাল ড্যামেজ।মানবধর্ম প্রতিষ্ঠার মহান যুদ্ধে মারা যাওয়া সব সৈন্য মহান শহিদ যারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিজের জীবন দিয়ে দিয়েছে।শুধুমাত্র মানবধর্মই নৈতিক ত্রুটিহীন,পরম সত্য,মানবধর্মের অনুসরণ করেই মানবজাতি পেতে পারে পরম সুখ,মানবধর্ম শুধু একটি ধর্ম না,এটি একটি পূর্ণ জীবনব্যবস্থা,এর আছে নিজস্ব নৈতিকতার মানদণ্ড,নিজস্ব আইনব্যবস্থা,নিজস্ব রাষ্ট্রব্যবস্থা,ব্যাক্তিজীবনে ও সামাজিকভাবে আপনি কোন অমানবিক কাজ করছেন কিনা সেটা দেখবে মানবধর্ম,সর্বত্র মানবধর্মের অনুসারীকে মেনে চলতে হবে মানবধর্ম।মানবধর্ম একটি সহজাত সত্য,কোন প্রমান ছাড়াই মানবধর্মকে মেনে নিতে হবে,নৈতিকতার স্বরূপ হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে।''
এখন এখানে মানবধর্মের জায়গায় ইসলাম বসিয়ে আরেকবার পড়েন।কি বুঝতে পারলেন?এ ব্যাপারে নিজে ভেবে দেখুন।
এখানকার প্রত্যেকটা কথা হিউম্যানিজমের আকিদা অনুসারে সঠিক। হিউম্যানিজম কোন প্রমাণ ছাড়াই বিশ্বাস করতে হবে,একে এমনভাবে প্রচার করা হয়েছে বছরের পর বছর ধরে যে একে আমাদের কাছে সহজাত প্রবৃত্তি বা কমন সেন্স মনে হচ্ছে।পশ্চিমা বিশ্ব আপনাকে ইসলাম ধর্ম সত্য কেন এর প্রমাণ চাইতে শিখাবে, শিখাবে প্রমাণ ছাড়া কোনকিছু বিশ্বাস না করতে কিন্তু প্রমাণ ছাড়াই তারা মানবধর্মকে প্রচার করবে,উপস্থাপন করবে স্বপ্রমানিত সত্য হিসেবে,তারা কখনোই মানবধর্মকে প্রশ্ন করতে শিখাবে না।
হিউম্যানিজম নিজেকে নৈতিকতার সঠিক মানদণ্ড বলে দাবি করে, হিউম্যানিজম বলে দিবে ভাল-খারাপ কি,বৈধ- অবৈধ কি,যা কিছু হিউম্যানিজমের সাথে সাংঘর্ষিক তা-ই বর্বরতা-অসভ্যতা।হিউম্যানিজমের ধারণার প্রচার সবখানে,এমনকি বাচ্চাদের পাঠ্যপুস্তকেও লালন শাহের ''মানবধর্ম'' কবিতা,শিক্ষার মধ্যে থাকে হিউম্যানিসট প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা, পশ্চিমা সেকুলার রাষ্ট্রে তো বাচ্চাদের বাধ্যতামূলক LGBT ক্লাস,যেখানে না পাঠালে আপনি যাবেন জেলে-( https://metro.co.uk/2020/02/03/dad-r...jail-12175523/ )কেউ যদি বলেন আমাদের ধর্মে LGBTQ+ Rights সমর্থন করে না,আমার বাচ্চাকে LGBT ক্লাস করতে পাঠাবো না,এটা আমার ধর্মীয় স্বাধীনতা, তখন আপনার এই ধর্মীয় স্বাধীনতাকে কেউ মূল্য দিবে না,কারণ তখন আপনার ধর্ম পালন মানবধর্মের মানবাধিকার প্রসারের বিরোধী।এইরকম বহু উদাহরণ দেয়া যাবে ধর্মের ব্যাপারে। আপনি নিজের মত পূজা করছেন,নামাজ পড়ছেন এইগুলা মেনে নিবে,কিন্তু যখনই পাবলিক লাইফে আনবেন,পরম সত্য ধর্ম মানবধর্মের সাথে আপনার ধর্মের সংঘর্ষ হবে তখনই আপনার আর ধর্মীয় স্বাধীনতার দোহাই থাকবে না। পশ্চিমা লিবারাল দর্শনের সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য দার্শনিক জন রলস বলেছেন,***'ধর্মীয় স্বাধীনতাকে কখনোই লিবারালিজমের জন্য আশংকাজনক হয়ে উঠতে দেয়া যাবে না।লিবারাল স্বাধীনতা অস্বীকার করে এমন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি দমন করা মহামারি রোধ করার মতোই জরুরি।(Theory of Justice,John Rawls)***
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়াতে (iowa) একজন ব্যক্তিকে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয় ২০১৯ সালে। চার্চ থেকে ঝোলানো সমকামীদের একটা পতাকা পোড়ানো ছিলো তার অপরাধ-( https://www.bbc.com/news/world-us-canada-50861259 )এখন মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেখা হবে না কারণ তার মত প্রকাশ মানবধর্মের বিরোধিতা করেছে।মত প্রকাশ মানবধর্মের জন্য হুমকি হলে তা বন্ধ করা হবে,মানবাধিকারের বিরোধী মত প্রকাশ করলে শাস্তি বৈধ।
UN-জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে হিউম্যানিজমের ভিত্তিতে,জাতিসংঘ মানবাধিকারের রক্ষক হিসেবে কাজ করে।সাধারণ সেন্সেই বোঝা যায়, মানবাধিকার সকল রাষ্ট্রকে মেনে চলতে হব অর্থাৎ কোন রাষ্ট্র মেনে না চললে তাকে বাধ্য করার বৈধতা UN এর আছে,তা না হলে পুরো মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টাই অর্থহীন।এইখানে দেখার বিষয় হচ্ছে ''মানবাধিকার'' এর সংজ্ঞা তৈরি হবে কিন্তু একটা ধর্মের বিধি বিধান অনুসারে, একটা ধর্মের মৌলিক নীতি অনুসারে,সেটা হল হিউম্যানিজম,মানবধর্ম। অর্থাৎ ''Humanism is being spread by the sword''-''মানবধর্ম তরবারির মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে'' কথাটা বললে ভুল হবে না! বিভিন্নরকম ভয়াবহ পন্থা অবলম্বন করা হয় মানবধর্মের প্রসারে, যেমন- Sanction যার মাধ্যমে বিধর্মী বিদ্রোহীদের জাতিকে দুর্ভিক্ষে হত্যা করা হয় যেমন- ইরাকে এর প্রভাবে প্রায় ৬ লক্ষ শিশু না খেয়ে মারা যায়-( https://www.nytimes.com/1995/12/01/w...n-reports.html )।আবার কখনো সরাসরি মানবধর্মের পবিত্র ধর্যুমদ্ধ ঘোষণা করা হয় যেখানে বিধর্মীদের সাথে যুদ্ধ করে মানবধর্মের মহান যোদ্ধারা,যাকে বলে হিউম্যানিটেরিয়ান ইনটারভেনশন(Humanitarian Intervention)-যেই পবিত্র যুদ্ধ চলেছে লিবিয়া,সিরিয়া,আফগানিস্থান,ইরাক,মধ্যপ্রাচ্যে এবং যুদ্ধে মিলিয়ন খানেক মানুষ স্রেফ 'কলেটোরাল ড্যামেজ',এক মহান লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পন্থা- https://www.telegraph.co.uk/news/wor...y-are-not.html
এখানে কোন নিরপেক্ষতার জায়গা নেই,মানবধর্মকে কোন প্রমান ছাড়াই বিশ্বাস করতে হবে।মানবধর্মের বিদ্রোহ করলে ফলাফল হবে দুর্ভিক্ষ অথবা যুদ্ধ।সমকামিতা,বিবাহ বহির্ভূত যৌনাচার মানবধর্মে বৈধ অধিকার।কিন্তু এর ইসলামিক নিয়মে শাস্তি মানবধর্ম অনুসারে অন্যায়-বর্বর।রাষ্ট্র ইসলামিক আইন বাস্তবায়ন করলে মানবধর্মের অনুসারীরা হুমকি দিয়ে বাধ্য করবে আইন প্রত্যাখ্যান করার, রাষ্ট্রে ইসলাম ধর্মের আইন অন্যায়,মানবধর্মের আইন ন্যায়,এটা মানতেই হবে,না হলে না খেয়ে মরতে হবে যেমনটা- ব্রুনাইয়ে হয়েছে,হুদুদ বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেয়ার পর পুরো পশ্চিমা বিশ্ব মানবধর্মের অনুসারীর বাধ্য করে আইন প্রত্যাখ্যান করতে ( https://www.hrw.org/news/2019/04/17/...anction-sultan https://www.washingtonpost.com/world...ff1_story.html )
''জাতিগতভাবে ইসলামের law of peoples হল, যারা ইসলাম গ্রহণ করবে তারা নিরাপত্তা লাভ করবে। আর যারা করবে না তাদের মধ্যে যারা জিযিয়া দিতে সম্মত হবে, তারাও নিরাপত্তা লাভ করবে। কিন্তু যারা জিযিয়া দিতেও অস্বীকার করবে, তাদের সাথে যুদ্ধ করা হবে। ঠিক সেকুলারিজমের ও এমন একটি law of peoples আছে। আদতে সেকুলারিজম ধর্মনিরপেক্ষতা নয়, বরং পৃথক একটি ধর্ম। এখন লিবারেল সেকুলারিজমের ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী পারস্পারিক জাতীয় সম্পর্ক কেমন হবে? অ-লিবারেলদের সাথে লিবারেলদের আচরণ কী হবে? কার বিরুদ্ধে কখন যুদ্ধ করতে?এমন প্রশ্নগুলোর উত্তরে সেকুলার বুদ্ধিজীবিরা অনেক কিছুই লিখে গেছে। প্রসিদ্ধ দার্শনিক "জন রলস" তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ "the law of peoples" এর মাঝে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে মানুষকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। বইটিতে সে "কাজানিস্থান" নামক এমন একটি কাল্পনিক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ধরে নিয়েছে, যেখানে মুসলমানদের রাজত্ব চলে এবং ইসলামী শরীয়ত প্রতিষ্ঠিত আছে।( বইটি লেখা হয় ১৯৯০ সালে, যখন রাশিয়াকে পরাজিত করে ইসলামী বিশ্ব আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকাকে এটা বলা যে, আমেরিকা এখন মুসলমানদের সাথে কিরূপ আচরণ করবে।)ফলে রলস মানুষকে চার ক্যাটাগারিতে ভাগ করেঃ
এক.লিবারেল। এরা হচ্ছে সেকুলারদের দৃষ্টিতে ন্যায়ের প্রতীক এবং সমস্ত লিবারেল রীতিনীতি মেনে চলে।
দুই.ডিসেন্ট (decent)। এরা যদিও পরিপূর্ণ লিবারেলজমের প্রবক্তা না। কিন্তু হিউম্যান রাইটস এর কিছু কনসেপ্টকে মানে এবং বাস্তবায়ন করে। ( রলস হিউম্যান রাইটস এর নূন্যতম একটা সংজ্ঞা দেয়, যেটার জন্য অন্ততপক্ষে ডিসেন্ট হওয়া লাগে। অনেক বুদ্ধিজীবি তার শিথিলতার ও বিরোধীতা করে।)
এমন লোকদেরকে সে decent hierarchical societies বলে। তার মতে,লিবারেল লোকদের জন্য এমন ডিসেন্ট লোকদের সাথে পারস্পারিক সংলাপে আসা উচিৎ। তাদের সাথে এমন আচরণ থেকে বিরত থাকতে হবে যেটা তাদের উস্কে দেয়। কারণ এতে এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিঘ্নতা আসবে। রলস এর দাবি হল, এই ডিসেন্ট লোকেরা ধীরে ধীরে স্বভাবজাত অবস্থায় ( original position) ফিরে আসবে। যেটা লিবারিলেজমের দৃষ্টিতে সত্য এবং সঠিক। এজন্য তাদের সাথে লড়ার প্রয়োজন নেই।
তিন. outlaw। এরা সেসব ব্যাক্তি, যারা হিউম্যান রাইটসকে প্রত্যাখ্যান করে এবং একে চ্যালেঞ্জ করে। রলস এর পরামর্শ হল, এমন লোকদের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। এরা পৃথিবীর জন্য হুমকি।এদের সাথে সংলাপ-আলোচনা অনর্থক বিষয়।
চার. বার্ডেন্ড ( burdened)। এরা হচ্ছে, অর্থ- সম্পদ হীন দরিদ্র লোক। বিভিন্ন কারণে যারা দারিদ্রতায় ভুগছে এবং লিবারেলজমের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে তারা সামগ্রিকভাবে অক্ষম। রলস এর মত হল, লিবারেল ও ডিসেন্ট লোকদের দায়িত্ব হল এমন লোকদের আর্থিকভাবে সাহায্য করা। যাতে করে এরা তাদের মতই লিবারেল এবং ডিসেন্ট হয়ে যায়।
লিবারিলেজমের দৃষ্টিভঙ্গি হল, যুদ্ধ ততক্ষণ পর্যন্ত অবৈধ থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত অলিবারেল লোকেরা লিবারিলেজমের কিছু মূলনীতি ও শর্ত মেনে চলবে। এখন একটু রলস ও শরীয়তের দাবিকে সামনে রেখে চিন্তা করুন যে, উভয়টির মাঝে মৌলিক পার্থক্য কী? পার্থক্য এটাই যে, আল্লাহ ইসলামকে যেই "হক" এর মর্যাদা দিয়েছেন, রলস লিবারিলেজমকে সেই মর্যাদার স্থানে রাখছে। (মা'আযাল্লাহ) অর্থাৎ এখানে সরাসরি রবের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে।ইসলামের ল অফ পিপলস ইমানকে ঘিরে আবর্তিত হয় আর প্রাশ্চাত্যের ল অফ পিপল হিউম্যানিজমকে ঘিরে আবর্তিত হয়।অথচ ইসলামের অবস্থান এক্ষেত্রে গোঁড়া,কট্টর ও বর্বর হিসেবে আর তারা তো নাম ধারণ করেই আছে লিবারাল।কী নির্মম বৈপরীত্য!
আমরা যদি পৃথিবীর বর্তমান বাস্তবতার দিকে নজর দেই, তাহলে দেখব সাম্রাজ্যবাদীরা এই ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ীই শত্রু-মিত্র চিহ্নিত করছে এবং নিজেদের পলিসি নির্ধারণ করছে। এজন্যই তারা শরীয়তের দাবিদার প্রত্যেক সদস্যকে নিজেদের জন্য হুমকি মনে করে। যারাই শরীয়া প্রতিষ্ঠার আওয়াজ তুলে, তাদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করে। কারণ তাদের দৃষ্টিতে, এসব লোক হল, outlaw। পক্ষান্তরে মুসলিমদের যারা পাশ্চাত্যবাদকে আদর্শগতভাবে কিংবা কার্যত মেনে নিয়েছে তাদের সাথে সংলাপ-আলোচনা চলে। ঘুম পারানি গল্প শুনিয়ে পুষে পুষে রাখে। এরা হচ্ছে ডিসেন্ট। আর এদের অনেকে ঠিকই একটা পর্যায়ে "রলস" এর দাবি অনুযায়ী লিবারিলেজমকে পলিসি হিসেবে গ্রহণ করে নিচ্ছে। আর বর্তমানে বার্ডেন্ড হল, বিভিন্ন উদ্বাস্তু শিবির এবং গরীব অঞ্চলগুলো। যেখানে আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থাগুলো "রলস" এর দেখানো পদ্ধতিতে কাজ করছে।
'' ( হিউম্যান বিয়িং শতাব্দীর বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব,ল অফ পিপল, পৃষ্ঠা ১৩৫-১৩৬)
***''What I call human rights are, as I have said, a proper subset of the rights possessed by citizens in a liberal constitutional democratic regime, or of the rights of the members of a decent hierarchical society. As we have worked out the Law of Peoples for liberal and decent peoples, these peoples simply do not tolerate outlaw states. This refusal to tolerate those states is a consequence of liberalism and decency. If the political conception of political liberalism is sound, and if the steps we have taken in developing the Law of Peoples are also sound, then liberal and decent peoples have the right, under the Law of Peoples, not to tolerate outlaw states.Liberal and decent peoples have extremely good reasons for their attitude. Outlaw states are aggressive and dangerous; all peoples are safer and more secure if such states change, or are forced to change, their ways.''(The law of peoples,page 81)***
মূল সংঘাত এখানে নৈতিকতার মানদণ্ডে,হিউম্যানিজম এনলাইটেনমেন্টের ফসল,মানবধর্মের নৈতিকতার মানদণ্ডে ''মানুষ'' নিজের উপর সার্বভৌম,মানুষ নিজেই নিজের জন্য নিজ খেয়াল খুশি অনুসারে উচিত অনুচিত নির্ধারণ করবে।এনলাইটেনমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক ইম্যানুয়েল কান্টের মতে,ব্যাক্তি অন্য কারো ঠিক করে দেয়া ভালোমন্দের মাপকাঠি মেনে নিতে বাধ্য না, নিজের ইচ্ছেমতো ভালোমন্দ নির্ধারনের এ ক্ষমতাই ব্যাক্তির এনলাইটেনমেন্টের (আলোকিত হওয়া, জ্ঞানপ্রাপ্ত হওয়া) বৈশিষ্ট্য।নিজের জীবনে কী করা উচিৎ, কী করা উচিৎ না – এ প্রশ্নগুলোর উত্তর ঠিক করবে ব্যাক্তি নিজে, এটা তার একচ্ছত্র অধিকার।(Answering the Question: What is Enlightenment? Kant) মানুষ অন্য কারোর স্বাধীন ইচ্ছায় হস্তক্ষেপ করতে পারবেনা, নিজের উপর সে সার্বভৌম,তার জীবনে নিজেকে নিয়ে তার কোন কাজটা তার করা উচিত বা উচিত সেইটা নির্ধারণ করবে সে নিজেই,এটাই স্বাধীনতা,এটাই নৈতিকতা,মানুষ নিজে নিজের জীবনে মূল্যবোধ তৈরি করবে।সেই স্বাধীন ব্যাক্তি যে নৈতিকতার স্রষ্টা,নিজের নৈতিকতা নিজেই ঠিক করে(The Human Person in Contemporary Philosophy,Fredrick C.Copleston:Philosophy:Vol.25,No.92,pp.3-19) নিজের উপর মানুষ সার্বভৌম,তার নিজের উপর আছে একচ্ছত্র অধিকার,নিজের সার্বভৌমত্তে সে নিজে স্বাধীনভাবে নির্ধারণ করবে তার জন্য ভাল-খারাপ,উচিত-অনুচিত,এটাই এখানে নৈতিকতা এবং অন্য কারোর সার্বভৌমত্তে হস্তক্ষেপ করা অনৈতিকতা-অন্যায়।মুলত এই স্বাধীনতার ধারনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে হিউম্যানিজমের নৈতিকতার মানদণ্ড।
মানবধর্ম এখন এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যেন মানবধর্ম গ্রহণ করে নিতে আপনার নিজ ধর্ম ত্যাগ করার কোন প্রয়োজন নেই কিন্তু মানবধর্ম গ্রহণ করলে আপনি নিজ ধর্মের অনুসারী আর থাকেন না।তখন মানবধর্মের পাশাপাশি নিজ বিভ্রান্তিতে করতে থাকা ধর্ম পালন মানবধর্ম সানন্দে গ্রহণ করে নেয় কারণ আপনি গ্রহণ করে নিয়েছেন ''সবার উপরে মানুষ সত্য',তাহার উপর সত্য নাই'',ইসলাম ধর্মের কোনো হালাল বিধান হিউম্যানিজম অনুসারে অমানবিক হলে,আপনি ঐ হালাল বিধানকে অস্বীকার করবেন বা বিকৃতভাবে মানবধর্মের সাথে মিলিয়ে নতুন ব্যাখ্যা হাজির করবেন।আপনি আল্লাহর উপাসনা করছেন নাকি দুর্গার উপাসনা করছেন সেটা মানবধর্মের আর দেখার বিষয় না কারণ তখন আপনি মুল জায়গায় নফসের উপাসনা করে যাচ্ছেন,দরকার পরলে একইসাথে একাধিক ধর্মের ঈশ্বরের 'উপাসনা' করেন তাতে মূলত সত্য অনুসন্ধান উপেক্ষা করে নফসের নিঃশর্ত আনুগত্যই করা হয়,আল্লাহ বা দুর্গা কারোরই আনুগত্য হয় না,সকল ধর্মই মানবধর্মের মতে সমান-অর্থহীন,যার ট্রুথ ভ্যালু নেই, প্রাগমাটিক ভ্যালু থাকলে থাকতে পারে,ওইটুকুই রক্ষা করা হবে তাও মানবধর্মের বিধি নিষেধের মধ্যেই,যখনই আপনি আল্লাহর আনুগত্যের জন্য নফসের আনুগত্য ছেড়ে দিবেন,মানবধর্মে অমানবিক কিন্তু ইসলামের হালাল বিধান মানবেন তখনই মানবধর্ম আর মেনে নিবে না।মানবধর্মের ঈশ্বর মানুষের প্রবৃত্তি-নফস,মানুষের সুখ-ইচ্ছা-খেয়ালখুশি নির্ধারণ করে দেয় নৈতিকতা কোনটা,অন্য কোন ঈশ্বরের সার্বভৌমত্তে হস্তক্ষেপ না করে অর্থাৎ অন্য কারোর প্রবৃত্তির- স্বাধীন ইচ্ছার চর্চায় বাধা না দিয়ে একজন যা ইচ্ছা করতে পারে,পূজা হয় এখানে নফসের।এই ধর্ম ইহজাগতিক,ইহজগতেই পরম সুখ অর্জন করাই এখানে মুল উদ্দেশ্য। https://americanhumanist.org/what-is...n-of-humanism/
***এখানে নিরপেক্ষতা বলতে কিছু নেই,সংঘাত এখানে স্পষ্ট-***
***ইসলাম ধর্মের আছে নিজ সংজ্ঞার হালাল-হারাম, মানবধর্মের আছে নিজ সংজ্ঞার মানবিক-অমানবিক***
***ইসলাম ধর্মের আছে শরিয়া,মানবধর্মের আছে মানবাধিকার***
***ইসলাম ধর্মের আছে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ,মানবধর্মের আছে হিউম্যানিটারিয়ান ইন্টারভেনশন***
***ইসলাম ধর্মের আছে জিহাদী,মানবধর্মের আছে শান্তিরক্ষী বাহিনী***
***ইসলাম ধর্মের আছে খিলাফাত,মানবধর্মের আছে লিবারাল ডেমোক্রেসি***
***ইসলাম ধর্মের আছে মুরতাদ,হারবি,কাফের মানবধর্মের আছে জঙ্গি, আউট'ল,বর্বর***
***ইসলাম ধর্মের আছে আল্লাহর দেয়া সংজ্ঞার ''মুসলিম'', মানবধর্মের আছে মানুষের প্রবৃত্তির দেয়া সংজ্ঞার ''হিউম্যান বিয়িং''***
***আপনি বেছে নিবেন আপনার ধর্ম কোনটা***
পশ্চিমা সভ্যতায় সবচেয়ে গৃহীত একটি মতবাদ হল হিউম্যানিজম। ''আমি একজন ধার্মিক হওয়ার আগে একজন মানুষ'' ''সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপর সত্য নাই'' '' সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ধর্ম হল মানবতা,মানবধর্ম যা মানুষকে ভালবাসতে শিখায়''-বিভিন্ন জায়গায় আপনি দেখবেন একজনকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে আপনার ধর্ম কি,তার উত্তর মানবতা- এই ধরণের কথাগুলা সেকুলার প্যারাডাইমে বেশ কমন কিছু উক্তি। হিউম্যানিজমকে একটা স্বতন্ত্র ধর্ম হিসেবে চিন্তা করা যায়, এটা নিয়ে তেমন কোন আপত্তি থাকার কথা না কারণ সেকুলার সংস্কৃতিতে এটিকে সরাসরি এভাবেই তুলে ধরা হয় বিভিন্ন রেটোরিকের মাধ্যমে। মানবধর্ম নিরপেক্ষ বলে দাবি করা হয় কিন্তু এর নিরপেক্ষতার স্বরূপ বোঝার জন্য একটা এক্সপেরিমেন্ট করেন,কিছুক্ষণের জন্য হিউম্যানিজমের ব্যাপারে সব ব্যাকগ্রাউনড ইনফরমেশন মাথা থেকে মুছে ফেলেন। এখন,
''মানবধর্ম নিজেকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে দাবি করে।মানবধর্ম নিজেকে নৈতিকতার একমাত্র সঠিক মানদণ্ড বলে বিশ্বাস করে, কোন কাজ ভাল-কোন কাজ খারাপ এইটা আপনাকে বলে দিবে মানবধর্ম,উচিত-অনুচিতের সংজ্ঞা হবে মানবধর্ম অনুসারে,মানবধর্ম দিবে নৈতিক বিধি-বিধান।মানবধর্ম দাবি করে পৃথিবীর সকল অনৈতিকতার উৎস মানবধর্মকে মেনে না নেয়া,মানবধর্মের অবাধ্যতা,পৃথিবীতে সুখ-শান্তি আসবে সর্বত্র মানবধর্ম প্রতিষ্ঠা পেলে।সকল রাষ্ট্রের আইনের ন্যায্যতা বিচার করা হবে মানবধর্মের মানদণ্ড অনুসারে,সকল রাষ্ট্র মানবধর্ম অনুসারে পরিচালিত হওয়া উচিত।মানবধর্ম ততক্ষণ পর্যন্তই ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দিবে যতক্ষণ পর্যন্ত কারোর ধর্ম পালন মানবধর্মের বিরোধীতা না করে,ধর্মকে প্রচারও করতে হবে মানবধর্মের সাথে সমর্থক করে।বাকস্বাধীনতা ততক্ষণ পর্যন্তই থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত মানবধর্মের নৈতিকতা নিয়ে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ করে কিছু বলা না হচ্ছে।কোন পোশাকের স্বাধীনতা ততক্ষণ পর্যন্তই থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত তা মানবধর্মের জন্য ক্ষতিকর প্রতীয়মান না হয়।সারা বিশ্বজুড়ে যেভাবে সম্ভব মানবধর্মকে প্রচার করার চেষ্টা করা হবে। মিডিয়া,মিউজিক,মুভি,কালচার সবখানে মানবধর্মের প্রচার করা হবে, বিভিন্ন এনজিও,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রচার করবে মানবধর্ম।এমনকি বাচ্চাদের পাঠ্যপুস্তকেও প্রসার করানো হবে মানবধর্ম,ছোটবেলা থেকেই তাদের মানবধর্মের দীক্ষা দিয়ে বড় করা হবে,কোন পিতামাতা মানবধর্মের দীক্ষা নিতে বাধা দিলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।কোন রাষ্ট্র মানবধর্ম অনুসারে না চললে,মানবধর্মের বিরোধিতা করলে আন্তর্জাতিকভাবে সেই রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণে সামরিক অভিযান চালানো বৈধ,কোন রাষ্ট্রে জোরপূর্বক মানবধর্মের আইন বাস্তবায়ন করা বৈধ।কেউ মানবধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলে,মানবধর্মের শত্রুরূপে প্রকাশ পেলে তাকে হত্যা,বা সেই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বৈধ।মানবধর্মের রক্ষার্থে করা যুদ্ধের ফলাফলে লক্ষ লক্ষ নিরপরাধ মানুষ মারা গেলেও সেই যুদ্ধ বৈধ,সেই মৃত মানুষগুলো কোন মহান লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে করা যুদ্ধের কলেটোরাল ড্যামেজ।মানবধর্ম প্রতিষ্ঠার মহান যুদ্ধে মারা যাওয়া সব সৈন্য মহান শহিদ যারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিজের জীবন দিয়ে দিয়েছে।শুধুমাত্র মানবধর্মই নৈতিক ত্রুটিহীন,পরম সত্য,মানবধর্মের অনুসরণ করেই মানবজাতি পেতে পারে পরম সুখ,মানবধর্ম শুধু একটি ধর্ম না,এটি একটি পূর্ণ জীবনব্যবস্থা,এর আছে নিজস্ব নৈতিকতার মানদণ্ড,নিজস্ব আইনব্যবস্থা,নিজস্ব রাষ্ট্রব্যবস্থা,ব্যাক্তিজীবনে ও সামাজিকভাবে আপনি কোন অমানবিক কাজ করছেন কিনা সেটা দেখবে মানবধর্ম,সর্বত্র মানবধর্মের অনুসারীকে মেনে চলতে হবে মানবধর্ম।মানবধর্ম একটি সহজাত সত্য,কোন প্রমান ছাড়াই মানবধর্মকে মেনে নিতে হবে,নৈতিকতার স্বরূপ হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে।''
এখন এখানে মানবধর্মের জায়গায় ইসলাম বসিয়ে আরেকবার পড়েন।কি বুঝতে পারলেন?এ ব্যাপারে নিজে ভেবে দেখুন।
এখানকার প্রত্যেকটা কথা হিউম্যানিজমের আকিদা অনুসারে সঠিক। হিউম্যানিজম কোন প্রমাণ ছাড়াই বিশ্বাস করতে হবে,একে এমনভাবে প্রচার করা হয়েছে বছরের পর বছর ধরে যে একে আমাদের কাছে সহজাত প্রবৃত্তি বা কমন সেন্স মনে হচ্ছে।পশ্চিমা বিশ্ব আপনাকে ইসলাম ধর্ম সত্য কেন এর প্রমাণ চাইতে শিখাবে, শিখাবে প্রমাণ ছাড়া কোনকিছু বিশ্বাস না করতে কিন্তু প্রমাণ ছাড়াই তারা মানবধর্মকে প্রচার করবে,উপস্থাপন করবে স্বপ্রমানিত সত্য হিসেবে,তারা কখনোই মানবধর্মকে প্রশ্ন করতে শিখাবে না।
হিউম্যানিজম নিজেকে নৈতিকতার সঠিক মানদণ্ড বলে দাবি করে, হিউম্যানিজম বলে দিবে ভাল-খারাপ কি,বৈধ- অবৈধ কি,যা কিছু হিউম্যানিজমের সাথে সাংঘর্ষিক তা-ই বর্বরতা-অসভ্যতা।হিউম্যানিজমের ধারণার প্রচার সবখানে,এমনকি বাচ্চাদের পাঠ্যপুস্তকেও লালন শাহের ''মানবধর্ম'' কবিতা,শিক্ষার মধ্যে থাকে হিউম্যানিসট প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা, পশ্চিমা সেকুলার রাষ্ট্রে তো বাচ্চাদের বাধ্যতামূলক LGBT ক্লাস,যেখানে না পাঠালে আপনি যাবেন জেলে-( https://metro.co.uk/2020/02/03/dad-r...jail-12175523/ )কেউ যদি বলেন আমাদের ধর্মে LGBTQ+ Rights সমর্থন করে না,আমার বাচ্চাকে LGBT ক্লাস করতে পাঠাবো না,এটা আমার ধর্মীয় স্বাধীনতা, তখন আপনার এই ধর্মীয় স্বাধীনতাকে কেউ মূল্য দিবে না,কারণ তখন আপনার ধর্ম পালন মানবধর্মের মানবাধিকার প্রসারের বিরোধী।এইরকম বহু উদাহরণ দেয়া যাবে ধর্মের ব্যাপারে। আপনি নিজের মত পূজা করছেন,নামাজ পড়ছেন এইগুলা মেনে নিবে,কিন্তু যখনই পাবলিক লাইফে আনবেন,পরম সত্য ধর্ম মানবধর্মের সাথে আপনার ধর্মের সংঘর্ষ হবে তখনই আপনার আর ধর্মীয় স্বাধীনতার দোহাই থাকবে না। পশ্চিমা লিবারাল দর্শনের সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য দার্শনিক জন রলস বলেছেন,***'ধর্মীয় স্বাধীনতাকে কখনোই লিবারালিজমের জন্য আশংকাজনক হয়ে উঠতে দেয়া যাবে না।লিবারাল স্বাধীনতা অস্বীকার করে এমন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি দমন করা মহামারি রোধ করার মতোই জরুরি।(Theory of Justice,John Rawls)***
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়াতে (iowa) একজন ব্যক্তিকে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয় ২০১৯ সালে। চার্চ থেকে ঝোলানো সমকামীদের একটা পতাকা পোড়ানো ছিলো তার অপরাধ-( https://www.bbc.com/news/world-us-canada-50861259 )এখন মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেখা হবে না কারণ তার মত প্রকাশ মানবধর্মের বিরোধিতা করেছে।মত প্রকাশ মানবধর্মের জন্য হুমকি হলে তা বন্ধ করা হবে,মানবাধিকারের বিরোধী মত প্রকাশ করলে শাস্তি বৈধ।
UN-জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে হিউম্যানিজমের ভিত্তিতে,জাতিসংঘ মানবাধিকারের রক্ষক হিসেবে কাজ করে।সাধারণ সেন্সেই বোঝা যায়, মানবাধিকার সকল রাষ্ট্রকে মেনে চলতে হব অর্থাৎ কোন রাষ্ট্র মেনে না চললে তাকে বাধ্য করার বৈধতা UN এর আছে,তা না হলে পুরো মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টাই অর্থহীন।এইখানে দেখার বিষয় হচ্ছে ''মানবাধিকার'' এর সংজ্ঞা তৈরি হবে কিন্তু একটা ধর্মের বিধি বিধান অনুসারে, একটা ধর্মের মৌলিক নীতি অনুসারে,সেটা হল হিউম্যানিজম,মানবধর্ম। অর্থাৎ ''Humanism is being spread by the sword''-''মানবধর্ম তরবারির মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে'' কথাটা বললে ভুল হবে না! বিভিন্নরকম ভয়াবহ পন্থা অবলম্বন করা হয় মানবধর্মের প্রসারে, যেমন- Sanction যার মাধ্যমে বিধর্মী বিদ্রোহীদের জাতিকে দুর্ভিক্ষে হত্যা করা হয় যেমন- ইরাকে এর প্রভাবে প্রায় ৬ লক্ষ শিশু না খেয়ে মারা যায়-( https://www.nytimes.com/1995/12/01/w...n-reports.html )।আবার কখনো সরাসরি মানবধর্মের পবিত্র ধর্যুমদ্ধ ঘোষণা করা হয় যেখানে বিধর্মীদের সাথে যুদ্ধ করে মানবধর্মের মহান যোদ্ধারা,যাকে বলে হিউম্যানিটেরিয়ান ইনটারভেনশন(Humanitarian Intervention)-যেই পবিত্র যুদ্ধ চলেছে লিবিয়া,সিরিয়া,আফগানিস্থান,ইরাক,মধ্যপ্রাচ্যে এবং যুদ্ধে মিলিয়ন খানেক মানুষ স্রেফ 'কলেটোরাল ড্যামেজ',এক মহান লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পন্থা- https://www.telegraph.co.uk/news/wor...y-are-not.html
এখানে কোন নিরপেক্ষতার জায়গা নেই,মানবধর্মকে কোন প্রমান ছাড়াই বিশ্বাস করতে হবে।মানবধর্মের বিদ্রোহ করলে ফলাফল হবে দুর্ভিক্ষ অথবা যুদ্ধ।সমকামিতা,বিবাহ বহির্ভূত যৌনাচার মানবধর্মে বৈধ অধিকার।কিন্তু এর ইসলামিক নিয়মে শাস্তি মানবধর্ম অনুসারে অন্যায়-বর্বর।রাষ্ট্র ইসলামিক আইন বাস্তবায়ন করলে মানবধর্মের অনুসারীরা হুমকি দিয়ে বাধ্য করবে আইন প্রত্যাখ্যান করার, রাষ্ট্রে ইসলাম ধর্মের আইন অন্যায়,মানবধর্মের আইন ন্যায়,এটা মানতেই হবে,না হলে না খেয়ে মরতে হবে যেমনটা- ব্রুনাইয়ে হয়েছে,হুদুদ বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেয়ার পর পুরো পশ্চিমা বিশ্ব মানবধর্মের অনুসারীর বাধ্য করে আইন প্রত্যাখ্যান করতে ( https://www.hrw.org/news/2019/04/17/...anction-sultan https://www.washingtonpost.com/world...ff1_story.html )
''জাতিগতভাবে ইসলামের law of peoples হল, যারা ইসলাম গ্রহণ করবে তারা নিরাপত্তা লাভ করবে। আর যারা করবে না তাদের মধ্যে যারা জিযিয়া দিতে সম্মত হবে, তারাও নিরাপত্তা লাভ করবে। কিন্তু যারা জিযিয়া দিতেও অস্বীকার করবে, তাদের সাথে যুদ্ধ করা হবে। ঠিক সেকুলারিজমের ও এমন একটি law of peoples আছে। আদতে সেকুলারিজম ধর্মনিরপেক্ষতা নয়, বরং পৃথক একটি ধর্ম। এখন লিবারেল সেকুলারিজমের ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী পারস্পারিক জাতীয় সম্পর্ক কেমন হবে? অ-লিবারেলদের সাথে লিবারেলদের আচরণ কী হবে? কার বিরুদ্ধে কখন যুদ্ধ করতে?এমন প্রশ্নগুলোর উত্তরে সেকুলার বুদ্ধিজীবিরা অনেক কিছুই লিখে গেছে। প্রসিদ্ধ দার্শনিক "জন রলস" তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ "the law of peoples" এর মাঝে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে মানুষকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। বইটিতে সে "কাজানিস্থান" নামক এমন একটি কাল্পনিক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ধরে নিয়েছে, যেখানে মুসলমানদের রাজত্ব চলে এবং ইসলামী শরীয়ত প্রতিষ্ঠিত আছে।( বইটি লেখা হয় ১৯৯০ সালে, যখন রাশিয়াকে পরাজিত করে ইসলামী বিশ্ব আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকাকে এটা বলা যে, আমেরিকা এখন মুসলমানদের সাথে কিরূপ আচরণ করবে।)ফলে রলস মানুষকে চার ক্যাটাগারিতে ভাগ করেঃ
এক.লিবারেল। এরা হচ্ছে সেকুলারদের দৃষ্টিতে ন্যায়ের প্রতীক এবং সমস্ত লিবারেল রীতিনীতি মেনে চলে।
দুই.ডিসেন্ট (decent)। এরা যদিও পরিপূর্ণ লিবারেলজমের প্রবক্তা না। কিন্তু হিউম্যান রাইটস এর কিছু কনসেপ্টকে মানে এবং বাস্তবায়ন করে। ( রলস হিউম্যান রাইটস এর নূন্যতম একটা সংজ্ঞা দেয়, যেটার জন্য অন্ততপক্ষে ডিসেন্ট হওয়া লাগে। অনেক বুদ্ধিজীবি তার শিথিলতার ও বিরোধীতা করে।)
এমন লোকদেরকে সে decent hierarchical societies বলে। তার মতে,লিবারেল লোকদের জন্য এমন ডিসেন্ট লোকদের সাথে পারস্পারিক সংলাপে আসা উচিৎ। তাদের সাথে এমন আচরণ থেকে বিরত থাকতে হবে যেটা তাদের উস্কে দেয়। কারণ এতে এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিঘ্নতা আসবে। রলস এর দাবি হল, এই ডিসেন্ট লোকেরা ধীরে ধীরে স্বভাবজাত অবস্থায় ( original position) ফিরে আসবে। যেটা লিবারিলেজমের দৃষ্টিতে সত্য এবং সঠিক। এজন্য তাদের সাথে লড়ার প্রয়োজন নেই।
তিন. outlaw। এরা সেসব ব্যাক্তি, যারা হিউম্যান রাইটসকে প্রত্যাখ্যান করে এবং একে চ্যালেঞ্জ করে। রলস এর পরামর্শ হল, এমন লোকদের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। এরা পৃথিবীর জন্য হুমকি।এদের সাথে সংলাপ-আলোচনা অনর্থক বিষয়।
চার. বার্ডেন্ড ( burdened)। এরা হচ্ছে, অর্থ- সম্পদ হীন দরিদ্র লোক। বিভিন্ন কারণে যারা দারিদ্রতায় ভুগছে এবং লিবারেলজমের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে তারা সামগ্রিকভাবে অক্ষম। রলস এর মত হল, লিবারেল ও ডিসেন্ট লোকদের দায়িত্ব হল এমন লোকদের আর্থিকভাবে সাহায্য করা। যাতে করে এরা তাদের মতই লিবারেল এবং ডিসেন্ট হয়ে যায়।
লিবারিলেজমের দৃষ্টিভঙ্গি হল, যুদ্ধ ততক্ষণ পর্যন্ত অবৈধ থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত অলিবারেল লোকেরা লিবারিলেজমের কিছু মূলনীতি ও শর্ত মেনে চলবে। এখন একটু রলস ও শরীয়তের দাবিকে সামনে রেখে চিন্তা করুন যে, উভয়টির মাঝে মৌলিক পার্থক্য কী? পার্থক্য এটাই যে, আল্লাহ ইসলামকে যেই "হক" এর মর্যাদা দিয়েছেন, রলস লিবারিলেজমকে সেই মর্যাদার স্থানে রাখছে। (মা'আযাল্লাহ) অর্থাৎ এখানে সরাসরি রবের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে।ইসলামের ল অফ পিপলস ইমানকে ঘিরে আবর্তিত হয় আর প্রাশ্চাত্যের ল অফ পিপল হিউম্যানিজমকে ঘিরে আবর্তিত হয়।অথচ ইসলামের অবস্থান এক্ষেত্রে গোঁড়া,কট্টর ও বর্বর হিসেবে আর তারা তো নাম ধারণ করেই আছে লিবারাল।কী নির্মম বৈপরীত্য!
আমরা যদি পৃথিবীর বর্তমান বাস্তবতার দিকে নজর দেই, তাহলে দেখব সাম্রাজ্যবাদীরা এই ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ীই শত্রু-মিত্র চিহ্নিত করছে এবং নিজেদের পলিসি নির্ধারণ করছে। এজন্যই তারা শরীয়তের দাবিদার প্রত্যেক সদস্যকে নিজেদের জন্য হুমকি মনে করে। যারাই শরীয়া প্রতিষ্ঠার আওয়াজ তুলে, তাদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করে। কারণ তাদের দৃষ্টিতে, এসব লোক হল, outlaw। পক্ষান্তরে মুসলিমদের যারা পাশ্চাত্যবাদকে আদর্শগতভাবে কিংবা কার্যত মেনে নিয়েছে তাদের সাথে সংলাপ-আলোচনা চলে। ঘুম পারানি গল্প শুনিয়ে পুষে পুষে রাখে। এরা হচ্ছে ডিসেন্ট। আর এদের অনেকে ঠিকই একটা পর্যায়ে "রলস" এর দাবি অনুযায়ী লিবারিলেজমকে পলিসি হিসেবে গ্রহণ করে নিচ্ছে। আর বর্তমানে বার্ডেন্ড হল, বিভিন্ন উদ্বাস্তু শিবির এবং গরীব অঞ্চলগুলো। যেখানে আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থাগুলো "রলস" এর দেখানো পদ্ধতিতে কাজ করছে।
'' ( হিউম্যান বিয়িং শতাব্দীর বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব,ল অফ পিপল, পৃষ্ঠা ১৩৫-১৩৬)
***''What I call human rights are, as I have said, a proper subset of the rights possessed by citizens in a liberal constitutional democratic regime, or of the rights of the members of a decent hierarchical society. As we have worked out the Law of Peoples for liberal and decent peoples, these peoples simply do not tolerate outlaw states. This refusal to tolerate those states is a consequence of liberalism and decency. If the political conception of political liberalism is sound, and if the steps we have taken in developing the Law of Peoples are also sound, then liberal and decent peoples have the right, under the Law of Peoples, not to tolerate outlaw states.Liberal and decent peoples have extremely good reasons for their attitude. Outlaw states are aggressive and dangerous; all peoples are safer and more secure if such states change, or are forced to change, their ways.''(The law of peoples,page 81)***
মূল সংঘাত এখানে নৈতিকতার মানদণ্ডে,হিউম্যানিজম এনলাইটেনমেন্টের ফসল,মানবধর্মের নৈতিকতার মানদণ্ডে ''মানুষ'' নিজের উপর সার্বভৌম,মানুষ নিজেই নিজের জন্য নিজ খেয়াল খুশি অনুসারে উচিত অনুচিত নির্ধারণ করবে।এনলাইটেনমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক ইম্যানুয়েল কান্টের মতে,ব্যাক্তি অন্য কারো ঠিক করে দেয়া ভালোমন্দের মাপকাঠি মেনে নিতে বাধ্য না, নিজের ইচ্ছেমতো ভালোমন্দ নির্ধারনের এ ক্ষমতাই ব্যাক্তির এনলাইটেনমেন্টের (আলোকিত হওয়া, জ্ঞানপ্রাপ্ত হওয়া) বৈশিষ্ট্য।নিজের জীবনে কী করা উচিৎ, কী করা উচিৎ না – এ প্রশ্নগুলোর উত্তর ঠিক করবে ব্যাক্তি নিজে, এটা তার একচ্ছত্র অধিকার।(Answering the Question: What is Enlightenment? Kant) মানুষ অন্য কারোর স্বাধীন ইচ্ছায় হস্তক্ষেপ করতে পারবেনা, নিজের উপর সে সার্বভৌম,তার জীবনে নিজেকে নিয়ে তার কোন কাজটা তার করা উচিত বা উচিত সেইটা নির্ধারণ করবে সে নিজেই,এটাই স্বাধীনতা,এটাই নৈতিকতা,মানুষ নিজে নিজের জীবনে মূল্যবোধ তৈরি করবে।সেই স্বাধীন ব্যাক্তি যে নৈতিকতার স্রষ্টা,নিজের নৈতিকতা নিজেই ঠিক করে(The Human Person in Contemporary Philosophy,Fredrick C.Copleston:Philosophy:Vol.25,No.92,pp.3-19) নিজের উপর মানুষ সার্বভৌম,তার নিজের উপর আছে একচ্ছত্র অধিকার,নিজের সার্বভৌমত্তে সে নিজে স্বাধীনভাবে নির্ধারণ করবে তার জন্য ভাল-খারাপ,উচিত-অনুচিত,এটাই এখানে নৈতিকতা এবং অন্য কারোর সার্বভৌমত্তে হস্তক্ষেপ করা অনৈতিকতা-অন্যায়।মুলত এই স্বাধীনতার ধারনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে হিউম্যানিজমের নৈতিকতার মানদণ্ড।
মানবধর্ম এখন এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যেন মানবধর্ম গ্রহণ করে নিতে আপনার নিজ ধর্ম ত্যাগ করার কোন প্রয়োজন নেই কিন্তু মানবধর্ম গ্রহণ করলে আপনি নিজ ধর্মের অনুসারী আর থাকেন না।তখন মানবধর্মের পাশাপাশি নিজ বিভ্রান্তিতে করতে থাকা ধর্ম পালন মানবধর্ম সানন্দে গ্রহণ করে নেয় কারণ আপনি গ্রহণ করে নিয়েছেন ''সবার উপরে মানুষ সত্য',তাহার উপর সত্য নাই'',ইসলাম ধর্মের কোনো হালাল বিধান হিউম্যানিজম অনুসারে অমানবিক হলে,আপনি ঐ হালাল বিধানকে অস্বীকার করবেন বা বিকৃতভাবে মানবধর্মের সাথে মিলিয়ে নতুন ব্যাখ্যা হাজির করবেন।আপনি আল্লাহর উপাসনা করছেন নাকি দুর্গার উপাসনা করছেন সেটা মানবধর্মের আর দেখার বিষয় না কারণ তখন আপনি মুল জায়গায় নফসের উপাসনা করে যাচ্ছেন,দরকার পরলে একইসাথে একাধিক ধর্মের ঈশ্বরের 'উপাসনা' করেন তাতে মূলত সত্য অনুসন্ধান উপেক্ষা করে নফসের নিঃশর্ত আনুগত্যই করা হয়,আল্লাহ বা দুর্গা কারোরই আনুগত্য হয় না,সকল ধর্মই মানবধর্মের মতে সমান-অর্থহীন,যার ট্রুথ ভ্যালু নেই, প্রাগমাটিক ভ্যালু থাকলে থাকতে পারে,ওইটুকুই রক্ষা করা হবে তাও মানবধর্মের বিধি নিষেধের মধ্যেই,যখনই আপনি আল্লাহর আনুগত্যের জন্য নফসের আনুগত্য ছেড়ে দিবেন,মানবধর্মে অমানবিক কিন্তু ইসলামের হালাল বিধান মানবেন তখনই মানবধর্ম আর মেনে নিবে না।মানবধর্মের ঈশ্বর মানুষের প্রবৃত্তি-নফস,মানুষের সুখ-ইচ্ছা-খেয়ালখুশি নির্ধারণ করে দেয় নৈতিকতা কোনটা,অন্য কোন ঈশ্বরের সার্বভৌমত্তে হস্তক্ষেপ না করে অর্থাৎ অন্য কারোর প্রবৃত্তির- স্বাধীন ইচ্ছার চর্চায় বাধা না দিয়ে একজন যা ইচ্ছা করতে পারে,পূজা হয় এখানে নফসের।এই ধর্ম ইহজাগতিক,ইহজগতেই পরম সুখ অর্জন করাই এখানে মুল উদ্দেশ্য। https://americanhumanist.org/what-is...n-of-humanism/
***এখানে নিরপেক্ষতা বলতে কিছু নেই,সংঘাত এখানে স্পষ্ট-***
***ইসলাম ধর্মের আছে নিজ সংজ্ঞার হালাল-হারাম, মানবধর্মের আছে নিজ সংজ্ঞার মানবিক-অমানবিক***
***ইসলাম ধর্মের আছে শরিয়া,মানবধর্মের আছে মানবাধিকার***
***ইসলাম ধর্মের আছে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ,মানবধর্মের আছে হিউম্যানিটারিয়ান ইন্টারভেনশন***
***ইসলাম ধর্মের আছে জিহাদী,মানবধর্মের আছে শান্তিরক্ষী বাহিনী***
***ইসলাম ধর্মের আছে খিলাফাত,মানবধর্মের আছে লিবারাল ডেমোক্রেসি***
***ইসলাম ধর্মের আছে মুরতাদ,হারবি,কাফের মানবধর্মের আছে জঙ্গি, আউট'ল,বর্বর***
***ইসলাম ধর্মের আছে আল্লাহর দেয়া সংজ্ঞার ''মুসলিম'', মানবধর্মের আছে মানুষের প্রবৃত্তির দেয়া সংজ্ঞার ''হিউম্যান বিয়িং''***
***আপনি বেছে নিবেন আপনার ধর্ম কোনটা***