মানহাজি; কিছু কথা
মিসওয়ার তাকী
এসব নিয়ে লেখালেখি করতে যদিও রুচিতে বাঁধে, তবুও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কল্যাণকামী এক ভাই হিসেবে কিছু বলাটা প্রয়োজন মনে করি। নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- الدين النصيحة “দ্বীন হলো নাসিহা তথা কল্যাণকমিতা" [তিরমিজি]
ইদানীং অনলাইন প্লাটফর্মে ❝মানহাজি❞ শব্দের বেশ প্রয়োগ হচ্ছে পক্ষে বা বিপক্ষে।
শব্দটি যদিও ইদানীং অনলাইন প্লাটফর্মে খুব জোরেসোরেই আলোচনায় আসছে, এমনকি একাত্তর টিভির প্রতিবেদনেও দেখেছিলাম “মানহাজি” নিয়ে। [লিঙ্ক- https://youtu.be/y9dzEttAQic]
যদিও ‘মানহাজি শব্দটি প্রায় সব ২ বছর যাবত বেশি প্রচলিত, কিন্তু সেই ১৫ সাল থেকেই এই ‘মানহাজি’ অভিযোগে আমি অভিযুক্ত হয়েছি।
বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসাগুলোতে চলমান সময়ে যেই বিসয়গুলো টপ অফ টপিক তারমধ্য "মানহাজি" আলোচনা অন্যতম।
তাই কারা মানহাজি ও কারা নন মানহাজি এটা আলহামদুলিল্লাহ আমার যথেষ্ট ধারণা রয়েছে।
যাকগে আজকে ওই দিকটায় যাচ্ছিনা, সময় হলে কখনো তা স্পষ্ট করবো ইন-শাআল্লাহ।
আজকে একটি বিষয়ে কিঞ্চিৎ আলোকপাত করবো ইন-শাআল্লাহ, ফেসবুকে কিছু বিশেষজ্ঞ ভাইয়ের লেখা চোখে পড়লো হয়তো আপনারাও তা দেখে থাকবেন বা জেনে থাকবেন।
তার দাবিঃ-
১। ক্লাসে থার্ড পার্সন তালেবুল ইলম মানহাজি ।
২। পড়া না পারার কারণে ওস্তাদদের মার খায় ।
৩। আর এর বদলা সরূপ তারা ওস্তাদদের বিরুদ্ধাচারণ করছে ।
যদিও এটা প্রশ্ন আকারেই বলেছেন, কিন্তু আদতে এটা প্রশ্ন নয় বরং এটা সংবাদ দেয়া হয়েছে। যা সহজেই অনুমেয়।
‘মানহাজিরা কি ক্লাসে থার্ড পার্সন তালেবুল ইলমঃ
রাহামানিয়া থেকে রাব্বানিয়া, ফরিদাবাদ থেকে যাত্রাবাড়ী, ইবরাহিমিয়্যাহ থেকে আশরাফিয়া, হাটহাজারী থেকে পটিয়া এমন কোন কওমি মাদ্রাসা এই মুহুর্তে খুঁজে বের হয়তো সম্ভব নয় যেখানে কিছু সত্যান্বেষী, মুত্তাকি, সত্যবাদী, আপোষহীন, শাহ ওলিউল্লাহ আর কাশ্মীরী রাহিমাহুমাল্লাহু' এর আদর্শ আদর্শবান তালেবুলইলমকে মানহাজি ট্যাগে সম্বোধন করে জুলুম ও নির্যাতন করা হয়নি।
মানহাজিরা কি থার্ড পার্সন ছাত্রঃ
আমি এমন তালেবুল ইলমের সন্ধান পাইনি যে মানহাজি ট্যাগে সম্বোধিত হয়েছে অথচ সে ক্লাসের নিম্ন কিংবা মাধ্যমিক ছাত্র। বরং কওমি মাদ্রাসার হাই কোয়ালিটি মেধার অধিকারী, অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন ছাত্রই মূলত এই মানহাজি ট্যাগের মূল টার্গেট।
আর তাদের ভালোবেসে অনেক মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের তালেবুল ইলমেরও আনাগোনা হয়েছে এই কাতারে। আমি দেখেছি একেকজন মানহাজি ট্যাগে সম্বোধিত তলাবার প্রশ্নের সামনে কথিত মুরুব্বিদের লাজওয়াব হওয়া ও অশালীন আচারণ করা।
আমি দেখেছি মানহাজি ট্যাগে সম্বোধিত তলাবার ইলমি প্রখরতা, গভীরতা ও ফিকহিয়্যাত।
সত্যি সত্যিই ঈর্ষনীয়!!
আজকে যে বা যারা মানহাজি আখ্যা দিয়ে এই মাজলুম তালিবুল ইলমদের জ্ঞান ও মেধাকে খাটো করছে ও তা তুচ্ছ করছে তাদের জানা উচিত মানহাজিদের ইলমি উমুক্লিয়্যাত দেখে নন মানহাজি কথিত মুরুব্বিদের মুখ ও জবান আটকে যাওয়ার অসহায়ত্বের বাস্তবতা আমরা স্ব চোখে দেখেছি।
সুতরাং একমাত্র ওই ব্যক্তি যে নিজের খেয়ালখুশির অনুসরণে মত্ত সেই জাতির এই মেধাবী তলাবাদের মেধাকে নিয়ে কটুবাক্য করার দুঃসাহস করতে পারে।
আমার লেখা দ্বারা এটা উদ্দেশ্য নয় যে, মানহাজি ও কওমি আলাদা, এবং মানহাজিরা কওমিদের বিরোধিতায় লিপ্ত কিংবা তারা কওমিদের সাথে ইলমি পাল্লা দিতে আগ্রহী।
কারণ যাদেরকে মানহাজি বলা হয়েছে ও হচ্ছে তারা হয়তো আমাদেরই কোন বড় ওস্তাদ নয়তো আমাদেরই কোন তলাবা, অতএব মানহাজিরা কওমিরই সন্তান বরং তারাই দেওবন্দের আসল উত্তরসূরী।