Announcement

Collapse
No announcement yet.

জায়নবাদী ও মুশরিকদের মুসলিম নিধনের গ্লোবাল মানহায।

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জায়নবাদী ও মুশরিকদের মুসলিম নিধনের গ্লোবাল মানহায।

    الحمد لله، الحمد لله وحده، والصلاة والسلام عليك مَن لا نبيَّ
    ​​​​​ بعده. فأعوذ بالله من الشيطان الرجيم، بسم الله الرحمن الرحيم.

    وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنۡ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللّٰهِ اَنۡ یُّذۡكَرَ فِیۡهَا اسۡمُهٗ وَ سَعٰی فِیۡ خَرَابِهَا ...
    অর্থ: আর তার চেয়ে অধিক যালেম কে, যে আল্লাহর মাসজিদসমূহে তাঁর নাম স্মরণ করা থেকে বাধা প্রদান করে এবং তা বিরাণ করতে চেষ্টা করে? ... (সূরা আল বাকারাহ; ২:১১৪)

    ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে "অপারেশন সিন্দুর" নামক অভিযানে যে ঘটনাগুলি ঘটেছে, তা স্পষ্টভাবে দেখায় যে, এই অভিযানটি শুধুমাত্র কথিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নয়, বরং মুসলিম জনগণের ধর্মীয় ও সামাজিক কাঠামোর উপর একটি পরিকল্পিত আঘাত। ভারতীয় বাহিনী দাবি করেছিল যে, তারা সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, মসজিদ, মাদ্রাসা এবং সাধারণ মুসলিম বসতিগুলিই ছিল প্রধান লক্ষ্যবস্তু। এই হামলায় অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে শিশু ও নারীও রয়েছে, এবং আরও ৫৭ জন আহত হয়েছেন।

    এই অভিযানে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে এবং মুজাফফরাবাদে অবস্থিত নয়টি স্থানে হামলা চালানো হয়, যেগুলি ভারতীয় বাহিনী "সন্ত্রাসী অবকাঠামো" হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। তবে পাকিস্তান দাবি করেছে যে, এই স্থানগুলি মূলত বেসামরিক এলাকা, যেখানে মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই হামলায় মসজিদ ধ্বংস হয়েছে এবং মাদ্রাসাগুলিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

    তর্কের খাতিরে যদি এক মুহূর্তের জন্য ধরে নিই—ভারতের ভাষ্য সত্য, তারা মুজাহিদদের লক্ষ্য করেছে, সন্ত্রাস প্রতিরোধেই তারা “অপারেশন সিন্দুর” চালিয়েছে—তবুও মূল প্রশ্ন থেকে যায়: তারা পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে কীভাবে হামলা চালানোর অধিকার পেল? এটা কি সেই আন্তর্জাতিক নীতিমালার সম্পূর্ণ লঙ্ঘন নয়, যার ভিত্তিতে জাতিসংঘ টিকে আছে? যেখানে Nation-State এর সার্বভৌমত্বকে রাষ্ট্রীয় অস্তিত্বের মূল স্তম্ভ হিসেবে দেখা হয়?

    অথচ পাশ্চাত্যের কোনো রাষ্ট্রের পতাকায় কেউ যদি জ্বালিয়ে দেয়, তা হলেই গোটা আন্তর্জাতিক কাঠামো হাহাকার শুরু করে—"সার্বভৌমত্বে আঘাত", "রাষ্ট্রীয় মর্যাদার লঙ্ঘন", "জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন" ইত্যাদি শব্দে সংবাদমাধ্যম গর্জে ওঠে। তাহলে এখন যখন ভারত আন্তর্জাতিক সীমান্ত লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের ভেতরে বোমা ফেলে, তখন কোথায় সেই জাতিসংঘ? কোথায় সেই আইনের ধ্বজাধারীরা? কোথায় সেই গণতন্ত্রের প্রবক্তারা?
    বাস্তবতা হলো—এখানে মুজাহিদদের উপস্থিতিই আসল ‘অপরাধ’ নয়, অপরাধ হলো তারা 'মুসলিম'।

    মূল কথায় ফিরে আসা যাক। ভারত কোনো গ্রহণযোগ্য, স্বীকৃত বা নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক প্রমাণ ছাড়াই, শুধুমাত্র “সন্ত্রাসবাদ বিরোধী” একটি বহুল ব্যবহৃত ক্লিশে ট্যাগলাইন ঝুলিয়ে অপারেশন সিন্দুর নামক সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে দিল এক মুসলিম রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে।

    ভাবুন একবার—আজ পাকিস্তান, কাল আফগানিস্তান, পরশু বাংলাদেশ কিংবা আরও দক্ষিণে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চল—যেখানেই মুসলিমদের বসতি, সেখানেই তারা একই ছক প্রয়োগ করতে পারবে: একটি মনগড়া সন্ত্রাসবাদী নাটক সাজানো হবে, মিডিয়া মারফত তা বৈধতা পাবে, তারপর ড্রোন আসবে, বোমা পড়বে, আর বিশ্ব বলবে—“সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চলছে”।

    পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর প্রকাশ্যেই বলেছেন, “This is called zero tolerance against terrorism”—যেন তিনি ঘোষণা দিলেন: ভারত এখন আন্তর্জাতিক শাসনব্যবস্থার ঊর্ধ্বে। যেন বিচারপতি, প্রসিকিউটর এবং কার্যকরী বাহিনী সব একত্রে ভারত নিজেই। কেউ প্রশ্ন তুললে উত্তর প্রস্তুত—“তোমরা কি সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিচ্ছ?”। এই জবাবই তাদের কূটনৈতিক ঢাল।

    (২)

    ইসরাইলের নীতি নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করি, তখন সেটি শুধুমাত্র ফিলিস্তিনের সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এটি একটি আন্তর্জাতিক পরিসরে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে শত্রুতামূলক নীতি চলছে, তারই একটি অংশ। এর আগেও আমি বলেছি এবং আবারও বলছি—সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে যে কোনো মুসলিম ভূখণ্ডে, যেকোনো মুসলিম সমাজে হামলা চালানোর জন্য এক অজুহাত খাড়া করা হয়েছে, এবং এই অভিযানে সামনে রেখেছে ইহুদী এবং মুশরিকদের স্বার্থ। ফিলিস্তিনে যেমন, তেমনি পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশসহ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোও তাদের পরবর্তী লক্ষ্য হতে পারে। সন্ত্রাসবাদের নামে এসব হামলা চলে। একের পর এক মিথ্যা অজুহাত সাজিয়ে মুসলিমদের নির্যাতন করা হচ্ছে। তৌহিদি জনতা, মুসলমানদের ঈমান—এই শব্দটুকুই তাদের কাছে যথেষ্ট কারণ হয়ে দাঁড়ায় হামলার জন্য।

    ফিলিস্তিনে ইসরাইল যেভাবে নিজেদের আত্মরক্ষার অধিকার দাবি করেছিল, তার পরেও আজ পাকিস্তানে হামলা হলে, তারা আবারও একই ভাষা ব্যবহার করছে। ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গব্রীয়েল শিন্ডলারের কথা মনে পড়ে, তিনি ফিলিস্তিনের দখলীকৃত ভূখণ্ডের প্রতিটি হামলার পর বারবার বলেছেন, “আমরা আত্মরক্ষার অধিকার রাখি, এবং এই অধিকার আমাদের রয়েছে। আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি।” এটা বলার মাধ্যমে তারা মুসলমানদের পবিত্র ভূমিতে অব্যাহতভাবে সহিংসতা চালাচ্ছে। একই কথা আজ ভারতও বলছে—পাকিস্তান আক্রমণের পর, ভারতীয় কর্মকর্তারা নিজেদের হামলার জন্য "সন্ত্রাসবাদ বিরোধী" মর্মে ভাষণ দিচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও বলেছেন, “আমাদের দেশীয় নিরাপত্তা রক্ষা করার জন্য, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।”

    তাই বাংলার মুসলিমদের আবারো সচেতন করতে চাই, আমাদের উপর হামলার জন্য মুশরিকদের কোনো অজুহাতের প্রয়োজন নেই। "তৌহিদি জনতা" এই এক শব্দই তাদের কাছে যথেষ্ট হবে আমাদের ওপর হামলা চালানোর জন্য। আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং একত্বের জন্য যে ঘৃণা, যে বিদ্বেষ রয়েছে, তা মুসলিম হওয়ার পরিচয় ছাড়া অন্য কোনো কারণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। আমাদের জন্য শত্রুরা কোনো স্পষ্ট অজুহাতের প্রয়োজন বোধ করে না। কেবলমাত্র এই "তৌহিদি জনতা" শব্দটুকু, মুসলমানদের বিশ্বাস এবং তাঁদের ঈমানের প্রতি আঘাতই তাদের জন্য যথেষ্ট।

    তাই, যারা তানজিমের সাথে সম্পৃক্ত আছেন, আপনাদের অনুরোধ, আপনাদের শায়েখদের, নেতাদের কথা শুনুন এবং তাদের নির্দেশিত পথকে অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করুন। আমাদের শায়েখরা যে শিক্ষা দেন, তা মেনে চলা ও অনুসরণ করার মধ্যেই আমাদের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। তাদের গাইডলাইন এবং দিকনির্দেশনার মধ্যে যে আলোকিত পথ আছে, তা অনুসরণ করাই আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ।

    আর যারা জামাতের সাথে সরাসরি সংযুক্ত হতে পারছেন না, তাদের জন্য পরামর্শ, তানজিমের ওপেন সোর্স কন্টেন্টগুলো দেখুন, পড়ুন এবং সেগুলোর মাধ্যমে তাদের চিন্তা-ধারা, মূল্যবোধ এবং লক্ষ্যগুলোর প্রতি একটি গভীর অনুধাবন তৈরি করুন। তানজিমের শিক্ষা এবং নীতি যে শুধু একটি সংগঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা সারা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য একটি আদর্শ, এটি তাদের প্রতিটি কন্টেন্টের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়।

    আল্লাহ আমাদের সহায়ক হোন, আমাদের হৃদয়ে হিদায়াত দিন, যাতে আমরা নিজের জীবনে এবং সমাজে সঠিক পথ অনুসরণ করতে পারি। আমাদের মনোবল বৃদ্ধি করুন, যাতে আমরা সব ধরনের ফিতনা ও বিভেদ থেকে দূরে থাকি এবং একসাথে ইসলামের সঠিক পথে চলতে পারি। - আমীন।।
    وآخر دعوانا أن الحمد للہ رب العالمین وصلی اللہ تعالیٰ علی نبینا الأمی
    فَاَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَ انۡتَظِرۡ اِنَّهُمۡ مُّنۡتَظِرُوۡنَ
Working...
X