ধারাবাহিক "আমরা কিভাবে রমাদ্বান কে স্বাগত জানাব" সিরিজের
প্রথম পর্বঃ
প্রথম পর্বঃ
বিসমিল্লাহির-রহমানির-রহিম।
আলহামদুলিল্লা-হি রব্বিল আ-লামী-ন। ওয়াস্-সলা-তু ওয়াস্-সালা-মু আলা- সাইয়িদিল আম্বিয়া-ই ওয়াল-মুরসালী-ন, ওয়া আলা- আ-লিহী-, ওয়া আসহা-বিহী-, ওয়ামান তাবিয়াহুম বি ইহসা-নিন ইলা- ইয়াওমিদ্দী-ন, মিনাল উলামা-ই ওয়াল মুজাহিদী-ন, ওয়া আ-ম্মাতিল মুসলিমীন, আমী-ন ইয়া- রাব্বাল আ’-লামীন।
আম্মা বা’দ,
মুহতারাম ভাইয়েরা!
প্রথমে আমরা সকলেই একবার দুরূদ শরীফ পড়ে নিই।
আল্ল-হুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লাম ওয়া বা-রিক আলা- নাবিয়্যিনা- মুহাম্মাদ ওয়া আলা- আ-লি মুহাম্মাদ কামা- সল্লাইতা ওয়া সাল্লামতা ওয়া বা-রকতা আলা- ইবর-হী-মা ওয়া আলা- আ-লি ইবর-হী-মা ইন্নাকা হামি-দুম্মাজি-দ।
এক, খালেস তাওবা ও বেশি বেশি ইস্তেগফার করাঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেনঃ
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيم-
বল- হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি অতি ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু।
[আয-যুমার ৩৯ঃ৫৩]
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরো বলেনঃ
{ أَفَلا يَتوبونَ إِلَى اللَّهِ وَيَسْتَغْفِرونَه وَاللَّه غَفورٌ رَحِيمٌ}
তারা কি আল্লাহর নিকট তাওবা করবে না, তাঁর কাছে ক্ষমা চাইবে না, আল্লাহ তো হলেন বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
[আল-মাইদাহ ০৫ঃ৭৪]
▪️পাপাচার ও নাফরমানী সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণঃ
আমরা বহু সময় অপচয় করে ফেলি, এমনকি রমাদ্বান ও এ জাতীয় বিশেষ বিশেষ সময় কেও আমরা কাজে লাগাতে পারিনা। অথচ এই সময় গুলোর কত গুরুত্ব তা আমাদের অজানা নয়। আর নিঃসন্দেহে এর কারণ আমাদের পাপ-সমুহ! যা আমাদেরকে এসকল বিশেষ মুহুর্ত গুলো কাজে লাগানো থেকে বন্দী করে রাখে, এরকম মহা কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করে দেয়।
▪️নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালার আনুগত্য মহা সৌভাগ্য, আল্লাহ তায়ালার সামনে দণ্ডায়মান হওয়া নিয়ামত, কল্যাণকর মৌসুম সমুহ পাওয়া বড়ই গণিমত। দয়াময় আল্লাহ তিনার সৃষ্টির যাকে চান কেবল তাকেই দান করেন।
▪️সুতরাং সকল মুসলিম/মুসলিমার জন্য আবশ্যক হলো গোনাহ ও শরীয়াহ আদায়ের সকল কমতির উপর অভিসম্পাত করা। গোনাহ আর করবনা এ ব্যাপারে দৃঢ়তর সংকল্প করা।
দুই, আন্তরিক নিয়ত করা
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেনঃ
وَمَآ أُمِرُوٓا۟ إِلَّا لِيَعْبُدُوا۟ ٱللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ وَيُقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤْتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَۚ وَذَٰلِكَ دِينُ ٱلْقَيِّمَةِ
তাদেরকে এ ছাড়া অন্য কোন হুকুমই দেয়া হয়নি যে, তারা আল্লাহর ‘ইবাদাত করবে খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে। আর তারা নামায প্রতিষ্ঠা করবে আর যাকাত দিবে। আর এটাই সঠিক সুদৃঢ় দ্বীন।
[আল-বায়্যিনাহ ৯৮ঃ০৫]
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরোবলেনঃ
-وَمَنْ أَرَادَ الْآخِرَةَ وَسَعَى لَهَا سَعْيَهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ كَانَ سَعْيُهُمْ مَشْكُورًا-
আর যে ব্যক্তি আখিরাত কামনা করে আর তার জন্য চেষ্টা করে যতখানি চেষ্টা করা দরকার আর সে মু’মিনও, এরাই হল তারা যাদের চেষ্টা সাধনা সাদরে গৃহীত হবে।
[আল-ইসরা ১৭ঃ১৯]
◉ আলক্বামাহ ইব্*নু ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি ‘উমর ইব্*নুল খাত্তাব (রাঃ)-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ কাজ (এর প্রাপ্য হবে) নিয়ত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে ইহকাল লাভের অথবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে- তবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে, যে জন্যে, সে হিজরত করেছে।
[সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস]
▪️নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার আনুগত্য করা্র তাওফিক পাওয়ার ক্ষেত্রে "নিয়ত" এর বড় একটি প্রভাব রয়েছে। এই মহা মৌসুম রমাদ্বান আসার পূর্বেই আমাদের এ নিয়ত করা উচিত যে এই মাসের প্রতিটি সময় প্রতিটি মুহূর্তকে আমরা ইবাদাত করে কাজে লাগাব।
জেনে রাখো! নিশ্চয়ই তোমার সর্বমহান প্রতিপালক তোমার নিয়্যাতকে দেখেন, এবং নিয়তের সত্যতার উপর নির্ভর করেই প্রতিদান দান করেন। ইবাদাত ও আনুগত্য মুসলিমের চেষ্টা প্রচেষ্টাতেই সম্ভব নয়, বরং খালেস নিয়ত পরিমাণে প্রাপ্ত তাওফিকের মাধ্যমেই সম্ভব হয়।
তিন,আন্তরিক দৃঢ় সংকল্প করাঃ
আন্তরিক দৃঢ় সংকল্প আন্তরিক নিয়তের মুখাপেক্ষী, অনেক মানুষই বলে যে সে অমুক অমুক বরকতময় সময় কে কাজে লাগাবে, রমাদ্বান কে পূর্ণ কাজে লাগাবে, এত এত নেক আমল করবে। কিন্তু যখন সময় আসে তখন তার সেই বড় বড় সংকল্পের হাওয়া ছুটে যায়। সেই শক্তিশালী ভাষন মুষড়ে পড়ে।
কিন্তু যে মহা প্রতিদানের কথা জানে, নেক আমল কারীর অনেক অনেক সাওয়াবের কথা জানে, তার সে শক্তিশালী সংকল্প দুর্বল হয় না, কেননা সাওয়াব মহামহিম, মর্যাদা সুমহান কারি, তার জন্য এটা যথেষ্ট যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সম্মান দাতা নিয়ামত দাতা অনুগ্রহকর্তা।
অতএব আমাদের দৃঢ় সংকল্প হওয়া উচিত আমরা কিয়ামুল্লাইল সহ বিভিন্ন নফল সালাত, কুরআন তিলাওয়াত অনুধাবন ও অর্থ বুঝা, ই'তিকাফ, আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষায় যত্নবান হওয়া, দু'য়া, জিকিরুল্লাহ, সাদাকাহ, ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা, সে অনুযায়ী আমল করা ও তার প্রচার করা, শরীয়ার খেলাফ এমন সকল কাজ করার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া। এগুলো সকল নেককাজে আমাদের রমাদ্বানকে অতিবাহিত করবো ইনশাআল্লাহ।
اللهم بلغنا رمضان وأعنا على طاعتك فيه وتقبله من
ইয়া আল্লাহ! আপনি রমাদ্বান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন! এবং রমাদ্বানে আপনার বেশি বেশি ইবাদত করতে সাহায্য করুন, আমাদের তরফ থেকে রমাদ্বান কে কবুল করে নিন আমিন!
ইয়া আল্লাহ! আপনি রমাদ্বান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন! এবং রমাদ্বানে আপনার বেশি বেশি ইবাদত করতে সাহায্য করুন, আমাদের তরফ থেকে রমাদ্বান কে কবুল করে নিন আমিন!
আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করছি। অধিবেশন শেষ পর্যন্ত ধৈর্যের সাথে অধ্যায়নের জন্য "জাযাকাল্লহু খইরান আহসানাল জাযা"
আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে এবং পুরো উম্মাহকে রমাদ্বানের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের সর্বাত্মক চেষ্টা করার তাওফীক দান করুন! আমিন! এবং আমাদের সবাইকে ইখলাসের সাথে জিহাদ ও শাহাদাতের পথে অবিচল থাকার তাওফীক দান করুন! আমিন!
আমাদের নেক দোয়ায় মাজলুম উম্মাহ এবং মুজাহিদগনকে যেন ভুলে না যাই!
আল্ল-হুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লাম ওয়া বা-রিক আলা- নাবিয়্যিনা- মুহাম্মাদ ওয়া আলা- আ-লি মুহাম্মাদ কামা- সল্লাইতা ওয়া সাল্লামতা ওয়া বা-রকতা আলা- ইবর-হী-ম ওয়া আলা- আ-লি ইবর-হী-ম ইন্নাকা হামি-দুম্মাজি-দ।
وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله
واصحابه اجمعين
وآخردعوانا ان الحمد لله ربالعالمين
وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله
واصحابه اجمعين
وآخردعوانا ان الحمد لله ربالعالمين
চলবে ইনশাআল্লাহ.............!
┈┉┅━❀❀❀❀━┅┉┈