Announcement

Collapse
No announcement yet.

আমানতদারিতা

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আমানতদারিতা

    রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
    مَنْ أَحَبَّ لِلّٰهِ وَ أَبْغَضَ لِلّٰهِ وَ أَعْطٰى لِلّٰهِ وَ مَنَعَ لِلّٰهِ فَقَدْ اسْتَكْمَلَ الْإِيْمَانَ
    অর্থাৎ, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্য ভালবাসে, আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্য বিদ্বেষ রাখে, আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্য দান করে এবংআল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্যই দান করা থেকে বিরত থাকে সে ব্যক্তিই নিজের ঈমান পরিপূর্ণ করল । [আবূ দাউদ]

    আমরা যদি "আল-ওয়ালা ওয়াল-বারা" ছেড়ে দেই তবে-
    يٰأَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا مَنْ يَرْتَدَّ مِنْكُمْ عَن دِيْنِهٖ فَسَوْفَ يَأْتِى ٱللّٰهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَ يُحِبُّوْنَهٗ أَذِلَّةٍ عَلٰى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلٰى الْكافِرِيْنَ يُجَاهِدُوْنَ فِي سَبِيْلِ اللّٰهِ وَلَا يَخَافُوْنَ لَوْمَةَ لَائِمٍ
    হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্য থেকে যে স্বীয় দীন থেকে ফিরে যাবে, অচিরেই আল্লাহ তা'আলা এমন এক জাতি সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারাও তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়ী ও নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোনো তিরস্কারকারীর তিরস্কারের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবে না। [সূরা মায়িদা ৫ : ৫৪]

    আমার হাবীব; রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
    لَا إِيْمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَهٗ
    অর্থাৎ, যে ব্যক্তির আমানতদারিতা নেই তার কোনো (তথা এক জার্রাহ) পরিমানও ঈমান নাই । [আহমদ]

    রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
    لَمَّا خَلَقَ اللّٰهُ الرِّحْمَ وَ الْأَمَانَةَ لَزِمَا خَاصِرَتَهٗ تعالٰى و قال أَلَا مَنْ وَصَلَنَا وَصَلَهٗ اللّٰهُ وَ مَنْ قَطَعَنَا قَطَعَهٗ اللّٰهُ
    অর্থাৎ, যখন আল্লাহ তা'আলা বন্ধন-ভালবাসা ও আমানতকে সৃষ্টি করলেন তখন তারা আল্লাহ তা'আলার সাথে লেগে থাকলো এবং উভয়ে বলল, সাবধান! যে ব্যক্তি আমাদেরকে বজায় রাখবে আল্লাহ তা'আলা তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবেন। আর যে আমাদেরকে ছিন্ন করবে আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে ছিন্ন করবেন।

    রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত মালেক ইবনে হারেস (রদি.)কে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি প্রকৃত মুমিন? তিনি বললেন, হ্যাঁ... আমি প্রকৃত মুমিন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, (চিন্তা করে বলো) প্রত্যেক জিনিসের একটি হাকীকত হয়, তোমার ঈমানের হাকীকত কি? অর্থাৎ তুমি কিসের ভিত্তিতে এই দাবী করছ যে, 'আমি প্রকৃত মুমিন।' তিনি বললেন, (আমার কথার হাকীকত এই যে,) আমি আমার অন্তরকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে নিয়েছি, রাত্রি জাগরণ করি, দিনের বেলায় পিপাসার্ত থাকি (অর্থাৎ সওম পালন করি) আর যখন আমার রবের আরশেকে আনা হবে সেই দৃশ্য আমার চোখের সামনে ভাসমান থাকে। আর জাহান্নামীদের চিৎকার যেন (আমি নিজ কানে) শুনছি। অর্থাৎ সর্বদা জান্নাত ও জাহান্নামর কল্পনা বিদ্যমান থাকে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত মালেক ইবনে হারেস (রদি.)-এর (এই কথা শোনে) বললেন, হারিস এমন মুমিন যাহার অন্তর ঈমানের নূর দ্বারা আলোকিত হয়ে গিয়েছে। [মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক]

    আমরা কি এমনটা বলতে পারি না যে, আমাদের ঈমানই আমাদের দীন । আমাদের আমানতদারিতাই আমাদের দীন ।
    আমরা কি এমনটা বলতে পারি না যে, যদি আমরা আমাদের আমানতদারিতা ছেড়ে দেই তবে আমরা আমাদের স্বীয় দীন থেকে ফিরে যাবো ।
    আমরা কি এমনটা বলতে পারি না যে, হে মুমিনগণ (তথা হে আমানতদারগণ), তোমাদের মধ্য থেকে যে স্বীয় দীন (তথা আমানতদারিতা) থেকে ফিরে যাবে, অচিরেই আল্লাহ তা'আলা এমন এক (আমানতদার) জাতি সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারাও তাঁকে ভালবাসবে। তারা (আমানতদার) মুসলমানদের প্রতি বিনয়ী ও নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে (প্রকৃত মুমিন অবস্থায়) জেহাদ করবে এবং কোনো তিরস্কারকারীর তিরস্কারের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবে না।

    وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ : آيةُ المُنافقِ ثلاثٌ : إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا وَعدَ أخْلَفَ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ وفي رواية: وَإِنْ صَامَ وَصَلَّى وَزَعَمَ أنَّهُ مُسْلِمٌ
    অর্থাৎ, আবু হুরাইরাহ (রাদি.) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি; (১) যখন কথা বলে তখন মিথ্যা বলে। (২) যখন ওয়াদা করে তখন তা ভঙ্গ করে এবং (৩) যখন তার কাছে আমানত রাখা হয় তখন তার খিয়ানত করে।’’ অন্য বর্ণনায় আছে, যদিও সে সওম পালন করে এবং সলাত আদায় করে ও ধারণা করে যে, সে মুসলিম (তবু সে মুনাফিক)।’’ [বুখারি, মুসলিম]

    إِنَّ الْمُنَافِقِينَ فِي الدَّرْكِ الأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ وَ لَن تَجِدَ لَهُمْ نَصِيرًا
    নিঃসন্দেহে মুনাফেকরা রয়েছে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে। আর তোমরা তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী কখনও পাবে না। [সূরা নিসা - ৪:১৪৫]

    যদি আমরা আমানতদার হই তবে আল্লাহ তা'আলা আমাদের ভালবাসবেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের ভালবাসবেন, মুমিনগণ আমাদের ভালবাসবেন। আর যদি আমাতদার না হই তবে আমরা মুনাফিক হয়ে জাহান্নামের সর্বনিম্নস্তরে পৌঁছে যাবো এবং সেখানে আমারা কোনো সাহায্যকারীও পাবো না । إنَّا لِلّٰهِ وَ إِنَّا إِلَيْهٖ رَاجِعُوْنَ.

    সুতরাং আমাদের আমানতদারিতার দিকে ফিরে আসা উচিত নয়ত আমরা বরবাদ হয়ে যাবো।
    হে পরাক্রমশালী শক্তিধর! কৃপণতা আর কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় চাই সর্বক্ষণ।
Working...
X