Announcement

Collapse
No announcement yet.

সংশয় নিরসন সিরিজ; প্রাক্তন কথা

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সংশয় নিরসন সিরিজ; প্রাক্তন কথা

    শুরুর কথা:
    ইসলামের শত্রুরা সর্বদা জিহাদের ব্যাপারে ভীত-সন্ত্রস্ত ছিল এবং এখনও আছে। তাই তারা সর্বদা মুসলিমদেরকে জিহাদের বিধান থেকে দূরে রাখার জন্য সম্ভাব্য কোন ধরণের চেষ্টা বাদ দেয়নি। উক্ত চেষ্টার মধ্য হতেই কাদিয়ানির জন্ম হয়। সে এসে সরাসরি জিহাদের উপর আঘাত হানে এবং জিহাদকে হারাম বলে ঘোষণা দেয়। তার প্রষিদ্ধ উক্তি ছিল,
    چھوڑ دو اے دوستو جھاد کا خیال ٭ کہ دین میں حرام ہے اب جنگ اور قتال
    ছেড়ে দেও বন্ধুরা, জিহাদের ভাবনা। ইসলামে হারাম এখন যুদ্ধের বাসনা।

    কিন্তু ইসলামের শত্রুদের দূর্ভাগ্য বলা যায় যে, তারা উক্ত চেষ্টায় চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কেননা মুসলিমরা ইসলামের যেকোন বিধানের ব্যাপারে যতই গাফেল হোক না কেন, কিন্তু যখন কেউ ইসলামের কোন বিধানকে স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে, তখন মুসলিমরা তা কোনভাবে মেনে নিবে না। ইসলামের শত্রুরা তা থেকে শিক্ষা অর্জন করে এবং তারা সামনে মুসলিমদেরকে জিহাদ থেকে বিরত রাখার জন্য সরাসরি জিহাদের বিধানকে অস্বীকার না করে জিহাদের জন্য এমন কিছু মনগড়া শর্ত আরোপ করে, যা মেনে নিলে কার্যত জিহাদ অকেজ হয়ে পড়ে। উক্ত প্রচেষ্টায় তাদেরকে উল্লেখযোগ্যভাবে সফলও বলা যায়। এর জন্য ইসলাম ও মুসলিমদের শত্রুরা গবেষক ও দার্শনিকের পরিচয়ে নতুন এক প্রজন্মের জন্ম দেয়, যারা বিভিন্ন সংশয় ও সন্দেহ উপস্থাপন করে মুসলিমদেরকে জিহাদ থেকে বিরত রাখার আপ্রান চেষ্টা করে; কিন্তু মুসলিমদের এ কঠিন অবস্থায় তাদের উত্থানের কার্যকরী পদ্ধতি কী হবে- এ ব্যাপারে তাদের টু শব্দটুকুও বের হয় না।[1]
    [
    জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ আওর এ’তেরাজাত কা ইলমী জায়েযাহ (মফতি আতীকুর রাহমান সাহেবের ভূমিকা): ২৫-২৬​]
    তবে তার অর্থ এ নয় যে, জিহাদের জন্য উত্থাপিত সংশয়ের কথা যারাই বলে, তারা সকলেই ইসলামের শত্রু বা প্রাচ্চ্যবিদদের ধারা প্রভাবিত; বরং উক্ত সংশয়সমূহ যখন ব্যাপকভাবে ছড়ায় তখন অনেক সরলমনা মুসলিমরাও তাতে গ্রাস হয়ে যান এবং তারাও এখলাস ও একনিষ্টতার সহিত তা ‘ইলমী তাহকিক’ হিসেবে প্রচার ও প্রসার করেন। এখান আমরা উক্ত সংশয়সমূহ নিরসনের ক্ষেত্রে শুধু প্রাচ্চ্যবিদদেরকে খণ্ডন করা কার্যকরী হবে না; যথক্ষণ না সরলমনা উক্ত মুসলিমদের বক্তব্যেরও খণ্ডন করা হবে; যদিও উভয়ের নিয়ত ও একনিষ্টতায় আকাশ-পাতাল তফাৎ রয়েছে। বরং সরলমনা আলিমরা উক্ত শর্ত বর্ণনার ক্ষেত্রে তাদের ইজতেহাদের ভিত্তিতে সওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।
    এখানে আমরা জিহাদের ব্যাপারে উত্থাপিত উক্ত সংশয়সমূহ পর্যালোচনা করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। মূলকথায় যাওয়ার আগে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করে রাখি।
    এক. বর্তমানে জিহাদের জন্য যত শর্ত আরোপ করা হয়, তা শর্ত আরোপকারীদর মধ্যেই ঐক্যমত্য নয়। কেউ উল্লেখ করেন তিনটি; ইমাম থাকা, নিয়ত সহীহ হওয়া ও মুসলিমরা কাফেরদের অর্ধেকের চেয়ে কম না হওয়া।[2] কেউ ইমামের জায়গায় মুসলিমদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র থাকা শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। আবার কেউ কেউ চারটিই শর্ত বলেন।
    দুই. উল্লেখিত শর্তসমূহ জিহাদ ওয়াজিব হওয়ার শর্ত না জায়েয হওয়ার শর্ত -তা তাদের অনেকেই স্পষ্ট করেননি। কারও কারও কথা থেকে বুঝে আসে, ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত। আর অধিকাংশদের কথা থেকে বুঝে আসে, জায়েয হওয়ার জন্য শর্ত। কিন্তু ওয়াজিব হওয়ার জন্য নিয়ত সহীহ হওয়ার শর্ত বোধগম্য নয়। অন্যথায় ফরয বিধান থেকে রেহাই পাওয়ার এ সুবোর্ণ সুযোগ কে হাতছাড়া করবে! কাউকে জিহাদের কথা বললেই সে বলবে, আমার নিয়ত সহীহ নয়, তাই আমার উপর জিহাদ ফরয নয়। তেমনি জিহাদ জায়েয হওয়ার জন্য মুসলিমরা কাফেরদের অর্ধেকের চেয়ে কম না হওয়ার শর্ত বোধগম্য নয়। অন্যথায় বদর, উহুদ ও আহযাব থেকে শুরু করে ইসলামের অধিকাংশ জিহাদ জায়েয হয়নি বলে ফতোয়া দিতে হবে!
    তিন. উক্ত শর্তসমূহের দলীল উপস্থাপনেও তারা একমত নন। একজন দলীল হিসেবে একটি উপস্থাপন করলে অন্যজন উপস্থাপন করেন অন্যটি, তৃতীয়জন অন্য আরেকটি।
    চার. উক্ত শর্তসমূহের পক্ষে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী কোন ফকীহ আলেমের কথা উদ্ধৃতি
    দিতে পারেননি।
    পাঁচ. তারা একদিকে জিহাদের জন্য এমন কিছু শর্ত আরোপ করেন, যা বাস্তবে পাওয়া অসম্ভব বা দুস্কর প্রায়। অন্যদিকে জিহাদের সংজ্ঞায় যবান, কলম ও নফসের জিহাদও অন্তর্ভুক্ত করেন। তাহলে কি তাদের আরোপিত শর্ত অনুযায়ী উক্ত আমলসমূহ করার জন্য ইমাম শর্ত বলা হবে! কেননা তারা জিহাদের জন্য উক্ত শর্তসমূহ আরোপ করার সময় এ তাফসীল করেননি যে, উক্ত শর্তসমূহ কোন ধরণের জিহাদের জন্য প্রযোজ্য, আর কোন ধরণের জিহাদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
    তবে তাদের সবাই একটি কথায় মোটামুটি একমত বলা যায় যে,
    বর্তমানে জিহাদের নামে পরিচালিত অধিকাংশ কর্মকাণ্ড শরিয়তসম্মত নয়
    এখন শর্তসমূহ প্রবক্তাদের কিতাব থেকে তার ব্যাখ্যা ও দলীল উল্লেখ করে তার পর্যালোচনাসহ আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
    "ইয়াকীন ও সবরের মাধ্যমে দীনের ইমামত অর্জিত হয়"
Working...
X