Announcement

Collapse
No announcement yet.

(15) আপনি কি সিরাতে মুস্তাকীম (সঠিক পথ) এর পরিচয় জানতে ইচ্ছুক? (15)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • (15) আপনি কি সিরাতে মুস্তাকীম (সঠিক পথ) এর পরিচয় জানতে ইচ্ছুক? (15)



    (15) আপনি কি সিরাতে মুস্তাকীম (সঠিক পথ) এর পরিচয়
    জানতে ইচ্ছুক? (15)


    وَدُّوۡا لَوۡ تَکۡفُرُوۡنَ کَمَا کَفَرُوۡا فَتَکُوۡنُوۡنَ سَوَآءً فَلَا تَتَّخِذُوۡا مِنۡہُمۡ اَوۡلِیَآءَ حَتّٰی یُہَاجِرُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَخُذُوۡہُمۡ وَ اقۡتُلُوۡہُمۡ حَیۡثُ وَجَدۡتُّمُوۡہُمۡ ۪ وَ لَا تَتَّخِذُوۡا مِنۡہُمۡ وَلِیًّا وَّ لَا نَصِیۡرًا ﴿ۙ۸۹﴾

    তারা কামনা করে, যদি তোমরা কুফরী করতে যেভাবে তারা কুফরী করেছে। অতঃপর তোমরা সমান হয়ে যেতে। সুতরাং আল্লাহর রাস্তায় হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের মধ্য থেকে কাউকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। অতএব তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং তাদেরকে যেখানে পাও হত্যা কর। আর তাদের কাউকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না এবং না সাহায্যকারীরূপে। ****


    প্রশ্নঃ- কাফেররা মুমিনদের ব্যপারে কী চায়?

    উত্তরঃ- তারা চায়, তোমরা ও যেন তাদের ন্যায় কাফের হয়ে যাও। যথা- 1) আল্লাহ তাআলা বলেন
    وَدُّوۡا لَوۡ تَکۡفُرُوۡنَ کَمَا کَفَرُوۡا فَتَکُوۡنُوۡنَ سَوَآءً
    তারা কামনা করে, যদি তোমরা কুফরী করতে যেভাবে তারা কুফরী করেছে। অতঃপর তোমরা তাদের সমান হয়ে যেতে।


    প্রশ্নঃ- তারা তোমাদের কাফের হওয়া কেন চায়?

    উত্তরঃ- কারণ একাধিক

    ১) কোন জাতি ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট তার মূল থেকে সরে যাওয়া , তারা তোমাদের ধ্বংস করতে চায়।

    ২) মূল থেকে সরে গেলে শুধু ব্যবহার হয়। তারা শুধু ব্যবহার করতে চায়। অর্থাৎ তোমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে চায়।

    ৩) তারা হবে জাহান্নামের বাসিন্দা, আর তোমরা হবে জান্নাতবাসী, এটা তারা চায় না। একারণেই তারা, তোমাদেরকে তাদের সেবা দাস বানাতে চাই।
    ৪) তাদের মাঝে জারজ সন্তান জন্মের হার অনেক , একারণে তারা ঘৃণার পাত্র। তোমাদের মাঝে ও জারজ সন্তান জন্মের পথ উন্মুক্ত করে তারা ঘৃণা হতে বাঁচতে চাই।
    যথা:
    ক) মেয়েদেরকে কিস্তিতে ঋন দেওয়ার সূচনা করে ঘর থেকে বের করার মাধ্যমে।
    ★ বিভিন্ন এলাকায় ঋন দেওয়ার সময় মেয়েদেরকে যা শিখানো হয় (১) স্বামীর কথা মানব না। স্যারের কথা মানব
    (২) ভাঙ্গা ঘরে থাকবো না। ভালো ঘরে থাকবো।
    (৩) আমার দেহ , আমার মন যাকে ইচ্ছা তাকে দিব।
    এ কথার অর্থ হলো বিয়ের রীতিনীতির প্রয়োজন নেই।

    খ) সমান অধিকারের নামে রাস্তায় নামানোর মাধ্যমে।

    গ) আর্সেনিক যুক্ত ও আর্সেনিক মুক্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের নামে রাস্তায় নামিয়ে বেহায়া, বেপর্দা ও নির্লজ্জ করে জিনার রাস্তা উন্মুক্ত করার মাধ্যমে।

    ঘ) ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদেরকে বাল্য বিবাহের নামে বিবাহ বন্ধ করে জারজ সন্তান জন্মের পথ উন্মুক্ত করার মাধ্যমে।

    ঙ) ব্রাকের শিক্ষা গ্রহনের মাধ্যমে।

    ৫) তারা আল্লাহর আসনে বসেছে। সুতরাং তোমাদেরকে ও আল্লাহর ইবাদত থেকে সরিয়ে তাদের গোলাম বানাতে চায়।
    ৬) তারা তোমাদেরকে জাহান্নামে তাদের সাথী বানাতে চায়। অর্থাৎ তোমরা হবে আবেদ, আর তারা হবে তোমাদের মা'বুদ।
    যথা
    আল্লাহ তাআলা বলেন 21:98
    اِنَّکُمۡ وَ مَا تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ حَصَبُ جَہَنَّمَ ؕ اَنۡتُمۡ لَہَا وٰرِدُوۡنَ ﴿۹۸﴾

    নিশ্চয় তোমরা এবং আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদের পূজা কর, সেগুলো তো জাহান্নামের জ্বালানী। তোমরা সেখানে প্রবেশ করবে।

    ইত্যাদি।

    প্রশ্নঃ- এ অবস্থায় আমরা কী করব?

    উত্তরঃ- এ অবস্থায় তোমরা রাসূলের আদর্শ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন কর।


    প্রশ্নঃ- এ অবস্থায় রাসূলের আদর্শ কী?।

    উত্তরঃ- তারা যেমন চাই তোমাদের সকলকে নিয়ে জাহান্নামের অধিবাসী হতে, তেমনিভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও চেয়েছেন সকলকে একত্ত্ববাদের বিশ্বাসী বানিয়ে জান্নাতের অধিবাসী হতে।

    প্রশ্নঃ- এর কোন প্রমাণ আছে কি?

    উত্তরঃ- হ্যাঁ! আছে।
    আল্লাহ তাআলা বলেন 18:6
    فَلَعَلَّکَ بَاخِعٌ نَّفۡسَکَ عَلٰۤی اٰثَارِہِمۡ اِنۡ لَّمۡ یُؤۡمِنُوۡا بِہٰذَا الۡحَدِیۡثِ اَسَفًا ﴿۶﴾
    হয়তো তুমি তাদের পেছনে পেছনে ঘুরে দুঃখে নিজকে শেষ করে দেবে, যদি তারা এই কথার প্রতি ঈমান না আনে।

    প্রশ্নঃ- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবস্থা কেমন ছিল?

    উত্তরঃ- [১] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মধ্যে সে সময় যে মানসিক অবস্থার টানাপোড়ন চলছিল এখানে সেদিকে ইংগিত করা হয়েছে। তিনি তাদের হিদায়াতের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তারা আল্লাহর আযাবের সম্মুখীন হবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল।
    নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই তার এ মানসিক অবস্থাকে একটি হাদীসে এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ
    “আমার ও তোমাদের দৃষ্টান্ত এমন এক ব্যক্তির মতো যে আলোর জন্য আগুন জ্বালালো কিন্তু পতংগরা তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে শুরু করলো পুড়ে মরার জন্য। সে এদেরকে কোনক্রমে আগুন থেকে বাঁচাবার চেষ্টা করে কিন্তু এ পতংগরা তার কোন প্রচেষ্টাকেই ফলবতী করতে দেয় না। আমার অবস্থাও অনুরূপ। আমি তোমাদের হাত ধরে টান দিচ্ছি। কিন্তু তোমরা আগুনে লাফিয়ে পড়ছো। ” [বুখারীঃ ৩২৪৪, ৬১১৮ ও মুসলিমঃ ২২৮৪]। সূরা আশ শু'আরার ৩ নং আয়াতেও এ ব্যাপারে আলোচনা এসেছে।


    প্রশ্নঃ- কোন কথার প্রতি ঈমান আনতে হবে?
    اِنۡ لَّمۡ یُؤۡمِنُوۡا بِہٰذَا الۡحَدِیۡثِ اَسَفًا ﴿۶﴾

    উত্তরঃ- আল-ইখলাস
    قُلۡ ہُوَ اللّٰہُ اَحَدٌ ۚ﴿۱﴾
    বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।

    ****"

    প্রশ্নঃ- ہُوَ اللّٰہُ اَحَدٌ এ বাক্যটির অর্থ কী?

    উত্তরঃ- [২] এ বাক্যটির অর্থ হচ্ছে, তিনি (যাঁর সম্পর্কে তোমরা প্রশ্ন করছো) আল্লাহ্, একক-অদ্বিতীয়। তাঁর কোন সমকক্ষ, সদৃশ, স্ত্রী, সন্তান, অংশীদার কিছুই নেই। একত্ব তাঁরই মাঝে নিহিত। তাই তিনি পূর্ণতার অধিকারী, অদ্বিতীয়-এক। সুন্দর নামসমূহ, পূর্ণ শ্রেষ্ঠ গুণাবলী এককভাবে শুধুমাত্র তাঁরই। [কুরতুবী, সা’দী]
    আর أحد শব্দটি একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া আর কারও ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, কেননা তিনিই গুণাবলী ও কার্যাবলীতে একমাত্র পরিপূর্ণ সত্তা। [ইবন কাসীর]

    মোটকথা, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁর সত্তা ও গুণাবলীতে একক, তার কোন সমকক্ষ, শরীক নেই। এ সূরার শেষ আয়াত “আর তাঁর সমতুল্য কেউ নেই” দ্বারা তিনি এর ব্যাখ্যা করেছেন। মূলত সমগ্র কুরআন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাত এমনকি সকল নবী-রাসূলদের রিসালাতের আগমন হয়েছিলো এ একত্ব ঘোষণা ও প্রতিষ্ঠার জন্যই। আল্লাহ্ ব্যতীত কোন হক মাবুদ বা ইলাহ নেই- সমগ্র সৃষ্টিজগতেই রয়েছে এর পরিচয়, আল্লাহ্র একত্বের পরিচয়। কুরআনে অগণিত আয়াতে এ কথাটির প্রমাণ ও যুক্তি রয়েছে। [আদ্ওয়াউল বায়ান]

    ****""

    اَللّٰہُ الصَّمَدُ ۚ﴿
    ۲﴾ আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী।
    لَمۡ یَلِدۡ ۬ۙ وَ لَمۡ یُوۡلَدۡ ۙ﴿۳﴾ তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি।
    وَ لَمۡ یَکُنۡ لَّہٗ کُفُوًا اَحَدٌ ٪﴿
    ۴﴾ আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই।

    ****
    وَ لَمۡ یَکُنۡ لَّہٗ کُفُوًا اَحَدٌ ٪﴿۴﴾ আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই।

    প্রশ্নঃ- আল্লাহর সমকক্ষ কেউ আছে কি?

    উত্তরঃ-না। তার সমকক্ষ কেউ নেই।

    [১] মূলে বলা হয়েছে ‘কুফু’ । এর মানে হচ্ছে, নজীর, সদৃশ, সমান, সমমর্যাদা সম্পন্ন ও সমতুল্য। আয়াতের মানে হচ্ছে, সারা বিশ্ব-জাহানে আল্লাহ্র সমকক্ষ অথবা তাঁর সমমর্যাদাসম্পন্ন কিংবা নিজের গুণাবলী, কর্ম ও ক্ষমতার ব্যাপারে তাঁর সমান পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে এমন কেউ কোন দিন ছিল না এবং কোন দিন হতেও পারবে না এবং আকার-আকৃতিতেও কেউ তাঁর সাথে সামঞ্জস্য রাখে না।

    এক হাদীসে এসেছে, বুরাইদাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,

    তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মসজিদে প্রবেশ করে দেখলেন এক লোক সালাত আদায় করছে এবং বলছে
    اللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ بأَنِّيْ أَشْهَدُ أنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ، الأَحَدُ الصَّمَدُ، الَّذِيْ لَم يَلِدْ وَلَمْ يُوْ لَدْ، وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ

    এটা শুনে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ করে বলছি, এ লোকটি আল্লাহ্কে তাঁর এমন মহান নামে ডাকল যার অসীলায় চাইলে তিনি প্রদান করেন। আর যার দ্বারা দো‘আ করলে তিনি কবুল করেন” [আবু দাউদ: ১৪৯৩, তিরমিয়ী: ৩৪৭৫, ইবনে মাজাহ: ৩৮৫৭, মুসনাদে আহমাদ: ৫/৩৫০]

    ******
    অবশেষে উক্ত আয়াতের কথা স্বরণ করুন

    3:102 یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰہَ حَقَّ تُقٰتِہٖ وَ لَا تَمُوۡتُنَّ اِلَّا وَ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ ﴿۱۰۲﴾
    হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলমান হওয়া ছাড়া মারা যেও না। এগারতম রুকূ‘ [১] আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ্‌র তাকওয়া অর্জনের হক্ক আদায় করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তাকওয়ার ঐ স্তর অর্জন কর, যা তাকওয়ার হক। কিন্তু তাকওয়ার হক বা যথার্থ তাকওয়া কি? আব্দুল্লাহ ইবনে মাস’উদ, রবী, কাতাদাহ ও হাসান রাহিমাহুমুল্লাহ বলেন, তাকওয়ার হক হল, প্রত্যেক কাজে আল্লাহ্‌র আনুগত্য করা, আনুগত্যের বিপরীতে কোন কাজ না করা, আল্লাহকে সর্বদা স্মরণে রাখা- কখনো বিস্মৃত না হওয়া এবং সর্বদা তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা- অকৃতজ্ঞ না হওয়া। [ইবন কাসীর] [২] এতে বুঝা যায় যে, পূর্ণ ইসলামই প্রকৃতপক্ষে তাকওয়া। অর্থাৎ আল্লাহ্ তা’আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূর্ণ আনুগত্য করা এবং তাঁর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার নামই হচ্ছে তাকওয়া অবলম্বন। আয়াতের শেষে মুসলিম না হয়ে যেন কারও মৃত্যু না হয় সেটার উপর জোর দেয়া হয়েছে। দুনিয়াতে ঈমানদারের অবস্থান হবে আশা-নিরাশার মধ্যে। সে একদিকে আল্লাহ্‌র রহমতের কথা স্মরণ করে নাজাতের আশা করবে, অপরদিকে আল্লাহ্‌র শাস্তির কথা স্মরণ করে জাহান্নামে যাওয়ার ভয় করবে। কিন্তু মৃত্যুর সময় তাকে আল্লাহ সম্পর্কে সুধারণা নিয়েই মরতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের কেউ যেন আল্লাহ সম্পর্কে সু ধারণা না নিয়ে মারা না যায়” [মুসলিম: ২৮৭৭] অর্থাৎ মৃত্যুর সময় তার আশা থাকবে যে, নিশ্চয় আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন।
    আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সঠিক দ্বীন বুঝার, মানার ও এর উপর আমলের তৌফিক দান করুন। আমীন।
    Last edited by tahsin muhammad; 09-23-2022, 05:19 PM.
Working...
X