মুজাহিদের সমপর্যায়ের কেউ হতে পারবে না:
আবু হুরায়রা রাদি. বলেন, “এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, আমাকে জিহাদের সমপর্যায়ের কোন আমল বাতলে দেন। তিনি বললেন, আমি এমন কোন আমল পাচ্ছি না। অতঃপর বললেন, মুজাহিদ যখন (জিহাদের উদ্ধেশ্যে ঘর থেকে) বের হবে, তুমি কি তোমরা নামাযের স্থানে প্রবেশ করে অক্লান্তভাবে নামায এবং বিরতীহীনভাবে রোযা রাখতে পারবে? সে বললো, এটা কে পারবে! আবু হুরায়রা রাদি. (মুজাহিদের এতো সওয়াবের কারণ দর্শিয়ে) বলেন, মুজাহিদের ঘোড়া তার রশিতে বাধা অবস্থায় চরে বেড়াচ্ছে, অথচ তা তার জন্য সওয়াব লেখা হচ্ছে।”[1]
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
উক্ত হাদীসদ্বয় থেকে বুঝে আসে যে, মুজাহিদ ব্যক্তি জিহাদে বের হওয়ার পর থেকে কেউ লাগাতার নামায, রোযাসহ অন্যান্য এবাদতে মশগুল থাকলেই মুজাহিদের সমপর্যায়ের সওয়াব পেতে পারে; যদিও এমনটি কারও জন্য করা সম্ভব নয়, যেমন নবী ও রাসূলদের পরে সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ট ব্যক্তিরা তা স্পষ্টভাবে স্বীকার করেছেন। কিন্তু অন্য এক হাদীস থেকে প্রমাণীত হয় যে, মুজাহিদ জিহাদে বের হওয়ার পর থেকে ঘরে ফেরা পর্যন্ত এবাদতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে মশগুল থাকলেও মুজাহিদের সওয়াবের দশভাগের একভাগও পাওয়া যাবে না।
মুআয বিন আনাস রাদি. বর্ণনা করেন,
[1] সহীহ বুখারী: ২৭৮৫
[2] সহীহ মুসলিম: ১৮৭৮
[3] মুসতাদরাকে হাকিম: ২/৮২, মুসনাদে আহমদ: ১৫৬৩৩। হাকিম রহ. সহীহ বলেছেন এবং যাহাবী রহ. তা সমর্থন করেছেন। ইবনুন নাহহাস রহ. সনদ হাসান বলেছেন। -মাশারিউল আশওয়াক: ১/১৬১
উক্ত হাদীস থেকে সাহাবীদের মধ্যে আমলের কী রকম প্রতিযোগীতা ছিল, তা বুঝতে পারি। বাড়িতে থাকতে স্ত্রী স্বামীর সাথে প্রতিযোগীতা করতে পারতেন। কিন্তু এখনতো স্বামী অতিরিক্ত একটি আমল করছেন, যা স্ত্রী করতে পারছেন না। তাই দেরি না করে সরাসরি রাসূলের কাছে এমন জানতে চাচ্ছেন, যদ্দারা তিনি স্বামীর সাথে প্রতিযোগীতায় পেরে উঠতে পারেন! সুবহানাল্লাহ।
আবু হুরায়রা রাদি. বলেন,
جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ يَعْدِلُ الجِهَادَ؟ قَالَ: «لاَ أَجِدُهُ» قَالَ: «هَلْ تَسْتَطِيعُ إِذَا خَرَجَ المُجَاهِدُ أَنْ تَدْخُلَ مَسْجِدَكَ فَتَقُومَ وَلاَ تَفْتُرَ، وَتَصُومَ وَلاَ تُفْطِرَ؟»، قَالَ: وَمَنْ يَسْتَطِيعُ ذَلِكَ؟، قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: «إِنَّ فَرَسَ المُجَاهِدِ لَيَسْتَنُّ فِي طِوَلِهِ، فَيُكْتَبُ لَهُ حَسَنَاتٍ»
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
قِيلَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا يَعْدِلُ الْجِهَادَ فِي سَبِيلِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ؟ قَالَ: «لَا تَسْتَطِيعُونَهُ»، قَالَ: فَأَعَادُوا عَلَيْهِ مَرَّتَيْنِ، أَوْ ثَلَاثًا كُلُّ ذَلِكَ يَقُولُ: «لَا تَسْتَطِيعُونَهُ»، وَقَالَ فِي الثَّالِثَةِ: «مَثَلُ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللهِ كَمَثَلِ الصَّائِمِ الْقَائِمِ الْقَانِتِ بِآيَاتِ اللهِ، لَا يَفْتُرُ مِنْ صِيَامٍ، وَلَا صَلَاةٍ، حَتَّى يَرْجِعَ الْمُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللهِ تَعَالَى»
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন আমল আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের সমপর্যায়ের হতে পারে? তিনি বললেন, তোমরা তা করতে সক্ষম নও। প্রশ্নকারীরা দুইবার বা তিনবার উক্ত প্রশ্ন করেন। প্রত্যেক বারই তিনি বলেন, তোমরা তা করতে সক্ষম নও। তৃতীয়বার প্রশ্নের উত্তরে বলেন, মুজাহিদের উদাহরণ হচ্ছে, এমন রোযাদার ও নামাযীর ন্যায়, যে আল্লাহর রাস্তার মুজাহিদ (ঘরে) ফেরার আগ পর্যন্ত রোযা ও নামায থেকে ক্লান্ত হয় না।[2]উক্ত হাদীসদ্বয় থেকে বুঝে আসে যে, মুজাহিদ ব্যক্তি জিহাদে বের হওয়ার পর থেকে কেউ লাগাতার নামায, রোযাসহ অন্যান্য এবাদতে মশগুল থাকলেই মুজাহিদের সমপর্যায়ের সওয়াব পেতে পারে; যদিও এমনটি কারও জন্য করা সম্ভব নয়, যেমন নবী ও রাসূলদের পরে সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ট ব্যক্তিরা তা স্পষ্টভাবে স্বীকার করেছেন। কিন্তু অন্য এক হাদীস থেকে প্রমাণীত হয় যে, মুজাহিদ জিহাদে বের হওয়ার পর থেকে ঘরে ফেরা পর্যন্ত এবাদতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে মশগুল থাকলেও মুজাহিদের সওয়াবের দশভাগের একভাগও পাওয়া যাবে না।
মুআয বিন আনাস রাদি. বর্ণনা করেন,
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ سَرِيَّةً فَأَتَتْهُ امْرَأَةٌ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّكَ بَعَثْتَ هَذِهِ السَّرِيَّةَ وَإِنَّ زَوْجِي خَرَجَ فِيهَا، وَقَدْ كُنْتُ أَصُومُ بِصِيَامِهِ، وَأُصَلِّي بِصَلَاتِهِ، وَأَتَعَبَّدُ بِعِبَادَتِهِ، فَدُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ أَبْلُغُ بِهِ عَمَلَهُ. قَالَ: «تُصَلِّينَ فَلَا تَقْعُدِينَ، وَتَصُومِينَ فَلَا تُفْطِرِينَ، وَتَذْكُرِينَ فَلَا تَفْتُرِينَ» قَالَتْ: وَأُطِيقُ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «وَلَوْ طِقْتِ ذَلِكَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا بَلَغْتِ الْعَشِيرَ مِنْ عَمَلِهِ»
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিহাদের উদ্ধেশ্যে এক সৈন্যদল পাঠালেন। তাঁর কাছে এক মহিলা এসে জিজ্ঞাসা করলো, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি জিহাদের উদ্ধেশ্যে অমুক সৈন্যদল পাঠালেন এবং আমার স্বামী উক্ত দলে বের হয়েছেন। (উনি বাড়িতে থাকতে) আমি তার রোযার মত রোযা রাখতাম এবং তার নামাযের মত নামায পড়তাম। (এখন তিনি অতিরিক্ত আমল জিহাদ করছেন, যা আমি পারছি না) তাই আপনি আমাকে এমন আমল বাতলে দেন, যদ্দরুন আমি তার আমলের সওয়াব পেয়ে যাবো। তিনি বললেন, (তুমি কি পারবে) একটুও বিশ্রাম না নিয়ে লাগাতার নামায পড়তে, একদিনও ইফতার না করে লাগাতার রোযা রাখতে, একটুও ক্লান্ত অনুভব না করে আল্লাহর যিকির করতে? মহিলা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি কি তা করতে সক্ষম? রাসূল বলেন, যদি তুমি সক্ষম হয়েও যাও, ঐ সত্বার কসম যার হাতে আমার জান, তাহলেও তুমি তার আমলের দশ ভাগের এক ভাগও পাবে না।”[3][1] সহীহ বুখারী: ২৭৮৫
[2] সহীহ মুসলিম: ১৮৭৮
[3] মুসতাদরাকে হাকিম: ২/৮২, মুসনাদে আহমদ: ১৫৬৩৩। হাকিম রহ. সহীহ বলেছেন এবং যাহাবী রহ. তা সমর্থন করেছেন। ইবনুন নাহহাস রহ. সনদ হাসান বলেছেন। -মাশারিউল আশওয়াক: ১/১৬১
উক্ত হাদীস থেকে সাহাবীদের মধ্যে আমলের কী রকম প্রতিযোগীতা ছিল, তা বুঝতে পারি। বাড়িতে থাকতে স্ত্রী স্বামীর সাথে প্রতিযোগীতা করতে পারতেন। কিন্তু এখনতো স্বামী অতিরিক্ত একটি আমল করছেন, যা স্ত্রী করতে পারছেন না। তাই দেরি না করে সরাসরি রাসূলের কাছে এমন জানতে চাচ্ছেন, যদ্দারা তিনি স্বামীর সাথে প্রতিযোগীতায় পেরে উঠতে পারেন! সুবহানাল্লাহ।