Announcement

Collapse
No announcement yet.

শাসক এবং ওলামায়ে- সূ দের ফিৎনার কয়েকটি ধরনও অভিশপ্ত আলিম বাল'আম ইবনে বাউরারা ঘটনা থেকে ø

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • শাসক এবং ওলামায়ে- সূ দের ফিৎনার কয়েকটি ধরনও অভিশপ্ত আলিম বাল'আম ইবনে বাউরারা ঘটনা থেকে ø

    বিসমিল্লাহ ওয়াসসলাতু ওয়াসসলামু আলা-রসুলিল্লাহ,আম্মা বা'আদ

    অভিশপ্ত আলিম বাল'আম ইবনে বা'উরার ঘটনা ও ওলামায়ে-সূ দের কিছু বৈশিষ্ঠ্য এবং আমাদের জন্য শিক্ষাঃ-
    *এই ব্যক্তি ইসমে আ'যম জানত।সে ইয়াহুদী আলিমদের সাথে বাইতুল মুকাদ্দাসে অবস্হান করত। ইবনে আব্বাস রা.বলেন ,সে ছিল ইয়েমেনের অধিবাসী। আল্লহ তা'আলা তাকে স্বীয় নিদর্শনাবলী ও কারামাহ দান করেছিল;সে যেই দোয়া করত তাই কবুল করা হত।কিন্তু সে ঐগুলোর মর্যাদা দেয়নি।(ত্ববারী ১৩/২৬১)
    হযরত মূসা( আলা নাবিয়্যিনা ওয়া আলাইহিস সলাতু আস্সালাম) তাকে দ্বীনের দাওয়াতের জন্য মাদইয়ানে প্রেরণ করেন।কিন্তু স্হানীয় ত্বগুত সরকার নিজের পক্ষ থেকে তাকে জমি-জমা ও বহু উপঢৌকন দিয়ে তাকে কিনে নেয়।সে মূসা আলা নাবিয়্যিনা ওয়া আলাইহিসসালাম এর দ্বীন(জীবন ব্যবস্হা)ছেড়ে স্হানীয় বা প্রচলিত জীবন ব্যবস্হা কবুল করে নেয়।যার ফলে বাদশা খুব সন্তুষ্ট হয় এবং তিনি বাদশাহর আস্থাভাজন হন।
    ★এখান থেকে তার অভিশপ্ত হওয়ার পথ শুরু।
    ইবনে আব্বাস রা. বলেন: মূসা আলা নাবিয়্যিনা ওয়া আলাইহিসসালাম যখন জাব্বারীনদের (বানী কিনআ'নে) শহরে আসলেন তখন বালআ'মের কাছে তার লোকেরা এসে বললঃ'মূসা আ. লৌহ মানব, তার সাথে বিরাট সেনাবাহিনী রয়েছে।যদি মূসা আ. আমাদের উপর বিজয় অর্জন করেন তাহলে আমরা সবাই ধ্বংস হব।সুতরাং আপনি আল্লহর নিকট দোয়া করুন যেন মূসা আ. এবং তাঁর বাহিনীর বিপদ আমাদের থেকে দূর হয়ে যায়।তারা হেরে যাক আর আমরা বিজয়ী থাকি।'প্রথমে সেই আলেম রাজি হয়নি,সে বলল আমি এই দোয়া করলে দ্বীন ও দুনিয়া উভয়ই হারাব।পরে তাদের পীড়াপীড়িতে ঐরূপ বদদু'আ করেন কিন্তু আল্লহ তার জিহ্বা ঘুরিয়ে দেন ফলে মূসা আ. ও বনী ঈসরাইলের পক্ষে দোয়া করেন এবং জাব্বারিনদের বিপক্ষে দোয়া করে বসেন।এর পর তার জিহ্বা বুক পর্যন্ত নেমে আসে এবংআল্লহ সুবহানাহু তাআলা তার বুজুর্গি ও কিরামাহ ছিনিয়ে নেন। বিস্তারিত জানতে নিম্নের ২টি আয়াতের তাফসির দেখুন।(তাফসীরে ইবনে কাসির)
    اتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ الَّذِي آتَيْنَاهُ آيَاتِنَا فَانسَلَخَ مِنْهَا فَأَتْبَعَهُ الشَّيْطَانُ فَكَانَ مِنَ الْغَاوِينَ (175) وَلَوْ شِئْنَا لَرَفَعْنَاهُ بِهَا وَلَٰكِنَّهُ أَخْلَدَ إِلَى الْأَرْضِ وَاتَّبَعَ هَوَاهُ ۚ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ الْكَلْبِ إِن تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ أَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَث ۚ ذَّٰلِكَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا ۚفَاقْصُصِ الْقَصَصَ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ (সূরা আরাফ আয়াত :১৭৬

    #উক্ত ঘটনা থেকে আমাদের জন্য শিক্ষাঃ-

    ১.ত্বগুত শাসক গোষ্টি থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা।তাদের কাছাকাছি যাওয়া মানেই বিক্রি হওয়ার আশংকায় থাকা।তাদের দেয়া উপঢৌকনাদি না নেওয়া।তাদের হাদিয়া যেকোনো সুরতে হতে পারে।যেমন: ভাল কোনো খেদমত,সনদ,তাদের মত করে দ্বীন প্রচারের বিনিময়ে দুনিয়াবি নিরাপত্তা হাসিল করা ইত্যাদি। অর্থাৎ যাকে যা দিয়ে হাতে রাখা যায় তাকে তাই উপহার দিয়ে বসায় রাখা।

    ২.আগে হক্বের উপর টিকে থাকলে যে,
    সব সময় একজন আহলে ইলম হক্বের উপরেই থাকবেন তার কোন নিশ্চয়তা নেই।কেননা রসূল সল্লাল্লহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমরা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফিতনার মধ্যেই আছ।সুতরাং তোমরা মৃতদের (সাহাবিদের) অনুসরণ কর।
    অতঃএব আহলে হক্বকে চিনতে হবে ওহীর মানদন্ডে, বুজুর্গির মানদন্ডে নয়।

    ৩.জিহাদ,মুজাহিদদের বিরোধিতা।হক্ব আলেম ও ওলামায়ে সূ চিনার সবচেয়ে সহজ মানদন্ড হল জিহাদ বা ক্বিতাল ফি সাবিলিল্লাহ । যদি কাফিরদের,মুরতাদ সরকারের সুরে সুর মিলিয়ে জঙ্গি বিরোধী বয়ান বা দোয়া করেন তাহলে বুঝতে হবে তার মধ্যে আর বাল'আমের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
    হ্যাঁ যদি ধরা পড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে তাহলে গোপনে কাজ করতে হবে জিহাদের জন্য ;কিন্তু বিরোধিতার কোন সুযোগ নেই।অনেকে বলেন 'আরে হিকমতের খাতিরে বলতে হয়',হুজুর আপনার হিকমত গোয়েন্দারা ঠিকই বুঝে।সুতরাং খামাখা দুনিয়া আখিরাত ধ্বংস করার দরকারটা কি বলেন?

    ৪. এই ওলাময়ে-সূ দের একটা অভ্যাস হল এরা জিহাদের কাজ করুক বা নাই করুক ত্বগুতকে খুব ভয় পায়।এরা হক্ব,জিহাদ,মুজাহিদদের বিরোধিতা করে বুঝে শুনেই যেমনটা বালআম করেছিল।সুতরাং ওদের বুঝানো আর না বুঝানো সমান।এরা কুকুরের মত,ওকে যদি তুমি কষ্ট দাও তাহলে জিহ্বা বের করে হঁাপয় আর কষ্ট না দিলেও জিহ্বা বের করে হাঁপাতে থাকে।যেমনটা ১৭৬নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।দুনিয়ার সুখ শান্তি অর্জনের জন্য ত্বগুতদের ধর্ণা ধরার জন্য এরা হাঁপাতে থাকে।

    ৫.এরা অন্যান্য আমলে খুব ব্যস্ততা দেখিয়ে হাঁপাতে থাকবে।মনে হবে যেন দ্বীন ইসলামের অনেক বড় খিদমাহ আঞ্জাম দিয়ে ফেলেছেন।যেমন:সহিহ হাদিস সহিহ হাদিস,আবার আহলে হাদিস বিরোধি অভিযান।সহিহ হাদিসে কি আছে আল্লহর আইনের বিপরীত আইন তৈরী কারি মুরতাদদের অনুসরণ করার? যাই হোক। *কিন্তু ক্বিতালের বিষয় আসলেই ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে চান 'না-মানে ইমাম মাহদী আসুক!তাঁর শত্রুরা সব অটো ধ্বংস হয়ে যাবে,গজওয়ায়ে হিন্দ শেষ,কে তামিম আদনানী,কে উসামা,যদি বলা হয় জসীমউদ্দিন রাহমানীকে(আল্লহ শাইখের বরকতময় মুক্তি ত্বরান্নিত করুন)ত চিনেন এই কথা বললে, বলে সে ত পথভ্রষ্ট আবার কেউ কেউ বলেন "আরে সে ত আহলে হাদিস,গুমরাহ" ইত্যাদি।তাইলে আপনারা জিহাদ শুরু করেন! আমরা আছি ইংশাআল্লহ,
    আরে নাহ!ওটা ত সরকারের দায়িত্ব।অথচ সরকার ক্বুরআনের সব আইন একে একে বাদ দিয়ে দিচ্ছে। এই আলেমরা দেখি ডোনাল্ড ড্রামের থেকেও মাথা মোটা। মূলত এত সব খোঁড়া অজুহাত জিহাদ থেকে বাঁচার জন্য। এদের চরিত্রটা মহান রব্বে কারীম সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।
    আল্লহ তা'আলা বলেনঃ-" তোমরা নিজেদের হাতকে সংযত রাখ,সলাত কায়েম কর, যাকাত দিতে থাক।অতঃপর যখনই তাদের উপর যুদ্ধ ফরজ করা হল তখনই তাদের একদল মানুষদের ভয় করা শুরু করল যেমন করে আল্লহকে ভয় করা হয় এমনকি তার চেয়েও বেশি"।(সূরা নিসা,আয়াত:৭৭)

    ৬.দুনিয়ার সামান্য বিনিময়ে আল্লহর কালামকে গোপন করা।যদিও তা সামান্য ১টি আয়াত ও হয়।এটা অভিশপ্ত হওয়ার একটি কারন।
    এদের আখিরাতে কোন অংশ নেই।আল্লহ এদের সাথে কথা বলবেন না, এদের দিকে করুণার দৃষ্টিও দিবেন না,এদের পরিশুদ্ধ ও করবেন না। বস্তুতঃ এদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আজাব।(সুরা আলে ইমরান,
    আয়াত:৭৭)

    ৭.আরাফের ১৭৫ নং আয়াতে বর্জন করা অর্থে ব্যবহার হয়েছে 'ইনসেলাখ' শব্দটি,যার আভিধানিক অর্থ দেহ থেকে চামড়া ছাড়ানো।অর্থাৎ, আল্লহর কিতাব ও নিদর্শনের সাথে ব্যক্তির সম্পর্ক এতটা গভীর হয়ে যায়, যেন তা গোশতের সাথে চামড়ার গভীর সম্পর্ক। সুতরাং এই সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে চাইলে নিজ অস্তিত্ব বিলীন করে দিতে হবে এবং এটা নিজের জন্যই যন্ত্রণাদায়ক ও ক্ষতিকর বিষয় ;যেমনটি ঐ ব্যক্তির হবে যে নিজের চামড়া নিজেই খসিয়ে ফেলল।
    *সুবহানাল্লহ! ভাইয়েরা আমার,চিন্তা করে দেখুন কতটা ভয়াবহ মিসাল আল্লহ তা'আলা দিয়েছেন তার কালামকে গোপন করা বা জীহাদের বিরুদ্ধে অবস্হান করার জন্য।

    ৮.হক্ব গোপন করা নিজের উপর জুলুম করারই নামান্তর।
    তাদের আল্লহ হিদায়াত দ্বারা ইল্লিয়্যিনের মত উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত করতেন, কিন্তু নিজেকে ইমানের ন্যায় নিরাপদ চর্ম থেকে বঞ্চিত করে নীচে নামানো এবং শয়তানের লক্ষবস্তুতে পরিনত করা এবং কুকুরের মত নিকৃষ্ট পশুতে পরিণত করার মতো আর কোন অত্যাচার আছে কি?
    ৯.আমাদের কুকুরের মত জীবন যাপন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।অর্থাৎ দুনিয়াবী স্বর্থের জন্য লালায়িত হওয়া,এর অর্জনের জন্য হাঁপাতে থাকা,দুনিয়ার জন্য লোভ লালসায় বুঁদ হয়ে থাকা,এর ধ্বংস হওয়ার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।এইগুলো থাকলে আমরা শেষ পর্যন্ত জীহাদের পথে টিকে থাকতে পারব না।

    ১০.দুনিয়ার লালসার কোন শেষ নেই।এই লোভ লালসা যাদের একবার পেয়ে বসে,তাদেরকে কেউ সদুপদেশ দিক বা না দিক, তারা এটা অব্যাহতই রাখবে।
    #অনেক আলেম আইন প্রণয়নকারীদের কাফির বলত,তাদের সমর্থন কারি,অনুসারী, নিরাপত্তা দানকারী বাহিনীকে তাগুত বলত, কাফির বলত। পরবর্তীতে তারাই নাকি উলুল আমর হয়ে গেল।সরকারের আইন মানা ফরজ হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ! আল্লহর দ্বীন নিয়ে হঠকারিতা,কত স্বল্প মুল্যেই না তারা দ্বীন বিক্রি করে দেয়। নাউজুবিল্লাহ।

    ১১.ক্বুরআন কোন তাত্ত্বিক ইলমই নয় বরং এটি নাযিল হয়েছে 'শাসন করার জন্য,বিচার ফায়সালার জন্য। আর বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষে বিতর্ককারী হওনা।(সুরা নিসা,আয়াত ১০৫)
    *এটি মুমিনদের উদ্দীপিত,সচেতন,চালিকাশক্তি এবং বিজয়ী হওয়ার প্রেরণা যোগায়।নির্জীব প্রানে প্রাণের সঞ্চার ঘটায়। ফলে মানুষের স্বভাবগত ইন্দ্রিয়গুলো জেগে ওঠে। এতে করে তার স্বভাব আল্লহর সাথে সম্পাদিত আদি চুক্তিতে পুনর্হাল হয়।যার ফলে কোন কিছুই তাকে দুনিয়ার মোহাবিষ্ট করতে পারে না।
    কিন্তু যারা কালামকে বিক্রি করে দেয় তাদের এমনটা হয় না।তারা বলে প্রচলিত শাসন
    ব্যবস্হায় চলতে হবে।
    এক কথায় বললে, তারা(এই আলেমরা) চায় মুসলিমরা আরও জুলুমের শিকার হোক,মা-বোনেরা আরও বেশি করে নির্যাতনের শিকার হোক..তা না হলে কেন বলবে আমাদের গণতন্ত্রেরই অনুসরণ করত হবে!যার ব্যাপারে আল্লহ কোন দলীল দেন নি!

    ১২.যুগে যুগ ইসলামের ক্ষতি করেছে দুই শ্রেণির মানুষ।শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের অনুগত যাজকশ্রেণী, আলিম ওলামা।

    আল্লহ আমাকে সহ আমাদের সবাইকে হিফাজত করুন কিতমানে ওহী থেকে এবং বিক্রি হওয়া থেকে।
    যে হিদায়াতের উপর থাকতে চায় আল্লহ তাকে হিদায়াতের উপর রাখেন।তাকে কেও পথভ্রষ্ট করতে পারে না।
    আল্লহ আমাদের সিরাতে মুস্তাকিমের উপর অটল অবিচল রাখুন এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আমিন।

    বিঃদ্রঃ বাল'আম ইবনে বাউরার জায়গায় অন্যান্য কয়েকটি নামও বর্ণনা রয়েছে।তবে এখান থেকে শিক্ষাটাই আমার মূল লক্ষ ছিল।
    আরও কোন শিক্ষনীয় পয়েন্ট থাকলে ভাইয়েরা কমেন্টে এ্যাড করে দিন।কৃতজ্ঞ থাকব ইংশাআল্লহ।
Working...
X