Announcement

Collapse
No announcement yet.

গেরিলা যুদ্ধ (পর্ব-১)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • গেরিলা যুদ্ধ (পর্ব-১)

    بسم الله الرحمن الرحيم


    الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام علي نبينا محمد


    গেরিলা যুদ্ধ ১


    আল্লাহ তালা বলেন

    আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর যতক্ষণ না ফিতনার অবসান হয় এবং দীন পূর্ণরূপে আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। সুরাহ আনফাল: ৩৯


    আল্লাহ আমাদের আদেশ দিয়েছেন যুদ্ধ করার মুসলিম ও মুজাহিদ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব রাব্বে কারিমের এই আদেশ মানা। কিন্তু মানতে গিয়ে আমরা প্রশ্নের সম্মুখিন হই কিভাবে এই ফরয আদায় করব। তখন বস্তুগত ইল্মের দিকে যাওয়া লাগে যার মাধ্যমে দীনের ফারজিয়াত ও দীন ছড়িয়ে দিতে পারি লোহার মাধ্যমে। জিহাদের জন্য সব থেকে প্রয়োজনীয় বস্তগত বিদ্যা হল যুদ্ধ জ্ঞান বা সমর বিদ্যা। এই বিদ্যা যে যত ভাল করে পারে ও বাস্তবায়ন করতে পারে উত্তম ভাবে তার জন্য যুদ্ধ জয় সহজ।

    শায়েখ আবু মুসাব আস সুরি হা: বলেন,

    "আমাদের প্রশিক্ষণের তত্ত্ব নিম্নলিখিত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে:
    ১. আকীদা এবং চিন্তাগত প্রস্তুতির উপর মনোনিবেশ করা এবং লড়াই করার ইচ্ছা এবং মনোবল বিকাশ করা।

    ২. জিহাদি গেরিলা যুদ্ধের তত্ত্ব বা দূর্বলদের যুদ্ধ যাকে বলা হয় তা বোঝার দিকে মনোনিবেশ করা।

    ৩. বিভিন্ন উপায়ে উম্মতের মাঝে বুদ্ধিবৃত্তিক, তাত্ত্বিক এবং সামরিক প্রশিক্ষণের পাঠ্যক্রমের প্রসার।

    (অর্থাৎ যাতে করে উম্মাহ সামরিক সংস্কৃতির সাথে পরিচয় হয় এবং যুদ্ধ করা সহজ হয়)

    ৪. গোপন বাড়ি, ক্যাম্প, এবং স্থানান্তর যোগ্য প্রশিক্ষণকেন্দ্র পদ্ধতি অবলম্বন করা। (স্থানান্তর যোগ্য হল খুব সল্প জায়গায় প্রশিক্ষন ও জায়গা পরিবর্তন)

    ৫. জিহাদি কাজ এবং যুদ্ধে অংশগ্রহণের মাধ্যমে যুদ্ধের দক্ষতার বিকাশ।""

    (দাওয়াতুল মুকায়ামার সামরিক মতবাদের, প্রশিক্ষন চ্যাপ্টার থেকে, পেজ-৭৬)


    দেখুন সম্মানিত ভাইয়েরা শাইখ এখানে সামরিক মতবাদ ছড়ানোতে উৎসাহ দিয়েছেন। আর মুসলিমরা দূর্বল (বস্তুগত) হিসেবে গেরিলা যুদ্ধ কৌশল গ্রহণ করবে এটাই সাভাবিক। আমরা যদি এই মতবাদ বেশী বেশী না ছড়াই কিভাবে পরবর্তী প্রজন্ম শিখবে। শায়েখরা চান মুসলিম উম্মাহের সামরিককরণ (মিলিটারাইজেশন অর্থাৎ মানুষেরা সামরিক হবে, চিন্তাভাবনা করবে এরকম। আপনারা খেয়াল করবেন ভারত চেস্টা করছে মিলিটারাইজেশনে, বাচ্চা ও সাধারণদের ট্রেইনিং দেয়া হচ্ছে)। ইসলামের প্রথম যুগকে নিয়ে গবেষণা করলে দেখবেন এরকম মিলিটারাইজেশন। এটা কাফেররা অনেক ভয় পায়। আমরা জাতি হিসেবে এটি না হওয়ার কারনে পিছিয়ে আছি। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুক।

    আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা প্রাথমিক গেরিলা যুদ্ধ নিয়ে কিছু লেখা পড়েছি। এখন চেস্টা করব এই বিষয়ক আরেকটু সামনের কিছু আলোচনা করতে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের জন্য সহজ করুক। আমি আমার মুল রেফারেন্স হিসেবে শায়েখ আবু মুসাব আস সুরি হা: এর কিতাব থেকে উদ্ধৃতি দেয়ার চেস্টা করব। তারপর আমার সল্পমেধা দিয়ে কিছু কথা বলার চেস্টা করব ইনশাআল্লাহ।

    "গেরিলা যুদ্ধ একটি "অনিয়মিত যুদ্ধ" কিন্তু এটি একটি সংগঠিত যুদ্ধ।

    গেরিলা যুদ্ধ একটি সংগঠিত যুদ্ধ, তবে এটি সামরিক বাহিনীর মুলনীতি অনুযায়ী অনিয়মিত যুদ্ধ। আমরা অনিয়মিত যুদ্ধ ও সুংসঘঠিত যুদ্ধ এর মাঝে যাতে তালগোল পাকিয়ে না ফেলি। এটি সুসংগঠিত যুদ্ধ কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক যুদ্ধ নয়।"


    (ইদারা ও তাঞ্জিমু হারবিল ইসাবাত)

    শায়েখ হা: এখানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ বলেছেন তা হল "নিয়মতান্ত্রিক" ও সুসংগঠিত যুদ্ধ। এ দুটি খুব ভাল করে আমাদের বুঝা উচিত। দু ধরনের বাহিনী আছে, ১. নিয়মিত ২. অনিয়মিত। নিয়মতান্ত্রিক বাহিনী হল যার সেনা, বিমান, নৌবাহিনী ইত্যাদি থাকে। এই ধরনের বাহিনী সাহায্য ব্যাতিত সামনে আগাতে পারেনা। এদের উদাহরণ হল, ভারতীয় বাহিনী, বাংলাদেশী, আমিরিকান বাহিনী ইত্যাদি। আর অনিয়মিত যুদ্ধ বা গেরিলা বাহিনীর নিয়মতান্ত্রিক এই দল থাকে না। তারা দূবল থাকে আর তাদের সামনে থাকে শক্তিশালী বাহিনী। এদের পক্ষে এই শক্তির মুখোমুখি লড়াই সম্ভব নয়। তাই তারা এদের চলাফেরাতে এখানে সেখানে হামলা করে বিরক্ত করে।

    কাফেরদের লিখিত অনেক গেরিলাযুদ্ধের কিতাব আপনারা পাবেন। দেখুন প্রিয় ভাই আপনি যখন কেমেস্ট্রি, বায়লজী, হিসাববিজ্ঞান আল্লাহর দীনের নুসরাতের জন্য শিখবেন তখন এগুলোর কারণে অনেক সওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ। আপনি যদি ম্যানেজমেন্ট শিখেন ইমারাহ, খিলাফাহ, সংগঠনের উত্তম ম্যানেজমেন্টর জন্য তাও অনেক সওয়াব পাবেন। বিষয় হল আপনি কতটুকু ইসলামিকরণ করছেন সেটা। অর্থ দুনিয়াবী বিষয় কিন্তু এটি যখন আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা হয় তখন এটি আখিরাতের জন্য হয়। তাই আপনি বিপ্লব ও গেরিলা যুদ্ধ, সমরনীতি শিখুন কিন্তু তাদের কাছ থেকে আকিদাহ নিবেন না। আপনি এগুলো ইসলামীকরণ করুন আর ইসলামকে সাহায্য করুন ভাই। সামরিক বিষয়ে নীতি অনুসরণ করুন ভাই।


    ""গেরিলা যুদ্ধ কখন সংঘটিত হয়? গেরিলা যুদ্ধ তিনটি ক্ষেত্রে সংঘটিত হয়:

    গেরিলা যুদ্ধ নিম্নলিখিত ক্ষেত্রেগুলির একটি হয়ে থাকে, (একাধিকও হতে পারে)

    ১.সরাসরি দখলের ঘটনা: এটি একটি স্পষ্ট বিষয়। একটি রাস্ট্রে বহিরাগত শক্তি এসে দখল করে, সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে, সরকারকে উচ্ছেদ করে এবং দেশের জাতীয় সত্তাকে ধ্বংস করে।

    ২. দ্বিতীয় প্রকার: একটি পুতুল সরকারের উপর ভিত্তি করে একটি বৈধ পর্দা, যেমনটি এখন আফগানিস্তানে হয়। যখন রুশরা এসে আফগানিস্তান দখল করে তখন তারা দেশটিকে পুরোপুরি ধ্বংস করেনি এবং বলেনি, “আমরা আফগানিস্তান শাসন করব।” বরং তারা আফগান কমিউনিস্ট সরকারের আড়ালে ছিল।

    ৩. একটি অন্যায়, অত্যাচারী স্থানীয় সরকারের বিরুদ্ধে গেরিলাদের উত্থান, যেমনটি ইসলামিক বিশ্বের বেশিরভাগ বা এমনকি সমস্ত দেশে এবং তৃতীয় বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে ঘটে।"""

    (দুরুসুন ফি নাজারিয়াতি হারবিল ইসাবাত)


    শায়েখ হা: উনার এই দাওরাটিতে মুলত গেরিলা যুদ্ধের প্রাথমিক আলোচনা করেন। এটি মুলত আফগান রুশ যুদ্ধের সময়ের একটি দাওরা। শায়েখ হা: এক ভাইয়ের ডায়েরী থেকে দাওরাটি নেন। আর ওই ভাই এই ডায়েরীটিতে প্রায় ২০টি গেরিলা যুদ্ধ বিষয়ক কিতাব থেকে সারাংশ লেখেন। শায়েখের এই দাওরাটি প্রায় ৩ ঘন্টার মত আর কিতাব আকারে প্রায় ৬০পেজের মত। যা ইন্টারনেটে আরবী ভাষায় পাবেন আগ্রহী ভাইয়েরা।

    শায়েখ শুরুতে আমাদের এই শাস্ত্র সম্পর্কে কেন পড়া উচিত এটা উল্লেখ করেছেন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল এটি যেহেতু জিহাদ রিলেটেড তাই এটি জানা আমাদের জন্য আবশ্যক। ব্যবসা, বিবাহ, তালাকের ক্ষেত্রে এর হুকুম আহকাম জানতে হয় বিভিনব বাস্তবতার জ্ঞান আহরণ করতে হয় তেমনি জিহাদের ক্ষেত্রেও এই ইল্ম আবশ্যক।

    সরাসরি দখলদারিত্তের উদাহরন হল ফ্রান্স আলজেরিয়া, আমেরিকা ভিয়েতনাম যুদ্ধ। এই অবস্থায় জনগণকে খুব সহজে যুদ্ধে নিয়ে আসা যায়। জনগণ তাদের সামনে দখলদার দেখতে পায়। আপনি সহজেই প্রতিরোধ যুদ্ধের ডাক দিতে পারবেন মানুষকে সশস্ত্রকরণ করতে পারবেন।

    আর দিতীয়টির উদাহরণ হল আমেরিকা দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রবেশ করেছে কিন্তু এর জাতীয় সত্তা ধংস করেনি। আবার ল্যাটিন আমেরিকাতে আমেরিকার আগ্রাসন। আর জাযিরাতুল আরবে এরকম দখলদারত্ব হয়েছে। তারা এসে বলেনি যে সব কিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণ দেয়া লাগবে, অনেক ধংস ইত্যাদি করেনি। ফলে জনগণের কাছে স্পষ্ট নয় কে শত্রু। মুলত পুতুল সরকার কাজ করে আর মুল পরামর্শক থাকে হল আগ্রাসী দেশ। এই সুরতে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করা খুব কঠিন। জনগণ আসল শত্রু খুজে পায় না। আপনি দেখবেন বাংলাদেশেও ভারত এই ধরণের আগ্রাসনের পথ বেছে নিয়েছে। সব সেক্টরে ভারত নিয়ন্ত্রণ করার চেস্টা করছে কিন্তু আড়ালে থেকে। এই অবস্থাতে মানুষকে জাগাতে বেশ কস্ট হয় কিন্তু অসম্ভব নয়। অনেক দাওয়াহ, মিডিয়া ও রাজনৈতিক কাজ প্রয়োজন, সাধারণ মানুষদের নিয়ে অনেক ফিকির প্রয়োজন।

    ৩য়টির উদাহরণ হল সিরিয়া।

    কখনও কখনও দুটি একসাথে পাওয়া যায়। তখন আপনার মিডিয়া, দাওয়াতি কাজ সহজ হয়ে যাবে। মনে রাখবেন গেরিলা যুদ্ধ জনগনের যুদ্ধ আপনি যদি জনগণকে আপনার পাশ থেকে হারান তাহলে যুদ্ধে হারবেন। আর তাগুত ও ক্রুসেডাররা চায় মুজাহিদদের জনগনের ইচ্ছার বিপরীত শক্তি, রক্ত পিপাসু, হিংস্র কিছু হিসেবে উপস্থাপন করতে। আপনার আমার উচিত উত্তম মানহাজের টারগেট, আচরণ করা। গ্লোবাল জিহাদের উমারাদের দিকনিরদেশনা শুনা ও অনুগত্য করা। উনাদের দেয়ার সীমারেখা গুলো বুঝা, অনুধাবন ও বাস্তবায়ন করা। শায়েখ আবু মুসাব হা: উনার দাওয়াতুল মুকাওয়ামাতে ১৯৬৩-২০০০সাল পযন্ত মুজাহিদদের ইতিহাস লেখেছেন সংক্ষেপে ওখানে দেখবেন ভাই অনেক অনেক জিহাদী উদ্যমী ভাই নিজের মত চেস্টা করেছে কিন্তু উনাদের রক্তের বিনিময়ে উম্মাহ যা পাওয়ার দরকার ছিল পায়নি। এটা বলার কারণ এটাই যে আমরা যাতে অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নেই ও মুসলিম উম্মার জন্য ভাল কিছু করতে পারি।

    আজকে এখানে শেষ করছি। সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়াবি হামদিকা আশহাদুল্লাহ ইলাহা ইল্লা আন্তা আস্তাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইক।
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 07-04-2023, 01:59 PM.
Working...
X