ষষ্ঠ ফাযীলাহ : খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করা আলী রাঃ এর অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য
]عن أبي سعيد رضي الله عنه قال: «كنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم، فانقطعت نعلُه فتخلف علي يخصفها فمشى قليلا ثم قال: «إن منكم من يقاتل على تأويل القرآن كما قاتلت على تنزيله» فاستشرف لها القوم، وفيهم أبو بكر وعمر رضي الله عنهما، قال أبو بكر: أنا هو، قال: «لا» قال عمر: أنا هو، قال: «لا، ولكن خاصف النعل» - يعني عليا - فأتيناه فبشرناه، فلم يرفع به رأسه كأنه قد كان سمعه من رسول الله صلى الله عليه وسلم ».
আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ছিলাম। তখন রাসূলের জুতো ছিঁড়ে গিয়েছিলো। তখন আলী রাঃ তা সেলাই করতে পেছনে রয়ে গেলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটু হেটে বললেন, তোমাদের মধ্যে একজন কুরআনের ব্যাখ্যা নিয়ে লড়াই করবে যেমন আমি লড়াই করেছি কুরআন নাযিল নিয়ে। তারপর অনেকে এই মর্যাদার লাভ করতে চাইলেন। তাদের মধ্যে আবু বকর ও ওমর রাঃ ও ছিলেন। আবু বকর রাঃ বললেন, আমি সেই ব্যক্তি। রাসূল বললেন, না। ওমর রাঃ বললেন, আমি সেই ব্যক্তি। রাসূল বললেন, না তবে সেই ব্যক্তি হলো জুতো সেলাইকারী। অর্থাৎ আলী রাঃ। অতঃপর আমি (আবু সাঈদ খুদরী রাঃ) তার কাছে এসে তাকে সুসংবাদ দিলাম। কিন্তু তিনি মাথা উঠলেন (উঠালেন) না যেন তিনি তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনে ফেলেছেন। ( মুসনাদু আহমাদ ইবনি হাম্বাল : ১১২৮৯, সহীহ ইবনি হিব্বান : ৬৯৩৭, হাকিম রহিঃ হুবহু এই শব্দে বর্ণনা করেছেন : ৪৬২১, শাইখ নাসীরুদ্দীন আলবানী রহিঃ তাকে আত তা'লীক্বাতুল হাসসানে সহীহ বলেছেন : ১০/৭৪, শাইখ শুয়াইব আরনাউত রহিঃ তাকে মুসনাদের টীকায় সহীহ বলেছেন : ১৮/২৯৬)
এই হাদীসটি আলী রাঃ এর গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্যাবলীর আলোচনায় উল্লেখ করা হয়।
قتال على تأويل القرآن এর অর্থ হলো তিনি কুরআনের সঠিক বুঝ ও ব্যাখ্যার উপর থেকে লড়াই করবেন। খাওয়ারিজ কুরআন নাযিলের বিষয়টি বিশ্বাস করলেও কুরআনের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অপব্যাখ্যা করেছে। সুতরাং এটা আলী রাঃ এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য যে, তিনি কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যার উপর থেকে পথভ্রষ্ট জাতির সাথে লড়াই করেছেন যেমন নবী কুরআন নাযিলের কারণে কাফিরদের সাথে লড়াই করেছেন।
ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী রহিঃ এই হাদীসের ব্যাপারে বলেন, তিনি খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন যারা কুরআনের মনগড়া ব্যাখ্যা করতো। ( তারিখুল ইসলাম : ৩/৬৪৩)
فاستشرف له القوم وفيهم أبو بكر وعمر এই অংশের অর্থ হলো তারা এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য কামনা করেছে। যাদের মধ্যে আবু বকর, ওমরও ছিলো। এর থেকে বুঝা যায় এই আমল কত মহান! এই বৈশিষ্ট্যের মর্যাদা কত উঁচু! যার জন্য প্রত্যেক সাহাবী কামনা করেছেন যেন তিনিই হন সে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি।
শাইখ মুহিব্বুদ্দিন আত তবারী রহিঃ এই হাদীসের টীকায় লিখেন, استشرفنا অর্থাৎ আমি প্রতীক্ষা করেছি, কামনা করেছি। استشرفت الشيء এবং استكشفته একই অর্থে। অর্থ হলো, কোনো বিষয় স্পষ্ট হওয়ার জন্য সূর্যের আলো থেকে ছায়া গ্রহণকারী ব্যক্তির ন্যায় কেউ তার ভ্রূর উপর হাত রাখা। এমনটিই বলেছেন হারওয়ী রহিঃ। ( আর রিয়াযুন নাযরাহ : ৩/১৫৭)
বিশিষ্ট মুহাদ্দিস ইবনু আবী শাইবাহ রহিঃ আলী রাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি মিন্বারে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি ফেতনা মূলোৎপাটন করেছি। আমি যদি তোমাদের মাঝে না থাকতাম তাহলে অমুক, অমুক, অমুক এবং নাহারবাসী( অর্থাৎ খাওয়ারিজ) নিহত হতো না। আল্লাহর শপথ! তোমরা যদি সমস্ত আমল ছেড়ে দিয়ে বসে না পড়তে তাহলে আমি - ঐ সকল ব্যক্তিদের জন্য যারা তাদের পথভ্রষ্টতা এবং আমাদের সত্যতা জেনে বুঝে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যবানে যে প্রতিদানের কথা এসেছে তা বর্ণনা করতাম। (মুসান্নাফু ইবনি আবী শাইবাহ : ৩৭৭৩৪, ইমাম নাসায়ী রহিঃ অন্য আরেকটি সূত্রে বর্ণনা করেছেন : ৮৫২১) এই সনদের প্রত্যেক বর্ণনাকারী ثقة তথা বিশ্বস্ত।
ইমাম নববী রহিঃ لأقتلنهم قتل عاد ( তাদেরকে আমি আদ জাতির মতো ধ্বংস করবো) এই হাদীসের টীকায় লিখেন, এতে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে আলী রাঃ এর বিশেষ মর্যাদা উল্লেখ করা হয়েছে। (শরহু মুসলিম লিন নববী : ৭/১৬২)
এই হাদীসটি আলী রাঃ এর গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্যাবলীর আলোচনায় উল্লেখ করা হয়।
قتال على تأويل القرآن এর অর্থ হলো তিনি কুরআনের সঠিক বুঝ ও ব্যাখ্যার উপর থেকে লড়াই করবেন। খাওয়ারিজ কুরআন নাযিলের বিষয়টি বিশ্বাস করলেও কুরআনের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অপব্যাখ্যা করেছে। সুতরাং এটা আলী রাঃ এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য যে, তিনি কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যার উপর থেকে পথভ্রষ্ট জাতির সাথে লড়াই করেছেন যেমন নবী কুরআন নাযিলের কারণে কাফিরদের সাথে লড়াই করেছেন।
ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী রহিঃ এই হাদীসের ব্যাপারে বলেন, তিনি খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন যারা কুরআনের মনগড়া ব্যাখ্যা করতো। ( তারিখুল ইসলাম : ৩/৬৪৩)
فاستشرف له القوم وفيهم أبو بكر وعمر এই অংশের অর্থ হলো তারা এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য কামনা করেছে। যাদের মধ্যে আবু বকর, ওমরও ছিলো। এর থেকে বুঝা যায় এই আমল কত মহান! এই বৈশিষ্ট্যের মর্যাদা কত উঁচু! যার জন্য প্রত্যেক সাহাবী কামনা করেছেন যেন তিনিই হন সে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি।
শাইখ মুহিব্বুদ্দিন আত তবারী রহিঃ এই হাদীসের টীকায় লিখেন, استشرفنا অর্থাৎ আমি প্রতীক্ষা করেছি, কামনা করেছি। استشرفت الشيء এবং استكشفته একই অর্থে। অর্থ হলো, কোনো বিষয় স্পষ্ট হওয়ার জন্য সূর্যের আলো থেকে ছায়া গ্রহণকারী ব্যক্তির ন্যায় কেউ তার ভ্রূর উপর হাত রাখা। এমনটিই বলেছেন হারওয়ী রহিঃ। ( আর রিয়াযুন নাযরাহ : ৩/১৫৭)
বিশিষ্ট মুহাদ্দিস ইবনু আবী শাইবাহ রহিঃ আলী রাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি মিন্বারে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি ফেতনা মূলোৎপাটন করেছি। আমি যদি তোমাদের মাঝে না থাকতাম তাহলে অমুক, অমুক, অমুক এবং নাহারবাসী( অর্থাৎ খাওয়ারিজ) নিহত হতো না। আল্লাহর শপথ! তোমরা যদি সমস্ত আমল ছেড়ে দিয়ে বসে না পড়তে তাহলে আমি - ঐ সকল ব্যক্তিদের জন্য যারা তাদের পথভ্রষ্টতা এবং আমাদের সত্যতা জেনে বুঝে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যবানে যে প্রতিদানের কথা এসেছে তা বর্ণনা করতাম। (মুসান্নাফু ইবনি আবী শাইবাহ : ৩৭৭৩৪, ইমাম নাসায়ী রহিঃ অন্য আরেকটি সূত্রে বর্ণনা করেছেন : ৮৫২১) এই সনদের প্রত্যেক বর্ণনাকারী ثقة তথা বিশ্বস্ত।
ইমাম নববী রহিঃ لأقتلنهم قتل عاد ( তাদেরকে আমি আদ জাতির মতো ধ্বংস করবো) এই হাদীসের টীকায় লিখেন, এতে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে আলী রাঃ এর বিশেষ মর্যাদা উল্লেখ করা হয়েছে। (শরহু মুসলিম লিন নববী : ৭/১৬২)
সপ্তম ফাযীলাহ : আসমানের নিচে সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ হলো যাকে খাওয়ারিজ হত্যা করেছে
ইমাম আহমাদ রহিঃ সাইয়ার থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন : ইরাকের দিক থেকে কিছু মাথা এনে মাসজিদের সামনে রাখা হলো। এমতাবস্থায় আবু উমামা রাঃ মাসজিদে এসে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন। অতঃপর তিনি বেরিয়ে মাথাগুলোর কাছে আসলেন। তারপর তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন। তারপর তিনি মাথা উঠিয়ে তিন বার বললেন, আসমানের নিচে সবচেয়ে নিকৃষ্ট নিহত ব্যক্তি। আর আসমানের নিচে সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ হলো যাকে তারা হত্যা করেছে। এবং তিনি তিন বার বললেন, জাহান্নামের কুকুর। তারপর তিনি তাদের থেকে ফিরে আসলেন। তারপর কোনো এক ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করলো, হে আবু উমামা তুমি এই হাদীসের ব্যাপারে কী বলো? তুমি যে বলেছো জাহান্নামের কুকুর এটা কি তুমি রাসূল থেকে শুনেছো? নাকি নিজের থেকে বলেছো? তিনি উত্তরে বললেন, তাহলে তো আমি দুঃসাহসী! আমি যদি এক দুইবার শুনতাম তাহলে তা উল্লেখ করতাম না। অথচ রাসূল সাত বার বলেছেন। তারপর লোকটি বললো, আপনি কাঁদলেন কেন? তাদের প্রতি দয়া হওয়ার কারণে। (মুসনাদু আহমাদ ইবনি হাম্বাল : ২২১৫১, শাইখ শুয়াইব আরনাউত রহিঃ তাকে মুসনাদের টীকায় সহীহ বলেছেন ।)
তবরানীর এক বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন : জাহান্নামের কুকুর, জাহান্নামের কুকুর। এভাবে তিন বার বলেন। আসমানের নিচে সবচেয়ে নিকৃষ্ট নিহত ব্যক্তি। তাও তিন বার বলেন। আসমানের নিচে সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ হলো যাকে তারা হত্যা করেছে। এটাও তিন বার বলেন। সুসংবাদ তাদের হত্যাকারী ও খাওয়ারিজের হাতে নিহত ব্যক্তির জন্য । একথাও তিন বার বলেন। (আল মু'জামুল কাবীর : ৮০৩৪)
তবরানীর এক বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন : জাহান্নামের কুকুর, জাহান্নামের কুকুর। এভাবে তিন বার বলেন। আসমানের নিচে সবচেয়ে নিকৃষ্ট নিহত ব্যক্তি। তাও তিন বার বলেন। আসমানের নিচে সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ হলো যাকে তারা হত্যা করেছে। এটাও তিন বার বলেন। সুসংবাদ তাদের হত্যাকারী ও খাওয়ারিজের হাতে নিহত ব্যক্তির জন্য । একথাও তিন বার বলেন। (আল মু'জামুল কাবীর : ৮০৩৪)
অষ্টম ফাযীলাহ : সফলতা ও মুক্তি হলো ঐ ব্যক্তির জন্য যাকে খাওয়ারিজ হত্যা করেছে
বিশিষ্ট মুহাদ্দিস আব্দুর রাযযাক রহিঃ ইবনু তাওস থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন : যখন হারুরীরা আগমন করলো তখন আমার বাবা পালিয়ে মক্কায় আশ্রয় নিলেন। তখন ইবনু ওমর রাঃ এর সাথে সাক্ষাৎ হলে তিনি বলেন, হারুরীরা আগমন করায় আমরা তাদের থেকে পালিয়ে এসেছি। যদি তারা আমাদের পেয়ে হত্যা করে ফেলে। তারপর ইবনু ওমর রাঃ বললেন, তাহলে তুমি কি সফল হয়েছ এবং মুক্তি লাভ করেছ? (মুসান্নাফু আব্দির রাযযাক : ১৮৫৮০)
চলবে ইনশাআল্লাহ......
খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করার মহা ফাযীলাহ - ১
খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করার মহা ফাযীলাহ - ২
খাওয়ারিজের বিরুদ্ধে লড়াই করার মহা ফাযীলাহ - ৩
https://dawahilallah.com/showthread.php?24003