Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ০৬ || জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ || - শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি [এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)] || ১৩তম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ০৬ || জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ || - শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি [এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)] || ১৩তম পর্ব

    আল-ক্বাদিসিয়াহ মিডিয়া
    কর্তৃক পরিবেশিত
    জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ
    -শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি
    [এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)||
    এর থেকে
    ৩তম পর্ব

    ==================================================
    ===============================
    অধ্যায়ঃ ৬


    ষষ্ঠ বৈশিষ্ট্যঃ পরাজয়ের সংজ্ঞা
    ﴿ وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنْتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ


    তোমরা হীনবল হয়োনা না এবং দুঃখিতও হয়োনা; তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মু’মিন হও।”

    ষষ্ঠ বৈশিষ্ট্যঃ পরাজয়ের সংজ্ঞা

    পরাজয় বলতে কি বুঝায়? মানুষ কি নিহত হলেই পরাজয় হয়ে যায়? তবে পরাজয় বলতে কি বুঝায়? এর সত্যতা নিয়ে যে দ্বন্ধ তা হলো সেই আদর্শগত দ্বন্ধ যা শারীরিক যুদ্ধের ফলাফলের ক্ষেত্রে ধরা হয়। কিন্তু এর বিষয়বস্তু হল আদর্শের সংঘর্ষ। কোন ব্যক্তি যদি তার আদর্শ পরিত্যাগ করে, তাই হল তাঁর পরাজয়।

    ৮ ধরনের পরাজয় রয়েছেঃ

    পরাজয়ের প্রথম অর্থঃ কুফ্ফারদের পথ অনুসরণ

    প্রথম অর্থটি এই আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ

    ﴿وَلَنْ تَرْضَى عَنْكَ الْيَهُودُ وَلَا النَّصَارَى حَتَّى تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ قُلْ إِنَّ هُدَى اللَّهِ هُوَ الْهُدَى وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُمْ بَعْدَ الَّذِي جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ


    ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা তোমার প্রতি কখনো সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের দ্বীনের অনুসরণ কর। বল, আল্লাহর পথ নির্দেশই প্রকৃত পথনির্দেশ। জ্ঞান প্রাপ্তির পর তুমি যদি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কর, তবে আল্লাহর বিপক্ষে তোমার কোন অভিভাবক থাকবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।”

    এখানে পরাজয় বলতে কি বোঝায়? তাদের মত হয়ে যাওয়া। তুমি যদি ওদের একজন হয়ে যাও, তবে তুমি আল্লাহর বাণী অনুযায়ী একই রকম। অন্য আয়াতে যেমন আল্লাহ্  বলেছেনঃ একজন জালিম হবে । এর সাথে সাথে তুমি আল্লাহর বিপক্ষে কোন সাহায্যকারী বা তার বিরুদ্ধে কোন রক্ষাকারীও পাবে না।

    যদি কোন একজন মুসলিম জীবনের অন্য পথ অনুসরণ করে যেমন- আধুনিকতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ইত্যাদি, এমনকি তা আংশিকভাবে হলেও সে ব্যর্থ। এমনকি, সেই জীবন পদ্ধতিতে সে যদি বিশাল মর্যাদা, সম্পদ বা ক্ষমতা প্রাপ্ত হয় তবুও, কারণ এটা হল আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে আপোষ করা।

    যদি কোন মুসলিম ,উদাহরণস্বরূপ, কোন অমুসলিম দেশে বিশাল ব্যবধানে নির্বাচনে জয়লাভ করে, সেটি হবে একধরনের পরাজয় যা কোন বিজয় নয়। এটা পরাজয় কারণ, সার্বিক ক্ষেত্রেই হোক বা ক্ষুদ্র পরিসরেই হোক, সে তোমার ধর্ম পরিত্যাগ করেছে। তার ক্ষমতায় যাওয়া কোন আলোচ্য বিষয় নয়, আলোচ্য বিষয় হল আল্লাহর আইন এবং তাঁর দ্বীন ক্ষমতায় যাওয়া। তাদেরকে অনুসরণ করা বলতে সবসময় জনসম্মুখে তা দাবী করা বোঝায় না, কারণ এ ধরনের ঘটনা বিরল। এই আয়াতে জনসম্মুখে ঘোষণা করার কথা বলা হয়নি, বরং এখানে তাদের অনুসরণের ব্যাপারে আভাস দেয়া হয়েছে। যদি কারও কথা ও কাজ তাদের অনুসরণের অনুরূপ হয়ে থাকে, তবে সে তাদের অনুসরণ করছে।

    এই আয়াতে ইহুদী এবং নাসারাদের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু যদি ইহুদী এবং নাসারাগণ তাদের নিজ নিজ ধর্মকে অনুসরণ না করে, সে ক্ষেত্রে কি হবে? এই আয়াতে বলা হয়েছে, “যতক্ষণ না তুমি তাদের পথ অনুসরণ করছ” ,বলা হয়নি যে তাদের ধর্ম অনুসরণ করছ। যদি আজকে তাদের পথ হয়ে থাকে পবিত্র গ্রন্থকে অবজ্ঞা করা এবং নিজ নিজ খেয়াল খুশি মত চলা এবং অধিকাংশের মত অনুযায়ী চলা, তবে এখানে এসব কথাই বলা হয়েছে। যদি তারা ধর্মনিরপেক্ষতা এবং ধমীয় নীতির বদলে মাবন রচিত বিধান অনুসরণ করে, তবে এটাই তাদের পথ। এজন্য এটার প্রয়োজন নেই যে, তুমি তোমার গলায় ক্রুশ ঝুলাবে। পশ্চিমে তারা তাদের ধর্মে আমূল পরিবর্তন এনেছে। একই সাথে তাদের নেতারা ধর্মের প্রতি আন্তরিক নয়। তারা সত্যিকার অর্থে সম্পদ, ক্ষমতা এবং লোভের পিছনে ছুটছে। এ আয়াত তাদের পথকে গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে। গণতন্ত্রের উন্নয়নে সাহায্য করার অর্থ তাদের পথকে অনুসরণ করা। ধর্মনিরপেক্ষতার উন্নয়নে সাহায্য করাও তাদের পথকে অনুসরণ করা বোঝায়।

    কাফির হওয়ার জন্য এ কাজই যথেষ্ট; তা ঘোষণা দেয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা ঈমানের সংজ্ঞার ক্ষেত্রে কি বলি? আমরা এ দ্বারা অন্তর, কথা এবং কাজে বিশ্বাস করাকে বুঝি। সুতরাং ঈমানের একটি অংশ হল কৃত কাজ। কুফরের ক্ষেত্রেও একই। এটা অন্তরের বিশ্বাস হতে পারে, মুখের কথা হতে পারে এবং হতে পারে কারও কৃতকর্ম। সুতরাং কোন মুসলিম নামধারীর কথা, বিশ্বাস অথবা কাজ যদি কুফ্ফারদের মত হয়, তবে এই আয়াত তাদের ক্ষেত্রে বর্তাবে। আমরা যখন এই সংজ্ঞা ব্যবহার করি, তখন আমরা দেখতে পাই এর মাঝে কত মুসলিমরা পড়ে। আল্লাহ্ বলেনঃ

    ﴿... وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ


    “....আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদানুসারে যারা বিধান দেয় না, তারাই কাফির।”

    আয়াতের এ অংশ “এবং তুমি যদি তাদের ইচ্ছানুযায়ী চল,” এখানে ইচ্ছা বলতে কি বুঝিয়েছে? শায়খ ইউসুফ আল-উয়াইরী رحمه الله বলেন, “ইচ্ছা বলতে তাদের ইচ্ছার কথা বলা হয়েছে, এটা তাদের চর্চাও বটে, এমনটি এটা তাদের বাহ্যিক রূপের বহিঃপ্রকাশ।” ইবনে তাইমিয়্যাহ্ رحمه الله বলেন, “কুফ্ফাররা সন্তুষ্ট হয় যখন মুসলিমরা তাদের অনুসরণ করে, এমন কি এমন সব বিষয় যা বাহ্যিকভাবে ফুটে ওঠে।” আমরা আজকে এই আয়াতের সত্যতা দেখতে পাই। যখন আমাদের মুসলিম মহিলারা হিজাব পড়ে না, কুফ্ফাররা খুব খুশি হয়, যদিও এটি পোশাকের একটি বিধি মাত্র। কিন্তু তারা এটা নিয়ে ফ্রান্সে এবং তুরস্কে বড় ধরণের হৈ চৈ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে নারীবাদী পদক্ষেপ সমূহ এবং নারী অধিকার সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপগুলো বিশেষভাবে হিজাবের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। তারা সবসময় এটা নিয়ে কথা বলে এবং একে নির্যাতন হিসেবে দেখে। যদি পশ্চিমারা সত্যই উদারপন্থী হত, তবে যে কারও ইচ্ছামত পোশাক পড়তে দিত, অতঃপর তারা কেন খৃষ্টান সন্ন্যসীনীদের পোশাকের বিপক্ষে না থেকে শুধু মুসলিমদের এ বিষয়ের বিরুদ্ধোচারণ করে। কেন আমাদের এই বিধানটি তাদের সবার বেদনা উদ্রেক করে? আমরা দেখি, মেয়েরা যখন রংধনুর সব রং এর পোশাক বা রুচিহীন বা বিকৃত পোশাক পরিধান করে, তারা তা গ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখেকিন্তু যখনই কোন মুসলিম মহিলা স্বেচ্ছায় শালীন পোশাক পরতে চায়, তখনই তা তাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তারা আমাদের পোশাক এবং বাহ্যিক রূপকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।

    পরাজয়ের দ্বিতীয় অর্থঃ কাফিরদের প্রাধান্য মেনে নেয়া


    আল্লাহ্  বলেনঃ

    ﴿ فَلَا تُطِعِ الْمُكَذِّبِينَ ﴾

    সুতরাং তুমি মিথ্যাচারীদের অনুসরণ করো না।”

    কুফ্ফারদের আনুগত্য করো না। অতঃপর আল্লাহ্ বলেনঃ

    ﴿ وَدُّوا لَوْ تُدْهِنُ فَيُدْهِنُونَ﴾

    তারা চায় যে, তুমি নমনীয় হও, তাহলে তারাও নমনীয় হবে।”


    আমাদের ধর্ম অতুলনীয় বা অদ্বিতীয় ধর্ম। অনেক ধর্মে কিছু সীমাবদ্ধ আচার অনুষ্ঠানে ধর্মীয় নীতিমালা অনুমোদন করা হয়। কিন্তু ইসলামে আমাদের যা বলা হয়েছে, আমরা তাই অনুসরণ করি। আমাদের ইসলামের বিধান সমূহ নিয়ে খেলাধূলা করবার মত কোন সুযোগ নেই, কারণ তা আল্লাহর পক্ষ হতে প্রেরিত হয়েছে।

    লোকজন মুহাম্মদ এর কাছে আসত এবং আপোষ করতে চেষ্টা করত, কিন্তু সমস্যা হল, এটা তাঁর দ্বীন নয়। এটা আল্লাহর দ্বীন। তিনি কোন অবস্থাতেই আপোষ করতে পারতেন না। যখন কুফ্ফাররা মুহাম্মদ এর কাছে আসল এবং বলল, “এটা করলে কেমন হয় যে, তুমি এক দিন আমাদের প্রভুর উপাসনা কর আর আমরা এক দিন তোমার রবের ইবাদত করি?” রসূলুল্লাহ তা প্রত্যাখ্যান করলেন। তারা বলল, “তবে এটা করলে কেমন হয়, আমরা তোমার রবের এক সপ্তাহ ইবাদত করি আর তুমি আমাদের প্রভুর এক দিন উপাসনা করবে?” তিনি তা প্রত্যাখ্যান করলেন। তারা বলল, “ঠিক আছে এটা করলে কেমন হয়, আমরা তোমার রবের এক মাস ইবাদত করব আর তুমি এক দিন আমাদের প্রভুর উপাসনা কর?” তারা তাদের ধর্ম নিয়ে সবখানে খেলায় লিপ্ত থাকতো। রসূল নিরবচ্ছিন্নভাবে না বলে গেছেন। তিনি এ দ্বীন প্রচার করতে এসেছিলেন, পরিবর্তন করতে নয়। কিন্তু সমস্যা হল, কিছু মুসলিম নিজেদেরকে আল্লাহর এই দ্বীন নিয়ে খেলাধূলা করার অধিকার দিয়েছে। এ কাজ করার মাধ্যমে তারা ব্যর্থ এবং পরাজিত হয়েছে।

    ইউ,এস রিপোর্ট এবং ওয়ার্লড রিপোর্টের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ইউ,এস গভর্নমেন্ট মুসলিম বিশ্বের হৃদয় ও মন জয় করতে কতখানি তৎপর যা সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের একটি অখন্ড অংশ। বোঝা যাচ্ছে যুদ্ধের এই অদৃশ্য অংশ যুদ্ধক্ষেত্রের মত একই রকমভাবে কতখানি গুরত্বপূর্ণ অথবা তার চেয়ে কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ? এটা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার মুসলিম মৌলবাদীদের সাথে একই সাথে বসতে ও কাজ করতে আগ্রহী, যদি তারা দু’টি বিষয় মেনে নেয়ঃ গণতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী চলতে রাজী হয় এবং সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে তাদের একটি অংশ হিসেবে কাজ করে।

    এটা এমন যে, তারা যেন বলছে, “যদি তোমরা যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে গ্রহণ করতে রাজী হও, আমরাও তোমাদেরকে তোমাদের পূর্ব কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা করে দেব এবং আমরা তোমাদের সাথে বসতে রাজী আছি এ কথা জানা সত্ত্বেও যে, তোমরা মুসলিম মৌলবাদী।”

    তাদের এমন খেলা দেখানোর এবং আপোষ করার ক্ষমতা আছে।

    তা সত্ত্বেও, অনেক মুসলিম এবং ইসলামিক সংগঠন আছে যারা এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সাথে একই সাথে কাজ করার ব্যাপারে ঐক্যমত্যে পৌছেছিল। তাদের এই ইসলামিক পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি ছিল যে, তারা দাওয়ার সুবিধার জন্য এমন করেছে। এগুলো সাধারণ উক্তি ছাড়া আর কিছুই না যা যে কোন উপলক্ষে ব্যবহার করা যায়, এমনকি যদি তা ইসলামিকও হয়। তুমি কুফ্ফারদের কাছ থেকে কি অর্জন করেছ তা কোন বিষয়ই না। এটা মূল্যহীন। আল্লাহর এমন মানুষের প্রয়োজন নেই যারা নিজ দ্বীন নিয়ে ক্ষমতা এবং সম্মান লাভ করার জন্য কুফ্ফারদের সাথে আপোষ করে ।

    এটা কি কোন উপলব্ধি করার বিষয় যে, মহাবিশ্বের প্রতিপালকের দ্বীনের ক্ষমতার জন্য, কুফ্ফারদের পক্ষ থেকে সবুজ বাতির প্রয়োজন? আল্লাহর ধর্ম শুধুমাত্র তখনই শক্তিপ্রাপ্ত হবে, যখন তা কুফ্ফারদের অপদস্থ করবে। আর এভাবেই আল্লাহ্ তাঁর দ্বীনের বিজয় চান। আল্লাহ্  বলেনঃ

    ﴿ هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ


    তিনিই তাঁর পক্ষ থেকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করার জন্য রসূলকে প্রেরণ করেছেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।”

    আল্লাহ্ আরও বলেনঃ

    ﴿ يُرِيدُونَ لِيُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ


    তারা আল্লাহর নূর তাদের মূখের ফুৎকারে নিভিয়ে দিতে চায় কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর নূর পূর্ণরূপে উদ্ভাসিত করবেন, যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে।”

    কুফ্ফাররা পছন্দ করুক বা না করুক, এই দ্বীনই প্রবল হতে যাচ্ছে। আল্লাহর দ্বীনকে প্রবল করবার জন্য আমাদের তাদের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই এবং মুসলিম হিসেবে আমাদের তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ারও কিছু নেই। আমরা তাদের দাওয়াহ কবুল করার মুখাপেক্ষী নই। যদি তারা কবুল করে, তবে আলহামদুলিল্লাহ। যদি তারা না করে, এটা আমাদের দোষ নয়। এটা আল্লাহর নির্ধারিত ক্বদর। তাদেরকে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী পরাভূত হতে দাও। আল্লাহ  বলেনঃ

    ﴿قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآَخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّى يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ


    যাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহ-তে ঈমান আনে না ও শেষ দিবসেও না এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল যা হারাম করেছেন তা হারাম গণ্য করে না এবং সত্য দ্বীন অনুসরণ করে না; তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে স্বহস্তে জিয্য়া দেয়।”

    এটি একটি তাক লাগানো বিষয় যে মক্কার জাহিলিয়া এবং বর্তমান পশ্চিমা বিশ্বের কি অদ্ভূত মিল রয়েছে। কুরাইশদের কুফ্ফাররা মুহাম্মদ এর কাছে বলেছিল, “আমাদেরকে আমাদের মত ছেড়ে দাও এবং আমরাও তোমাকে তোমার মত ছেড়ে দিব।”

    আল্লাহ্  নাযিল করেনঃ

    ﴿وَلَوْلَا أَنْ ثَبَّتْنَاكَ لَقَدْ كِدْتَ تَرْكَنُ إِلَيْهِمْ شَيْئًا قَلِيلًا ﴾

    আমি তোমাকে অবিচল না রাখলে তুমি তাদের দিকে প্রায় কিছুটা ঝুঁকে পরত।”


    মুদাহানা’ এবং ‘মুদারাহ’ এর মধ্যে পার্থক্যঃ

    মুদাহানা’ বলতে কাফিরদের প্রতি কোমল হওয়া বা আপোষ করাকে বোঝায় যেখানে ‘মুদারাহ’ বৈধ। এ দুটোর মধ্যে পার্থক্য কি? ইবনে হাজার এবং আল কুরতুবী رحمه الله বর্ণনা করে যে, আল কাযী ইয়াজ رحمه الله বলেন, মুদারাহ মানে দ্বীনের জন্য দুনিয়ার কিছু কোরবানী করা। উদাহরণস্বরূপ- তুমি কোন কুফ্ফারকে দাওয়াহ দেয়ার উদ্দেশ্যে দাওয়াত করলে। এখানে তুমি তোমার কিছু দুনিয়া কোরবানী করেছ। কিছু টাকা খরচ করেছ খাবার কেনার জন্য, দ্বীনের জন্য নয়। এটা বৈধ। এটা মুদারাহ। যা হোক, ধরি তোমার মনিব একজন অমুসলিম এবং তোমার বেতন তার থেকে আসে (যদিও তা আল্লাহর পক্ষ হতে আসে) ধরা যাক, সে তোমার কাছে এল এবং প্রশ্ন করল, “ জিহাদ বলতে কি বোঝায়?” তুমি কি ব্যাখ্যা করতে পার যে, “জিহাদ হল নিজের নফসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এবং ইসলামে এমন কিছুই নেই যা হিংস্রতাকে সমর্থন করে।”

    এখানে তুমি তোমার দুনিয়ার স্বার্থে দ্বীনের সাথে আপোষ করছ। এটা বৈধ নয়। এটাই ‘মুদাহানা’। এটাই বিষয় দু’টির মধ্যে পার্থক্য।


    আরও পড়ুন
    ১২তম পর্ব ------------------------------------------------------------------ ১৪তম পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 10-06-2023, 04:14 PM.
Working...
X