Announcement

Collapse
No announcement yet.

"মানুষের জন্য তাই প্রাপ্য যা সে নিয়ত করে"

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • "মানুষের জন্য তাই প্রাপ্য যা সে নিয়ত করে"

    "রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:
    নিশ্চয় সমস্ত আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। মানুষের জন্য তাই প্রাপ্য যা সে নিয়ত করে। যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের উদ্দেশ্যে হিজরত করে, তবে তার হিজরত আল্লাহ ও রাসূলের উদ্দেশ্যেই হবে আর যে ব্যাক্তি দুনিয়া উপার্জনের উদ্দেশ্যে অথবা কোনো নারীকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে হিজরত করে, তবে সে যে উদ্দেশ্যে হিজরত করল তা-ই বিবেচ্য হবে।

    আলোচ্য হাদিসটি অনেক ব্যাপক। অধিকাংশ আলেম এটাকে 'দ্বীনের অর্ধেক জ্ঞান' বলেছেন। আমার মতে তাসাওউফের পুরো বিষয় এর মধ্যে নিহিত রয়েছে। হাদিসে দুটি বাক্য রয়েছে।
    ১.'আমলের ভিত্তি নিয়তের উপর।'
    ২.'মানুষ যা নিয়াত করে তা-ই সে অর্জন করবে।'

    অধিকাংশ আলেম বলেছেন, দ্বিতীয় বাক্যটি প্রথমটির তাগিদস্বরুপ। কেউ কেউ বলেছেন, এটি স্বতন্ত্র বাক্য। এতে স্বতন্ত্র বিষয় বর্ণিত হয়েছে। দ্বিতীয় অভিমতটি বেশী উৎকৃষ্ট। এ হিসেবে বাক্যটির ব্যাখ্যা হলো, মানুষ কোনো নেক কাজে যত বেশি নিয়ত করবে, মহান আল্লাহ সবগুলোর সওয়াব দিবেন।

    মাওলানা নবাব কাসবুদ্দিন সাহেব 'মাযাহিরে হক' গ্রন্থে এর অনেক উদাহরণ পেশ করেছেন। যেমন, মসজিদে যাওয়ার সময় অনেক নিয়তই করা যায়।
    ১। ইতিকাফের নিয়ত করবে।
    ২। দয়াময় রবের ঘরে হাজির হচ্ছি। যারা তার ঘরে হাজির হয়, তাদের তিনি সম্মান দান করেন।
    ৩। নামাযের অপেক্ষায় বসে থাকবো, এতে নামাজের সওয়াব লাভ হবে।
    ৪। মসজিদে যাওয়ার দ্বারা চোখ, কান ও অন্যান্য অঙ্গসমূহ নাফরমানি হতে রক্ষা করা হয়। বাজারে গেলে তো এর দ্বারা কোনো না কোনো নাফরমানি হয়েই যায়। সুতরাং নাফরমানি থেকে নিজেকে রক্ষা করার নিয়ত করলে এর জন্য স্বতন্ত্র সওয়াব পাবে।
    ৫। পাক পবিত্র স্থানে দোয়া দরূদ পড়বে। এর জন্য স্বতন্ত্র সওয়াব।
    ৬। মসজিদে আল্লাহর দিকে পরিপূর্ণভাবে মনোযোগী হওয়া যায়। এ নিয়তের জন্য স্বতন্ত্র সওয়াব।
    ৭। অজু করে নামাযের জন্য রওয়ানা হলে হজ ও ওমরার সওয়াব হয়। কাজেই এ নিয়ত করবে।
    ৮। মসজিদে গেলে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ করা, ইলম শিখা এবং শেখানো সহজ হয়। এ নিয়ত করলে স্বতন্ত্র সওয়াব হয়।
    ৯। মসজিদে যাওয়ার ফলে মুসলমান ভাইদের সাথে সাক্ষাত হবে। এজন্য ও স্বতন্ত্র সওয়াব হবে।
    ১০। মুসল্লিদেরকে সালাম আদান-প্রদান করা যাবে। এ নিয়তেও স্বতন্ত্র সওয়াব লাভ হবে।
    ১১। পরকালের মুরাকারা ও ধ্যান করা সহজ হবে। এ নিয়তেও স্বতন্ত্র সওয়াব লাভ হবে।

    এভাবে আরো অনেক বিষয়ের নিয়ত করলে সবগুলোর জন্য ভিন্ন ভিন্ন সওয়াব পাবে। মহান মালিকের ভান্ডারে তো কোনো কিছুর অভাব নেই।
    'তুমি সেই মহান দাতা যে, তোমার রহমতের দুয়ার সর্বক্ষণ খোলা থাকে।'"

    ~ আপবীতি-১, প্রথম অধ্যায়, পৃষ্ঠা ৫৬-৫৭,
    শাইখুল হাদিস যাকারিয়া কান্ধলভি রহিমাহুল্লাহ।​
Working...
X