তালিবান কি (আফগান) জাতীয়তাবাদী? আইএস কেন খারিজী?
কিছু বিষয় পুরাতন হলেও নতুন করে ঝালিয়ে নেওয়া ভালো। এমন দুটি বিষয় নতুন ও পুরাতন সব ভাইদের জন্য সংক্ষেপে তুলে ধরছি।
তালিবান কি (আফগান) জাতীয়তাবাদী?
জাতীয়তাবাদের অভিযোগের ভিত্তি দুটি হতে পারে। ১. আফগান কেন্দ্রিক জিহাদের কথা বলা, আফগানের বাইরে লড়াই না করার দাবি করা। ২. আফগান সংস্কৃতিকে প্রশ্রয় দেয়া।
১ম আপত্তির উত্তর: একই সাথে সকলের সাথে লড়াই করা রসূল স. এবং খুলাফায়ে রাশিদীনের আদর্শ নয়। তাঁরা কারো সাথে যুদ্ধ করেছেন, প্রয়োজনে কারো সাথে চুক্তি করেছেন। তালিবান আমাদের (যুগের) আদর্শিক নেতা, কিন্তু একই সাথে সারা বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সামর্থ্য এই মুহূর্তে তাদের নেই। প্রত্যেক ভূখণ্ডের মুসলিমদের জিহাদের দায়িত্ব আছে। সব দায়িত্ব তালিবানের নামে ছেড়ে দিলে হবে না। পাকিস্তানে জিহাদ হচ্ছে ভিন্ন নামে, কিন্তু তালিবানের আদর্শিক অনুসারীদের দ্বারা।
আফগানের বাইরে কাজ করার জন্য মুল্লা উমার র. আল কায়েদাকে দায়িত্ব/ অনুমতি/ স্বীকৃতি দিয়ে গিয়েছেন। সারা বিশ্বে এক নামে জিহাদের জন্য শক্তিশালী একক খিলাফত লাগবে। তার আগে কাফির ও তাদের দালাল মুসলিম নামধারী মুরতাদ শাসকদের থেকে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেটা তালিবানের আদর্শে, আল কায়েদার নেতৃত্বে বিভিন্ন দেশে হচ্ছে। ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করা ফরয। ইসলামী মুক্তিযুদ্ধ ফরয। কিন্তু বিশ্বব্যাপী একক খিলাফাহ সরকার প্রতিষ্ঠা করা সামর্থ্য অনুযায়ী ওয়াজিব। আগে ফরয আদায় করি, ওয়াজিব আদায়ের রাস্তা হয়ে যাবে।
তাছাড়া হুদাইবিয়ার চুক্তির পর যখন মক্কা বাসীদের সাথে আহলে মদীনার যুদ্ধ বন্ধ ছিল, মদীনার বাইরের বিশেষ করে মক্কা থেকে পালিয়ে পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়া মুসলিম মুজাহিদ গণ আপন গতিতে জিহাদ চালিয়ে গিয়েছেন। যা কাফিরদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। আল্লাহ তায়ালা চাইলে আবারো এমন হবে।
ইসলামে পোপতন্ত্র নেই। এখানে ধর্মের নেতা একমাত্র রসূল স.। উলামায়ে কেরাম (ও মাযহাবের ইমামগন) হলেন শিক্ষক ও ব্যাখ্যাকারী। তাদের মাধ্যমে আমরা রসূলের অনুসরণ করি। (উলামাদের বৈধ মত পার্থক্যের কারণ, কোনো মাসআলায় রসূল স. এর একক সিদ্ধান্ত নিশ্চিত না হওয়া) পক্ষান্তরে, খলিফা ধর্মের নেতা না, রাষ্ট্রের নিয়ম শৃঙ্খলার নেতা। এটা দাবির বিষয় না। যার পুরা উম্মাহর শাসন কর্তৃত্ব অর্জিত হবে সে খলিফা হবে। বৈধ ভাবে হলে বৈধ খলীফা, অবৈধ ভাবে হলে অবৈধ খলীফা। নির্দিষ্ট জায়গায় ইসলামী শাসন ক্ষমতা অর্জন করলে স্থানীয় শাসক। বৈধ ভাবে হলে বৈধ শাসক, অবৈধ ভাবে হলে অবৈধ শাসক। খলীফা না। ইরাকের কিছু জায়গা দখলে পেয়ে দাবি করলেই খিলাফত সাব্যস্ত হয় না।
অনেকের মনে হতে পারে, কথাগুলো বৈশ্বিক ও ঐক্যবদ্ধ জিহাদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি তা নয়। ভিন্ন নামেও গুরুত্বপূর্ণ/ অভিন্ন শত্রুর মোকাবেলা করা সম্ভব। যেমন সারা বিশ্বে আমেরিকা বিরোধী জিহাদ। আমাদের এখানে আঞ্চলিক মূল শত্রু ভারত। তাই এখানে ভারত বিরোধী জিহাদ। ভারতের পতন হলে বাংলাদেশ সহ অন্যদের পতন হবে। (কিন্তু পাকিস্তান আফগান যুদ্ধে আমেরিকার সহযোগী হওয়ায় এবং আফগানের প্রতিরক্ষার স্বার্থে সে ব্যতিক্রমী ভাবে অগ্রগামী শত্রু বলে গণ্য)
২য় আপত্তির উত্তর হল তালিবানরা আফগান সংস্কৃতিকে ততটুকুই প্রশ্রয় দেন ততটুকু ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। আর এটা ইসলামে অনুমোদিত।
আইএস কেন খারিজী?
খারেজী বলা হয়:
১, যারা ভুয়া দলীলের ভিত্তিতে মুসলিমদের (ছোট বা বড় কোনো অংশ) কে কাফের বলে। এরা বিশ্বাস গত খারিজী। যা কর্মের দ্বারা প্রকাশ পায়।
(সুতরাং, দলীল বুঝতে ও প্রয়োগ করতে গিয়ে তাকফীরের যে সব সূরতে আলিমদের মতভেদ হয়েছে; {যেমন নামায তরককারী কাফির হবে কিনা? উমার র. কর্তৃক রসূল স. এর যুগে হাতিব রা. কে এবং আবু বকর র. এর যুগে খালিদ রা. কে তাকফীর।} সেক্ষেত্রে কেউ খারিজী বা মুরজিআ হবেন না।)
২, যারা ন্যায় সংগত মুসলিম শাসকের আনুগত্য থেকে বেরিয়ে যায়। এরা কর্মগত খারিজী।
দুটোই দাওলা গ্রুপে পাওয়া যায়। অথচ যে কোনো একটাই যথেষ্ট।
১. দাওলা গ্রুপ তাদের স্বঘোষিত খিলাফাহ না মানায় অন্য মুজাহিদদের কাফির/ মুরতাদ বলেছে। অথচ সর্ব সম্মত খলীফাকে না মানলেও কেউ কাফির হয় না, বড় জোর বাগী/ বিদ্রোহী/ খারিজী হয়। আর ইখতিলাফী খলীফাকে না মানলে কিছুই হয় না। যেমন অনেক সাহাবী আলী রা. কে খলীফা মানেন নাই। তাদের কেউ নিরপেক্ষ ছিলেন, কেউ মুআবিয়া রা. এর পক্ষে ছিলেন। তারা কেউ খারিজী ছিলেন না। আলী রা. নিরপেক্ষ সাহাবীদের সাথে যুদ্ধ করেন নি। দাওলা গ্রুপ তালিবান ও আল কায়দা সহ অনেক সুন্নী দলকে ও বিদআতী দলকে কাফির বলে। তাই তারা খারিজী।
২. উসমানীয় খিলাফতের পতনের পর মুল্লা উমার র. প্রথম পুর্ণ ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। আর আল কায়েদা তার সকল শাখা সহ পর্যায়ক্রমে উনার আনুগত্যের শপথ দেয়। দাওলা গ্রুপও ইরাক শাখা হিসেবে শপথ করেছিল। কিন্তু সিরিয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত ভাল না লাগায় বিদ্রোহ করে এবং নিজেদের উপরে তুলতে খিলাফতের ঘোষণা দেয়। প্রথমে মুজাহিদদের বিদ্রোহী পরে কাফির ঘোষণা করে। তালিবানের বৈধ নেতৃত্ব থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় তারা খারিজী।
খারিজীদের আমল যেন ধোঁকায় না ফেলে। (রসূল স. এর নির্দেশনা। হাদীসের কিতাব সমূহ ব্যাখ্যা সহ দ্রষ্টব্য।)
(আমি যা তথ্য দিলাম https://gazwah.net থেকে যাচাই করা যাবে।)
দুঃখ জনক ভাবে খারীজী পন্থীরা শত্রু রাষ্ট্রের সাথে তালিবানদের রাজনৈতিক মিমাংসা নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক ভাই আবার দ্বিধায় পড়ে গিয়েছেন, তালিবানদের যারা অপবাদ দিচ্ছে তারা খারীজী হবে কিনা?
অধমের জানা মতে খারেজী হওয়ার জন্য তাকফীরী হওয়া তথা কোনো মুসলিমের অন্যায় তাকফীর করাই যথেষ্ট। আরেকটু ভেঙে বললে কাফির নয় এমন কাউকে অন্যায় ভাবে কাফির বলাটাই যথেষ্ট। হত্যা পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না। যেমন, অতীতের সব খারীজী ব্যক্তিগতভাবে হত্যার সাথে যুক্ত থাকত না। অথচ কেবল আকীদার কারণে তারা খারীজী সাব্যস্ত হয়েছে। কারণ, যখন কাউকে তাকফীর করা হয়, তাকে মুরতাদ সাব্যস্ত করে জান মাল বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাস্তবায়ন হোক বা না হোক। এর উদাহরণ ঐ হাদীস; যাতে মাকতূলকে জাহান্নামী বলা হয়েছে, প্রতিপক্ষ কে অন্যায়ভাবে হত্যার নিয়ত থাকায়।
যারা তালিবানকে বাতিল বলছে, (কিছু ব্যতিক্রম থাকতে পারে।) তারা নিশ্চয়ই কেবল বিদআতী বলছে না। বরং তাগুতের সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের মত ভয়াবহ অপবাদ দিচ্ছে। এর ফলাফল কি তাকফীর ছাড়া অন্য কিছু? হ্যাঁ, কেউ যদি এই লাইনে নতুন হয় বা জানার চেষ্টা করে সেটা ভিন্ন। এমনি ভাবে চুক্তির ধারা নিয়ে কারো মনে বেদনা থাকতে পারে। যদিও এটা নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের বিরোধিতার অনুমতি দেয় না, অপবাদ দেয়া তো দূরের কথা। কিন্তু জ্ঞান প্রত্যাশী আর অপবাদ আরোপকারীর মাঝে আছে আসমান যমীনের ফরক।
আরো দেখতে পারেন
আইসিস ও আল-ক্বা’ইদাহ্*র মধ্যে মানহাজগত পার্থক্য
শাইখ আহমাদ আল হামদান হাফিযাহুল্লাহ
গ্লোবাল জিহাদ থেকে আইএসের বিচ্ছিন্নতা ও বিপথগামীতার টাইমলাইন
তালিবান কি (আফগান) জাতীয়তাবাদী? আইএস কেন খারিজী?
সংগ্রহে ও সম্পাদনায় সালমান মুসতফী।
কিছু বিষয় পুরাতন হলেও নতুন করে ঝালিয়ে নেওয়া ভালো। এমন দুটি বিষয় নতুন ও পুরাতন সব ভাইদের জন্য সংক্ষেপে তুলে ধরছি।
তালিবান কি (আফগান) জাতীয়তাবাদী?
জাতীয়তাবাদের অভিযোগের ভিত্তি দুটি হতে পারে। ১. আফগান কেন্দ্রিক জিহাদের কথা বলা, আফগানের বাইরে লড়াই না করার দাবি করা। ২. আফগান সংস্কৃতিকে প্রশ্রয় দেয়া।
১ম আপত্তির উত্তর: একই সাথে সকলের সাথে লড়াই করা রসূল স. এবং খুলাফায়ে রাশিদীনের আদর্শ নয়। তাঁরা কারো সাথে যুদ্ধ করেছেন, প্রয়োজনে কারো সাথে চুক্তি করেছেন। তালিবান আমাদের (যুগের) আদর্শিক নেতা, কিন্তু একই সাথে সারা বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সামর্থ্য এই মুহূর্তে তাদের নেই। প্রত্যেক ভূখণ্ডের মুসলিমদের জিহাদের দায়িত্ব আছে। সব দায়িত্ব তালিবানের নামে ছেড়ে দিলে হবে না। পাকিস্তানে জিহাদ হচ্ছে ভিন্ন নামে, কিন্তু তালিবানের আদর্শিক অনুসারীদের দ্বারা।
আফগানের বাইরে কাজ করার জন্য মুল্লা উমার র. আল কায়েদাকে দায়িত্ব/ অনুমতি/ স্বীকৃতি দিয়ে গিয়েছেন। সারা বিশ্বে এক নামে জিহাদের জন্য শক্তিশালী একক খিলাফত লাগবে। তার আগে কাফির ও তাদের দালাল মুসলিম নামধারী মুরতাদ শাসকদের থেকে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেটা তালিবানের আদর্শে, আল কায়েদার নেতৃত্বে বিভিন্ন দেশে হচ্ছে। ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করা ফরয। ইসলামী মুক্তিযুদ্ধ ফরয। কিন্তু বিশ্বব্যাপী একক খিলাফাহ সরকার প্রতিষ্ঠা করা সামর্থ্য অনুযায়ী ওয়াজিব। আগে ফরয আদায় করি, ওয়াজিব আদায়ের রাস্তা হয়ে যাবে।
তাছাড়া হুদাইবিয়ার চুক্তির পর যখন মক্কা বাসীদের সাথে আহলে মদীনার যুদ্ধ বন্ধ ছিল, মদীনার বাইরের বিশেষ করে মক্কা থেকে পালিয়ে পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়া মুসলিম মুজাহিদ গণ আপন গতিতে জিহাদ চালিয়ে গিয়েছেন। যা কাফিরদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। আল্লাহ তায়ালা চাইলে আবারো এমন হবে।
ইসলামে পোপতন্ত্র নেই। এখানে ধর্মের নেতা একমাত্র রসূল স.। উলামায়ে কেরাম (ও মাযহাবের ইমামগন) হলেন শিক্ষক ও ব্যাখ্যাকারী। তাদের মাধ্যমে আমরা রসূলের অনুসরণ করি। (উলামাদের বৈধ মত পার্থক্যের কারণ, কোনো মাসআলায় রসূল স. এর একক সিদ্ধান্ত নিশ্চিত না হওয়া) পক্ষান্তরে, খলিফা ধর্মের নেতা না, রাষ্ট্রের নিয়ম শৃঙ্খলার নেতা। এটা দাবির বিষয় না। যার পুরা উম্মাহর শাসন কর্তৃত্ব অর্জিত হবে সে খলিফা হবে। বৈধ ভাবে হলে বৈধ খলীফা, অবৈধ ভাবে হলে অবৈধ খলীফা। নির্দিষ্ট জায়গায় ইসলামী শাসন ক্ষমতা অর্জন করলে স্থানীয় শাসক। বৈধ ভাবে হলে বৈধ শাসক, অবৈধ ভাবে হলে অবৈধ শাসক। খলীফা না। ইরাকের কিছু জায়গা দখলে পেয়ে দাবি করলেই খিলাফত সাব্যস্ত হয় না।
অনেকের মনে হতে পারে, কথাগুলো বৈশ্বিক ও ঐক্যবদ্ধ জিহাদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি তা নয়। ভিন্ন নামেও গুরুত্বপূর্ণ/ অভিন্ন শত্রুর মোকাবেলা করা সম্ভব। যেমন সারা বিশ্বে আমেরিকা বিরোধী জিহাদ। আমাদের এখানে আঞ্চলিক মূল শত্রু ভারত। তাই এখানে ভারত বিরোধী জিহাদ। ভারতের পতন হলে বাংলাদেশ সহ অন্যদের পতন হবে। (কিন্তু পাকিস্তান আফগান যুদ্ধে আমেরিকার সহযোগী হওয়ায় এবং আফগানের প্রতিরক্ষার স্বার্থে সে ব্যতিক্রমী ভাবে অগ্রগামী শত্রু বলে গণ্য)
২য় আপত্তির উত্তর হল তালিবানরা আফগান সংস্কৃতিকে ততটুকুই প্রশ্রয় দেন ততটুকু ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। আর এটা ইসলামে অনুমোদিত।
আইএস কেন খারিজী?
খারেজী বলা হয়:
১, যারা ভুয়া দলীলের ভিত্তিতে মুসলিমদের (ছোট বা বড় কোনো অংশ) কে কাফের বলে। এরা বিশ্বাস গত খারিজী। যা কর্মের দ্বারা প্রকাশ পায়।
(সুতরাং, দলীল বুঝতে ও প্রয়োগ করতে গিয়ে তাকফীরের যে সব সূরতে আলিমদের মতভেদ হয়েছে; {যেমন নামায তরককারী কাফির হবে কিনা? উমার র. কর্তৃক রসূল স. এর যুগে হাতিব রা. কে এবং আবু বকর র. এর যুগে খালিদ রা. কে তাকফীর।} সেক্ষেত্রে কেউ খারিজী বা মুরজিআ হবেন না।)
২, যারা ন্যায় সংগত মুসলিম শাসকের আনুগত্য থেকে বেরিয়ে যায়। এরা কর্মগত খারিজী।
দুটোই দাওলা গ্রুপে পাওয়া যায়। অথচ যে কোনো একটাই যথেষ্ট।
১. দাওলা গ্রুপ তাদের স্বঘোষিত খিলাফাহ না মানায় অন্য মুজাহিদদের কাফির/ মুরতাদ বলেছে। অথচ সর্ব সম্মত খলীফাকে না মানলেও কেউ কাফির হয় না, বড় জোর বাগী/ বিদ্রোহী/ খারিজী হয়। আর ইখতিলাফী খলীফাকে না মানলে কিছুই হয় না। যেমন অনেক সাহাবী আলী রা. কে খলীফা মানেন নাই। তাদের কেউ নিরপেক্ষ ছিলেন, কেউ মুআবিয়া রা. এর পক্ষে ছিলেন। তারা কেউ খারিজী ছিলেন না। আলী রা. নিরপেক্ষ সাহাবীদের সাথে যুদ্ধ করেন নি। দাওলা গ্রুপ তালিবান ও আল কায়দা সহ অনেক সুন্নী দলকে ও বিদআতী দলকে কাফির বলে। তাই তারা খারিজী।
২. উসমানীয় খিলাফতের পতনের পর মুল্লা উমার র. প্রথম পুর্ণ ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। আর আল কায়েদা তার সকল শাখা সহ পর্যায়ক্রমে উনার আনুগত্যের শপথ দেয়। দাওলা গ্রুপও ইরাক শাখা হিসেবে শপথ করেছিল। কিন্তু সিরিয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত ভাল না লাগায় বিদ্রোহ করে এবং নিজেদের উপরে তুলতে খিলাফতের ঘোষণা দেয়। প্রথমে মুজাহিদদের বিদ্রোহী পরে কাফির ঘোষণা করে। তালিবানের বৈধ নেতৃত্ব থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় তারা খারিজী।
খারিজীদের আমল যেন ধোঁকায় না ফেলে। (রসূল স. এর নির্দেশনা। হাদীসের কিতাব সমূহ ব্যাখ্যা সহ দ্রষ্টব্য।)
(আমি যা তথ্য দিলাম https://gazwah.net থেকে যাচাই করা যাবে।)
দুঃখ জনক ভাবে খারীজী পন্থীরা শত্রু রাষ্ট্রের সাথে তালিবানদের রাজনৈতিক মিমাংসা নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক ভাই আবার দ্বিধায় পড়ে গিয়েছেন, তালিবানদের যারা অপবাদ দিচ্ছে তারা খারীজী হবে কিনা?
অধমের জানা মতে খারেজী হওয়ার জন্য তাকফীরী হওয়া তথা কোনো মুসলিমের অন্যায় তাকফীর করাই যথেষ্ট। আরেকটু ভেঙে বললে কাফির নয় এমন কাউকে অন্যায় ভাবে কাফির বলাটাই যথেষ্ট। হত্যা পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না। যেমন, অতীতের সব খারীজী ব্যক্তিগতভাবে হত্যার সাথে যুক্ত থাকত না। অথচ কেবল আকীদার কারণে তারা খারীজী সাব্যস্ত হয়েছে। কারণ, যখন কাউকে তাকফীর করা হয়, তাকে মুরতাদ সাব্যস্ত করে জান মাল বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাস্তবায়ন হোক বা না হোক। এর উদাহরণ ঐ হাদীস; যাতে মাকতূলকে জাহান্নামী বলা হয়েছে, প্রতিপক্ষ কে অন্যায়ভাবে হত্যার নিয়ত থাকায়।
যারা তালিবানকে বাতিল বলছে, (কিছু ব্যতিক্রম থাকতে পারে।) তারা নিশ্চয়ই কেবল বিদআতী বলছে না। বরং তাগুতের সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের মত ভয়াবহ অপবাদ দিচ্ছে। এর ফলাফল কি তাকফীর ছাড়া অন্য কিছু? হ্যাঁ, কেউ যদি এই লাইনে নতুন হয় বা জানার চেষ্টা করে সেটা ভিন্ন। এমনি ভাবে চুক্তির ধারা নিয়ে কারো মনে বেদনা থাকতে পারে। যদিও এটা নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের বিরোধিতার অনুমতি দেয় না, অপবাদ দেয়া তো দূরের কথা। কিন্তু জ্ঞান প্রত্যাশী আর অপবাদ আরোপকারীর মাঝে আছে আসমান যমীনের ফরক।
আরো দেখতে পারেন
আইসিস ও আল-ক্বা’ইদাহ্*র মধ্যে মানহাজগত পার্থক্য
শাইখ আহমাদ আল হামদান হাফিযাহুল্লাহ
গ্লোবাল জিহাদ থেকে আইএসের বিচ্ছিন্নতা ও বিপথগামীতার টাইমলাইন
তালিবান কি (আফগান) জাতীয়তাবাদী? আইএস কেন খারিজী?
সংগ্রহে ও সম্পাদনায় সালমান মুসতফী।
Comment