Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৪৪ || ইসলাম ও গণতন্ত্র ।। মাওলানা আসেম ওমর রহিমাহুল্লাহ।। সপ্তম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৪৪ || ইসলাম ও গণতন্ত্র ।। মাওলানা আসেম ওমর রহিমাহুল্লাহ।। সপ্তম পর্ব

    আবাবিল প্রকাশন মিডিয়া পরিবেশিত
    ইসলাম ও গণতন্ত্র
    ।।মাওলানা আসেম ওমররহিমাহুল্লাহ।।
    এর থেকে– সপ্তম পর্ব


    দাওয়াতে পরিভাষার ব্যবহার

    মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীয়তের ঈমানদারগণ যখনই তাগুতি গণতন্ত্রের ঈমানদারদের সাথে কথা বলবেন, তাদের গণতন্ত্রে ব্যবহৃত পরিভাষা ব্যবহার করবেন না। বরং এগুলোকে ইসলামী পরিভাষায় পরিবর্তন করুন। যাতে আমাদের সরলমনা সাধারণ মুসলমানগণ জানতে পারেন যে, ইসলামের নামে তাদের সাথে কত বড় প্রতারণা করা হচ্ছে। এই পরিভাষাগুলো খুব বেশি বেশি ব্যবহার করুন, যাতে মানুষ এর বাস্তবতা সম্পর্কে অবগত হয়ে যায়।

    এখানে আরও একটা বিষয় স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদী শরীয়তে আমল আর আকিদা একমাত্র ধর্তব্যের বিষয়। কেউ এগুলোকে যত সুন্দর নামই দিক। মদকে জুস, সুদকে ব্যবসা, তাগুতকে আমিরুল মুমিনীন ইত্যাদি। শরীয়তে মুতাহহারার শান হল, সে এই মুখোশকে খামচে তুলে ফেলে দেয় এবং আসলের উপর হুকুম জারি করে।

    ওলামায়ে কেরামের নিকটও আমাদের আবেদন, আপনারা এই কুফরি বিষয়ে আপনাদের ভক্ত-অনুরক্ত ও অনুসারীদেরকে অবগত করুন যে, কুফরিকে কুফরি বলুন। যাতে কেউ কুফরিকে ইসলাম প্রমাণ করে ইসলামী মূলনীতি ও ভিত্তির সাথে ইচ্ছামত আচরণ করার দুঃসাহস না করে। শা’আয়িরে ইসলাম ও ইসলামের প্রতীক ও নিদর্শন নিয়ে উপহাস করার এবং আল্লাহর ‘হদ'কে হিংস্রতা ও পাশবিকতা বলার ধৃষ্টতা দেখাতে না পারে।

    মূল কাজ হল, ‘সুরতে মাসআলা' গভীরভাবে বোঝা অতঃপর পবিত্র শরীয়তের আলোকে তার বিধান স্পষ্ট করা।



    আসলাফে উম্মত ও কালের মনীষীদের দৃষ্টিতে গণতন্ত্র

    এখন দেখা যাক, গণতন্ত্র সম্পর্কে আসলাফে উম্মত ও কালের মণীষীগণ, যারা আমাদের জন্য আলোকবর্তিকা, তারা কি বলেছেন। তারা দ্বীন আমাদের চেয়েও অনেক বেশি বুঝেছে এবং দ্বীন সম্পর্কে অনেক বেশি জ্ঞান রাখতেন ।

    . হযরত শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার “হজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ' (حجة الله البالغة) গ্রন্থের “সিয়াসাতুল মদীনা" (سياسة المدينة) অধ্যায়ে বলেছেন-

    ولما كانت المدينة ذات اجتماع عظيم لايمكن أن يتفق رأيهم جمعا على حفظ السنة العدلة....

    শহর যখন জনবহুল হয়ে পড়বে,তাদের সবার রায় সুন্নাতের হেফাজতের উপর একমত হওয়া সম্ভব নয়…।

    বোঝা গেল, গনতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা, যা সংখাগরিষ্ঠের মতামত বা পক্ষাবলম্বনের মুখাপেক্ষী, এখানে ইসলাম ও মুসলমানদের সফলতা প্রমাণিত করা ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়।

    . হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

    ইসলামে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলতে কোনো জিনিস নেই। নব্য আবিস্কৃত ও সুবিদিত এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিছকই প্রতারণা। বিশেষত এমন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যা মুসলমান ও বিধর্মী সদস্যদের দ্বারা গঠিত, সেটা তো অবশ্যই অমুসলিম রাষ্ট্র৷ [মালফুজাতে থানভী : ২৫২, আহসানুল ফতওয়া : কিতাবুল জিহাদ/সিয়াসতে ইসলামীয়া অধ্যায়]

    ২. মাওলানা ইদ্রিস কান্ধলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

    এরা বলে, এটা নাকি মজদুর ও জনগনের রাষ্ট্র। এটা নিঃসন্দেহে অমুসলিম রাষ্ট্র। (আকায়িদুল ইসলাম : ২৩০)

    ৩. সাইয়িদ সুলাইমান নদভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইসলামী গণতন্ত্রের দর্শন প্রত্যাখ্যান করে লেখেন-

    গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের সাথে ইসলামের কি সম্পর্ক? ইসলামী খেলাফতের কি সম্পর্ক? (এগুলোর সাথে ইসলামের কোনই সম্পর্ক নেই।) প্রচলিত গণতন্ত্র তো সপ্তদশ শতাব্দীর পরে সৃষ্টি হয়েছে। গ্রীকের গণতন্ত্রও বর্তমানের গণতন্ত্রে থেকে ভিন্ন ছিল। সুতরাং ইসলামী গণতন্ত্র একটি অর্থহীন পরিভাষা। আমি ইসলামের কোথাও পশ্চিমা গণতন্ত্র পাইনি। তা ছাড়া ইসলামী গণতন্ত্র বলতে তো কোনো জিনিসই নেই। জানি না মরহুম ইকবাল ইসলামের রূহের ভেতর এই গণতন্ত্র কোথায় দেখতে পেয়েছেন? গণতন্ত্র একটা বিশেষ সভ্যতা ও ইতিহাসের ফল। ইসলামী ইতিহাসে একে খোঁজা অক্ষমতা প্রকাশ।[1]

    ৪. হযরত মাওলানা কারী মুহাম্মাদ তাইয়িব রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

    এটা (গনতন্ত্র) আল্লাহ তায়ালার সিফাতে মিলকিয়াতে শিরক,সিফাতে ইলমেও শিরক।[2]

    শিরকের পথ অবলম্বন করে কি কেউ ইসালামের শির বুলন্দ করতে পারে? কখনোই না।

    . হযরত মুফতী রশিদ আহমাদ লুধিয়ানবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

    এসব ফল ফসল পশ্চিমা গণতন্ত্রের নিকৃষ্ট বৃক্ষের(শাজারায়ে খবিসা) উৎপাদন। ইসলামে এই কুফরি ব্যবস্থার কোনোই অবকাশ নেই। [আহসানুল ফতওয়া : ৬/২৬]

    . হযরত মাওলানা ইউসুফ লুধিয়ানবী শহীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

    ইসলামের সাথে গণতন্ত্রের মিল নেই, তাই নয়। বরং গণতন্ত্র ইসলামের একদম বিপরীত বস্তু৷ [আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ৮/১৭৬]

    হযরত মাওলানা ইউসুফ লুধিয়ানবী শহীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহির ‘আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল’ গ্রন্থে এই মাসআলাটিও রয়েছে-

    প্রশ্ন : হারামকে ইচ্ছাকৃতভাবে হালাল বলা, এমনকি ইসলামী বলার পরিণতি কি?

    আমি ১৯৯১ এর মে মাসে আমাদের জাতীয় এসেম্বলীতে পাশ হওয়া শরীয়ত বিলের ৩য় অনুচ্ছদের দিকে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছি। এই অনুচ্ছদে বলা হয়েছে যে, শরীয়ত অর্থাৎ ইসলামের বিধিবিধান, যা কুরআন ও সুন্নাহয় বর্ণনা করা হয়েছে, পাকিস্তানের সর্বোচ্চ ও মৌলিক আইন হবে। তবে শর্ত হল, রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং সরকারের বর্তমানের অবকাঠামো যেন প্রভাবিত না হয়। তার মানে, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও সরকারের বর্তমান অবকাঠামো প্রভাবিত হলে কুরআন ও হাদীস প্রত্যাখ্যাত হবে। কুরআন-হাদীসকে তখন মানা হবে না। রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও সরকারি অবকাঠামোর ক্ষেত্রে সুপ্রিম ল' আইন ১৯৭৩-ই বলবৎ থাকবে।

    মাওলানা সাহেব! যারা এই বিল বানিয়েছেন, অনুমোদন করেছেন, এই দেশে বাস্তবায়ন করছেন এবং এই বিল তৈরিতে যে সব ওলামায়ে কেরাম সহযোগিতা করেছেন, তারা কোন দলে পড়বেন?

    উত্তর : একজন মুসলমানের কাজ হল, শর্তহীন এবং কোন প্রশ্ন বা কিন্তু ব্যতীত আল্লাহ এবং তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আহকাম ও বিধি-বিধান মনে-প্রাণে স্বীকার করা, মেনে নেয়া। কিন্তু এমন কথা বলা, “আমি কুরআন ও সুন্নাতের বিধান মানি, তবে আমার অমুক দুনিয়াবী স্বার্থ যেন প্রভাবিত না হয়, ক্ষতিগ্রস্ত না হয়'- এটা ঈমানের কথা নয়, পাক্কা নেফাকি৷ আল্লাহর বান্দা ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত না হওয়ার স্পষ্ট ঘোষণা। [আপকে মাসায়েল আওর আনকা হল : ১/৪৯]

    ১. প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মুফতী হামিদুল্লাহ খান সাহেব দামাত বারাকাতুহুম তাঁর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক ফতওয়াতে বলেন-

    পর্যবেক্ষণ ও অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রমাণিত যে, প্রচলিত পশ্চিমা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুধু ধর্মহীনতায় নয় বরং নির্লজ্জতা ও সব ধরনের দাঙ্গা, বিশৃঙ্খলা ও অনিষ্টের মূল। বিশেষত এতে এসেম্বলীকে আইন ও সংবিধান প্রণয়নের অধিকার প্রদান করা কুরআন, হাদীস এবং ইজমায়ে উম্মাতের স্পষ্ট লঙ্ঘণ। আর ভোটাধিকার প্রয়োগ করা পশ্চিমা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যত (আমলান) স্বীকার করা এবং এর সমস্ত খারাবিতে অংশীদার থাকা। এজন্য প্রচলিত পশ্চিমা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা শরীয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েয।[3]

    ২. মাওলানা সাইয়িদ আতাউল মুহসিন শাহ বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

    কোনো কবরকে সমস্যার সমাধানকারী মানা ও বিশ্বাস করা যদি শিরক হয়ে থাকে, তবে অন্য কোন রাষ্ট্র ব্যবস্থা Imperialism ইম্পেরিয়ালিজম, ডেমোক্রেসি, কমিউনিজম, ক্যাপিটালিজম এবং অন্যা সমস্ত ভ্রান্ত রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে মানা কিভাবে ইসলাম হতে পারে? কবর সিজদাকারী মুশরিক। পাথর, কাঠ এবং গাছকে সমস্যার সমাধানকারী ও প্রয়োজন পূরণকারী বিশ্বাস করা শিরক। আর গায়রুল্লাহর নিযাম ও ব্যবস্থা সংকলন করা, রূপ দেয়া, এর জন্য দৌড়ঝাপ করা ও এই নিযাম ও ব্যবস্থা কবুল করা কি করে তাওহীদ হতে পারে? ইসলামের কোথায় গণতন্ত্র রয়েছে? ইসলামের কোথাও ভোট নেই। কোথাও আপসকামিতা নেই। ইসলাম এর অস্তিত্ব মেনে নেয়নি, এর অবদানও স্বীকার করেনি।

    ইসলাম আপনার নিকট আনুগত্য চায়, ভোট চায় না। আপনার রায় চায় না।

    مَنْ يُطِعِ الرَّسُلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ

    যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল।[4]

    ৩. মাওলানা শাহ মুহাম্মাদ হাকিম আখতার রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

    ইসলামে গণতন্ত্র বলতে কোনো জিনিস নেই। যেদিকে বেশি ভোট পড়বে সেদিকেই সবাই যাবে, এমন কোনো বিষয় ইসলামে নেই। বরং ইসলামের অনন্য বৈশিষ্ট্য হল, গোটা বিশ্ব একদিকে চলে গেলেও মুসলমান আল্লাহর পক্ষেই থাকে। হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সাফা পাহাড়ে নবুওয়াতপ্রাপ্তির ঘোষণা করে ছিলেন, তখন নবীজির পক্ষে একটা ভোটও ছিল না। নবীজির কাছে মাত্র একটা ভোটই ছিল, সেটা তার নিজের ভোট। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আল্লাহর পয়গামের এলান করা থেকে বিরত ছিলেন? তিনি কি এ কথা ভেবে ছিলেন যে, গণতন্ত্র যেহেতু আমার বিপক্ষে, অধিকাংশ ভোট যেহেতু আমার বিরুদ্ধে, সুতরাং আমি নবুওয়াতপ্রাপ্তির ঘোষণা থেকে বিরত থাকি? [খাযায়েনে মারেফাত ও মুহাববত ২০৯]

    ৪. দারুল উলুম দেওবন্দের মুফতীয়ে আযম মুফতী মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী রহ. এর ফতওয়া :

    প্রশ্ন : আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন? খোলাফায়ে আরবা'আও কি এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর চলেছেন, নাকি তারা এতে কোনো পরিবর্তন পরিবর্ধন করেছেন?

    উত্তর : হযরত শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি গণতন্ত্রের খণ্ডন (তারদিদ) করেছেন। গণতন্ত্রে আইন ও বিধি-বিধানের মূলভিত্তি দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে হয় না, বরং সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে হয়ে থাকে । অর্থাৎ অধিকাংশের রায়ের উপর ফয়সালা হয়ে থাকে। সুতরাং অধিকাংশের রায় যদি কুরআন ও হাদীসের বিরুদ্ধে হয়, তবুও সেটার উপরই ফয়সালা হবে । পবিত্র কুরআনে অধিকাংশের আনুগত্যকে ভ্রষ্টতার কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে । আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-

    وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الْأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ

    আর যদি তুমি যারা যমীনে আছে তাদের অধিকাংশের আনুগত্য কর, তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। [সূরা আল আনআম - ১১৬]

    বিজ্ঞ, বোধসম্পন্ন ও জ্ঞানীদের সংখ্যা কমই হয়ে থাকে। খোলাফায়ে আরবা’আ রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূর্ণ পদাঙ্কানুসরণ করে চলতেন। তাঁরা এর বিপরীত অন্য কোনো পথ গ্রহণ করেননি।[5]


    ৫. বেফাকুল মাদারিস পাকিস্তানের চেয়্যারম্যান মাওলানা সালিমুল্লাহ খান দামাত বারাকাতুহুমের অভিমত :

    শাইখুল হাদীস হযরত মাওলানা সালিমুল্লাহ খান দামাত বারাকাতুহুমকে জিজ্ঞাসা করা হয়, “নির্বাচনী রাজনৈতিক ব্যবস্থা অথবা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইসলামী সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব কি না?

    উত্তরে তিনি বলেন, “না, এটা সম্ভব নয়। নির্বাচনের মাধ্যমেও ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়, গণতন্ত্রের মাধ্যমেও ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠের মত ধর্তব্য হয়। আর সংখ্যাগরিষ্ঠতা মূর্খদের হয়ে থাকে। যারা দ্বীনের গুরুত্বের ব্যাপারে অবগত নয় । তাদের দ্বারা ভালো কোনো কিছুর আশা করা যায় না।[6]

    ৬. হযরত মুফতী নিজামুদ্দীন শামযায়ী শহীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

    পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার দ্বীন ভোটের মাধ্যমে কিংবা পশ্চিমা গণতন্ত্রের মাধ্যমে বিজয়ী হবে না। কারণ পৃথিবীর বুকে আল্লাহর দুশমনদের সংখ্যাই বেশি। ফাসেক ফাজেরদের সংখ্যাই বেশি। আর গণতন্ত্র হল মানুষের মাথার সংখ্যার নাম, মানুষের ব্যক্তিত্বের ওজনের নাম নয়। পৃথিবীর বুকে ইসলামের বিজয় লাভ করার একটাই পথ, যেই পথ রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গ্রহণ করেছিলেন। সেটা হল জিহাদের পথ।

    আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ও ইসলামী শরীয়ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু কখন হয়েছে? যখন ষোলো লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে। দশ লাখ মানুষ প্রতিবন্ধি হয়েছে। কেউ হাত হারিয়েছে, কেউ পা হারিয়েছে, কেউ চোখ হারিয়েছে, কেউ কান হারিয়েছে... এরপর ইসলামী শরীয়ত প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কুরবানী না দেয়া পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা কাউকে মুফতে কিছু দেন না। পাকিস্তানের মানুষ তো এই তামান্না করে যে, পাকিস্তানেও তালেবান সরকার আসুক কিংবা তালেবান সরকারের মত সরকার হোক। কিন্তু এর জন্য যে পরিমাণ কুরবানী দেয়ার প্রয়োজন, এর জন্য তারা প্রস্তুত নয়।[7]



    [1]-মাহনামা সানাবিল- করাচি : মে ২০১৩, সংখ্যা ১১, পৃষ্ঠা ২৭-২৮, সম্পাদক মাওলানা হাফেয আহমাদ সাহেব। এ ছাড়াও দেখুন, মাহনামা সাহেল-করাচি, সংখ্যা জুন ২০০৬, সংকলন : মাওলানা গোলাম মুহাম্মাদ রহ.
    [2] -ফিতরি হকুমাত, - মাওলানা কারী মুহাম্মাদ তাইয়্যিব রহ.
    [3] - মাহনামা সানাবিল, করাচি :মে ২০১৩, সংখ্যা :১১, পৃষ্ঠা : ৩২
    [4] - তাওহীদ ও সুন্নাত কনফারেন্সে প্রদত্ত ভাষণ, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮৭ ‍ব্রিটেন, সৌজন্যে: সানাবিল করাচি
    ১০-ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া চতুর্ণ খন্ড, কিতাবুস সিয়াসাহ ওয়াল হিজরাহ, গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক সংগঠনের আলোচনা অধ্যায়

    [6]-মাহনামা সানাবিল, করাচি, মে ২০১৩, সংখ্যা : ১১

    [7]- মাহনামা সানাবিল, করাচি, মে ২০১৩, সংখ্যা : ১১,পৃষ্ঠা : ২৩-২৪






    আরও পড়ুন​
Working...
X