Announcement

Collapse
No announcement yet.

আসছে কুরবানী- আসুন কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর জেনে নিই

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আসছে কুরবানী- আসুন কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর জেনে নিই

    ১. কার সাথে শরীক হয়ে কুরবানি করা যাবে? আর কার সাথে যাবে না?

    উত্তর:
    এক্ষেত্রে মূলনীতি হলো, যার উপার্জন হালাল, তার সাথে যে কেউ ভাগে কুরবানী করতে পারবে। আর যার উপার্জন হারাম তার সাথে কেউই ভাগে কুরবানী করতে পারবে না।

    আর যে ব্যক্তির হালাল-হারাম উভয় রকম উপার্জন রয়েছে তার ব্যাপারে যদি জানা যায় যে, সে হারাম অংশ থেকে কুরবানি করছে, হালাল থেকে করছে না, তাহলে তার সাথে শরীক হওয়া যাবে না। আর যদি জানা যায় যে, হালাল থেকে করছে, হারাম থেকে করছে না, তাহলে শরীক হওয়া যাবে।

    আর যদি জানা না যায় যে, হালাল থেকে করছে, না হারাম থেকে করছে, তাহলে যদি তার অধিকাংশ সম্পদ হালাল হয় তাহলে শরীক হওয়া যাবে। আর যদি অধিকাংশ হারাম হয় তাহলে শরীক হওয়া যাবে না।

    উল্লেখ্য, বর্তমানে যেভাবে ঘরে ঘরে হারামের ছড়াছড়ি এ অবস্থায় সর্বোত্তম হল, কারো সঙ্গে শরীক না হয়ে একা কুরবানি দেয়া। তাছাড়া কুরবানির শরীকদের কোনো একজনের নিয়তে সমস্যা থাকলে অন্যদের কুরবানিও হয় না। একজন্য শরীকে কুরবানি না করাই সতর্কতার দাবি। -ফতোয়া হিন্দিয়া, ৫/৩৪৩, ফতোয়া শামি: ৬/৩২৬

    ২. আমার স্ত্রীর নেসাব পরিমাণ সম্পদ আছে।এমতাবস্থায় তার ওপর কি কুরবানি ওয়াজিব হবে? না, আমি কুরবানি দেওয়ার সময় পরিবারের পক্ষ থেকে আদায় করলে তারটাও আদায় হয়ে যাবে?

    উত্তরঃ

    নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে পুরুষ মহিলা সকলের ওপর কুরবানি ওয়াজিব হয়। নগদ অর্থ ও অন্যান্য সম্পদ নেসাব পরিমাণ থাকলে যেমন কুরবানি ওয়াজিব হয়, তেমনি ব্যবহৃত সোনা রূপার অলংকার নেসাব পরিমাণ হলেও কুরবানি ওয়াজিব হয়। আপনার স্ত্রীর স্বর্ণ ও রূপার নুপুরের সম্মিলিত মূল্য যেহেতু নেসাব তথা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্য থেকে বেশি, সুতরাং তার উপরও কুরবানি ওয়াজিব।

    আপনার উপর কুরবানি ওয়াজিব হয়ে থাকলে আপনি ও আপনার স্ত্রী উভয়কে একটি করে দুটি কুরবানি দিতে হবে। আপনার নিজের কুরবানি দ্বারা স্ত্রীর কুরবানি আদায় হবে না। অবশ্য তার সম্মতিতে তার কুরবানি আপনি আদায় করে দিলে, তাতেও আদায় হয়ে যাবে। -বাদায়েউস সানায়ে’ ২/২৮, ৫/৬৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৫

    ৩. একটি গরু বা মহিষে কি সাত ভাগে কুরবানি দেয়া যাবে?

    উত্তরঃ
    হ্যাঁ, একটি গরু, মহিষ ও উটে সাত ভাগে কুরবানি দেয়া যাবে। এ ব্যাপারে অনেক সহীহ হাদীস ও আছার রয়েছে এবং তা উম্মাহর সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমদের সিদ্ধান্ত। আমরা নিম্নে কিছু হাদীস পেশ করছি,

    এক.

    عن جابر بن عبد الله، قال: «حججنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم فنحرنا البعير عن سبعة، والبقرة عن سبعة». -رواه مسلم: 1318

    “জাবের বিন আবদুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে হজ পালন করি। আমরা সাত শরীকে একটি করে উট বা গরু কুরবানী করেছি।” –সহীহ মুসলিম, ১৩১৮ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন: ৩০৫৩)

    ইমাম তিরমিযি রহ. হাদিসটি বর্ণনা করার পর বলেন,

    حديث جابر حديث حسن صحيح. والعمل على هذا عند أهل العلم من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم وغيرهم: يرون الجزور عن سبعة، والبقرة عن سبعة، وهو قول سفيان الثوري، والشافعي، وأحمد -جامع الترمذي، كتاب الحج: 2/240 وكتاب الأضحية: 3/141 تحت حديث: (رقم: 904، 1502) دار الغرب الإسلامي – بيروت، سنة النشر: 1998 م.

    “জাবের রাযি.-এর হাদিসটি সহীহ এবং সাহাবায়ে কেরাম ও অন্যান্য আলেমগণ এ হাদিস অনুযায়ী-ই আমল করেছেন। তাঁরা সাতভাগে উট-গরু কুরবানি করার মত পোষণ করেন। এটাই সুফিয়ান সাওরী, শাফেয়ী ও আহমদ রহ. এর মত।” -জামে’ তিরমিযি, হজ অধ্যায় ২/২৪০; কুরবানী অধ্যায় ৩/১৪১ (৯০৪ ও ১৫০২ নং হাদিসের অধীনে)

    দুই.

    عن جابر بن عبد الله، أن النبي صلى الله عليه وسل قال: البقرة عن سبعة، والجزور عن سبعة. – رواه أبو داود: 2808 وصححه الألباني في صحيح أبي داود: 2499، والشيخ شعيب الأرنؤوط في تعليقه على سنن أبي داود: 4/432.

    “জাবের বিন আবদুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “গরু ও উট সাত ব্যক্তির পক্ষ হতে কুরবানি করা যাবে।” –সুনানে আবু দাউদ: ২৮০৮, শায়েখ আলবানী ও শায়েখ শুয়াইব আরনাউত হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। -দেখুন, সহীহু আবি দাউদ: ২৪৯৯, সুনানে আবু দাউদ, তাহকীক: শুয়াইব আরনাউত: ৪/৪৩২

    তিন.

    أبو جمرة، قال: سألت ابن عباس رضي الله عنهما، عن المتعة، فأمرني بها، وسألته عن الهدي، فقال: «فيها جزور أو بقرة أو شاة أو شرك في دم»، قال: وكأن ناسا كرهوها، فنمت فرأيت في المنام كأن إنسانا ينادي: حج مبرور، ومتعة متقبلة، فأتيت ابن عباس رضي الله عنهما فحدثته، فقال: «الله أكبر، سنة أبي القاسم صلى الله عليه وسلم». -رواه البخاري: 1688

    “আবু জামরাহ রহ. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমি ইবনে আব্বাস রাযি.-কে তামাত্তু’ হজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে তা আদায় করার আদেশ দিলেন। এরপর আমি তাঁকে কুরবানি সেম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তামাত্তু‘র কুরবানি হল একটি উট, গরু বা বকরি অথবা একটি কুরবানির পশুর (অর্থাৎ উট-গরুর) মধ্যে শরীকানা এক অংশ। আবু জামরাহ বলেন, কিছু লোক যেন তামাত্তু’কে অপছন্দ করল। আমি ঘুমালাম। দেখলাম, একটি লোক আমাকে লক্ষ্য করে ঘোষণা দিচ্ছে, উত্তম হজ এবং মাকবূল তামাত্তু’। আমি ইবনে আব্বাস রাযি.-এর কাছে এসে স্বপ্নের কথা বললাম। তিনি বললেন, আল্লাহু আকবার! এটাই তো আবুল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ।” -সহীহ বুখারী, ১৬৮৮ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন: ১৫৭৯)

    চার.

    عن أنس، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «الجزور عن سبعة». -رواه الطحاوي في شرح معاني الآثار (6218) وقال العيني في نخب الأفكار (12/529) : إسناده صحيح.

    “আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “সাতভাগে উট কুরবানি করা যায়”। -শরহু মাআনিল আছার: ৬২১৮, আল্লামা আইনী রহ. হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। -দেখুন, নুখাবুল আফকার, ১২/৫২৯

    পাঁচ.

    عن حجية بن عدي، عن علي قال: البقرة عن سبعة، قلت: فإن ولدت؟ قال: اذبح ولدها معها، قلت: فالعرجاء، قال: إذا بلغت المنسك، قلت: فمكسورة القرن، قال: لا بأس أمرنا، أو أمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم أن نستشرف العينين والأذنين. -رواه الترمذي، (1503) وأحمد (1021) وابن خزيمة في صحيحه (2915) والحاكم في المستدرك (7535) وقال الترمذي: هذا حديث حسن صحيح. وقال الشيخ أحمد شاكر في تعليقه على مسند أحمد: (2/ 43) : إسناده صحيح. وقال الحاكم: إسناده صحيح، ووافقه الذهبي.

    “হুজাইয়্যাহ রহ. থেকে বর্ণিত, আলী রাযি. বলেন, “সাতজনে একটি গরু কুরবানি করতে পারবে। আমি বললাম, যদি এর বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হয়? তিনি বললেন, এর সঙ্গে বাচ্চাটিকেও যবেহ করে দিবে। আমি বললাম খোঁড়া হলে? তিনি বললেন, যদি কুরবানির স্থান পর্যন্ত পৌঁছতে পারে, (তবে কুরবানি জায়েয হবে)। আমি বললাম যদি শিং ভাঙ্গা হয়? তিনি বললেন কোন অসুবিধা নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে দু’ চোখ ও দু’ কান ভালোভাবে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।” -জামে তিরমিযি: 1503, মুসনাদে আহমদ: 1021, সহীহ ইবনে খুযাইমা: ২৯১৫। ইমাম তিরমিযি, হাফেয যাহাবী ও শায়েখ আহমদ শাকের হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। -দেখুন, জামে’ তিরমিযি: ৩/১৪২, মুস্তাদরাকে হাকেম: ৪/২৫০, মুসনাদে আহমদের টীকা, শায়েখ আহমদ শাকের: 2/43

    ছয়.

    عن الشعبي، قال: «سألت ابن عمر قلت: الجزور والبقرة تجزئ عن سبعة؟ قال: يا شعبي، ولها سبعة أنفس؟! قلت: إن أصحاب محمد صلى الله عليه وسلم يزعمون أن رسول الله صلى الله عليه وسلم سَنَّ الجزور عن سبعة، والبقرة عن سبعة؟ فقال ابن عمر لرجل: أكذاك يا فلان؟ قال: نعم. قال: ما شعرت بهذا». -رواه أحمد (23478)، وقال الهيثمي في مجمع الزوائد (3/226) : رجاله رجال الصحيح.

    “শা’বী রহ. বলেন, আমি ইবনে উমর রাযি.-কে জিজ্ঞেস করলাম, উট ও গরু কি সাতভাগে কুরবানি করা যাবে? তিনি বললেন, হে শা’বী! উট-গরুর কি সাতটি প্রাণ রয়েছে? আমি বললাম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণ তো বলেন, রাসূল সাতভাগে উট-গরু কুরবানির প্রচলন করেছেন? তখন ইবনে উমর রাযি. (তার নিকট উপবিষ্ট) এক ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক, বিষয়টি কি বাস্তবেই এমন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। ইবনে উমর রাযি. বললেন, আমি এটা জানতাম না।” -মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৭৮, হাইসামী রহ. হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। -দেখুন, মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ৩/২২৬

    সাত.

    عن الشعبي، عن علي بن أبي طالب وابن مسعود، قالا: «البدنة عن سبعة، والبقرة عن سبعة». رواه الطحاوي (6219) وصححه العيني، (12/546) وهذا مما لا يُدرك بالرأي، فالموقوف فيه كالمرفوع حكما.

    “শাবী রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আলী বিন আবী তালেব ও ইবনে মাসউদ রাযি. বলেন, উট-গরু সাতভাগে কুরবানি করা যায়।” -শরহু মাআনিল আছার: ২৬১৯, আল্লামা আইনী রহ. এ আছারটিকে সহীহ বলেছেন। -দেখুন, নুখাবুল আফকার, ১২/৫৪৬

    উল্লেখ্য, আমাদের দেশের গায়রে মুকাল্লিদ আলেমদের দু’একজন ব্যক্তি, সাত ভাগে কোরবানি দেয়ার বিষয়টি সফরের সঙ্গে খাস মনে করেন। ফলে তারা দাবি করেন, এটি শুধু সফরেই জায়েয। কারণ জারিব রাযি. থেকে বর্ণিত এবিষয়ক হাদীসটি সফরের ঘটনা। এটা সম্পূর্ণ মনগড়া একটা দাবি। এ দাবীর পক্ষে না কোনো দলিল আছে, না নির্ভরযোগ্য কোনো আলেম এ মত ব্যক্ত করেছেন। হাদীসে বর্ণিত ঘটনাটি সফরে ঘটার কারণে যদি সেই বিধানটিও সফরের সঙ্গে খাস হয়, তাহলে শরীয়তের যত বিধান সফরে বর্নিত হয়েছে, সবই তো সফরের সঙ্গে খাস হতে হবে? যেমন তাইয়াম্মুমের বিধান। একইভাবে যত বিধান মুকিম অবস্থায় অবতীর্ণ হয়েছে, সেগুলোও তো মুকিম অবস্থার সঙ্গে খাস হতে হবে? এমন অমূলক কথা পৃথিবীর কোনো ফকীহ বলেননি।

    খোদ আমাদের দেশের গায়রে মুকাল্লিদ আলেমদেরও প্রায় সকলের অবস্থান, দু’একজনের এই বিচ্ছিন্ন মতের বিপক্ষে। তাঁদের সকলের মতেই সাত ভাগে কোরবানি করা মুসাফির মুকিম সকলের জন্যই জায়েয। আমাদের দেশের গায়রে মুকাল্লিদ আলেমগণ আরবের যেসব উলামায়ে কেরামকে অনুসৃত মনে করেন, তারাও এবিষয়ে একমত। আরব মাশায়েখদের ফিকহী বোর্ড ‘আললাজনাতুদ দায়েমার’ একটি ফতোয়ায় বলা হয়েছে,

    وتجزئ البدنة والبقرة عن سبعة، سواء كانوا من أهل بيت واحد أو من بيوت متفرقين، وسواء كان بينهم قرابة أو لا؛ لأن النبي صلى الله عليه وسلم أذن للصحابة في الاشتراك في البدنة والبقرة كل سبعة في واحدة، ولم يفصل ذلك. والله أعلم. -فتاوى اللجنة الدائمة للبحوث العلمية والإفتاء: 11/ 401 ط. دار العاصمة.

    “উট-গরু সাতভাগে কুরবানি করা যাবে, চাই কুরবানিদাতারা এক পরিবারের হোক বা একাধিক পরিবারের, তাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকুক বা না থাকুক। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে প্রতিটি উটে ও গরুতে সাতভাগে কুরবানি করার অনুমতি দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি কোনো শর্ত আরোপ করেননি।” -ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দায়েমা, ১১/৪০১

    বিন বায রহ. বলেন,

    ومن ضحى بالبقر أو بالإبل -الناقة عن سبعة، والبقرة عن سبعة- فكله طيب ولا حرج. -مجموع فتاوى ابن باز: 18/ 43

    “সাতজনের পক্ষ থেকে একটি উট কোরবানি করুক বা একটি গরু কুরবানি করুক, সবই উত্তম। এতে কোন সমস্যা নেই।” -মাজমুউ ফাতাওয়া, বিন বায: ১৮/৪৩

    শায়েখ ইবনে উসাইমীন রহ. বলেন,

    وتجزئ الواحدة من الغنم عن الشخص الواحد، ويجزئ سبع البعير أو البقرة عما تجزئ عنه الواحدة من الغنم؛ لحديث جابر رضي الله عنه قال: نحرنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم عام الحديبية البدنة عن سبعة، والبقرة عن سبعة. رواه مسلم -أحكام الأضحية والذكاة: 2/230 دار الثقة، مكة المكرمة الطبعة: الأولى، 1412 هـ

    “ছাগল শুধু এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করা যাবে। আর উট-গরুর এক সপ্তমাংশ একটি ছাগলের স্থলাভিষিক্ত হবে। এর দলিল হল, সহীহ মুসলিমে বর্ণিত জাবের রাযি.-এর হাদিস। তিনি বলেন, “আমরা হুদায়বিয়ার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাত শরীকে একটি উট এবং সাত শরীকে একটি গরু কুরবানী করেছি।” -আহকামুল উযহিয়্যা, পৃ: ২/২৩০

    উপরোক্ত হাদীসসমূহ, ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্য ও ফতোয়াগুলো থেকে একথা পরিষ্কার যে, একটি উট বা একটি গরুতে সাত শরীক কুরবানি করতে পারবে। করলে কুরবানি সহীহ হবে। এটাকে নাজায়েয বলা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তি।

    তবে একথা বাস্তব যে, একটি পশুতে যদি কেউ হারাম অর্থ দিয়ে অংশ গ্রহণ করে বা লৌকিকাতর জন্য অংশ গ্রহণ করে, তখন উক্ত পশুতে অংশিদার কারো কুরবানিই সহীহ হয় না। আর বর্তমানে মানুষ যেভাবে ব্যাপকভাবে হারাম ও লৌকিকতায় ডুবে আছে, তাতে কারো সঙ্গে অংশিদার না হয়ে এককভাবে কুরবানি করাই উত্তম এবং সতর্কতার দাবি।

    ৪. কুরবানির গোশত বণ্টনের শর‍য়ী পদ্ধতি কী?

    উত্তর
    কুরবানির গোশত বণ্টনের ক্ষেত্রে মুস্তাহাব হলো, গোশত তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের জন্য রাখবে। এক ভাগ গরীব মিসকিনদের সদকা করবে, আর এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনকে হাদিয়া দিবে।

    বলা বাহুল্য, বিধানটি যেহেতু মুস্তাহাব তাই প্রয়োজনে ব্যতিক্রম করলেও সমস্যা নেই। -সুনানুত তিরমিযি, হাদীস নং ১৫১০, আলমুগনি: ১৩/১৩৪, বাদায়েউস সানায়ে: ৫/৮০-৮১, রদ্দুল মুহতার: ৬/৩২৭-৩২৮

    ৫. সাত ভাই মিলে কুরবানীর গরু ক্রয় করে। তাদের মধ্যে এক ভাই তার ভাগের পূর্ণ টাকা দিতে না পারায় অন্য ভাইয়েরা তার ভাগের বাকি টাকা পরিশোধ করে দেয়। প্রশ্নোক্ত সূরতে কুরবানী সহীহ হবে কিনা?

    উত্তর
    প্রশ্নোক্ত সূরতে বাকি ছয় ভাই যদি এই নিয়তে টাকা পরিশোধ করে থাকেন যে, কুরবানীর গরুতে প্রত্যেকের মালিকানা তার প্রদত্ত টাকার অনুপাতে হবে – অর্থাৎ যার টাকা বেশি তার মালিকানাও বেশি – তাহলে কারও কুরবানী সহীহ হবে না। কেননা, এক্ষেত্রে কুরবানীর পশুতে একজনের অংশ এক সপ্তমাংশের কম হয়ে যাচ্ছে।
    পক্ষান্তরে টাকা যদি তারা উক্ত ভাইকে হাদিয়া বা হেবা স্বরূপ দিয়ে থাকেন এবং প্রত্যেকের মালিকানা সমান (এক সপ্তমাংশ) হয়, তাহলে সকলের কুরবানী সহিহ হবে।

    (collected)
Working...
X