মৃত্যু যন্ত্রণা...........
মৃত্যু যন্ত্রণা খুবই কঠিন। আত্মা যেরূপ শরীরের ভেতর থাকার কারণে এতদিন আমরা বহু আরাম-আয়েশ ও ভোগ-বিলাস করেছি সেরূপ বেরিয়ে যাওয়ার সময় ঠিক বিপরীত কষ্ট। সে কষ্ট সামান্য নয়, অনেক বেশি।
রাসূলুল্লাহ (স) মৃত্যু যন্ত্রণা সম্পর্কে বলেছেন,
তোমরা বনী ইসরাঈল জাতি সম্পর্কে আলোচনা করতে পার, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। তাদের একটি অদ্ভুত ঘটনা আছে। তাদের একদল লোক একটি কবরস্থানের কাছে আসে। তারা বলে, যদি আমরা দু' রাকাত নামায পড়ে আল্লাহর কাছে দোআ করি তাহলে তিনি আমাদের জন্য একজন মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করে দেবেন এবং তিনি আমাদেরকে মৃত্যুর সংবাদ দেবেন। তারা অনুরূপ করে দোআ করায় এক লোক কবর থেকে বের হয়। তার দু চোখের মাঝে সিজদার চিহ্ন। সে বললো, হে লোকেরা ! তোমরা কি চাও? আল্লাহর কসম, আমি ১শ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছি, এখন পর্যন্ত আমার মৃত্যু যন্ত্রণার ধকল দূর হয়নি, তোমরা আল্লাহর কাছে দোআ কর তিনি যেন আমাকে সাবেক অবস্থায় ফিরিয়ে দেন। [মুস্তাখাব কানযুল উম্মাল হাশিয়া আলা মুসনাদ ইমাম আহমদ]
মৃত্যু যন্ত্রণা থেকে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (স)-ও মুক্তি পাননি। এ যন্ত্রণা খুবই কঠিন। হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত,
মৃত্যুকালীন সময়ে রাসূলুল্লাহ (স)-এর কাছে একটি পানির পাত্র ছিল এবং তাতে পানি ছিল। তিনি তাতে হাত দিয়ে পরে নিজ চেহারা মোবারকে মুছতেন এবং বলতেন : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, অবশ্যই মৃত্যুর যন্ত্রণা আছে। তারপর দু' হাত তুলে বলেন, হে মহান বড় সাথীর সাথে তারপর রূহ চলে যায় ও হাত মোবারক নিচে নেমে পড়ে। আয়েশা (রা) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (স)-এর মৃত্যু যন্ত্রণা দেখার পর আর কারোর মৃত্যু যন্ত্রণাকে ছোট মনে করি না।
আনাস বিন মালেক (রা) থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ (স) বলেন, বান্দাহ অবশ্যই মৃত্যু যন্ত্রণার সম্মুখীন হবে। তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ একে
অপরকে সালাম জানাবে এবং বলবে, তোমার উপর সালাম, কেয়ামত পর্যন্ত আমি তোমার কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
হযরত ইবরাহীম (আ)-এর ঘটনা থেকে জানা যায়, মৃত্যুর পর আল্লাহ ইবরাহীম (আ)-কে জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর বন্ধু! আপনি মৃত্যুকে কেমন পেয়েছেন? তিনি বলেনঃ মৃত্যু যেন গরম শিকের মধ্যে লাগানো ভিজা পশমের মত। তারপর তাকে টেনে বের করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, হে। ইবরাহীম! আমি আপনার জন্য মৃত্যু যন্ত্রণাকে সহজ করে দিয়েছি।
[আত- তাযকিরাহ,]
মূসা (আ)-এর মৃত্যুর পর আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করেন, হে মুসা! আপনার কাছে মৃত্যু কেমন লেগেছে ? তিনি বলেন, আমার কাছে মৃত্যুকে এমন মনে হয়েছে যেন জীবিত পাখিকে গরম পানিতে সিদ্ধ করা হচ্ছে। পাখিটি মরে না, মরলে আরাম পেত এবং মুক্তিও পায় না, তাহলে উড়ে চলে যেত।
[আত- তাযকিরাহ,]
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, আমার কাছে মৃত্যুকে কসাই কর্তৃক জীবন্ত ভেড়ার চামড়া খোলার মত কষ্টদায়ক মনে হয়েছে। এ দু' নবী মৃত্যু যন্ত্রণার
ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অর্থাৎ মৃত্যু যন্ত্রণা এরূপ হতে পারে। যদিও হাদীসে, নেকক লোকের সহজ মৃত্যুর কথা উল্লেখ আছে। অর্থাৎ সেটা পাপীর তুলনায় সহজ। রাসূলুল্লাহ (স)-ও মৃত্যুর সময় নিজ মৃত্যু যন্ত্রণার কথা উচ্চারণ করেছেন।
রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, মৃত্যুর ফেরেশতাকে দেখলেই মৃত্যু যন্ত্রণা বেড়ে যায়। তিনি বলেন ঃ আমার প্রাণ যার হাতে সেই সত্তার শপথ, মৃত্যুর ফেরেশতাকে একবার দেখা এক হাজার বার তলােয়ারের আঘাতের চেয়েও বেশি কষ্টদায়ক। রাসূলুল্লাহ (স)-কে মৃত্যু যন্ত্রণা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করায় তিনি উত্তর দেন, ‘সবচেয়ে সহজ মৃত্যু হলো এমন কাটাযুক্ত বন্য ফলের মত,যা পশমের মধ্যে আটকে যায় কাঁটাযুক্ত ফলটিকে কি পশমবিহীন অবস্থায় টেনে বের করা যায় ?
হযরত ওমর (রা) শহীদ হয়েছেন। তা সত্বেও মৃত্যু যন্ত্রণার সময় বলেন ঃ ওমরের মা যদি ওমরকে জন্ম না দিত!
আরেক বর্ণনায় আছে, সৃষ্টি জগতের সকলের মৃত্যুর পর আল্লাহ যখন মৃত্যুর ফেরেশতার রূহ হরণ করবেন তখন মৃত্যুর ফেরেশতা বলবেঃ আপনার
ইযযতের কসম, আমি যদি মৃত্যু যন্ত্রণা সম্পর্কে এখনকার মত আগে জানতাম তাহলে আমি কখনও কোন মুমিনের রূহ হরণ করতাম না।
ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেনঃ রাগে শোক ও ব্যথা-বেদনা—এসব হচ্ছে মৃত্যুর চিঠি ও দূত। মৃত্যুর সময় উপস্থিত
হলে স্বয়ং মৃত্যুর ফেরেশতা হাযির হন এবং বলেন ঃ হে বান্দাহ! আর কত খবর, আর কত দূত, আর কত চিঠি তোমার প্রয়োজন? আমিই (এখন) সর্বশেষ খবর, আমার পরে আর কোন খবর নেই। আমিই দূত, আমার পরে আর কোন দূত নেই। তুমি হয় তোমার রবের ডাকে অনুগত হয়ে কিংবা অনিচ্ছা সহকারে সাড়া দাও। যখন বান্দাহর রূহ হরণ করা হয় এবং লোকেরা চীকার করতে থাকে তখন মৃত্যুর ফেরেশতা বলেন, তোমরা কার জন্য চীৎকার ও কান্নাকাটি করছো ? আল্লাহর কসম, আমি তার হায়াতের ব্যাপারে কোন যুলুম ও অন্যায় করিনি। এবং না তার জন্য নির্ধারিত রিযিকে ভাগ বসিয়েছি। বরং তার প্রতিপালকই তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন। ক্রন্দনকারীর উচিত, নিজের জন্য ক্রন্দন করা। আমাকে তোমাদের কাছে বারবার আসতেই হবে যে পর্যন্ত না তোমাদের একজনও বাকী থাকে।
আল এতে দাদ লিল মাওত, যাইনুদ্দিন আলী আল মােআব্বাৱী,
প্রথম্ পর্বের লিংক-https://82.221.139.217/showthread.php?12997-&%232478;&%232499;&%232468;&%232497;!&%232447;&%23 2453;-&%232437;&%232474;&%232509;&%232480;&%232495;&%232 527;-&%232476;&%232494;&%232488;&%232509;&%232468;&%232 476;&%232468;&%232494;-&%232471;&%232494;&%232480;&%232494;&%232476;&%232 494;&%232489;&%232495;&%232453;-&%232458;&%232482;&%232476;&%232503;-&%232439;&%232472;&%232486;&%232494;&%232482;&%232 509;&%232482;&%232494;&%232489;