Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৪৪ || ইসলাম ও গণতন্ত্র ।। মাওলানা আসেম ওমর রহিমাহুল্লাহ।। প্রথম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৪৪ || ইসলাম ও গণতন্ত্র ।। মাওলানা আসেম ওমর রহিমাহুল্লাহ।। প্রথম পর্ব

    আবাবিল প্রকাশন মিডিয়া পরিবেশিত
    ইসলাম ও গণতন্ত্র
    ।।মাওলানা আসেম ওমর রহিমাহুল্লাহ।।
    এর থেকে– প্রথম পর্ব



    মুহতারাম পাঠকের প্রতি কয়েকটি নিবেদন

    তারিখে ফিতান তথা ফিতনার ইতিহাস অধ্যায়ন করার পর এ কথাবলা ভুল হবে না যে, গণতন্ত্রের ফিতনা ইসলামের ইতিহাসে হাতেগোণা সেই ফিতনাগুলোর একটি যার চপেটাঘাত মুসলিম উম্মাহরঅস্তিত্বের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। এটি এমন একটি ঘোরতমাশাচ্ছন্ন ফিতনা, যেখানে শুধু জ্ঞানের প্রদীপই যথেষ্ট নয় বরং নূরেনবুওয়াতই কেবল হক পথের সন্ধান দিতে পারে।

    গণতন্ত্রের ফিতনা আল্লাহর বিপরীতে এই -জীবনব্যবস্থাকে প্রভু বানানোর ফিতনা। আইন প্রণয়নের অধিকার আল্লাহর থেকে নিয়ে এই ব্যবস্থাকে দেয়ার ফিতনা। আল্লাহর আইন অনুমোদনের জন্য গায়রুল্লাহর মুখাপেক্ষী বানানোর ফিতনা। এটি মুসলমানদেরকে আল্লাহর ইবাদত থেকে বের করে গায়রুল্লাহর ইবাদতে এমনভাবে প্রবেশ করানোর অপচেষ্টা যে, চট করে তা বোঝাই দুষ্কর৷ এটা এমন এক তমাশা ও অমানিশার ফিতনা, যেখানে হাতকে হাত মনে হয় না। কোনো দলিল-প্রমাণাদি বুঝে আসে না। অথচ কুফরিতে পূর্ণ এই ফিতনাকে ইসলামের সাথে দৃশ্যত অসাংঘর্ষিক এবং ক্ষতিহীন মনে হয়।

    সুতরাং এ কথা বলা হলে অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে, গণতন্ত্র শুধু একটা ফিতনাই নয় বরং শত ফিতনার জন্মদাতা এক সংক্রামক ব্যাধি। যা উম্মতে মুসলিমার অস্তিত্বের সাথে জোঁকের মত লেপ্টে আছে।

    অধমের ইলম ও জ্ঞান যেহেতু এ বিষয়ে বই লেখার মোটেও উপযুক্ত নয়, তাই এই স্পর্শকাতরতাকে উপলব্ধি করে অধম আমি চূড়ন্ত পর্যায়ের সতর্কতা অবলম্বন করে আসছি। কলমের বলগা কখনো নিজের হাতে নিইনি। বরং পুরো সফর এই অবস্থায় অতিক্রম করেছি যে, এর বলগা সালফে সালেহীনের শিক্ষার সাথে বেধে রেখেছি এবং নিজে সেই অনুগামী আরোহীর মত রেখেছি, যে নাকি কোনো অভিজ্ঞ ড্রাইভারের গাড়িতে আরামে ভ্রমণ করতে থাকে।

    বইটি রচনায় অধম ওলামায়ে মুতাকাদ্দিমীনের (ফুকাহা, মুফাসসিরীন, মুহাদ্দিসীন) কিতাব থেকে দলিল গ্রহণের পরিপূর্ণ চেষ্টা করেছি। যাতে কোনো চিন্তকের সন্দেহ ও সংশয়ের অবকাশ না থকে।

    সুধী পাঠকবর্গের সুবিধার্থে বইটিকে পাচ অধ্যায়ে বিভক্ত করেছি। প্রথম অধ্যায়ে মাসায়েলে তাকফির এবং আহলে সুন্নাতের মাসলাক ও পন্থার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। দ্বিতীয় অধ্যায়ে গণতন্ত্রের আলোচনা। তৃতীয় অধ্যায়ে কুরআনের আইন উপেক্ষা করে ফয়সালাকারী আদালতগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। চতুর্থ অধ্যায়ে গণতন্ত্রের সাথে জড়িত দল ও ব্যক্তির হুকুম। আর পঞ্চম অধ্যায়ে ইসলামী জীবনব্যবস্থার জন্য সশস্ত্র আন্দোলনের শরয়ী দিক এবং গুরুত্ব ও মর্যাদার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

    একদিকে এ বিষয়ের উপর ইলমী দালায়েলের দরকার ছিল, অন্যদিকে এই চিন্তাও আঁকড়ে ছিল যে, অধিক ‘ইলমী আন্দাযে’র হলে, সাধারণ জনগণের মেজায কবুল নাও করতে পারে। এজন্য সাধারণ মানুষের মেজায-মানসিকতা ও প্রকৃতির দিকে খেয়াল রেখে বিষয়টিকে সহজভাবে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোথাও ইলমী আলোচনা এলে তা বুঝে পড়বেন, প্রয়োজনে তিনবার পড়বেন। কারণ বিষয়টা শুধু নলেজ বৃদ্ধির জন্য নয় বরং সরাসরি আকিদার মাসআলা। আহনাফ হযরতদের পক্ষ হতে সাধারণত এ কথা শোনা যায় যে, মুজাহিদদের পক্ষ হতে এ বিষয়ে অধিকাংশ হওয়ালা ও উদ্বৃতি আহলে হাদীস আলেমদের কাছ থেকে ধারকৃত হয়ে থাকে। কিন্তু অধম আহনাফ ওলামায়ে কেরামের দলিলাদি একত্রিত করার চেষ্টা করেছি। যাতে মুসলমানরা এ কথা জানতে পারেন যে, এটা কোনো ইখতিলাফি মাসআলা নয়। এগুলো শুধু আহলে হাদীস ওলামায়ে কেরামই বর্ণনা করেননি বরং এই আলোচনাগুলো আকিদার সেসব মাসায়েলের অন্তর্ভূক্ত, যাতে প্রায় সকল সালফে সালেহীন একমত রয়েছেন।

    বক্ষ্যমান বইয়ে আলোচিত যে কোনো বিষয়ে আহলে ইলম হযরতগণের আপত্তি ও জিজ্ঞাসা থাকলে বইয়ের শুরুতে দেয়া ইমেইলে যোগাযোগ করতে পারবেন। আমাদের উদ্দেশ্য যেহেতু ওলামায়ে কেরাম বিশেষভাবে এবং অপরাপর মুসলমান সাধারণভাবে আলোচনাগুলো খোলা মনে পড়বেন, তাই দ্বিমত পোষণ করার অধিকার তাদের রয়েছে। এর খণ্ডনে তাদের নিকট দলিল থাকলে তা অবশ্যই পেশ করবেন। ইনশাল্লাহ আমি এবং আমার সঙ্গীগণ সুবিবেচনার সাথে তা পাঠ করব। তবে সে সব “আহলে কলম'-এর নিকট মা’যুরাত প্রকাশ করছি, যাদের কলমের পবিত্রতা ‘কেরিলুগার বিল'-এর আমেরিকান অনুদান অর্জন করে মুসলমানদের রক্তের সাথে একাকার হয়ে গেছে। যারা হক ও বাতিলের এই যুদ্ধে তাদের কলমকে তাগুতি জোটের হাতে নিলাম করেছে। যারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রবকে ছেড়ে আমেরিকা এবং তার জোট ও মিত্রশক্তিকে রব বানিয়েছে।

    আর সে সব আহলে কলমকে আমরা মা'যুর মনে করি, অপারগ বিবেচনা করি, “পিস্তলের ডগায়' যাদের থেকে এই বাতিল ব্যবস্থার পক্ষে বই ও ফতোয়া লেখানো হয়। প্রতিটি দেশের ক্ষমতাবান শক্তি তাগুতি ব্যবস্থাকে বাঁচানোর জন্য “মৃত্যুর ধমকি' দিয়ে এ সব আহলে. কলমকে বাধ্য করে যে, তারা যেন আল্লাহর রাস্তায় কিতালকারীদের বিরুদ্ধে শব্দের বোমা বর্ষণ করে।

    তবে সেই সব ওলামায়ে হক, যারা এখনো জিহাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি, মুজাহিদদের বিরুদ্ধে কলম ধরেননি, কোনা ফতোয়া রচনা করেননি কাড়ি কাড়ি ডলারের লোভ দেয়া সত্বেও; আমরা জানি, তাদেরকেও জানে মারার হুমকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এরপরও তারা বাতিলের সামনে মাথা নোয়াতে প্রস্তুত নন। এসব হক্কানী আলেম আমাদের গর্ব, আমাদের অহঙ্কার। আমাদের অন্তরে তাদের ভালোবাসা অহর্নিশ তরঙ্গায়িত হতে থাকে। তাদের স্মরণ আমাদের আবেগ ও স্পৃহাকে উষ্ণতা দেয়, আমাদের কর্মে ও চিন্তায় উত্তাপ ছড়ায়। মারাকিশ থেকে ফিলিপাইন, দাগিস্তান থেকে মালদ্বীপ প্রতিটি মুজাহিদ তাদেরকে নিজেদের রাহবার ও রাহনুমা মানে। চাই সে যে দেশেরই হোক, যে মাসলাকেরই হোক। রফে ইয়াদাইন করে, তারাও তাদেরকে মুহাব্বত করে, যারা করে না, তারাও। আমিন যারা জোরে বলে, তারাও তাদেরকে মুহাববত করে, যারা বলে না, তারাও...। প্রতিটি মুজাহিদ তাদেরকে মুহাববত করে এবং আল্লাহ প্রদত্ত তাদের নূরে নবুওয়াতের আলোয় মুজাহিদরা তাদের জিহাদী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আল্লাহ তায়ালা তাদের সবার জান ও ঈমানের হেফাজত করুন এবং তাদেরকে নিজ চোখে খেলাফত প্রতিষ্ঠা হওয়া দেখার সুযোগ দান করুন।

    হিদায়াত আল্লাহরই হাতে। তাই আল্লাহর নিকট দুআ করি, তিনি যেনো এই মেহনতকে তার রেযা ও সন্তষ্টির জন্য কবুল করেন এবং এর প্রতিটি বর্ণকে উম্মতে মুসলিমার জন্য জান্নাতের দরজা বুলন্দির মাধ্যম বানান। আল্লাহ তায়ালা এই বইয়ের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে ব্যাপক উপকার পৌঁছে দিন এবং উপমহাদেশে মুসলমানদেরকে ইসলামী খেলাফতের জন্য জাগ্রত করার কারণ ও মাধ্যম বানান। আমীন!



    লেখকের ভূমিকা


    আজকের মুসলিম বিশ্ব কি ততটাই দুর্বল যতটা আজ থেকে দশ বছর পূর্বে ছিল? কুফরি বিশ্বের সেই প্রতাপ ও দাপট, জৌলুশ ও চমক, উদ্ধত্য ও স্বেচ্ছাচারিতা কি তেমনই রয়েছে? পৃথিবীতে “আনা রব্বুকুমুল আ'লা'র ঘোষণাকারী শক্তির জাঁকজমক কি আজও তেমনই রয়েছে, যা এই খ্রিস্টশতাব্দীর সূচনালগ্নে ছিল? গতকালও যারা জীবন ও মৃত্যু বন্টনকারীর দাবিদার ছিল, তারা কি আজো সেই অবস্থাতেই আছে?

    ইসলামের পুনর্জীবন ও প্রতিরক্ষার জন্য যাত্রাকারী মুষ্টিমেয় মুজাহিদ কি আজও সেই দুরাবস্থাতেই রয়েছে, যেমন আজ থেকে দশ বছর পূর্বে ছিল? পৃথিবীর বুকে কোনো দেশ কি আজো তাদেরকে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত নয়? আজও কি তাদের যাচ্ছেতাইভাবে অপদস্থ করা হচ্ছে, নাকি তারাই এখন দুশমনদের অপদস্থ করে চলেছে?

    ইনসাফের সাথে দেখা হলে বলতে হবে, তালেবানের মাত্র দশ বছরের জিহাদ পৃথিবীর মানচিত্র, শক্তির ভারসাম্যতা এবং বিশ্বশক্তির চেহারাই পাল্টে দিয়েছে।

    ঈমানদারগণ যারা কুফরির গোলামী এই অক্ষমতার সাথে গ্রহণ করেছিল যে, কাফেরদের সাথে আমাদের আর কিসের মোকাবেলা, আমাদের উপর জিহাদ ফরয নয়! কারণ কাফেরদের সাথে লড়াই করার মত আমাদের শক্তি নেই। তালেবানদের কুরবানীর বদৌলতে মুসলিম বিশ্বের শিশু, যুবক, বৃদ্ধ এমনকি নারীরাও এই বাস্তবতা বুঝে ফেলেছে যে, মুসলমানরা যদি কিতাল ফি সাবিলিল্লাহর জন্য বের হয়, তবে আজকের এই যুগেও বদর ও হুনাইনের স্মৃতি তাজা করা সম্ভব। মুসলিম উম্মাহ, যারা বিগত শতাব্দীতে মার খাওয়া, অপদস্থ হওয়া এবং মাতৃভূমি থেকে বঞ্চিত হওয়াই নিজেদের নিয়তি মনে করে বসে ছিল; আজ আলহামদুলিল্লাহ, উম্মাহর নারীরাও পৃথিবীর বুকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিযাম ও জীবনব্যবস্থার কথা আলোচনা করছে। উম্মতের নওজোয়ানরা, যারা কাল পর্যন্ত তাদের বাড়ি-ঘর জ্বলতে, জনবসতি বিরান হতে এবং সন্ত্রম লুণ্ঠন হতে দেখে হাঁটুর ভেতর মাথা লুকিয়ে কাঁদা ছাড়া কিছু করতে পারত না, আজ তারা নিজ ঘরের আগুন দ্বারা উম্মতের দুশমনদের ঘর-বাড়িও ভস্মস্তূপে পরিণত করছে।

    এক মিলিয়নের চেয়েও বেশি সংখ্যক উম্মতে মুসলিমা সত্তর বছর পর্যন্ত তাদের অধিকারের জন্য দুয়ারে দুয়ারে হোঁচট খেয়েছে, জাতিসংঘের কাছে ভিক্ষা চেয়েছে, আজ সেই উম্মতের মাত্র মুষ্টিমেয় কয়েকজন মুজাহিদ যখন আল্লাহর পথে কিতাল শুরু করেছে, তো কুফরের ঝাণ্ডাবাহীরা ‘শান্তিপূর্ণ’ মাধ্যমে নিজেদের দাবি আদায়ের উৎসাহ দেয়ার জন্য রীতিমত দৌড়ঝাঁপ করে ফিরছে।

    ফেরাউনী কণ্ঠে হুমকিদাতা আমেরিকা আফগানিস্তান এবং ইরাকে নিজেদের ক্ষতস্থানকে সেই জীর্ণ কুকুরের মত চাটতে বাধ্য, যার ঘাড়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। আর তার জিহ্বা সেই ক্ষত পর্যন্ত পৌঁছতে অক্ষম। যার কারণে সে বারবার ভেউ ভেউ করে। তাগুতি শক্তিগুলো, যারা ন্যাটোর পতাকাতলে একত্রিত হয়ে খোরাসানের মুজাহিদদেরকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য এসেছিল, এখন তারা একে একে এমনভাবে পালাচ্ছে যে, নিজেদের পিতৃপুরুষের “বাহাদুরি'কেও কলঙ্কিত করে ফেলেছে। যাদেরকে সারা বিশ্বের মিলিটারীদের শিক্ষক ও গুরু মান্য করা হত, যাদেরকে প্রাজ্ঞ সমরবিদ এবং যুদ্ধের মূলনীতি প্রস্তুতকারী স্পেশালিস্ট হিসেবে আখ্যায়িত করা হত, তালেবানরা তাদেরকে যুদ্ধের এমন কিছু স্টাইল শিখিয়েছে যে, নিজেদের যুদ্ধের জন্য তাদের সৈনিকদের ডায়াপার্স লাগানোর “নতুন মূলনীতি" প্রণয়ন করতে হয়েছে। কোনো জাতির মায়েরা কি এমন লড়াকু সৈনিক জন্ম দিতে পেরেছে?


    আপনারা কি এখনো জিহাদের এই কারামাত স্বীকার করবেন না যে, কাল পর্যন্ত আমেরিকা তার ইচ্ছেমত যুদ্ধের ময়দান নির্বাচন করত। আর আজ মুজাহিদদের বিশ্ব নেতৃত তাদের মহান প্রভুর মদদে যুদ্ধের মানচিত্র এমনভাবে পাল্টে দিয়েছে যে, মুজাহিদদের নির্বাচিত ময়দানে তাদেরকে বাধ্য হয়ে আসতে হয়।

    শক্তির ভারসাম্যও লক্ষ্য করুন। কাল পর্যন্ত আমেরিকার শুধু আসার ধমকি দিলেই পারমাণবিক শক্তির জেনারেলদের পিত্ত পানি হয়ে যেত। আর আজ ইসলামের মুজাহিদরা আমেরিকাকে জোরপূর্বক নিজেদের সাজানো ময়দানে টেনে হিঁচড়ে আনতে চায়। কিন্তু পেন্টাগণওয়ালাদের পিত্তই অকেজো হয়ে পড়েছে। ভাড়াটে সৈনিক সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন দেশে গিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। কিন্তু কোনো দেশই আর সৈনিক দিতে প্রস্তুত নয়, শুধু আদি দাসগুলো ছাড়া!

    সোমালিয়ার ভূমি তার অপেক্ষায়। রহমত-বরকত ও নবী-রাসূলদের পূণ্যভূমি সিরিয়া ও ফিলিস্তিনেও মাল্টিন্যাশনালের ভাড়াটে খুনি। অর্থাৎ আমেরিকাকে সেখানে আসতেই হবে। কালো পতাকাধারী মুজাহিদদের ধরণ অনেকটা এমন মনে হচ্ছে যে, বিশ্ব কুফরি শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে তারা খোরাসানী ভাইদের অনুসরণ করতে চায়। পশ্চিমা মুসলিম দেশগুলোও (তিউনিস, আলজেরিয়া, মালি, লিবিয়া ইত্যাদি) ইহুদী দাতাদের পুরনো নিমকখোর, ফ্রান্সিসিদের সমাধীস্থল বানানোর জন্য প্রস্তুত, ইনশাআল্লাহ। থাকল মিশর। কে জানে, হতে পারে পতন লোহিত সাগরেই (যেখানে ফেরাউন ডুবে ছিল) হবে...!

    আর সেই বাজিগর, চতুর, ধূর্ত, আল্লাহ ও মানবতার দুশমন, নবীদের খুনি, যারা স্টেজের অনেক দূর থেকে কাঠের পুতুল নাড়া দিচ্ছে, আজ যখন আল্লাহর সিপাহীদের হাত তাদের গলায় পৌঁছতে শুরু করেছে,এবার তারা এই যুদ্ধের উত্তাপ অনুমান করতে পারছে, যা তারা শতাব্দীকাল ধরে প্রজ্বলিত করে রেখেছে। যেই আগুনে তারা তৃপ্তি নিয়ে মানুষের লাশের উপর হাত সেঁকত। দুটি বিশ্বযুদ্ধে আল্লাহর এই দুশমনেরাই তাদের ইবলিসি ব্যবস্থাকে কোটি কোটি মানুষের হাড্ডির উপর দাঁড় করানোর জন্য প্রজ্জ্বলিত করে। কিন্তু জিহাদের মাত্র তিনটা আঘাতেই তারা তাদের শত বছরের ডেরা থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে। আর সেই জীবনব্যবস্থা, যা তারা ছয় শ' বছরের লাগাতার এবং অক্লান্ত পরিশ্রম-সাধনার মাধ্যমে দাঁড় করিয়েছে এবং বড় করেছে, বংশানুক্রমে পানি সিঞ্চন করেছে, এমনকি নিজের আত্মসম্মান ও সম্ভ্রম পর্যন্ত তা সিঞ্চন করার জন্য বিক্রি করে ফেলেছে, মাত্র কয়েক বছরের জিহাদ এবং উম্মতের ছোট্ট একটি দলের কুরবানী তাদের স্বপ্নের এই প্রাসাদে কম্পন তুলেছে । আর এখন তো এই ব্যবস্থার দেয়ালে অসংখ্য ফাটল স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ, সেই দিন আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী এই উম্মতের বৈশ্বিক বিজয়ের দিন হবে, যে দিন আপনারা এই অর্থব্যবস্থার চিৎপটাংয়ের সংবাদ শুনবেন এবং কাগজি কারেন্সির সমাপ্তি ঘটবে, যা ইহুদীদের ইজারাদারির সবচেয়ে প্রভাবশালী হাতিয়ার।

    আল্লাহর ফযল ও অনুগহে মুজাহিদদের জিহাদী আঘাত এই নিযাম ও ব্যবস্থাকে এ পরিমাণ ভারসাম্যহীন করে ফেলেছে যে, এখন আর এটাকে বাঁচানো সম্ভব নয়। অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের যে ধুম্রজাল দ্বারা তারা আজ পর্যন্ত বিশ্বের চোখে ধুলি নিক্ষেপ করে আসছিল, এখন এটা এ পরিমাণ ওলটপালট হয়ে গিয়েছে যে, আর বেশি চালানো সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত মাল্টিন্যাশনালের জাদুকরদের সামনে পথ এখন দুইটাই- হয় আহলে ইসলামের মোকাবেলায় প্রকাশ্যে শেষ পরাজয় স্বীকার করতে হবে, কিন্তু তা হয়তো তারা এখনো করবে না। আর দ্বিতীয় পথ হল- তারা যদি এই জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতেই চায়, তবে তাদেরকে যুদ্ধে ইন্ধন যোগানোর জন্য আসল “মুদ্রা' অর্থাৎ স্বর্ণ, জ্বি হা! এখন তাদেরকে স্বর্ণ বের করতেই হবে। যা তারা গোটা মানববিশ্বকে ধোঁকা দিয়ে নিরাপদ গুহায় লুকিয়ে রেখেছে।

    মুসলিম বিশ্বের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ রঙ-বেরঙের কাগজ (পেপার কারেন্সি) দ্বারা চালু রাখা যাবে না। পরিশেষে তোমাদেরকে স্বর্ণ বের করতেই হবে, সেই দিন ইনশাআল্লাহ বেশি দূরে নয়।

    তাই নিজেদেরকেও জেনে রাখুন, শত্রদেরকেও চিনে রাখুন। এটা সেই শতাব্দী নয়, যেই শতাব্দীতে খেলাফতে উসমানিয়ার সূর্য অস্ত গিয়েছিল। এটা নতুন শতাব্দী। ইসলামের উত্থানের শতাব্দী। খেলাফত পুনর্জীবনের শতাব্দী...। খ্রিস্ট একবিংশ শতাব্দীর প্রারাম্ভ এবং হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর তৃতীয় দশক। বিশ্ব অনেক বদলে গেছে। শক্তি এবং তার অক্ষ পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে। পূর্বে কার যুদ্ধ কার সাথে ছিল, শীত হোক বা গরম, এই উম্মতকে কি কোনোভাবে গণ্য করা হত? কিন্তু এখন তারা এবং তাদের মিত্রজোট সবাই একদিকে, আর আহলে ঈমানরা একদিকে। তাদের যুদ্ধ এখন একটা শক্তির সাথেই, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর ব্যবস্থা প্রবর্তনকারীদের সাথে। যারা তাদের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে হুঙ্কার তুলেছে। অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। চোখ থাকলে দেখা যায়। অন্ধরাও অন্তর্চক্ষু দ্বারা দেখতে পায়। হ্যাঁ কেউ যদি অন্তরচোখের আলোই হারিয়ে ফেলে, তার জন্য তো কিছুই নেই, কিছুই নেই। না জিহাদ, না জিহাদের উপকারিতা। তাদের নিকট এগুলো আমেরিকা এবং তাদের এজেন্সিদের খেলা । দুঃখ তো অন্ধদের জন্য নয়, দুঃখ হল তাদের জন্য যাদের মাথায় তো চোখ রয়েছে কিন্ত তাদের অন্তরচক্ষু আলো হারিয়ে ফেলেছে, আলো অন্ধকার তাদের কাছে সমান। অন্তরে যদি ঈমানী নূর থেকে থাকে তো বলুন, এই যুগে কি খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব? বর্তমান যুগে কোনো মুসলিম দেশে ইসলামী জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর তা চালানো সত্যি কি সম্ভব নয়?

    ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত হলে আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো কিভাবে চালাবেন? বিচার ব্যবস্থা কেমন হবে? এই উম্মতের যে সব ব্যক্তি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ঈমান রাখেন এবং কাদিয়ানী ও কাদিয়ানিয়্যাতকে কুফর মনে করেন, এ ধরনের দুর্বল ও অনর্থক প্রশ্ন করা কখনোই উচিত নয়। এখন উম্মতের প্রতিটি সদস্যকে হীনমন্যতা থেকে বের হয়ে ঈমান ও ইয়াকিনের দৌলত সঞ্চয় করা উচিত। খেলাফত ছাড়া অন্য কোনো ব্যবস্থা, নতুন কোনো নাম এবং চমকওয়ালা কোনো শ্লোগানে কান দেয়া যাবে না। গণতন্ত্রের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। পূজিবাদি ব্যবস্থার লাশে এখন পোকা কিলবিল করছে। এখন শুধু আল্লাহর বানানো ব্যবস্থা, কুরআনের ব্যবস্থা যা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ে এসেছেন, এই বিশ্বকে জুলুম ও নির্যাতন থেকে মুক্তি দিতে পারে।

    সুতরাং মুসলমানদের এখন হতাশার পথ ত্যাগ করে আশা, সাহস এবং উদ্যমের সঠিক রাজপথে আসা উচিত। যেখানে ইসলামের শাহসওয়াররা দূরন্ত গতিতে ছোটে, ভ্রান্ত ব্যবস্থা পদদলিত করে। মানবতার দুশমনদের তৈরিকৃত মূর্তি সংহার করে। প্রতিটি ব্যবস্থার শিকড় উৎপাটন করে দূরে নিক্ষেপ করে।

    আল্লাহর জমিনে আল্লাহর জীবনব্যবস্থাকে বিজয়ী করার জন্য ময়দানে আসো হে তরুণ, তোমাকে যে আসতেই হবে!








    আরও পড়ুন




    Last edited by tahsin muhammad; 1 day ago.

  • #2
    সুতরাং এ কথা বলা হলে অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে, গণতন্ত্র শুধু একটা ফিতনাই নয় বরং শত ফিতনার জন্মদাতা এক সংক্রামক ব্যাধি। যা উম্মতে মুসলিমার অস্তিত্বের সাথে জোঁকের মত লেপ্টে আছে।


    মাশাআল্লাহ, বারাকাল্লাহ!
    একদম মনের মত খোরাক এনে দিয়েছেন।
    জাযাকাল্লাহু খাইরান!


    অনেক সুন্দর একটা পর্ব শুরু করেছেন, আমার জীবনের সবচেয়ে পছন্দীয় কিতাব বললেও অতুক্তি হবে না, যাদের পড়া হয়নি সকলেরই ভাইয়ের পোস্টের সাথে পড়ে পড়ে নিজেকে এগিয়ে নেয়া অত্যন্ত উপকারী, নয়ত বিশাল এক নিআমাত মিস করা হবে।

    আর যাদের আগে পড়া হয়েছে তারাও নিয়মিত পড়তে থাকলে গণতন্ত্রের এই ভয়াল ফিতনার অন্ধকারে হাতে একটা প্রজ্জলিত মশাল পেয়ে যাবে বিইযনিল্লাহ!

    Comment

    Working...
    X