Announcement

Collapse
No announcement yet.

এই জনপদের অধিবাসীরাও তো জালিম

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • এই জনপদের অধিবাসীরাও তো জালিম



    এই জনপদের অধিবাসীরাও তো জালিম


    ফেরাউনী আমলে শুধু ফেরাউনই জালিম ছিলেন না, বরং তার অনুগত বাহিনীও জালিম ছিলেন। সেই সময় নিজেকে মিথ্যা খোদা দাবি করা ফেরাউন এতটাই সীমা লঙ্ঘনের চরম পর্যায়ে পৌছে গিয়ে ছিল যে তার এই মিথ্যা দাবিকে তার অনুগত বাহিনী নীরবে মেনে নিয়ে ছিল। ফেরাউন বাহিনী নীরবে ফেরাউনের দুষ্কর্মগুলোকে সমর্থন করতো এবং তারাও এই দুষ্কর্মগুলোর সাথে আস্টেপৃষ্টে জড়িত ছিল। সত্য আসার পরে তারা জালিম ফেরাউনের বিরোধীতা না করে বরং তাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগীতা করতে লাগলো। উল্টো তারা সত্যের অনুসারীদের বিরোধীতা করতে লাগলো। ফলে আল্লাহ্‌ তা’আলা ফেরাউন ও তার দলবলকে ইহকাল ও পরকালের আযাবে পাকড়াও করলেন।

    ঠিক বর্তমান জামানায়ও এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা জালিম শাসকদের নীরবে নিভৃতে সমর্থন ও সাহায্য সহযোগীতা করে যাচ্ছে। সত্য আসার পরেও তারা এই সমস্ত জালিম শাসকদের এমনভাবে আনুগত্য করছে, যেন আল্লাহ্‌ তা’আলার চেয়ে এই সমস্ত জালিম শাসক তাদের কাছে অধিক প্রিয়। ফলশ্রুতিতে এই সমস্ত জালিম শাসকেরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এই সমস্ত জালিম শাসকদের জন্যই সমাজে নিত্য নতুন ফিতনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ খুব সহজেই তাদের পেতে রাখা ফাঁদে পা দিয়ে জালিমের খাতায় নাম লেখাচ্ছে। এই জনপদের অধিবাসীরা এখন এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে তারা কোন কিছুর ভালো-মন্দ বাছ-বিচার করছে না। কোনটি হালাল আর কোনটি হারাম তা যাচাই-বাছাই না করেই তারা ইতর প্রাণীদের মত আচরণ করছে। এই জামানায় ফিতনা এতটাই সহজ লভ্য হয়ে উঠেছে যে মানুষ আমভাবে হারাম বিনোদনকে হালাল বানিয়ে নিয়েছে। নাইট ক্লাব কিংবা ওপেন কনসার্টে নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশাকে এই জামানার মানুষেরা অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয় বানিয়ে নিয়েছে, যেন এগুলো কোন পাপ কর্মই না। কথিত শহীদ মিনারে খালি পায়ে ফুল দেওয়া কিংবা পহেলা বৈশাখে বিভিন্ন কুফরী অনুষ্ঠানকে তারা অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত করেছে। মশাল মিছিলের নামে অগ্নি পুজা কিংবা অসার মূর্তির সামনে নীরবতা পালনকে তারা তাদের সংস্কৃতির অংশ বানিয়ে নিয়েছে। আর এখন তো প্রতিটি ঘরে-ঘরে টেলিভিশন, মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট অত্যন্ত সহজ লভ্য হয়ে উঠেছে। প্রতিটি ঘরে ঘরেই যেন এখন ফিতনার জোয়ার বইছে। এই জনপদে অশ্লীল বেহায়াপনার যে শিল্প-সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তা কি জালিমদের কাজ নয়? এই জনপদের অধিবাসীরাই তো অশ্লীল বেহায়াপনার শিল্প সংস্কৃতিকে লালন-পালন করছে। সত্য আসার পরে এই জনপদের অধিবাসীরা জালিম শাসকদের বিরোধীতা না করে উল্টো কুফরি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদেরকে নির্বাচিত করার মাধ্যমে তাদের অন্যায় অপকর্মের পক্ষে সমর্থন দিচ্ছে। এরা এতটাই অন্ধ যে তাদেরকে যখন বলা হয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা একটি কুফরী ও শিরকি ব্যবস্থা তখন তারা অন্ধের মত দোহাই দিয়ে বলে যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোট দেওয়া নাকি তাদের নাগরিক অধিকার। কোন দলিলের ভিত্তিতে তারা এমন কথা বলে? অথচ প্রচলিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যে কুফরী ও শিরকি ব্যবস্থা শরীয়তের আলোকে তার অসংখ্য দলিল ও প্রমাণ রয়েছে। তাদেরকে আরও যখন বলা হয় যে তাগুত শাসকের আনুগত্য করা কিংবা কুফরি ও শিরকি আইন মানা যাবে না বরং তাদেরকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করতে হবে, তখন এই সমস্ত ওহান আক্রান্ত লেবাসধারী মুসলিমরা বলে বেড়ায় যে রাষ্ট্রের আইন (কুফরি ও শিরকি আইন) মানা ফরজ। তারা আরও বলে বেড়ায় যে কেউই আইনের (কুফরি ও শিরকি আইনের) ঊর্ধে নয়। কেউ কেউ তো আগ বাড়িয়ে প্রকাশ্যেই বলে বেড়াচ্ছে যে রাষ্ট্র মহাপরাক্রমশালী। নাউজুবিল্লাহ কত বড় কথা! শুধু তাই নয় এই জনপদে যারা কুফরি ও শিরকি বিভিন্ন প্রথা ও সংস্কৃতি আমদানি করছে আর যারা এই কুফরি ও শিরকি বিভিন্ন প্রথা ও সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা-ভক্তিসহকারে অন্তরে লালন-পালন করছে তারা কি সীমা লঙ্ঘনকারী নয়! তারা কি জালিম নয়! এই জনপদের অধিবাসীরা রীতিমতো সুদি কারবারের সাথে আস্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। এরা তো রীতিমতো আল্লাহ্‌ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে। আর এরা কি জালিম নয়! এই জনপদের অধিবাসীরা তো জেনে বুঝে এ রকম আরও অসংখ্য ঈমান বিধবংসী কার্যকলাপে লিপ্ত আছে যার শত শত উদাহরণ রয়েছে। তাহলে এদেরকে কি আমরা জালিম বলবো না! এই জনপদের অনেকে তো জেনে বুঝে দ্বীনের বিরোধীতা করছে। যারা মানুষদেরকে সত্যের দিকে আহ্বান করছে ওহান আক্রান্ত দুনিয়া লোভী কিছু মানুষ তাদের বিরোধীতায় উঠেপড়ে লেগে গেছে। নিজেরা তো জালিমের খাতায় নাম লিখিয়েছেই উপরন্তু যারা সত্য দ্বীনের অনুসরণ করছে তাদেরকেও জালিমের খাতায় নাম লেখানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। বরং পরিস্থিতি বর্ণনার চেয়ে আরও বেশি খারাপ।

    পরিশেষে মহান আল্লাহ্‌ তা’আলার কাছে দোয়া করি, তিনি যেন আমাদেরকে সবধরনের জুলুম, অন্যায়-অবিচার থেকে হেফাজত করেন। তিনি যেন আমাদের অন্তর থেকে দুনিয়ার প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা দূর করে আখিরাতের প্রতি ভালোবাসা বাড়িয়ে দেন। আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন।
Working...
X