Announcement

Collapse
No announcement yet.

কেন দ্বীনের সৈনিকরা ঝরে পড়ে?

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কেন দ্বীনের সৈনিকরা ঝরে পড়ে?

    রাসূল সাঃ যখন পবিত্র মক্কা নগরীতে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া শুরু করেছেন।তখন যারাই দাওয়াত কবুল করতো তারা হাজারো কষ্ট নির্যাতন সহ্য করেও দ্বীনের উপর অটল থাকতো। কিন্তু আজ দেখা যায় অনেক ভালো কর্মীও কিছুদিন দ্বীনের কাজ করে আস্তে ঝরে যায়। এটা সব ইসলামি সংঘঠনের ক্ষেত্রে সমস্যা টা খুব বেশি। কিন্তু প্রশ্ন আমরা সবাই দাবী করি আমরা মাক্কী জিবনে আছি। কিন্তু রাসূল সাঃ এর সময় মাক্কী যুগেতো ঝরে পড়তো না। এখন কেন ঝরে পড়ে?
    এর কয়েকটা কারন আমি বের করেছি। প্রথম কারন টি হলো মাক্কী জিবনিতে যে সকল আয়াত দ্বারা দাওয়াত দেওয়া হতো সে সকল আয়াত নিয়ে আলোচনা একদম হয় না বললেই চলে।পবিত্র কোরআনে যে সমস্ত সুরা মক্কাতে নাযিল হয়েছে সে সকল সুরায় আল্লাহর সৃষ্টি নির্দশন, অসীম ক্ষমতার বর্ননায় ভরপুর। বারবার আল্লাহর সৃষ্টি নির্দশন সম্পর্কিত আয়াত নাযিল হয়েছে। আর রাসূল সাঃ এসকল আয়াত দিয়ে মানুষকে দাওয়াত দিতেন। কিন্তু আজ সেসব আয়াত নিয়ে কোন আলোচনা তেমন হয় না।অথচ উচিত ছিলো প্রতিটি দ্বীনি বৈঠকে, সাক্ষাৎ এসব আয়াত ও তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করা। যাতে মূহুর্তের জন্যও আল্লাহকে নিয়ে এই আলোচনাগুলো মন থেকে দূরে সরে না যায়। ভালোভাবে আলোচনা গুলো অন্তরে গেঁথে যায়।আর এ আয়াত গুলোর উপর যত বেশি আলোচনা হবে তত এই আলোচনাগুলো সমাজে ছড়িয়ে পড়বে। ফলে মানুষের ভিতরে আল্লাহর বড়ত্ব, ও ভালোবাসা বাড়বে। যখন সংঘঠনের প্রথম স্তরের জ্ঞানীর দ্বীতিয় স্তরের জ্ঞানীদের এই আলোচনা গুলো শুনাবে তখন দ্বীতিয় স্তরের আমীররা আবার তৃতীয় স্তরের আমীরদের শুনাবে। তৃতীয় স্তরের আমীররা তার পরবর্তীদের। এভাবে গোটা সমাজে আলোচনাগুলো ছড়িয়ে পড়বে। এই ছড়িয়ে পড়ার দ্বারা প্রথম যে উপকারটা হবে সেটা হলো যিনি আলোচনা করবেন তিনি অবশ্যই আলোচনাটিকে সুন্দর করার জন্য কুরআনের আয়াত নিয়ে বেশি বেশি গভেষনা করবেন।ফলে আয়াতে উপর নতুন নতুন জ্ঞান আসবে। দ্বীতিয় উপকার হলো আলোচনা দ্বারা মাদয়ুর হেদায়েত না পেলেও দায়ীর অন্তরে আলোচনা গুলো শক্ত ভাবে গেড়ে যাবে। ফলে সে দুনিয়ার কাউকেই পরওয়া করবে না।
    অনেকেই এই আয়াতগুলোর উপর আলোচনা না করার কারন হলো উনারা মনে করেন এই আয়াতগুলো আলোচনা করলে কি আর হবে? আয়াতগুলো গুরুত্বসহ দেখেন না। অথচ উনারা চিন্তা করেন না যে, উনারা যত তাত্ত্বিক আলোচনা করেন না কেন উনাদের আলোচনার চেয়ে আল্লাহর পবিত্র কালাম সবকিছুর চেয়ে শ্রেষ্ঠ। এই পৃথিবীতে সব কিছু মাখলুক। কিন্তু শুধুমাত্র কোরআন হলো স্বয়ং আল্লাহর কালাম।


    ঝরে পড়ার দ্বীতিয় আরেকটি কারন হলো পাপ। সাহাবীরা ইমান আনার সাথে সাথে সমস্ত পাপ আল্লাহ ক্ষমা করে দিতেন। ফলে উনারা নিষ্পাপ শিশুর মত হয়ে যেতেন। আর এই নিষ্পাপের উপরেই চলে আসতো নানা ধরনের জুলুম নির্যাতন। একের পর এক কষ্ট নির্যাতন সয়ে যেতেন। কিন্তু আমরা কি তাওবা করে নিজের জীবনের সব গুনাহ আজও মাপ করিয়ে নিতে পেরেছি?আমরা পরিপূর্ণ তাওবা করার পরেও দেখা যায় কোন না কোন পাপে আমরা জড়িয়ে থাকি। সেটা কথা বা কাজের মাধ্যমেই হোক না কেন? আমরা অনেকেই পূর্বের সব পাপ থেকে পরিপূর্ণ ফিরে আসতে পারি না।

    ঝরে পড়ার তৃতীয় আরেকটি কারন হলো আমরা কয়েকদিন ভালোভাবে দ্বীন পালন করতে পারলে অনেক দ্বীনদ্বার ভাইয়ের ভুলত্রুটি দেখা শুরু করি। ভুলত্রুটি গুলো নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে থাকি। অমুকে এটা করলো কেন? ওটা করে নি কেন? নাম ধরে ধরে বিষদগার করে থাকি। অথচ ইতিপূর্বে যে আমিও পাপি ছিলাম সেটা নিয়ে ভাবি না। আমাদের মধ্যে কেমন যেন অহংকার ও হিংসা কাজ করে। ফলে সেখান থেকে শুরু হয় গীবত, পর নিন্দা।আর এগুলো ই আমাদের দ্বীন থেকে দূরে সরে পড়ার কারন হয়। সাহাবীদের মাঝে এসব ছিলো না। তারা একে অপরের প্রতি হিংসা ছিলো না। তারা একে অপর কে নিয়ে গীবত করতেন না। তারা ছিলেন এক দেহ।তাদের কাফেরদেরকে শত্রু হিসেবে দেখতেন। কিন্তু নিজেরা একে অপরকে এমন সাহায্য সহযোগিতা করতেন যেটার নযীর ইতিহাসে নাই।
    সুতরাং আমরাও চেষ্টা করবো তাদের মত হওয়ার জন্য ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন। আমিন।

Working...
X