Announcement

Collapse
No announcement yet.

মুসলিম বোনদের প্রতি মহাব্বতপূর্ণ কিছু কথা—আহমাদুল্লাহ ওয়াসিক

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মুসলিম বোনদের প্রতি মহাব্বতপূর্ণ কিছু কথা—আহমাদুল্লাহ ওয়াসিক

    [মুসলিম বোনদের প্রতি মহাব্বতপূর্ণ কিছু কথা—প্রবন্ধটি পশতু ভাষায় লিখেছেন আহমাদুল্লাহ ওয়াসিক, উর্দু অনুবাদ করেছেন জালালুদ্দীন হাসান ইউসুফজাই এবং বাংলা অনুবাদ করেছে আল হিকমাহ মিডিয়া—যা, নাওয়ায়ে গাজওয়াতুল হিন্দ ম্যাগাজিনের ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল ২০২১ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রবন্ধটির পশতুভাষী লেখক আহমাদুল্লাহ ওয়াসিক ইমারাতে ইসলামী আফগানিস্তানের মিডিয়া কমিশনের নায়েবে মাসুল।]
    ...
    ..
    .

    বর্তমান এই ফেতনার যুগে ইসলামের দুশমন নাস্তিক-সেকুলারপন্থীরা মুসলিমদেরকে এই দ্বীন থেকে বিচ্যুত করে গোমরাহির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। বিশেষভাবে মুসলমান মা-বোনদেরকে গোমরাহি ও বিচ্যুতির দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে যড়যন্ত্র করে যাচ্ছে এবং অগণিত চিত্তাকর্ষক শিরোনামের পোশাক পরিয়ে নানারকম ফন্দি আঁটছে, যাতে করে আমাদের মুসলমান মা-বোনদেরকে অশ্লীল-বেহায়াপনার প্রতি আসক্ত করা যায়। আলোচ্য বিষয়ে আমরা আমাদের মুসলিম বোনদেরকে ঐ সকল অন্যায়-খারাপ কাজ থেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, যার মধ্যে তারা লিপ্ত হতে পারে। প্রত্যেক মুসলিম বোনদের উচিত ইসলামের দুশমনদের এই সকল কুটচাল-ষড়যন্ত্র বুঝে তা থেকে নিজেকে বাঁচানো এবং নিজ দুর্গে দৃঢ়তা এবং সাবধানতার সাথে পাহারাদারি করা।

    হে আমার মুসলিম বোন! ইসলাম তোমাদের আহবান করছে; মনোযোগ দিয়ে শোনো; ইসলাম তোমাদের কী বলছে,

    হে আমার মুসলিম বোন! আমাদের সকল আশা-আকাঙ্ক্ষা তোমাদেরকে কেন্দ্র করেই। তোমরা আমাদের সন্তানদের তরবিয়ত-প্রতিপালন করবে ইসলামী শরীয়ার ছায়াতলে। কিন্তু উত্তরোত্তর অবস্থার পরিবর্তন, পশ্চিমা সংস্কৃতির অসভ্য ঢেউ বোনদের আঁচল প্রবাহিত করে নিয়েছে এবং ইসলামী সভ্যতার উঁচু মিনারাগুলোকে ধ্বংস করে শরয়ী হিজাবের ইজ্জত-আব্রুকে পদদলিত করেছে।

    হে আমার মুসলিম বোন! তুমি কি জানো, পশ্চিমারা তোমার জন্য কলঙ্ক। তোমাকে বাজারে বের করে আনার বাহানা দিয়ে তোমার মাথা থেকে হিজাব সরিয়ে দিয়েছে এবং তোমাকে গোমরাহির গর্তে ফেলে দেয়ার জন্য প্রতি বছর নিত্য-নতুন কলা-কৌশল, পরিকল্পনা এবং প্রোগ্রাম সাজাচ্ছে। নারী অধিকার এবং এ জাতীয় অন্যান্য অধিকারের ঢোল পেটানোর উদ্দেশ্য হলো—ইসলামী শরীয়া প্রদত্ত সম্মান-মর্যাদা ছিনিয়ে নেয়া। এই কাফেররা তোমার ইজ্জত-আব্রু ছিনিয়ে নিতে চায়। তারা চায়, তোমার থেকে তোমার ঐ সকল অধিকার এবং পাওনা ছিনিয়ে নিতে, যার মাধ্যমে ইসলাম তোমাকে মহা-সম্মানে ভূষিত করেছে।

    তুমি কি জানো ইসলাম তোমাকে কত ইজ্জত-সম্মান দিয়েছে? ইসলাম তো তোমাকে বোনের মর্যাদা দিয়েছে। যে বোনের ইজ্জত-আব্রুর হেফাজতের জন্য যুগে-যুগে মুসলমানগণ নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন এবং নিজের রক্তের বিনিময়ে তোমার ইজ্জতের হেফাজত করেছেন।

    হ্যাঁ! ইসলাম তো তোমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছে গৃহের দায়িত্ব পালনের জন্য তোমাকে নির্বাচন করে অসংখ্য অধিকার দিয়েছে। এই সকল অধিকার দেয়ার পাশাপাশি ইসলাম তোমাকে এমন ইজ্জত-সম্মান দিয়েছে যা অন্য কারো ভাগ্যে ঝুঁটেনি। আর তা হচ্ছে-তোমাকে মাতৃত্বের আসনে সমাসীন করে জান্নাতকে তোমার পদতলে সাব্যস্ত করেছে।

    তাই হে আমার বোন! ইসলাম তোমাকে যে ইজ্জত-সম্মান দিয়েছে তার হেফাজত করো। পশ্চিমারা সমতার নামে তোমার অধিকার তোমার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তোমাকে টাকা-পয়সা উপার্জনের মাধ্যম বানাতে চায়। তুমি টেলিভিশন, সংবাদপত্র, বিজ্ঞাপন-বোর্ড এবং ক্রয়-বিক্রয়ের পণ্য-সামগ্রীর উপর নির্লজ্জ নারীদের ছবি হয়ত দেখে থাকবে। তুমি বলো, এটাই কি নারীর অধিকার? নারী কি এতই সস্তা এবং মূল্যহীন যে, মানুষ তার সাথে বাজারি পণ্যের মত ব্যবহার করবে?

    হে আমার বোন! পশ্চিমারা তোমাকে এই কৃষ্টি-কালচারের দিকেই আহবান করছে। তারা তোমাকে ঐ নামসর্বস্ব অধিকার দিতে চায়, যার মাঝে রয়েছে ইহকাল এবং পরকালের অপমান। যে ঘরে তুমি রাণী, যে ঘরে তোমার স্বামী তোমাকে এমন ইজ্জত-সম্মান করে যেমন হাদিসে এসেছে— ভদ্র পুরুষ মহিলাদের মেনে নেয় এবং তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে (শরীয়তের সাথে অসাংঘর্ষিক বিষয়ে) এবং অভদ্র পুরুষ মহিলাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে। পশ্চিমারা তোমাকে ঐ ঘর থেকে বের করে যার মাঝে তুমি রাণী। গোটা সমাজের দাসী বানাতে চায়। তারা তো তোমাকে বাজারি পণ্য বানিয়ে তোমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত প্রতিটি অঙ্গের মূল্য এভাবে নির্ধারণ করতে চায় যেভাবে একজন কসাই তার দোকানে গোস্তের প্রতিটি টুকরার মূল্য নির্ধারণ করে থাকে।

    ইসলাম তো তোমাকে এই শিক্ষা দেয় যে, প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হবে না। যদি বের হতেই হয়, তবে বের হবার সময় দৃষ্টি অবশ্যই নিম্নগামী করবে এবং নিজের ইজ্জত ও আক্রর হেফাজত করবে।

    وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

    "আর তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাক জাহেলী যুগের মত সৌন্দর্য অবলম্বন করো না।" (সূরা আহযাব: ৩৩-৩৩)

    অন্যত্র আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:

    يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيهِنَّ ذَلِكَ أدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا

    অর্থ: হে নবী, আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা এবং মুমিনা নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। (সূরা আহযাব ৩৩: ৫৯)

    হে আমার মুসলিম বোন! ইসলাম তোমাকে শিক্ষা দেয়- কারো সাথে অবৈধ সম্পর্ক, গিবত, চোগলখোরি এবং ধোঁকা-প্রতারণা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে। খারাপ থেকে বেঁচে থাক এবং এমন মজলিশে যাবে না যেখানে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা থাকে। আকৃতি এবং পোশাকের ক্ষেত্রে পুরুষের সাদৃশ্য থেকে বেঁচে থাক এবং এমন পোশাক পরিধান কর যা বেশী ছোটও না, পাতলাও না এবং আটসাঁটও না।

    হে আমার মুসলিম বোন! ইসলাম তোমাকে বলে- স্বামীর আনুগত্য করো। তার অনুমতি ব্যতীত ঘর থেকে বের হয়ো না। আমানতের হেফাজত করো এবং তার গোপন কথা অন্যের সামনে প্রকাশ করো না। যদি তুমি স্বামীর অকৃতজ্ঞতা থেকে বাঁচতে পার, তাহলে ইসলাম তোমাকে জান্নাতে যাওয়ার সুসংবাদ দিচ্ছে।

    পশ্চিমারা তোমার অধিকার পদদলিত করে এই শ্লোগান দিচ্ছে যে, নারী-পুরুষের সমান অধিকার। এসব শ্লোগানের মাধ্যমে তারা তোমার ঐ ধর্মীয় দায়িত্ব ছিনিয়ে নিতে চায়, যা নিয়ে তুমি গর্ব করে থাকো। আর এসব অন্যায় শ্লোগানের মাধ্যমে তোমার দুনিয়া ও আখিরাত বরবাদ করতে চায়।

    হে আমার মুসলিম বোন! আমরা তো তোমার কাছে অনেক আশাবাদী যে, তুমি ইসলামী চেতনায় এমন এক বংশধারা তৈরি করবে যারা দেশ ও মাতৃভূমিকে হেফাজত করবে।

    আমরা তো তোমার কাছে এই আশা করি যে, তুমি যখন গৃহে অবস্থান করবে তখন খাদিজা, আয়েশা এবং ফাতেমার মত অবস্থান করো। যখন শত্রু তোমার ঘরে আক্রমণ করবে তখন সাফিয়্যা, উম্মে আম্মারা এবং খাওলার মত হয়ে যাও। আর যখন নিজ সন্তানদেরকে ইসলামের জন্য কুরবানি দেয়ার সময় এসে যাবে, তখন আসমা ও খানসা হয়ে যাও। (তাঁদের উপর আল্লাহ সন্তুষ্ট হওন!)

    আমার সম্মানিতা মুসলিম বোন! একজন মুসলিম ভাই হিসেবে আমি তোমার কাছে বিনীত নিবেদন করছি- আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে বিনষ্ট করো না। এমন সভা-প্রোগ্রামের ধারে কাছেও যাবে না, যেখানে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা রয়েছে। যেখানে কোন এক বাহানায় তোমাকে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তোমার ধর্মীয় অধিকারকে ভূলণ্ঠিত করা হচ্ছে। আমার বোন! তুমি আমার কথাগুলো অবশ্যই মানবে, আর বোন তো তার ভাইয়ের সম্মান রক্ষা করেই থাকে।
Working...
X