Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩২ || “ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে একবিংশ শতাব্দীর গণতন্ত্র (সূরা আসরের আলোকে) ” ।। মাওলানা আসেম উমর হাফিজাহুল্লাহ || ১ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩২ || “ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে একবিংশ শতাব্দীর গণতন্ত্র (সূরা আসরের আলোকে) ” ।। মাওলানা আসেম উমর হাফিজাহুল্লাহ || ১ম পর্ব

    আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত

    ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে
    একবিংশ শতাব্দীর গণতন্ত্র’’

    (সূরা আসরের আলোকে)
    ।।মাওলানা আসেম উমর হাফিজাহুল্লাহ ||
    এর থেকে১ম পর্ব

    ভূমিকা



    সূরা আসর - কুরআনে কারীমের ছোট এ সূরা মানবজাতিকে অলসতা থেকে জাগিয়ে তোলার জন্য যথেষ্ট। শুধু দরকার শোনার মতো কানের, বুঝার মতো হৃদয়ের, লাভ-লোকসান চিহ্নিত করতে সক্ষম বিবেকের এবং মনোবৃত্তির আস্তরণ পড়েনি এমন চোখের।

    এ সূরা প্রত্যেক মানুষকে আলাদাভাবে আলস্য ছেড়ে জেগে ওঠার আহ্বান জানাচ্ছে। আবার সামাজিকভাবে প্রত্যেককে এমন এক কর্মপদ্ধতি শিখিয়ে দিচ্ছে, যা অনুসরণ করে যে কেউ মৌলিক চরিত্রাবলি ও উন্নত মননের অধিকারী হতে পারে।

    এ সূরা মানবজাতিকে এমন নীতি শিক্ষা দিচ্ছে, যাকে সম্বল করে অনগ্রসর ও অনুন্নত জাতিগোষ্ঠীও মর্যাদা ও উন্নতির পথে হাঁটতে পারে। পক্ষান্তরে যা ছেড়ে দেওয়ার ফলে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছা জাতিও অধঃপতনে পতিত হওয়া থেকে বাঁচতে পারে না।

    এ সূরা দুর্বলদেরকে সত্য বলতে সাহস যোগায় এবং সেই সত্যের জন্য নিজের সবকিছুকে বিসর্জন দিতে প্রেরণা যোগায়।
    এ সূরা মুসলমানদের মাঝে ঈমান-অবিচলতার মশাল জ্বালায়তাদেরকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে সর্বদা আমলের জন্য উৎসাহিত করে। আর দুর্বল-অক্ষম মুসলমানদের মাঝে জাগায় আমলের অনুপ্রেরণা।

    এ সূরা দুর্বলদের অবিরাম প্রচেষ্টা ও অবদান রাখার প্রতি উৎসাহিত করে বলে, তোমরাই পারবে লাঞ্ছনার অতল গহ্বরে তলিয়ে যাওয়া মানবতাকে মর্যাদা ও সম্মানের মহাসড়কে তুলে আনতে। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ানো পৃথিবীকে সফলতার মুখ দেখাতে। তোমরাই পারবে মানুষকে শয়তানের ভাগাড় থেকে উদ্ধার করে রাহমানুর রাহীমের জান্নাতে পৌঁছে দিতে।

    এ সূরা মুসলিম উম্মাহকে وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ তথা ‘পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের’ এবং وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ তথা ‘পরস্পরকে তাকীদ করে সবরের’ এর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভবিষ্যতে মানবতার নেতৃত্ব ও মানবসমাজকে নিজেদের মতো করে রাঙানোর রহস্য বর্ণনা করছে।

    এ সূরার প্রত্যেকটি বাক্যকে অন্তরের কানে শোনো। কী বিশ্বাস ও আস্থায় তা পরিপূর্ণ! শত দুর্বলতা সত্ত্বেও এটি তার বিপরীত সব সভ্যতা-সংস্কৃতিকে চ্যালেঞ্জ করে ঘোষণা করছে- বাহ্যিক সাফল্যপ্রাপ্ত সমস্ত সভ্যতাই ক্ষতিগ্রস্ত এবং চিন্তানৈতিক দৈন্যতার স্বীকার। কিন্তু এ শরীয়াহর দাওয়াত, যা এ উম্মাহ তথা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেমিকগণ দিয়ে যাচ্ছেন; তা-ই একমাত্র সফলতার গ্যারান্টি দিতে পারে। এ দ্বীন ছাড়া সাফল্য ও মুক্তির কোনো পথ নেই। তাদের (দ্বীনবিরোধীদের) ভাগ্যে রয়েছে শুধু ক্ষতিই ক্ষতি। তাদের প্রত্যেকটি সেকেন্ড, মিনিট ও মুহূর্ত ক্ষতির সম্মুখীন। তাদের জীবনবাজারে চলছে চরম মন্দা।

    তাই তো ইমাম রাযী রহ. সূরা আসরের তাফসীরে বলেন, পূর্বসূরিদের কোনো মনীষী বলেছেন, এ সূরার তাফসীর আমি সেই বরফবিক্রেতা থেকে শিখেছি, যে ডাক দিয়ে বলে-
    ارحموا من يذوب رأس ماله، ارحموا من يذوب رأس ماله

    ‘সেই ব্যক্তিকে রহম করো, যার মাল গলে যাচ্ছে! সেই ব্যক্তিকে রহম করো, যার মাল গলে যাচ্ছে!’


    এ পৃথিবী যেন একটি বাজার। আর তাতে বসবাসকারীরা হচ্ছে ব্যবসায়ী। জীবনের শ্বাস-প্রশ্বাসগুলো তাদের পুঁজি। তো কার পুঁজি লাভজনক হচ্ছে, আর কে মাথায় হাত রাখছে? কার জীবন সফলতার মুখ দেখছে, আর কার জীবন লোকসানে বিপর্যস্ত হচ্ছে? তা খুব ভালো করেই জানা।

    আসুন! এ সূরার মাধ্যমে আমাদের ঈমানকে মজবুত করি; যাতে ফেতনা বর্ষণকালে ঈমান-আমলের ছাতা ধরতে পারি।

    আসুন! এ সূরার মাধ্যমে নিজেদের বিশ্বাসকে সজীব করে তুলি; যাতে আমরা বিশ্বকুফরের সামনে ইস্পাতকঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারি। এই তিন আয়াতে ডুব দিয়ে রিক্ততার অনুভূতিসাগর থেকে বেরিয়ে আসি, যেখানে আজকের যুবসমাজকে দাজ্জালী মিডিয়া ডুবিয়ে রেখেছে।

    আসুন! বিশ্বকুফরী শক্তির ভয়ে ভীত হয়ে থরথর কাঁপতে থাকা দেহগুলোতে এ সূরার একটু উষ্ণতা দিই; যাতে তাওহীদের স্লোগান মুখ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে আসে।

    আসুন! ইসলামের শত্রুবাহিনী ও সামরিক সংস্থাগুলোর বধ্যভূমিতে এ সূরার ঘোষণা করে দিই যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনীত শরীয়াহর দাওয়াত ও তার উপর অবিচল থাকার উপদেশই কুরআনের সম্মান রাখতে পারে।

    আসুন! এ সূরা সম্পর্কে চিন্তা-গবেষণা করি; যেটি সম্পর্কে ইমাম শাফিঈ রহ. বলেছেন-

    لو لم ينزل غير هذه السورة لكفت الناس لأنها شملت جميع علوم القرآن


    ‘যদি কুরআন মাজীদে শুধু এই সূরাই থাকত, তা একাই বিশ্বমানবতার জন্য যথেষ্ট হতোকারণ, তাতে রয়েছে কুরআনের সব জ্ঞান।’





    আরও পড়ুন​
    Last edited by tahsin muhammad; 6 days ago.
Working...
X