জিহাদ সর্বোত্তম আমল:
আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত,
অন্য হাদীসে আবু যর রাদি. থেকে বর্ণিত হয়েছে,
উল্লেখিত হাদীস ছাড়া আরও অনেক হাদীস থেকে বুঝে আসে, ঈমানের পর সর্বোত্তম আমল হচ্ছে জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ। তবে বিপরীতে আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাদি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে,
উক্ত হাদীস থেকে বুঝে আসে, ঈমানের পরে ফরয আমলসমূহের অবস্থান। আর জিহাদের স্থান ফরয আমলসমূহের পরে।
হাদীসের মধ্যে উক্ত বাহ্যিক বিরোধ নিরসন করতে ইবনুল হুমাম রহ. বলেন, প্রথমোক্ত হাদীসে ঈমান দ্বারা মূলত ঈমান ও ঈমানের দাবী ফরয আমলসমূহ উদ্ধেশ্য। তাই উপরোক্ত হাদীসসমূহের মাঝে কোন বিরোধ নেই।[5]
তবে এ ব্যাপারে সর্বাধিক সুন্দর মত হচ্ছে, ফযীলতের ভিন্নতা অবস্থার ভিন্নতার প্রেক্ষিতে। যখন জিহাদের প্রয়োজন বেশি বা নফীরে আমের সূরতে ফরযে আইন হবে, তখন অন্যান্য আমলের তুলনায় জিহাদের গুরোত্ব অধিক হবে। বিপরিতে যখন জিহাদ ফরযে কেফায়া হবে এবং এর জন্য যথেষ্ট-সংখ্যক লোক আদায়রত, তখন জিহাদের তুলনায় অন্যান্যা ফরয আমল উত্তম হবে।[6]
উদাহরণ-স্বরূপ, সাদাকার তুলনায় নামায উত্তম –এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু পরিস্থিতি যখন এমন অবস্থা হয় যে, পাশে কিছু মানুষ অনাহারে মৃতপ্রায় অবস্থা, তখন নিসেন্দেহে নামাযের তুলনায় সাদাকা উত্তম হবে।[7]
কেননা আমলের সওয়াব শুধু কষ্ট ও ক্লেশের উপর ভিত্তি করে হয় না; বরং এক্ষেত্রে আমলের উপকার ও প্রজণীয়তার অনেক প্রভাব রয়েছে।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
বলাবাহুল্য যে, দিফায়ী জিহাদের সূরতে জিহাদের প্রয়োজণীতা ও উপকার অন্য যেকোন আমলের চেয়ে বেশি। কেননা এমতাবস্থায় জিহাদ না থাকলে না নামায থাকবে আর না থাকবে নামাযী; না নামাযের জায়গা থাকবে আর না থাকবে এবাদতের স্থান।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
তাই নামায ও নামাযীর হেফাজত জিহাদের মাধ্যমেই হবে। উক্ত অবস্থায় জিহাদ সর্বোত্তম আমল হবে।
উক্ত মতের পক্ষে আব্দুল্লাহ বিন সালাম রাদি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসের সমর্থন পাওয়া যায়। আব্দুল্লাহ বিন সালাম রাদি. বলেন,
উক্ত হাদীসে সফরের অবস্থা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদেরকে নিয়ে কোন জিহাদের সফরে যাচ্ছেন। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় হিজরত করার পরে হজ ও জিহাদ ছাড়া অন্য কোন ধরনের সফর করেননি। তন্মেধ্যে দু’তিনটি সফর ছাড়া অধিকাংশ সফর জিহাদের উদ্ধেশ্যেই ছিল। আর জিহাদের সফরে ঈমানের পরে জিহাদের অবস্থান বলা উপরের ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে।
উল্লেখ্য: ফযীলতের উক্ত তারতম্যের কারণে আমলের ফরযিয়াতে কোন ধরনের প্রভাব পড়বে না। প্রত্যেক ফরয আমল স্ব-স্ব জায়গায় ফরয এবং তা অবশ্যই কর্তব্য। এখানে শুধু বাহ্যিক দৃষ্টিতে বৈপরিত্ব হাদীসসমূহের মাঝে সামঞ্জস্য দেখানো হয়েছে।
আরও উল্লেখ্য: ফরয আমল ও জিহাদের মাঝে ফযীলতের উক্ত তারতম্য থেকে বুঝে আসে যে, ফরয আমল ছাড়া অন্য সকল আমলের উপর জিহাদের অবস্থান -এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
আবু কাতাদাহ রাদি. থেকে বর্ণিত,
ইমাম আহমদ বিন হান্বল রহ. বলেন,
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
[1] প্রশ্নকারী হচ্ছেন, আবু যর গিফারী রাদি.। পরের হাদীসে তা স্পষ্ট উল্লেখ হয়েছে। –ফাতহুল বারী: ১/৭৮
[2] সহীহ বুখারী: ২৬, সহীহ মুসলিম: ৮৩
[3] সহীহ বুখারী: ২৫১৮, সহীহ মুসলিম: ৮৪
[4] সহীহ বুখারী: ২৭৮২, সহীহ মুসলিম: ৮৫
[5] ফাতহুল কাদীর: ৫/৪১৮
[6] দাওয়াতে জিহাদ: ১১০, ১৭৫
[7] লামআতুত তানকীহ: ২/৩২০
[8] মাজমূউল ফাতাওয়া: ২৫/২৮১
[9] মুসনাদে আহমদ: ২৩৭৮২, মু’জামে আওসাত: ৮/৩৬৭। হাইসামী রহ. বর্ণনাকারীদেরকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ৫/২৭৮
[10] মুসনাদে তায়ালিসী: ১/৫১০, সুনানে বায়হাকী: ১৮/১৬৪। সনদ সহীহ।
[11] মুখতাসারুল খিরাকী: ১৩৮, আল-মুগনী: ৯/১৯৯
[12] মাজমূউল ফাতাওয়া: ২৮/৪১৮
আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ: أَيُّ العَمَلِ أَفْضَلُ؟ فَقَالَ: «إِيمَانٌ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ». قِيلَ: ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: «الجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ» قِيلَ: ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: «حَجٌّ مَبْرُورٌ»
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে জিজ্ঞাসা করে হয়েছে[1] যে, সর্বোত্তম আমল কোনটি? উত্তরে তিনি বলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনা। প্রশ্নকারী বললেন, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। প্রশ্নকারী বললেন, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, মকবূল হজ।”[2]অন্য হাদীসে আবু যর রাদি. থেকে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ العَمَلِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «إِيمَانٌ بِاللَّهِ، وَجِهَادٌ فِي سَبِيلِهِ»
“আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর উপর ঈমান আনা এবং তাঁর রাস্তায় জিহাদ করা।”[3]উল্লেখিত হাদীস ছাড়া আরও অনেক হাদীস থেকে বুঝে আসে, ঈমানের পর সর্বোত্তম আমল হচ্ছে জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ। তবে বিপরীতে আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাদি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে,
قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَيُّ العَمَلِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «الصَّلاَةُ عَلَى مِيقَاتِهَا»، قُلْتُ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: «ثُمَّ بِرُّ الوَالِدَيْنِ»، قُلْتُ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: «الجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ» فَسَكَتُّ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلَوِ اسْتَزَدْتُهُ لَزَادَنِي.
“ইবনে মাসঊদ রাদি. বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসূল, সর্বোত্তম আমল কী? তিনি বললেন, সময়মত নামায পড়া। আমি বললাম, এর পরে কী? তিনি বললেন, মাতাপিতার সাথে সদ্ব্যবহার করা। আমি বললাম, এর পরে কী? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। অতঃপর আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা থেকে বিরত হয়ে যাই। যদি আরও প্রশ্ন করতাম, তাহলে তিনি আরও উত্তর দিতেন।”[4]উক্ত হাদীস থেকে বুঝে আসে, ঈমানের পরে ফরয আমলসমূহের অবস্থান। আর জিহাদের স্থান ফরয আমলসমূহের পরে।
হাদীসের মধ্যে উক্ত বাহ্যিক বিরোধ নিরসন করতে ইবনুল হুমাম রহ. বলেন, প্রথমোক্ত হাদীসে ঈমান দ্বারা মূলত ঈমান ও ঈমানের দাবী ফরয আমলসমূহ উদ্ধেশ্য। তাই উপরোক্ত হাদীসসমূহের মাঝে কোন বিরোধ নেই।[5]
তবে এ ব্যাপারে সর্বাধিক সুন্দর মত হচ্ছে, ফযীলতের ভিন্নতা অবস্থার ভিন্নতার প্রেক্ষিতে। যখন জিহাদের প্রয়োজন বেশি বা নফীরে আমের সূরতে ফরযে আইন হবে, তখন অন্যান্য আমলের তুলনায় জিহাদের গুরোত্ব অধিক হবে। বিপরিতে যখন জিহাদ ফরযে কেফায়া হবে এবং এর জন্য যথেষ্ট-সংখ্যক লোক আদায়রত, তখন জিহাদের তুলনায় অন্যান্যা ফরয আমল উত্তম হবে।[6]
উদাহরণ-স্বরূপ, সাদাকার তুলনায় নামায উত্তম –এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু পরিস্থিতি যখন এমন অবস্থা হয় যে, পাশে কিছু মানুষ অনাহারে মৃতপ্রায় অবস্থা, তখন নিসেন্দেহে নামাযের তুলনায় সাদাকা উত্তম হবে।[7]
কেননা আমলের সওয়াব শুধু কষ্ট ও ক্লেশের উপর ভিত্তি করে হয় না; বরং এক্ষেত্রে আমলের উপকার ও প্রজণীয়তার অনেক প্রভাব রয়েছে।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
ومما ينبغي أن يعرف أن الله ليس رضاه أو محبته في مجرد عذاب النفس وحملها على المشاق حتى يكون العمل كلما كان أشق كان أفضل كما يحسب كثير من الجهال أن الأجر على قدر المشقة في كل شيء لا ولكن الأجر على قدر منفعة العمل ومصلحته وفائدته
“জানা উচিৎ যে, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মুহাব্বত শুধুমাত্র নফসকে শাস্তি দেওয়া ও নফসের জন্য কষ্টকর আমলের মাঝে নিহত নয়। যাতে আমল যত কষ্টকর হবে, তা ততই উত্তম হবে। যেমনটা অনেক মূর্খরা মনে করে থাকে যে, প্রত্যেক ক্ষেত্রে কষ্টের পরিমাণ অনুযায়ী সওয়াব হবে। না, বরং আমলের উপকার, কল্যাণ ও ফায়েদার ভিত্তিতে সওয়াব হবে।”[8]বলাবাহুল্য যে, দিফায়ী জিহাদের সূরতে জিহাদের প্রয়োজণীতা ও উপকার অন্য যেকোন আমলের চেয়ে বেশি। কেননা এমতাবস্থায় জিহাদ না থাকলে না নামায থাকবে আর না থাকবে নামাযী; না নামাযের জায়গা থাকবে আর না থাকবে এবাদতের স্থান।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيرًا وَلَيَنْصُرَنَّ اللَّهُ مَنْ يَنْصُرُهُ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ -سورة الحج: 40
“আল্লাহ যদি মানবজাতির একদল (কাফের)কে অপর দল (মুসলিম) দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে (খ্রীষ্টানদের) গির্জা, এবাদত খানা, (ইহুদীদের) উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত, যেগুলাতে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে সাহায্যকারীদেরকে সাহায্য করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী শক্তিধর।” –সূরা হজ: ৪০তাই নামায ও নামাযীর হেফাজত জিহাদের মাধ্যমেই হবে। উক্ত অবস্থায় জিহাদ সর্বোত্তম আমল হবে।
উক্ত মতের পক্ষে আব্দুল্লাহ বিন সালাম রাদি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসের সমর্থন পাওয়া যায়। আব্দুল্লাহ বিন সালাম রাদি. বলেন,
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَلَامٍ، قَالَ: بَيْنَمَا نَحْنُ نَسِيرُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ سَمِعَ الْقَوْمَ وَهُمْ يَقُولُونَ: أَيُّ الْأَعْمَالِ أَفْضَلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " إِيمَانٌ بِاللَّهِ، وَجِهَادٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، وَحَجٌّ مَبْرُورٌ
“একদা আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সফর করছি। হঠাৎ তিনি লোকদেরকে শুনেন, তার বলছে, সর্বোত্তম আমল কী হে আল্লাহর রাসূল? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহর উপর ঈমান আনা, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা এবং মকবুল হজ।”[9]উক্ত হাদীসে সফরের অবস্থা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদেরকে নিয়ে কোন জিহাদের সফরে যাচ্ছেন। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় হিজরত করার পরে হজ ও জিহাদ ছাড়া অন্য কোন ধরনের সফর করেননি। তন্মেধ্যে দু’তিনটি সফর ছাড়া অধিকাংশ সফর জিহাদের উদ্ধেশ্যেই ছিল। আর জিহাদের সফরে ঈমানের পরে জিহাদের অবস্থান বলা উপরের ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে।
উল্লেখ্য: ফযীলতের উক্ত তারতম্যের কারণে আমলের ফরযিয়াতে কোন ধরনের প্রভাব পড়বে না। প্রত্যেক ফরয আমল স্ব-স্ব জায়গায় ফরয এবং তা অবশ্যই কর্তব্য। এখানে শুধু বাহ্যিক দৃষ্টিতে বৈপরিত্ব হাদীসসমূহের মাঝে সামঞ্জস্য দেখানো হয়েছে।
আরও উল্লেখ্য: ফরয আমল ও জিহাদের মাঝে ফযীলতের উক্ত তারতম্য থেকে বুঝে আসে যে, ফরয আমল ছাড়া অন্য সকল আমলের উপর জিহাদের অবস্থান -এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
আবু কাতাদাহ রাদি. থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ: «خَطَبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَذَكَرَ الْجِهَادَ، فَلَمْ يُفَضِّلْ عَلَيْهِ شَيْئًا إِلَّا الْمَكْتُوبَةَ»
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুতবায় জিহাদের আলোচনা করেছেন এবং ফরয আমল ছাড়া অন্য কিছুকে জিহাদের উপর প্রধান্য দেননি।”[10]ইমাম আহমদ বিন হান্বল রহ. বলেন,
لَا أَعْلَمُ شَيْئًا مِنْ الْعَمَلِ بَعْدَ الْفَرْضِ أَفْضَلَ مِنْ الْجِهَادِ
“ফরয আমলের পরে জিহাদের চেয়ে উত্তম কোন আমল আমার জানা নেই।”[11]শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
اتَّفَقَ الْعُلَمَاءُ -فِيمَا أَعْلَمُ- عَلَى أَنَّهُ لَيْسَ فِي التَّطَوُّعَاتِ أَفْضَلُ مِنْ الْجِهَادِ. فَهُوَ أَفْضَلُ مِنْ الْحَجِّ وَأَفْضَلُ مِنْ الصَّوْمِ التَّطَوُّعِ وَأَفْضَلُ مِنْ الصَّلَاةِ التَّطَوُّعِ. وَالْمُرَابَطَةُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَفْضَلُ مِنْ الْمُجَاوَرَةِ بِمَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ وَبَيْتِ الْمَقْدِسِ حَتَّى قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ لَأَنْ أُرَابِطُ لَيْلَةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَحَبُّ إلَيَّ مِنْ أَنْ أُوَافِقَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ عِنْدَ الْحَجَرِ الْأَسْوَدِ.
“আমার জানা মতে, ইমামগণ এ ব্যাপারে ঐক্যমত যে, নফল আমলসমূহের মধ্যে জিহাদের চেয়ে উত্তম কোন আমল নেই। জিহাদ (নফল) হজ, নফল রোযা এবং নফল নামাযের চেয়ে উত্তম। আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দেওয়া মাক্কা, মদীনা ও বাইতুল মাকদিসে অবস্থান (করে এবাদত) করার চেয়ে উত্তম। এমনকি আবু হুরায়রা রাদি. বলেন, আল্লাহর রাস্তায় এক রাত পাহারা দেওয়া আমার কাছে লাইলাতুল কদরে হজরে আসওয়াদের সামনে এবাদত করার চেয়ে প্রিয়।”[12][1] প্রশ্নকারী হচ্ছেন, আবু যর গিফারী রাদি.। পরের হাদীসে তা স্পষ্ট উল্লেখ হয়েছে। –ফাতহুল বারী: ১/৭৮
[2] সহীহ বুখারী: ২৬, সহীহ মুসলিম: ৮৩
[3] সহীহ বুখারী: ২৫১৮, সহীহ মুসলিম: ৮৪
[4] সহীহ বুখারী: ২৭৮২, সহীহ মুসলিম: ৮৫
[5] ফাতহুল কাদীর: ৫/৪১৮
[6] দাওয়াতে জিহাদ: ১১০, ১৭৫
[7] লামআতুত তানকীহ: ২/৩২০
[8] মাজমূউল ফাতাওয়া: ২৫/২৮১
[9] মুসনাদে আহমদ: ২৩৭৮২, মু’জামে আওসাত: ৮/৩৬৭। হাইসামী রহ. বর্ণনাকারীদেরকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ৫/২৭৮
[10] মুসনাদে তায়ালিসী: ১/৫১০, সুনানে বায়হাকী: ১৮/১৬৪। সনদ সহীহ।
[11] মুখতাসারুল খিরাকী: ১৩৮, আল-মুগনী: ৯/১৯৯
[12] মাজমূউল ফাতাওয়া: ২৮/৪১৮