প্রশ্ন নং ৬৬৩
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ ..আল্লাহ তায়ালা আপনাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমার দু’টি প্রশ্নের উত্তর কামনা করছি-জাতিসংঘের সাথে মিলে হয়ে কাজ করে এমন সংস্থাকে এতিমের জিম্মাদারি প্রদান=কাদ সেবন করে এমন ব্যক্তির পেছনে সালাত আদায়=মাহরামের সাথে সফর করা।
১.
আমার বেতন থেকে প্রতি মাসে কিছু অর্থ কয়েকজন এতিমের ব্যয় নির্বাহের জন্য কেটে নেওয়া হয়। আমার শহরের সেবামূলক একটি সংস্থার তত্ত্বাবধানে এ কাজটি হয়ে থাকে। কিন্তু সংস্থাটির একটি প্রচারপত্র পড়ে আমি জানতে পেরেছি, জাতিসংঘের কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে তার সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রয়েছে। অবশ্য এই সহযোগিতার ধরণ আমার জানা নেই। এখন তাদের কাছে পাঠানো এই অর্থগুলোর কি হুকুম? প্রদানকৃত অর্থের কিছু অংশ সেই তাগুতি প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ে কি না- এই আশঙ্কা থেকেই প্রশ্নটি করছি।
২.
ক্বাত (একপ্রকার নেশাউদ্রেককারী উদ্ভিদ) ভক্ষণকারীর পেছনে সালাত সহীহ হবে কি? সফরের ক্ষেত্রে কি অবকাশ আছে যে, আমার মাহরাম আমাকে আমার উদ্দিষ্ট শহরে পৌঁছে দেবেন, যেখানে আমার নানি ও খালা বসবাস করেন। তারপর তিনি ফিরে আসবেন। তার অনুপস্থিতিতে আমি তাদের সাথে কয়েকদিন থাকব। যখন আমি ফিরে আসতে মনস্থির করব তখন তিনি গিয়ে আমায় নিয়ে আসবেন?
উত্তর: ওয়াআলাইকুমুস সালামু ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ ..
প্রথমপ্রশ্নেরউত্তর-
এতিমদের জিম্মাদারি গ্রহণ ও দান-সাদাকার কারণে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। এটি একটি শ্রেষ্ঠ নেক কাজ। তবে কথা হল- একজন মুসলিম তার সাদাকা ব্যয় করার খাতটি যাচাই করে নিবে। বিশেষত বর্তমান সময়ে। যখন জিহাদের উৎসধারা- আল্লাহর শত্রুরা যার নাম দিয়েছে “সন্ত্রাস”- শুকিয়ে ফেলার বাহানায় সৎ কাজগুলো (অর্থাৎ, দান সাদাকা)র সাথে যুদ্ধ করা হচ্ছে। ফলে বর্তমান সময়ে এই খাতে সাদাকা উপযুক্ত ব্যক্তিদের হাতে পৌছা ভারি দূর্লভ হয়ে গেছে, যা কদাচিৎ ঘটে থাকে। সুতরাং, কোন তাওহিদবাদী মুসলিমের জন্য উপযোগী নয় যে, তিনি এমন কোন পক্ষকে সাদাকা দেবেন, যারা নির্ভরযোগ্য নয় এমন প্রতিষ্ঠানের সাথে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রাখে। যার ব্যাপারে জানা যায় না যে, প্রাপ্ত অর্থ তারা কোথায় ব্যয় করে। জানা যায় যে, তারা প্রাপ্ত অর্থ খরচ করে মুজাহিদীনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে কিংবা এমন তাগুতি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতার পেছনে, যা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত। সেক্ষেত্রে অবহেলা ও শিথিলতা বশত না জেনে আমাদের সাদাকার দ্বারা আমরা আমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধে সহযোগিতা করে ফেলব। তর্কের খাতিরে যদি মেনেও নেই যে, জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠানগুলো মানবিক লক্ষ্যেই কাজ করে থাকে, তাহলেও তাদের আয়ের বড় বড় অনেক উৎস আছে, যা তাদের জন্য যথেষ্ঠ। মুসলিমদের সাদাকার প্রতি তারা মোটেও মুখাপেক্ষী না।
জাতিসংঘ ও তার সাথে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে মূল এটাই যে, তারা ইহুদ-নাসারার পক্ষীয় আর মুসলিমদের বিরোদ্ধবাদী প্রতিষ্ঠান। মোড়ল রাষ্ট্রগুলোর আকাংখা বাস্তবায়ন ও তাদের লক্ষ্য পূরণের জন্যই এগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরাই হল সেসব লোক, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
*إن الذين كفروا ينفقون أموالهم ليصدوا عن سبيل الله
‘নিশ্চয়ই য়ারা কুফরি করেছে, তারা নিজেদের সম্পদ ব্যয় করে লোকদের আল্লাহর পথ হতে বাধা দেয়ার জন্য।’
অতএব,
জনসেবমূলক কাজ সম্পাদনকারী যে সংস্থা স্পষ্টভাবে সেই নিকৃষ্ট সংঘের প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে সহযোগিতামূলক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছে, সেটা কোন মুসলিম ও সাদাকা প্রদানকারীর ভরসার কেন্দ্র হতে পারে না। যতক্ষণ না সংস্থা এসব বিষয় বুঝে, এসব প্রতিষ্ঠানের অবস্থা জানে এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে এদের শত্রুতা এবং কাফেরদের পক্ষপাতিত্বের বিষয়টা অনুধাবন করতে পারে। অন্যথায় যে শত্রু হতে বন্ধু পৃথক করতে জানে না, মুসলিমদের সম্পদ ব্যয় করার ব্যাপারে তাকে আমানতদার মনে করা যাবে না। সুতরাং আপনার জন্য আবশ্যক হল- আপনি নিজ সাদাকার হকদারদের খুঁজে বের করবেন, কিংবা এমন পক্ষকে তা দেবেন, যার দ্বীনদারী ও আকীদার কারণে আপনার ভরসা হয় যে, সে আপনার প্রতিনিধি হয়ে হকদারদের কাছেই তো পৌঁছে দেবে। এক্ষেত্রে মুজাহিদগণ এবং তাদের পরিবাররাই অধিক উপযুক্ত।
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর-
ক্বাত খাওয়া হারাম হলেও ক্বাত সেবনকারীর পেছনে সালাত আদায় করলে সালাত হয়ে যাবে। তবে ক্বাত সেবনের প্রভাব যদি সালাতের সময়ও বাকী থাকে যে, সে কি বলছে তা সে বুঝে না- (তাহলে সালাত হবে না)। কারণ, ক্বাত খাওয়া সালাত সহীহ হওয়ার প্রতিবন্ধক নয়। যখন তার নিজের সালাত সহীহ হচ্ছে, তখন যারা তার পেছনে সালাত পড়বে, তাদের সালাতও সহীহ হবে।
সফরের ব্যাপারে আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলব- যখন আপনি আপনার নানি ও খালার সাথে অবস্থান করবেন, তখন আপনি মুকিম হয়ে যাবেন। মুসাফিরের হুকুম আপনার উপর থাকবে না। যেহেতু আপনি নিরাপদ স্থানে অবস্থান করবেন, তাই আপনার মাহরাম আপনাকে তাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে ফিরে আসলে এবং পরে গিয়ে আপনাকে নিয়ে আসলে কোন অসুবিধা হবে না । والله اعلم
উত্তরপ্রদানে:
শায়খ আবু উসামা আশ শামী
সদস্য: শরয়ী বিভাগ, মিম্বারুত্তাওহীদ
دفع كفالة اليتيم للجمعيات التي تتعامل مع الأمم المتحدة ، وحكم الصلاة خلف آكل القات ، والسفر مع المحرم ؟
رقم السؤال: 663 | القسم : الفقه وأصوله | |
تاريخ النشر:13 /11/2009 | المجيب: اللجنة الشرعية في المنبر |
السؤال :السلام عليكم ورحمة الله وبركاته .. جزاكم الله خيرا لدي سؤالين أرجو الإجابة عنها :1- لدي إستقطاع شهري من راتبي يتحول لكفالة عدد من الأيتام عبر إحدى الجمعيات الخيرية في بلدي ولكن قرأت في إحدى منشورات الجمعية أن لها تعاون مع بعض مؤسسات الأمم المتحدة ولا أعلم طبيعة هذا التعاون ، فما حكم الأموال التي تذهب لهم وذلك خشية أن يتسرب منها شيء لتلك المؤسسات الطاغوتية؟2- هل يجوز الصلاة خلف آكل القات ، وهل يجوز في حالة السفر أن يوصلني المحرم إلى البلد التي أريد والتي بها جدتي وخالاتي ثم يعود وأبقى عندهم ولا يبقى معي وحينما أريد العودة يأتي لأخذي ؟ السائل: موحدة* * *الجواب:وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته..- جواب السؤال الأول:جزاك الله خيرا على صدقتك وكفالتك للأيتام فهذا من أفضل أعمال البر ، إلا أن الأصل أن يتحرى المسلم الموضع الذي يضع فيه صدقته خاصة في هذا الزمان الذي تحارب فيه أعمال البر تحت حجج تجفيف منابع الجهاد الذي يسميه أعداء الله بالإرهاب ولذلك ندرت وقلّت فيه الصدقات التي تصل إلى أهلها المستحقين لها ، فلا ينبغي للمسلم الموحد أن يعطي صدقته لجهات تتعاون مع مؤسسات غير مأمونة لا يدرى أين تذهب بتلك الأموال بل ربما تذهب وتنفق في حرب المجاهدين وفي نصرة المؤسسات الطاغوتية المحاربة للمسلمين فنكون قد أعنا بذلك على حرب إخواننا بتساهلنا وتفريطنا من حيث لا ندري ، ثم إن مؤسسات الأمم المتحدة حتى لو سلمنا جدلا أن أهدافها إنسانية فإن لها مصادر دخل هائلة تكفيها وهي في غنى عن صدقات المسلمين ، والأصل في الأمم المتحدة ومؤسساتها أنها مؤسسات منحازة إلى اليهود والنصارى وضد المسلمين وقد وضعت أصلا لتحقيق مآرب وأهداف الدول الكبرى وهؤلاء من جملة الذين قال الله تعالى فيهم : ( إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ لِيَصُدُّوا عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ) فالجمعيات الخيرية التي تصرح بالتعاون مع مؤسسات هذه المنظمة الخبيثة لا ينبغي أن تكون محل ثقة المسلمين والمتصدقين ، حتى تفقه هذا الأمر وتعرف واقع هذه المنظمات وتتبصر بعداوتها للمسلمين وانحيازها لأعدائهم ، ومن لا يميز عدوه من وليه لا يؤتمن على تصريف أموال المسلمين ، فالواجب عليك أن تبحثي بنفسك عن مستحقيها أو أن تعطيها لجهة تثقين بدينها وعقيدتها توصلها نيابة عنك إلى مستحقيها ، وأولى الناس بها هم المجاهدون وأسرهم .- أما جواب السؤال الثاني :- أكل القات وإن كان محرما إلا أن الصلاة خلف آكله صحيحة إلا أن يكون تحت تأثير القات حال الصلاة ويكون بحيث لا يعقل ما يقول، إذ أن أكله للقات ليس مانعا له من صحة صلاته وإذا صحت صلاته لنفسه صحت لمن خلفه . - وسؤالك عن السفر ، فإذا كنت ستقيمين عند جدتك وخالات فأنت عندها تأخذين حكم المقيم وينقطع عنك حكم المسافرة وبما أنك ستمكثين عند جهة مأمونة فلا حرج عليك وعلى محرمك أن يوصلك إليهم ويرجع ثم يعود لأخذك لاحقا .والله اعلم.إجابة عضو اللجنة الشرعية :
الشيخ أبو أسامة الشامي
الشيخ أبو أسامة الشامي