Announcement

Collapse
No announcement yet.

পবিত্র কুরআনের প্রচণ্ড ভীতিসঞ্চারক দুটি আয়াত, যুগে যুগে যেগুলোর মিসদাক হচ্ছে উম্মাহর লক্ষ কোটি মানুষ!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পবিত্র কুরআনের প্রচণ্ড ভীতিসঞ্চারক দুটি আয়াত, যুগে যুগে যেগুলোর মিসদাক হচ্ছে উম্মাহর লক্ষ কোটি মানুষ!

    মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনকে বানিয়েছেন মুমিন ও নেককারদের জন্য সুসংবাদবাহী এক গ্রন্থ। তবে কুফফার ও মুজরিমিনদের জন্য এতে রয়েছে ভয়ানক শাস্তির ভবিষ্যতবাণী। মোটাদাগে আমরা জানি জাহান্নামের বিবরণ সংবলিত আয়াতগুলোই কেবল ভীতিপ্রদর্শক। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে কুরআনুল কারিমেআরো কিছু আয়াত আছে, যেগুলো এরচেয়েও বেশি ত্রাসসঞ্চারক

    আল্লাহ পাক কিছু কাজ করতে আদেশ করেছেন, যা করলে আমার জান্নাতে যাবো। আর কিছুর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, যেগুলো আমাদেরকে জাহান্নাম পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারে। এগুলো সুস্পষ্ট। সবাই যার যার মতো করে জেনেবুঝে আমল করছে। ভুল করলে অনুশোচনা করছে। তওবা করে ফিরে আসছে।

    কিন্তু বিষয়টা যদি এমন হয় যে, আমি সওয়াবের নিয়তে একটি কাজ করলাম। অতঃপর আশা করলাম, এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্ট হয়ে আমাকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করবেন। অথচ মৃত্যুর পর দেখলাম ঐ কাজটিই আমার জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হয়ে বসে আছে। জীবিত থাকা অবস্থায় তওবা তো দূরের কথা আমি বুঝতেই পারি নি আমি যে ভুল পথে আছি। এর চাইতে বড় দুর্ভাগ্য আর কি হতে পারে! আল ইয়াযু বিল্লাহ।

    সূরা কাহাফের ১০৩ ও ১০৪ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন—
    قُلۡ هَلۡ نُنَبِّئُكُمۡ بِالۡاَخۡسَرِیۡنَ اَعۡمَالًا
    বল, ‘আমি কি তোমাদেরকে এমন লোকদের কথা জানাব, যারা আমলের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত’?
    اَلَّذِیۡنَ ضَلَّ سَعۡیُهُمۡ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ هُمۡ یَحۡسَبُوۡنَ اَنَّهُمۡ یُحۡسِنُوۡنَ صُنۡعًا
    ‘দুনিয়ার জীবনে যাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেছে, অথচ তারা মনে করছে যে, তারা ভাল কাজই করছে’!

    আয়াতগুলোর দুটি ব্যাখ্যা হতে পারে। প্রথমটি হচ্ছে— কেউ হয়ত অনেকগুলো নেক আমাল করেছে। কিন্তু সেগুলো আল্লাহর জন্য ছিল না, ছিল লোক দেখানোর জন্য। তাই তার আমলগুলো বরবাদ হয়ে গেছে।

    দ্বিতীয়টি হচ্ছে— যারা দুনিয়ার জীবনে অনেক আমল করত, যেগুলোকে তারা ভালো আমল কিংবা সওয়াবের কাজ মনে করত। কিন্তু সেগুলো আল্লাহর নির্দেশিত এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর প্রদর্শিত পন্থা অনুযায়ী ছিল না। ফলে তাদের সব আমল ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।

    ইয়াহুদ-নাসারা ছাড়া আর কারা কারা আয়াতগুলোর মিসদাক হতে পারে?

    নিঃসন্দেহে বেদাতিরা। কারণ তারা নিজে নিজেই এমন কিছু ইবাদাত তৈরি করে নেয় যা আল্লাহ তাআলা নির্দেশ করেন নি, রাসূল (ﷺ) বাতলে দেন নি, সাহাবাগণ আমল করেন নি। ফলে তাদের এসব ইবাদাত অগ্রহণযোগ্য।

    বেদাতি ছাড়াও আরো কয়েক শ্রেণির মুসলমান এই আয়াতদ্বয়ের মিসদাক হতে পারে। তারা হচ্ছে খারেজি সম্প্রদায় (তাদের নিয়ে অন্যদিন আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ) এবং আমাদের ঐ সব ভাইয়েরা, যারা কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতু রাসূলিল্লাহ (ﷺ) এর নির্দেশিত পথ বাদ দিয়ে কুফফারদের বানানো পদ্ধতি দিয়ে দ্বীন কায়েমের চেষ্টায় লিপ্ত।

    বিগত বছরগুলোতে কতশত ভাই গণতান্ত্রিক রাজনীতির লড়াইয়ে জীবন দিয়েছেন। অনেক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন। হাজার হাজার নেতা কর্মী কারাগারের বন্দী জীবন কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ইসলাম প্রতিষ্ঠা এবং অনুপ্রেরণা ছিল বদর, উহুদ, খন্দক, মুতাহ। তাদের কবিতা ও সাহিত্যে শোভা পায় উমর, খালিদ, বিন কাসিম আর সালাহুদ্দিন আইয়ুবির বীরত্বগাঁথা।

    কিন্তু তাদের এসব অনুপ্রেরণা ও চিন্তা-চেতনার বাস্তবতা আসলে কতটুকু?
    ইসলাম প্রতিষ্ঠায় উমর, খালিদ, আইয়ুবিদের কর্মপ্রচেষ্টা আর তাদের কর্মপ্রচেষ্টায় আদৌ কি কোনো মিল আছে? উমর, খালিদ রাযিয়াল্লাহু আনহুমা কি আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় আল্লাহর দেখানো পথ বাদ দিয়ে কিসরা-কায়সারের তৈরি করা পদ্ধতি অনুসরণ করেছিলেন? সালাহুদ্দিন আইয়ুবি কি ক্রুসেডারদের দেখানো পন্থায় আল-আকসা স্বাধীন করেছিলেন?

    প্রিয় গণতন্ত্রবাদী ভাইয়েরা আমার!
    কুফুরতান্ত্রিক নির্বাচনের কথিত ভোট জিহাদকে কোন আক্কেলে আপনারা বদর, উহুদ আর খন্দকের পবিত্র জিহাদের সাথে মিলিয়ে ফেলেন? গণতন্ত্রের ঘৃণ্য পথে হেঁটে নিজেকে কীভাবে মুজাহিদ দাবী করেন?

    হেকমতের অজুহাত দেখিয়ে আর কত সময় নষ্ট করবেন? উম্মাহকে আর কত বিভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করে রাখবেন? আপনারা কি দেখেন নি— আপনাদের এই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইসলাম কায়েমের প্রচেষ্টা গত একশত বছরে উম্মাহকে লাঞ্ছনা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে নি? অপরদিকে দাজ্জালি মিডিয়ার মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডায় প্রভাবিত হয়ে আপনারা যাদেরকে জঙ্গি, চরমপন্থি ও মানহাজি বলে গালি দিতেন, পৃথিবীর দিকে দিকে আজ শুধু তাদেরই বিজয়ধ্বনি শুনা যাচ্ছে।

    হায়! কবে আপনাদের চোখ খুলবে!

    আপনাদের এতো সব ত্যাগ তিতিক্ষা আদৌ কবুল হচ্ছে কি না তা কি একবার ভেবে দেখেছেন? হেকমতের নামে আল্লাহর শরিয়াতকে কাটছাঁটের বৈধতার কোনো দলিল কি কুরআন থেকে দিতে পারবেন? আমরা সবাই জানি, কুরআনের হিকমাহ সবাইকে ইসলামের দিকে আহ্বান করে। কিন্তু আপনাদের হিকমাহ তো খোদ আপনাদেরকেই ইসলামের গণ্ডি থেকে বের করে দিচ্ছে। সুতরাং উপরের আয়াত দুটি নিয়ে একটু তাদাব্বুর করুন। দেহের শক্তি ও মনের আবেগকে সঠিক পথে ব্যয় করুন।



    يا مقلب القلوب ثبت قلبي على دينك






    ১৬ রজব, ১৪৪৬ হিজরি
    ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রি.​
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 11 hours ago.
Working...
X