Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৪৪ || ইসলাম ও গণতন্ত্র ।। মাওলানা আসেম ওমর রহিমাহুল্লাহ।। দ্বাদশ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৪৪ || ইসলাম ও গণতন্ত্র ।। মাওলানা আসেম ওমর রহিমাহুল্লাহ।। দ্বাদশ পর্ব

    আবাবিল প্রকাশন মিডিয়া পরিবেশিত
    ইসলাম ও গণতন্ত্র
    ।।মাওলানা আসেম ওমররহিমাহুল্লাহ।।
    এর থেকে– দ্বাদশ পর্ব


    বৈশ্বিক বাস্তবতা

    এখানে সুরতহাল হল, সমস্ত কুফরি শক্তি মিলে প্রথমে খেলাফতে উসমানিয়াকে ভেঙ্গেছে। মুসলিম দেশগুলোতে বাস্তবায়িত পবিত্র শরীয়তকে ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের সেনাবাহিনী আক্রমণ করে খতম করেছে। এরপর প্রবৃত্তির ভিত্তিতে প্রণীত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে মুসলিম বিশ্বের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।

    এই পর্যায়ে ইহুদীদের সম্মুখে একটি জটিলতা দেখা দেয়। এই ব্যবস্থা পরিচালনাও নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় ব্যক্তির প্রয়োজন অনুভূত হয়। কারণ বাহির থেকে আসা সৈনিকরা এলাকা তো দখল করতে পারে, কিন্তু স্থানীয় লোকদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন সাধন করা তাদের জন্য সহজ কাজ ছিল না।

    যাহোক, তারা এর সমাধান এভাবে করে যে, স্থানীয় লোকদের চিন্তা-ফিকির পরিবর্তনের জন্য মুসলিম কান্ট্রিগুলোতে আলীগড় স্টাইলে সেকুলার সিলেবাসের শিক্ষাব্যবস্থা তথা স্কুল কলেজের জাল বিছিয়ে দেয়। দাবি যদিও করা হয় যে, আমাদের (ইংরেজ ও ফ্রান্সিদের) উদ্দেশ্য মুসলিম জাতিকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করে পৃথিবীতে সম্মান ও মর্যাদাবান করা, কিন্তু আল্লাহওয়ালাগণ তখনও এই ‘শ্লোগান'-এর হাকিকত ও তাৎপর্য সম্পর্কে এমনভাবেই অবগত ছিলেন, বর্তমানের মানুষ প্রতারিত হওয়ার পর যেমন অবগত হয়েছে । আর অনেকে তো এখনও এই মরীচিকাকে গন্তব্য মনে করে তার পিছনে দৌড়াচ্ছে।

    মুসলিম জাতির দুশমন শক্তি মুসলমানদেরকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের কী দিবে? আধুনিক এই শিক্ষার দ্বারা তারা এমন এক শ্রেণীর ব্যক্তি তৈরি করে, যারা কথা-বার্তা ও নামে-ধামে তো মুসলমান ঠিকই, কিন্তু মন-মস্তিস্কে পুরোপুরি তদের প্রভু’র হয়ে যায়।

    যাহোক, মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণকারী এই প্রজন্মকে ইংরেজের গোলাম বানানোর পর ইহুদীদের এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এরপর এই সেকুলার জীবনব্যবস্থা পরিচালনার জন্য এদের থেকেই ব্যুরোক্রেসি (Bureaucrcy) বা আমলা বানানো হয়। আসল বিষয় হল শক্তির মাধ্যমে এই ইবলিসি নিযামকে মুসলিম কান্ট্রিগুলোতে বাস্তবায়ন করা এবং চালু রাখাই তাদের মূল টার্গেট। আর এর জন্য সেকুলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শিক্ষা সমাপ্তকারীদের নিয়ে পুলিশ ও সেনাবহিনী গঠন করা হয়। যাদের থেকে এ বিষয়ের শপথ নেয়া হয়েছে যে, তারা প্রত্যেকেই নিজ দেশের প্রচলিত জীবনব্যবস্থার (সেকুলারিজম বা গণতন্ত্র) আনুগত্য করবে এবং এর রক্ষক হবে।

    পূর্বেই বলা হয়েছে যে, ইংরেজভূষণ এই শ্রেণীর ভাষা, নাম এবং বংশ স্থানীয় জনবসতির মতই ছিল। সময়ের সাথে সাথে সাধারণ মুসলমান তাদেরকে নিজেদেরই মনে করতে থাকে। বিশেষত মুসলিম দেশগুলো হতে বিটেন ও ফ্রান্সের বিদায় হওয়ার পর এই অনুভূতি ও সঙ্কোচটুকুও শেষ হয়ে যায়, যা তাদের সম্পর্কে দখলদার শক্তির উপস্থিতিতে ছিল ।

    ইংরেজ এবং ফ্রান্সিসিদের পিছনে মূল শক্তি ছিল যারা এই সেকুলার পদ্ধতি বানিয়েছিল। এ কারণে মুসলিম দেশগুলো থেকে ব্রিটেন ও ফ্রান্স চলে যাওয়ার পরও সেকুলার ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ এবং তা পরিচালনার জন্য ব্যুরোক্রেসি, পুলিশ এবং সেনাবাহিনী প্রস্তুত ছিল। পূর্বে ইংরেজ ও ফ্রান্সিসি সেনাবাহিনী যেমন এর রক্ষণাবেক্ষণ করত, এখন একই কাজ এই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হয়। যাদের সদস্য ছিল স্থানীয়। এ কারণে মুসলিম দেশগুলো স্বাধীন হওয়ার পরও মারাকিশ থেকে ফিলিপাইন- ইসলাম কোথাও স্বাধীন হতে পারেনি। খেলাফতের পুনর্জীবনের জন্য হক্কানী ওলামায়ে কেরাম চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সব চেষ্টা এই পুলিশ ও সেনাবাহিনী ব্যর্থ করে দিয়েছে। কোথাও শক্তির জোরে, কোথাও বা মিথ্যা প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে৷ কোথাও রাজতন্ত্রের মাধ্যমে, কোথাও বা গণতন্ত্রের কপটতার মাধ্যমে।

    মারাকিশ থেকে ফিলিপাইন পর্যন্ত দ্বীনদার শ্রেণী হয়ত এই বাস্তবতা আজ পর্যন্ত বোঝেইনি, কিংবা বুঝতেই চায় না যে, মুসলিম দেশগুলোর সেনাবাহিনী ও পুলিশবাহিনী আমাদের নয়৷ এরা হল এই সেকুলার ব্যবস্থার রক্ষক। ইংরেজরা যার সূচনা করেছিল, এরা তারই ধারাবহিকতা।

    এ কারণেই হয়ত এসব দেশের দ্বীনদার শ্রেণী কঠিনভাবে পেরেশান হয়ে পড়েন, যখন তারা দেখতে পান যে, এই পুলিশ ও সেনাবাহিনী নামাযীদের উপর গুলি চালাচ্ছে। মসজিদগুলো তছনছ করছে, শহীদ করছে। হক কথা বলার কারণে এবং লেখার কারণে ওলামায়ে কেরামকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানো হচ্ছে। কুরআন পড়ুয়া নিঃস্পাপ নিরাপরাধ মেয়েদেরকে জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে এবং কালেমা পড়া ও কুরআনকে আল্লাহর কিতাব স্বীকার করা সত্ত্বেও এই কুরআনের আইন বাস্তবায়ন হতে দিচ্ছে না। আর দিবেই বা কেন? এরা তো শপথই করেছে, যেকোনো ভাবে হোক তারা এই ইবলিসি নিজামের হেফাজত করবে। এর স্থলে অন্য কোনো নিজাম ও ব্যবস্থাই (হোক তা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনীত জীবনব্যবস্থা) বাস্তবায়িত হতে দিবে না।

    মুসলিম দেশগুলোর জনসাধারণও হয়ত এই পার্থক্য বুঝতে পারেনি যে, দেশ রক্ষা আর ইসলাম রক্ষার পার্থক্য কি? অনেকেই মনে করে, এ দুটো একই জিনিস। দেশ থাকলেই তো ইসলাম থাকবে। দেশ না থাকলে ইসলাম থাকে কি করে?

    এই ধারণাটাই একটা প্রবঞ্চনা৷ যা দেশপ্রতিমার ইবাদতের দিকে আহ্বানকারীরা এই উম্মতকে দিয়েছে। মুসলিম দেশগুলোর সেনাবাহিনী ও পুলিশ না দেশের রক্ষক না ইসলামের রক্ষক। এরা কেবল এই আন্তর্জাতিক ইবলিসি নিজাম ও বিশ্ব তাগুতি ব্যবস্থার রক্ষক, ইংরেজরা যার জন্য এদেরকে বানিয়েছে। বিষয়টি বোঝার জন্য কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি, এতে বিষয়টি একদম স্পষ্ট হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।

    পাকিস্তানে পারভেজ মোশাররফের শাসনকালে ভারত পাকিস্তানী নদীর উপর ড্যাম নির্মাণ করতে থাকে। ব্যাপকহারে যুদ্ধসরঞ্জাম বৃদ্ধি করতে থাকে। অথচ যে কোনো দেশের নদী বন্ধ হওয়া সেই দেশের জন্য মৃত্যুতুল্য। কিন্তু এখানে ভারতের হাত থেকে নিজেদের পানি রক্ষার জন্য যুদ্ধ করার পরিবর্তে তারা এ কাজে তাদেরকে সহযোগিতা করে যেতে থাকে। আর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাদের সমস্ত লয়লশকর পূর্ব সীমান্ত হতে সরিয়ে সীমান্ত প্রদেশ ও উপজাতীয় অঞ্চলের সে সব মানুষদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লাগিয়ে দেয়, যারা দেশে প্রচলিত অনৈসলামিক ব্যবস্থার স্থলে শরীয়ত প্রতিষ্ঠার দাবি করছিল।

    এখন আপনারা ভাবুন, একদিকে দেশকে (পাকিস্তান) ভারতের হাত থেকে রক্ষা করার বিষয় সম্মুখে, অন্যদিকে সেনাবাহিনী উপলব্ধি করছিল যে, দেশে প্রচলিত ইবলিসি ব্যবস্থা ইসলামপ্রিয়দের দ্বারা হুমকির সম্মুখীন।

    লক্ষ্য করে দেখুন, সেনাবাহিনী কোন হুমকিকে নিয়ন্ত্রণ করাকে প্রাধান্য দিয়েছে? ভারতের ড্যাম নির্মাণে দেশের যেই ক্ষতি হচ্ছিল, সেদিকে কারও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং সব শক্তি এই ইবলিসি ইংরেজি ব্যবস্থা রক্ষার জন্য ব্যয় করেছে। পারভেজ মোশাররফের পরও একই সুরতহাল জারি থাকে । অন্যদিকে ভারতের জঙ্গি উন্মাদনা চরম পর্যায়ে। এরপরও তারা ভারতের সাথে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে গিয়ে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

    চিন্তা করুন, পাকিস্তানে বিদ্যমান শক্তি, যা সব সময় পাকিস্তানকে ভাঙ্গতে, পাকিস্তানের অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করতে, অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন পূরণ করতে এবং সর্বস্তরে ভারতের স্বার্থ রক্ষা করতে তৎপর। শুধু পাকিস্তানেই নয় বরং গোটা বিশ্বে পাকিস্তান এবং পাকিস্তানিদেরকে গালি দিচ্ছে । এদেরকে তো ক্ষমতা এবং বড় বড় পদ দেয়া হয়েছে। অথচ সীমান্ত ও উপজাতীয় অঞ্চলের লোকেরা, যারা সব সময় ভারতের বিপক্ষে নিজেদের যুবকদের রক্ত দিয়েছে, যারা কখনো পাকিস্তান থেকে আলাদা হওয়ার কথা বলেনি, না তাকে কখনো গালি দিয়েছে। এই অঞ্চলে ড্রোন হামলা, সেনা অপারেশন এবং জেল ও নির্যাতনের বিভিষিকা নেমে এসেছে।

    একই চিত্র আরব ও অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতেও। ক্ষমতাসীন শক্তিগুলো তো ব্রিটেন ও আমেরিকার দাসত্ব বরণ করেছে, কিন্তু মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোলামী কবুল করেনি। দেশকে টুকরা টুকরা করার দায়িত্ব তো গ্রহণ করেছে, কিন্তু দেশে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিজাম ও জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে দেশকে রক্ষা করা মেনে নেয়নি। এর থেকেও অনুমান করা যায় যে, মুসলিম দেশগুলো ক্ষমতাসীনরা কার রক্ষক? দেশ ও জাতির নাকি ধর্মহীন জীবনব্যবস্থার?

    এখন আপনি নিজেই চিন্তা করে দেখুন, এমন শ্রেণীকে নিজেদের ইমাম ও নেতা বানানো, যারা আমাদেরই নয়, চরম জুলুম ও অবিচার নয় কি? কুফরি করা যাদের জন্য বিনোদনের বিষয়, আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হালাল (আইন সম্মত) এবং সুদি ব্যবস্থা রক্ষা করা ফরয, মদ যাদের কাঙ্খিত পানীয়, মুসলমানদেরকে হত্যা করা যাদের গর্বের বিষয়, বোন ও মেয়েদেরকে উন্নতির সোপান বানানো যাদের ফ্যাশন, এরাই কি ইমামুল মুসলিমীন? এরাই কি খলিফাতুল মুসলিমীন?

    আল্লাহর হে বান্দাগণ! একটু ভেবে দেখুন তো, এরাই কি সেই ইমাম, যারা তোমাদের বোন ও মেয়েদের বিয়েতে অলি (অভিভাবক) হবে, তোমাদের বড়দের জানাযা পড়াবে? হে আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ! আপনারা কি তাদেরকে এই উপযুক্ত মনে করেন যে, আপনারা তাদের ইমামতিতে এক ওয়াক্ত নামায আদায় করবেন? নিঃসন্দেহে করবেন না। তো আপনারা যখন তাদেরকে ‘ইমামাতে সুগরা'র (নামাযের ইমামতি) উপযুক্ত মনে করেন না, তাহলে ‘ইমামতের কুবরা'র (খেলাফত ও হুকুমাত) হকদার কেমনে প্রমাণ করেন?

    সুতরাং এ বিষয়টি খুব ভালো করে বুঝে নেয়া দরকার যে, ‘খুরুজ আনিল ইমাম’ - (ইমাম এর বিরুদ্ধাচারণ) এর আলোচনা সে সব আমির ও শাসকদের সাথে সম্পৃক্ত, যেখানে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। সরকার ব্যবস্থা কুরআনের। আদালত কুরআনের আইনের পরিপন্থি ফয়সালা দেয়াকে হারাম মনে করে। খলিফা নিজে হুদুদ এবং কিসাস বাস্তবায়ন ও জিহাদ-ফি সাবিলিল্লাহ পরিচালনা করছেন। এমতাবস্থায় যদি খলিফার ভেতর কোনো খারাবি প্রকাশ পায়, তখন শরীয়ত এটা দেখে যে, খলিফার ভেতর এমন কোনো কিছু পাওয়া যাচ্ছে কি না যার কারণে তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ জায়েয হয়?

    ইমাম (শাসক)-এর বিরুদ্ধাচরণ আলোচনার সম্পর্ক, গণতন্ত্রের রক্ষীদের ক্ষেত্রে হতেই পারে না। কারণ এমন শাসক, যারা কেবল গণতন্ত্রের প্রতিমার রক্ষকই নয় বরং নিজের সেনাবাহিনী ও পুলিশি শক্তির মাধ্যমে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোলামদের দ্বারা জোরপূর্বক এই প্রতিমার পূজা করানো হয়। সেই শাসক ইমামুল মুসলিমীন কি করে হতে পারে? এমন শাসককে ইমামুল মুসলিমীন প্রমাণিত করা, ঈমানকে হুমকির ভেতর ফেলা। আল্লামা ইবনে আবিদীন শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তো তার যুগে (তখনো খেলাফতে উসমানিয়া বিদ্যমান ছিল) বলতেন যে-

    من قال لسطان زماننا عادل فقد كفر حيث يكون اعتقد الظم عدلا


    যে ব্যক্তি আমাদের যুগের শাসকদেরকে ন্যায়পরায়ন শাসক বলেছে, সে কুফরি করেছে। কারণ সে জুলুমকে আদল বা ন্যায়পরয়নতা বলেছে।[1]

    তিনি যদি আজকের যুগের গণতান্ত্রিক সেকুলার ও ধর্মহীন শাসকদেরকে পেতেন এবং তাদেরকে সম্মান ও ভজনাকারীদেরকে দেখতেন, না জানি তাদের সম্পর্কে তিনি কী মন্তব্যই না করতেন?

    আজকের হক্কানী আলেমদের সম্মুখে কি এই শাসক শ্রেণীর জীবন বিদ্যমান নেই? তাদের জেনারেল, মন্ত্রী, সুদখোর এবং বংশানুক্রমে শ্বেতপ্রভুদের দাসত্বকারীদের সম্পর্কে কি তারা অবগত নন? হক্কানী আলেমদের প্রভুর কসম! কোনো সুইপারও যদি তাদের জীবন সম্পর্কে জানে, মৃত্যুর আগ পর্যন্তও তাদেরকে নিজের ইমাম হিসেবে মেনে নিবে না।

    সেই সাথে এ বিষয়টিও স্পষ্ট হোক যে, মুজাহিদদের জিহাদের ঘোষণা বিশেষ কোনো শাসক কিংবা শাসকদলের বিরুদ্ধে নয়। বরং জিহাদের এই ঘোষণা মুসলিম দেশগুলোতে চেপে থাকা কুফরি নিযাম ও ধর্মহীন জীবনব্যবস্থার বিরুদ্ধে। তারা এই কুফরি নিযামের বিরুদ্ধে ময়দানে নেমেছেন। বিশেষ কোনো ব্যক্তি বা শ্রেণী তাদের টার্গেট নয়। সুতরাং যে-ই এই নিযাম হেফাজতের জন্য তাদের মোকাবেলায় আসবে, তাকেই এই নিযামের মোহাফেজ মনে করা হবে। মোটকথা, মনে রাখতে হবে গণতন্ত্র তার মূল হিসেবে নিরেট কুফরি। সুতরাং এই নিযাম ও জীবনব্যবস্থা পরিচালনাকারী কখনোই মুসলমানদের ইমাম হতে পারে না। চাই তার বাহ্যিক ভূষণ-আকৃতি যেমনই হোক না কেন? যে ব্যক্তি আল্লাহর শরীয়তকে সংসদে অনুমোদন করা ছাড়া আইনের অংশ বানাতে পারে না, সে কি করে মুসলমানদের ইমাম হতে পারে? যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনীত শরীয়তকে এ বিষয়ের মুখাপেক্ষী বানিয়েছে যে, আগে সংসদে অনুমোদন হোক, এরপর সেটা দেশে (নাউযুবিল্লাহ) বাস্তবায়নের উপযুক্ত হবে, সে কোনোভাবেই মুসলমানদের ইমাম ও শাসক হতে পারে না।



    [1] সৌজন্যে : তুহফাতুল মুতাখাসসিস, মুফতি জিয়াউর রহমান জাকির। প্রকাশনী : মাকতাবায়ে উমর ফারুক করাচি। হুবহু এই কথা ইমাম আবু মানসুর মাতুরিদী রহমাতুল্লাহি আলাইহিও তার জামানায় বলতেন। ফাতওয়ায়ে আলমগীরী ও আহনাফের অন্যান্য কিতাবে উল্লেখিত রয়েছে।





    আরও পড়ুন​
    একাদশ পর্ব --------------------------------------------------------------------------------- ত্রয়োদশ পর্ব

    Last edited by tahsin muhammad; 4 hours ago.
Working...
X