একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে আমাদের অধিকাংশ মানুষের একটা কমন অভিযোগ- সময়ে বারাকাহ পাইনা। যদিও এটা সত্য যে ক্বিয়ামতের আগে আগে সময়ের বারাকাহ কমে যাবে, হাদীস দিয়ে প্রমাণিত। কিন্তু এই কথার উপর ছেড়ে দিয়ে আমরা দায়মুক্ত হতে পারিনা, কারণ ঠিক এই সময়েও অনেক অনেক মানুষই সময়ের বারাকাহ পেয়ে যাচ্ছেন, এখনও সফল মানুষদের গাথা তৈরি হচ্ছে প্রতিদিন। তাই আমরা সময়ের বারাকাহ কেন পাইনা, সেই দোষটা ‘সময়ের’ না, বরং আমাদের নিজেদেরই ‘গাফলতি’র। আমাকে আমার সাধ্যে যা আছে ততটুকু করতেই হবে, তখন সাধ্যের বাইরেরটুকুতে আল্লাহই সাহায্য করবেন। যাহোক, মূলকথায় আসি। সময়ের বারাকাহ পাওয়ার জন্য উস্তাদ ইসমাইল কামদার তার ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ বইতে কতগুলো টিপস দিয়েছেন। সেগুলোর সাথে আমি আরও কয়েকটি যোগ করার চেষ্টা করেছি, কাজে লাগাতে পারলে অবশ্যই উপকৃত হওয়া সম্ভব, ইনশাআল্লাহ। এগুলো হলো-
১. ঈমান, তাক্বওয়া, তাওয়াক্কুল:
আল্লাহ তা’আলা বলেন: “যদি জনপদবাসী ঈমান আনে ও তাকওয়া অর্জন করে, আমি অবশ্যই আসমান-যমীন থেকে বরকত (এর দরজা) খুলে দেবো”। (আ‘রাফ: ৯৬)
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, “যদি তোমরা আল্লাহর ওপর সত্যিকার তাওয়াক্কুল করো, আল্লাহ তোমাদেরকে পাখির মতোই রিযিক দান করবেন। পাখি খালি পেটে সকালে বের হয়, ভরপেট হয়ে সন্ধ্যায় ফেরে”। (তিরমিযী)
২. সময়মতো ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা:
রাসূলকে (সা) জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো: কোন ‘আমলটি আল্লাহ্র নিকট সর্বাধিক প্রিয়?’ তিনি উত্তরে বলেছিলেন : “যথা সময়ে সালাত আদায় করা।” সময়মত সালায় অর্জন আল্লাহর সবচেয়ে পছন্দের কাজ, তাই এটি ছাড়া সময়ে বারাকাহ পাওয়া সম্ভব নয়।
৩. সময়ে বারাকাহ পাওয়ার জন্য দু’আ করা:
প্রতিটি নিয়ামত আল্লাহর কাছে চেয়ে নিতে হয়, সময়প তেমনই একটি নিয়ামত। প্রতিদিন আল্লাহর কাছে এর জন্য দু’আ করতে হবে।
৪. ফজরের অব্যবহিত পরের সময়টুকু কাজে লাগানো:
নবীজি সা. বলেছেন, “ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতের সকালের মাঝে বরকত দান করুন!” (মুসনাদে আহমাদ)
ইবনুল ক্বায়্যিম রহ. বলেছিলেন: ” সকালবেলার ঘুম ঘরে রিযক আসতে বাধা দেয়, কেননা তখন রিযক বণ্টণ করা হয়”।
ইবনে আব্বাস রা. একদিন তার ছেলেকে ফজরের পর ঘুমাতে দেখে অবাক হয়ে বলেন, “ওঠো! তুমি কি এমন সময় ঘুমাচ্ছো, যখন রিযক বণ্টম করা হয়?”
৫. হালাল উপায়ে উপার্জন, হালাল পথে ব্যয়, হালাল খাবার গ্রহণ:
নবীজি সা. বলেছেন, “যে ব্যক্তি হালাল পন্থায় সম্পদ অর্জন করবে, তার মধ্যে বরকত দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে সম্পদ অর্জন করলো, তার দৃষ্টান্ত হলো এমন ব্যক্তির মতো, যে শুধু খেতেই থাকে, কিন্তু পরিতৃপ্তি আসে না”। (মুত্তাফাকুন আলাইহি)
৬. সাদাক্বাহ করা:
আল্লাহ তা’আল বলেন: “তোমরা যা (আল্লাহর রাস্তায়) ব্যয় করবে, তিনি (আল্লাহ) তার বিনিময় দিয়ে দিবেন। তিনি শ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা”। (সূরা সাবা: ৩৯)
রাসূল সা. বলেন: “হে আসমা! তুমি খরচ করো, আল্লাহও তোমার জন্যে খরচ করবেন। তুমি ধরে রাখলে, আল্লাহও ধরে রাখবেন”। (তিরমিযী)
৭. আল্লাহ আপনাকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট থাকা ও শুকর করা:
আল্লাহ তা’আলা বলেন: “তোমরা যদি শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি তোমাদেরকে আরও বাড়িয়ে দেবো”। (ইবরাহীম: ৭)
নবীজি সা. বলেছেন, “আল্লাহ বান্দাকে যা দিয়েছেন, তা দিয়ে পরীক্ষা করেন। যা তাকে দেয়া হয়েছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলে আল্লাহ বরকত বাড়িয়ে দেন, প্রাচুর্য দান করেন। অন্যথায় সে বরকত লাভে বঞ্চিত হয়”। (মুসনাদে আহমাদ)
তাই আল্লাহ আমাদের সময় নামক যে নিয়ামত ইতোমধ্যেই দিয়েছেন, তার শোকর করতে হবে, তাহলে নিয়ামত আরও বাড়িয়ে দেবেন, ইনশাআল্লাহ।
এই সবকিছুর পাশাপাশি মূল কথা হচ্ছে, সময় সংরক্ষণে আমাদের নিজেদেরকেই যত্নশীল হওয়া। আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা. এর একটি হাদীসই আমাদেরকে এ গুরুত্ব বোঝাতে সক্ষম বলে মনে করি-
إِنْ قَامَتْ عَلَى أَحَدِكُمْ الْقِيَامَةُ وَفِي يَدِهِ فَسْلَةٌ فَلْيَغْرِسْهَا
“যদি তোমাদের কারোর উপর ক্বিয়ামত চলে আসে এবং সেই মুহুর্তেও তার হাতে রোপণ করার মত একটি চারাগাছ থাকে, সে যেন তা বুনে দেয়।” (মুসনাদ আহমাদ, ১২৪৯১)
[এই পর্বটি লিখতে মাওলানা আতিকুল্লাহ আতিকের একটি লেখার সাহায্য নেয়া হয়েছে, আল্লাহ উনার উপর রহম করুন। আমীন]
(সংগৃহীত)
আল্লাহ লেখককে জাযায়ে খায়ের দান করুন। আমীন
১. ঈমান, তাক্বওয়া, তাওয়াক্কুল:
আল্লাহ তা’আলা বলেন: “যদি জনপদবাসী ঈমান আনে ও তাকওয়া অর্জন করে, আমি অবশ্যই আসমান-যমীন থেকে বরকত (এর দরজা) খুলে দেবো”। (আ‘রাফ: ৯৬)
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, “যদি তোমরা আল্লাহর ওপর সত্যিকার তাওয়াক্কুল করো, আল্লাহ তোমাদেরকে পাখির মতোই রিযিক দান করবেন। পাখি খালি পেটে সকালে বের হয়, ভরপেট হয়ে সন্ধ্যায় ফেরে”। (তিরমিযী)
২. সময়মতো ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা:
রাসূলকে (সা) জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো: কোন ‘আমলটি আল্লাহ্র নিকট সর্বাধিক প্রিয়?’ তিনি উত্তরে বলেছিলেন : “যথা সময়ে সালাত আদায় করা।” সময়মত সালায় অর্জন আল্লাহর সবচেয়ে পছন্দের কাজ, তাই এটি ছাড়া সময়ে বারাকাহ পাওয়া সম্ভব নয়।
৩. সময়ে বারাকাহ পাওয়ার জন্য দু’আ করা:
প্রতিটি নিয়ামত আল্লাহর কাছে চেয়ে নিতে হয়, সময়প তেমনই একটি নিয়ামত। প্রতিদিন আল্লাহর কাছে এর জন্য দু’আ করতে হবে।
৪. ফজরের অব্যবহিত পরের সময়টুকু কাজে লাগানো:
নবীজি সা. বলেছেন, “ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতের সকালের মাঝে বরকত দান করুন!” (মুসনাদে আহমাদ)
ইবনুল ক্বায়্যিম রহ. বলেছিলেন: ” সকালবেলার ঘুম ঘরে রিযক আসতে বাধা দেয়, কেননা তখন রিযক বণ্টণ করা হয়”।
ইবনে আব্বাস রা. একদিন তার ছেলেকে ফজরের পর ঘুমাতে দেখে অবাক হয়ে বলেন, “ওঠো! তুমি কি এমন সময় ঘুমাচ্ছো, যখন রিযক বণ্টম করা হয়?”
৫. হালাল উপায়ে উপার্জন, হালাল পথে ব্যয়, হালাল খাবার গ্রহণ:
নবীজি সা. বলেছেন, “যে ব্যক্তি হালাল পন্থায় সম্পদ অর্জন করবে, তার মধ্যে বরকত দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে সম্পদ অর্জন করলো, তার দৃষ্টান্ত হলো এমন ব্যক্তির মতো, যে শুধু খেতেই থাকে, কিন্তু পরিতৃপ্তি আসে না”। (মুত্তাফাকুন আলাইহি)
৬. সাদাক্বাহ করা:
আল্লাহ তা’আল বলেন: “তোমরা যা (আল্লাহর রাস্তায়) ব্যয় করবে, তিনি (আল্লাহ) তার বিনিময় দিয়ে দিবেন। তিনি শ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা”। (সূরা সাবা: ৩৯)
রাসূল সা. বলেন: “হে আসমা! তুমি খরচ করো, আল্লাহও তোমার জন্যে খরচ করবেন। তুমি ধরে রাখলে, আল্লাহও ধরে রাখবেন”। (তিরমিযী)
৭. আল্লাহ আপনাকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট থাকা ও শুকর করা:
আল্লাহ তা’আলা বলেন: “তোমরা যদি শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি তোমাদেরকে আরও বাড়িয়ে দেবো”। (ইবরাহীম: ৭)
নবীজি সা. বলেছেন, “আল্লাহ বান্দাকে যা দিয়েছেন, তা দিয়ে পরীক্ষা করেন। যা তাকে দেয়া হয়েছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলে আল্লাহ বরকত বাড়িয়ে দেন, প্রাচুর্য দান করেন। অন্যথায় সে বরকত লাভে বঞ্চিত হয়”। (মুসনাদে আহমাদ)
তাই আল্লাহ আমাদের সময় নামক যে নিয়ামত ইতোমধ্যেই দিয়েছেন, তার শোকর করতে হবে, তাহলে নিয়ামত আরও বাড়িয়ে দেবেন, ইনশাআল্লাহ।
এই সবকিছুর পাশাপাশি মূল কথা হচ্ছে, সময় সংরক্ষণে আমাদের নিজেদেরকেই যত্নশীল হওয়া। আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা. এর একটি হাদীসই আমাদেরকে এ গুরুত্ব বোঝাতে সক্ষম বলে মনে করি-
إِنْ قَامَتْ عَلَى أَحَدِكُمْ الْقِيَامَةُ وَفِي يَدِهِ فَسْلَةٌ فَلْيَغْرِسْهَا
“যদি তোমাদের কারোর উপর ক্বিয়ামত চলে আসে এবং সেই মুহুর্তেও তার হাতে রোপণ করার মত একটি চারাগাছ থাকে, সে যেন তা বুনে দেয়।” (মুসনাদ আহমাদ, ১২৪৯১)
[এই পর্বটি লিখতে মাওলানা আতিকুল্লাহ আতিকের একটি লেখার সাহায্য নেয়া হয়েছে, আল্লাহ উনার উপর রহম করুন। আমীন]
(সংগৃহীত)
আল্লাহ লেখককে জাযায়ে খায়ের দান করুন। আমীন