শাম প্রতিরক্ষায় মুসলিমদের করণীয় - শায়খ সুলাইমান ইবনু নাসির আল-উলওয়ান
আর এজন্য প্রয়োজন হলো মুসলিমদের সকল চেষ্টা-প্রচেষ্টাকে এক করা এবং তাদের জান ও মাল ব্যয় করা। যাতে করে শত্রুর আক্রমন প্রতিহত করা যায়। রক্ষা করা যায় নিজেদের জান ও মাল এবং মুরতাদদেরকে হত্যা করা যায়।
আশ-শাম আল্লাহর মনোনিত শ্রেষ্ঠ ও বরকতময় ভূমি, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা শাম এবং এর অধিবাসীদের দায়িত্ব নিয়েছেন। এটি যুদ্ধের ভূমি, হাশরের ভূমি। সাইয়্যিদুনা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম -এর হিজরতের ভূমি। মানুষকে জুলুম ও অবাধ্যতা থেকে মুক্ত করার জন্য এই ভূমিতে ঈসা ইবনু মারইয়াম আলাইহিস সালাম -এর আগমণ এবং আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রেরিত হয়েছেন। শেষ যুগে এই ভূমিই হবে মুসলিমদের দুর্গ। আর সমগ্র দুনিয়ার নাভি অর্থাৎ, পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু হলো আশ-শাম।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই ভূমিতে ঈসা ইবনু মারইয়াম আলাইহিস সালামকে আশ্রয় দিয়ে তার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ইরশাদ করেন:
“আর আমি মারইয়াম-পুত্র ও তার মাকে নিদর্শন বানালাম এবং তাদেরকে আবাসযোগ্য ও ঝর্নাবিশিষ্ট এক উঁচু ভূমিতে আশ্রয় দিলাম।” [সূরাঃ আল-মুমিনুন – আয়াতঃ ৫০]
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআনের অন্যত্র এই ভূমির ফজীলত ও বরকতের কথা উল্লেখ করে বলেন:
“আর আমি তাকে ও লূতকে উদ্ধার করে সে দেশে নিয়ে গেলাম, যেখানে আমি বিশ্ববাসীর জন্য বরকত রেখেছি।” [সূরাঃ আল-আম্বিয়া – আয়াতঃ ৭১]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন যে, ‘শামের ভূমি আল্লাহর শ্রেষ্ঠভূমি’। তিনি ﷺ বলেন: “নিশ্চয় তোমরা তিনটি সৈন্যদল পাবে, শামের একটি দল, ইয়ামেনের একটি দল এবং ইরাকের একটি দল।” ইবনু হাওয়ালা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল! আমি সেই যুগ পেলে আমার জন্য কোন দলের সঙ্গি হওয়া মঙ্গলজনক হবে?” তিনি বললেন, “তুমি অবশ্যই শামের সৈন্যদলে যোগ দিবে। কেননা তখন এই অঞ্চলটি আল্লাহর নিকট সবচেয়ে উত্তম বলে গন্য হবে। আল্লাহ তাঁর সৎকর্মশীল বান্দাদের এখানে একত্র করবেন। আর যে শামে যেতে রাজী না হয় সে যেন ইয়ামেনী সৈন্যদলে যোগ দেয় এবং তার কুপ থেকে পানি উত্তোলন করে। কেননা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমার উসিলায় শাম ও তার অধিবাসীদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন।” [মুসনাদে আহমাদ, সহীহ ইবনে হিব্বান, সুনানে আবি দাউদ: ২৪৮৩]
ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) তার ‘আল-জামে কিতাবে বাহয ইবনু হাকীম (রহিমাহুল্লাহ)-এর দাদা থেকে বর্ণনা করেন এবং তা সহীহ বলে উল্লেখ করেন, “সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম “হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে কোথায় থাকার নির্দেশ করেন? তিনি ﷺ বললেন (এখানে) এবং হাত দিয়ে শামের প্রতি ইশারা করলেন।”
মু’আবিয়া ইবনু কুররা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “যখন শামবাসীরা খারাপ হয়ে যাবে, তখন তোমাদের আর কোন কল্যাণ থাকবে না। তবে আমার উম্মাতের মধ্যে একটি দল সকল সময়েই সাহায্যপ্রাপ্ত (বিজয়ী) থাকবে। যেসব লোকেরা তাদেরকে অপমানিত করতে চায় তারা কিয়ামত পর্যন্ত তাদের কোন ক্ষতি সাধন করতে পারবে না।” (ইমাম তিরমিযি রহিমাহুল্লাহ সহীহ হাসান বলেছেন) [মুসনাদে আহমাদ, জামে’ আত-তিরমিযি]
এছাড়া, শামের ফযীলতের বিষয়ে আরও অনেক হাদীস রয়েছে।
শীঘ্রই শামে একটি সাহায্যপ্রাপ্ত দল হবে, বিরোধিতাকারীদের বিরোধিতা কিংবা পরিত্যাগকারীদের পরিত্যাগের কারণে তাদের কোন ক্ষতি হবেনা। তারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের ঝান্ডা সমুন্নীত করবে। তাওহীদের কালিমা বুলন্দ করবে এবং আলাহর শারিয়াহ প্রতিষ্ঠা করবে। সর্বোপরি মুসলিম উম্মাহকে ফিরিয়ে দিবে সম্মান-মর্যাদা এবং তাদের হারানো গৌরব।
লেখকঃ শায়খ সুলাইমান ইবনু নাসির আল-উলওয়ান [ফাকাল্লাহু আসরাহ]
তথ্যসূত্রঃ সংগৃহীত
আর এজন্য প্রয়োজন হলো মুসলিমদের সকল চেষ্টা-প্রচেষ্টাকে এক করা এবং তাদের জান ও মাল ব্যয় করা। যাতে করে শত্রুর আক্রমন প্রতিহত করা যায়। রক্ষা করা যায় নিজেদের জান ও মাল এবং মুরতাদদেরকে হত্যা করা যায়।
আশ-শাম আল্লাহর মনোনিত শ্রেষ্ঠ ও বরকতময় ভূমি, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা শাম এবং এর অধিবাসীদের দায়িত্ব নিয়েছেন। এটি যুদ্ধের ভূমি, হাশরের ভূমি। সাইয়্যিদুনা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম -এর হিজরতের ভূমি। মানুষকে জুলুম ও অবাধ্যতা থেকে মুক্ত করার জন্য এই ভূমিতে ঈসা ইবনু মারইয়াম আলাইহিস সালাম -এর আগমণ এবং আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রেরিত হয়েছেন। শেষ যুগে এই ভূমিই হবে মুসলিমদের দুর্গ। আর সমগ্র দুনিয়ার নাভি অর্থাৎ, পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু হলো আশ-শাম।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই ভূমিতে ঈসা ইবনু মারইয়াম আলাইহিস সালামকে আশ্রয় দিয়ে তার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ইরশাদ করেন:
“আর আমি মারইয়াম-পুত্র ও তার মাকে নিদর্শন বানালাম এবং তাদেরকে আবাসযোগ্য ও ঝর্নাবিশিষ্ট এক উঁচু ভূমিতে আশ্রয় দিলাম।” [সূরাঃ আল-মুমিনুন – আয়াতঃ ৫০]
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআনের অন্যত্র এই ভূমির ফজীলত ও বরকতের কথা উল্লেখ করে বলেন:
“আর আমি তাকে ও লূতকে উদ্ধার করে সে দেশে নিয়ে গেলাম, যেখানে আমি বিশ্ববাসীর জন্য বরকত রেখেছি।” [সূরাঃ আল-আম্বিয়া – আয়াতঃ ৭১]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন যে, ‘শামের ভূমি আল্লাহর শ্রেষ্ঠভূমি’। তিনি ﷺ বলেন: “নিশ্চয় তোমরা তিনটি সৈন্যদল পাবে, শামের একটি দল, ইয়ামেনের একটি দল এবং ইরাকের একটি দল।” ইবনু হাওয়ালা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল! আমি সেই যুগ পেলে আমার জন্য কোন দলের সঙ্গি হওয়া মঙ্গলজনক হবে?” তিনি বললেন, “তুমি অবশ্যই শামের সৈন্যদলে যোগ দিবে। কেননা তখন এই অঞ্চলটি আল্লাহর নিকট সবচেয়ে উত্তম বলে গন্য হবে। আল্লাহ তাঁর সৎকর্মশীল বান্দাদের এখানে একত্র করবেন। আর যে শামে যেতে রাজী না হয় সে যেন ইয়ামেনী সৈন্যদলে যোগ দেয় এবং তার কুপ থেকে পানি উত্তোলন করে। কেননা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমার উসিলায় শাম ও তার অধিবাসীদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন।” [মুসনাদে আহমাদ, সহীহ ইবনে হিব্বান, সুনানে আবি দাউদ: ২৪৮৩]
ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) তার ‘আল-জামে কিতাবে বাহয ইবনু হাকীম (রহিমাহুল্লাহ)-এর দাদা থেকে বর্ণনা করেন এবং তা সহীহ বলে উল্লেখ করেন, “সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম “হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে কোথায় থাকার নির্দেশ করেন? তিনি ﷺ বললেন (এখানে) এবং হাত দিয়ে শামের প্রতি ইশারা করলেন।”
মু’আবিয়া ইবনু কুররা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “যখন শামবাসীরা খারাপ হয়ে যাবে, তখন তোমাদের আর কোন কল্যাণ থাকবে না। তবে আমার উম্মাতের মধ্যে একটি দল সকল সময়েই সাহায্যপ্রাপ্ত (বিজয়ী) থাকবে। যেসব লোকেরা তাদেরকে অপমানিত করতে চায় তারা কিয়ামত পর্যন্ত তাদের কোন ক্ষতি সাধন করতে পারবে না।” (ইমাম তিরমিযি রহিমাহুল্লাহ সহীহ হাসান বলেছেন) [মুসনাদে আহমাদ, জামে’ আত-তিরমিযি]
এছাড়া, শামের ফযীলতের বিষয়ে আরও অনেক হাদীস রয়েছে।
শীঘ্রই শামে একটি সাহায্যপ্রাপ্ত দল হবে, বিরোধিতাকারীদের বিরোধিতা কিংবা পরিত্যাগকারীদের পরিত্যাগের কারণে তাদের কোন ক্ষতি হবেনা। তারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের ঝান্ডা সমুন্নীত করবে। তাওহীদের কালিমা বুলন্দ করবে এবং আলাহর শারিয়াহ প্রতিষ্ঠা করবে। সর্বোপরি মুসলিম উম্মাহকে ফিরিয়ে দিবে সম্মান-মর্যাদা এবং তাদের হারানো গৌরব।
লেখকঃ শায়খ সুলাইমান ইবনু নাসির আল-উলওয়ান [ফাকাল্লাহু আসরাহ]
তথ্যসূত্রঃ সংগৃহীত