অযোগ্যের পর যোগ্য
অদক্ষের পর দক্ষ গোয়েন্দা আসলে কৌশলে কিছু পরিবর্তন হতে পারে। যেমনঃ
- সে এসে আগের প্রশ্নকারীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবে।
- নিজেকে উন্মাদ বা বোকা প্রমাণ করে এমন কাজ আসামীর সামনে করবে।
- সরাসরি কাইনেসিক ইন্টারভিউ নিবে, তারপর চূড়ান্ত ধাক্কা দিবে।
- তারপর আপনার উপস্থিতির কথা ভুলে গিয়ে মোবাইল ব্যবহার শুরু করবে। এভাবে ঘণ্টা পার করে ফেলবে। তারপর অপ্রাসঙ্গিক বিরক্তিকর আলোচনা শুরু করবে, যতক্ষণ না আপনি নিজে আলোচনা মামলার বিষয়ে না নিয়ে আসবেন। কিন্তু প্রশ্নকারী এই টপিক উপেক্ষা করা শুরু করবে যতক্ষণ না আসামী উতকণ্ঠা থেকে মুক্ত হতে স্বীকারোক্তি দেয়।
- অথবা সে আপনার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকবে। এটাকে pregnant silence method বলে। এতে ব্যক্তির উপর অস্বস্তি ও মানসিক চাপের সৃষ্টি হয় এবং সে নীরবতা ভাঙতে কথা বলা শুরু করে।
পুলিশকে সহযোগিতা
একজন পুলিশ যদি আপনার বাসা, অফিসে যায় কিংবা ফোন করে কথা বলতে চায়। আপনি কি রাজি হবেন? অভিজ্ঞতা বলছে, নিরপরাধ এবং পাকা অপরাধীরাও রাজি হবে। এতে অপরাধীদের জন্য একটি ঝুঁকি তৈরি হয়। যেমনঃ
- একবার এক দরজায় গিয়ে গোয়েন্দা দাবি করে, আমি জানি তোমার কাছে অমুকের পিস্তল আছে। তুমি সেটা আমাকে দাও। বেচারা, একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ঘরের পিছনে নিয়ে সেটা সমর্পণ করেছিল। এজন্য আমরা বইয়ের শুরুতেই তিনটি মূলনীতি বলেছি।
- মাদক ব্যবসায়ীদের দরজায় ক্রেতা সেজে মাদক কিনতে চেয়ে লেখক অসংখ্যবার সফল হয়েছে। (অনেক ক্ষেত্রে, আপনার অবর্তমানে পুলিশ আপনার বাড়ি গিয়ে বলবে, আপনার হাজবেন্ডের আজকে একটা (বোমার) টাইমার সার্কিট দেয়ার কথা। আমরা সেটা নিতে এসেছি। আপনার স্ত্রী তা দিল না, কিন্তু বলল, আচ্ছা, ভেতরে বসুন। ব্যস! ফেসে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট)
কোন পুলিশ তদন্তের সাথে আপনার সাথে যোগাযোগ করাটা ঝুকিপূর্ণ। আপনি অপরাধী কিনা সেটা জরুরি না। পুলিশ শুধু কেস ক্লোজ করতে চায়। তাই থানায় দেখা করতে বলা মানে, আপনাকে রিমান্ডে নেয়া হবে।
এই অবস্থায় ঝামেলা এড়াতে চাইলে, তার পোশাকের প্রশংসা করে আপনার উকিলের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বলুন যে, আপনার উকিল বলেছেন যে, সরাসরি তার সাথে কথা বলতে । কপাল ভাল থাকলে এই গোয়েন্দা আপনার পিছু ছেড়ে দিবে অথবা আপনার নামে ওয়ারেন্ট জারি করবে।
প্রতিদিন যে পরিমাণ মামলার কাগজ টেবিলে জমা হয়, তার সামান্যই সমাধান করা হয় । আর মাস গেলে বেতনও তেমন পাওয়া যায় না। তাই তার সাথে প্রথম সাক্ষাৎ এড়াতে পারলেই সে আপনাকে ত্যাগ করে অন্য সহজ শিকার খুজবে। তবে আপনার নামে নিকটবর্তী থানায় আগেই কোন অপরাধের ফিরিস্তি থাকলে বেচে থাকা যাবে না। তাছাড়া অধিকাংশ তদন্তকারী অফিসারের কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থাকায় সহজে পিছু ছাড়ানো যায় না। আর আপনার যেহেতু দাড়ি-টুপি আছে, আপনাকে এত সহজে ছাড়বে না। তাই পরবর্তী অনুচ্ছেদে যান।
উপদেশ: কখনোই পুলিশের সাথে কথা বলবেন না।
অধ্যায় ৫
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ
আপনি ভাবতে পারেন যে, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ নেই। কিন্তু লাভ আছে। এক পুলিশ আরেক পুলিশের বিরুদ্ধে সবসময়ই লেগে থাকে সফলতার খ্যাতি নিজের নামে লিখিয়ে নেয়ার জন্য।
আবার আলাদা প্রশাসনিক পুলিশ রয়েছে পুলিশের কুকর্ম তদন্তের জন্য। একই কর্মকর্তার নামে একাধিক অভিযোগের ইতিহাস থাকলে প্রশাসনিক পুলিশ আগমন করে। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উৎপাদন করা ছাড়া এই প্রশাসনিক পুলিশের কোন কাজ নেই। সারাদিন টেবিলে বসে অভিযোগ প্রসব করে পেটের ভুড়ি গরম করাই তাদের কাজ।
করণীয়:
- স্থানীয় প্রশাসনিক পুলিশের দপ্তরে যান।
- আপনার সাথে তদন্তকারী গোয়েন্দার কি কি কথোপকথন হয়েছে যেগুলোর সাথে আপনার বিরোধ রয়েছে সেগুলো বলুন। তবে মিথ্যা বলবেন না, ভুয়া প্রমাণ তৈরি করবেন না; তাহলে আরও ফেসে যাবেন।
- কাগজে লিখুন
- নোটারী করুন।
- অফিসের বড় স্যারের কাছে বা তার চামচার কাছে যান।
- বলুন যে, আপনি অমুক অফিসারের নামে তদন্ত করাতে চান। নতুবা আপনি আরও সিনিয়র প্রশাসনিক ভুড়ির টেবিলে যাবেন।
মনে রাখবেন, ছোট ভুরির লোকেরা বড় ভুরিকে ভয় পায়। কারণ বড় ভুরি তার অধীনের ছোট ভুরি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না জানলে ভুরি গরম হয়ে যাবে।
- আপনার উকিলের ভিজিটিং কার্ড দেখান এবং বলুন যে, পরের বার আপনি আপনার উকিলকে সাথে নিয়ে আসবেন।
উকিলরা তাদের ভুরি কমিয়ে নিজের ভুরি বাড়াতে পেনশনের টাকাও খেয়ে নিবে।
ফলাফল: এবার পুলিশ স্বয়ং পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে ব্যস্ত থাকবে।
ফাযায়েল:
- গোয়েন্দা নিজেই আরেক তদন্তে ব্যস্ত থাকবে।
- প্রশাসনিক পুলিশ গোয়েন্দাকে চাপ দিবে। এমনকি খুনের মামলাতেও তারা জনগণকে হয়রানি করতে নিষেধ করার রেকর্ড আছে।
- রাষ্ট্রপক্ষের উকিল চায় না যে, কোন অফিসারের বিরুদ্ধে অসদাচারণের তদন্ত চলমান থাকুক।
রাযায়েল:
- আপনি এবার ঘৃণার পাত্রে পরিণত হবেন। থানার সব পুলিশ আপনাকে চিনে ফেলবে।
- গোয়েন্দার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে আপনাকে ভাল মতো আপ্যায়ন করার চেষ্টা করবে। সেক্ষেত্রে আপনি আবার অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
- একদিন না একদিন সে আপনাকে আবার ফাসানোর চেষ্টা করবে।
মনে রাখবেন, ভাল হয় যদি অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জড়িত করা যায়। পুলিশে ধরলে র্যাবের কাছে, ডিজিএফআই, সিআইডি, পিআইবি, পিবিআই সর্বত্র চেষ্টা করুন। এতে কোন না কোন ভুরিতে ঢেউ উঠবেই। প্রয়োজনে সাংবাদিকদের ব্যবহার করুন। আজকাল কয়েক হাজার টাকা দিয়েই জাতীয় দৈনিকে সংবাদ বের করা যায়। অন্তত সরকার বিরোধী মিডিয়াকে তো ব্যবহার করাই যায়। এই পদ্ধতিতে বাংলাদেশের দুই জন প্রখ্যাত আলেম ও একাধিক জেনারেল লাইনের ভাইকে গিলে ফেলতে চাইলেও বমি করে দিতে বাধ্য হয়েছে র্যাব। যদিও তারা মানহাযী নয়, এবং জেনে বুঝে কাজটা তার আত্মীয়স্বজনরা করে নি। তারা অবশ্যই আল্লাহর রহমত প্রাপ্ত ছিলেন।
মনে রাখবেন, প্রশাসনিক পুলিশ মাঠ পর্যায়ে কাজ করে অভ্যস্ত না। তাই সাধারণ স্বাভাবিক তদন্ত কার্যক্রমকেও অভিযোগ পত্রে হয়রানি হিসাবে উল্লেখ করা যায়। আর এটাই গোয়েন্দার পক্ষে খণ্ডণ করা মুশকিল। তবে ভুকেও মিথ্যা বলবেন না।
আমাদের বুযুর্গদের দেখুন তারা মিথ্যা থেকে কিভাবে বেচে থাকত। মীরাটে হযরত গাংগুহী রাহ:-কে ম্যাজিস্ট্রেট জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার কাছে বন্দুক আছে? তিনি তসবীহ দানা দেখিয়ে বললেন,এটাই আমাদের অস্ত্র।
মাওলানা কাসেম নানুতুভী রাহ:-কে মসজিদে ঘেরাও করে ফেলা হল। পুলিশ তাকে চিনতো না। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, মাওলানা কাসেম কোথায়? তিনি উঠে দাড়িয়ে একটু সরে গিয়ে বললেন যে, একটু আগে এখানেই বসে ছিল।
অনেক ভাই জিহাদে মিথ্যা বলা জায়েজ মনে করে ঢালাওভাবে মিথ্যা বলা শুরু করে। বিষাক্ত পদার্থের কিছু না কিছু প্রতিক্রিয়া আছে। প্রয়োজনে অভিযোগপত্রে ধোয়াশাচ্ছন্ন শব্দ ব্যবহার করুন।
বাস্তব উদাহরণ
একবার পুলিশ একটি জানালা ভাঙ্গা দেখতে পায়। নিচেই ঝোপের কাছে এক ব্যক্তি শুয়ে ছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল যে, সে জানালা চুরি করার জন্য ভেঙেছে কিনা। সে অস্বীকার করে এবং জানায় যে, সে রাস্তায় থাকে; তার বাড়িঘর নেই। তাই সে সেখানে শুয়ে আছে। কে জানালা ভেঙেছে তা সে জানে না। পুলিশ কথা শোনার পর একটি ফাঁদ পাতলো। সে তার সহকর্মী কে পাঠালো যেন সে কোন সাক্ষী খুঁজে আনে। সহকর্মী নিকটবর্তী একটি দোকানের মালিককে পাশের গলি থেকে নিয়ে এলো। দোকানদার কিছুই বলেনি শুধু তাকে যেভাবে শিখিয়ে দেয়া হয়েছিল সেভাবে দূর থেকে আসামির দিকে আঙুল তুলে ইশারা করে এবং মাথা নাড়িয়ে কিছু বলার অভিনয় করে। ব্যাস, এতেই আসামি স্বীকার করে নেয়।
দ্বিতীয় উদাহরণ,
পুলিশ জানে কিভাবে আপনাকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে এবং আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী জোগাড় করতে হবে। থানায় এমন অনেক অভিযোগকারী আসে এবং ঘোরাফেরা করে যারা তাদের উপর জুলুম করেছে এমন ব্যক্তিকে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না। তাই পুলিশ এমন একজনের কাছে যাবে এবং বলবে, তোমার মোবাইল চুরি হয়েছে। আমি এমন একজনকে জানি, যে মোবাইল চুরি করে। তোমার মোবাইল কে নিয়েছে তা খুঁজে পাওয়া না গেলেও এরকম হাজার চোরের একজনকে তো শাস্তি দেয়া দরকার। তাই তুমি এর বিরুদ্ধে সাক্ষী দাও। এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে এবং প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগকারী আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে প্রস্তুত হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে আসামীকে মারধর করার চেষ্টাও করেছে। আপনার সাথেও এরকম হতে পারে। পুলিশ কোন সেকুলারকে বলবে , দেখো। অমুক জঙ্গি হামলায় মারা গেছে। আসল অপরাধী ধরা যাচ্ছে না। কিন্তু আমি এমন অনেক ইসলামপন্থীকে চিনি, যারা একই রকম মতাদর্শ ধারণ করে। এদের শাস্তি দিলেও অন্তত অমুকের আত্মা শান্তি পাবে। সুতরাং তুমি সাক্ষী দাও। অতঃপর আগের ঘটনার মত এই ব্যক্তি সাক্ষী দেয়ার অভিনয় করবে যেন আপনার স্বীকারোক্তি নেয়া যায়।
অদক্ষের পর দক্ষ গোয়েন্দা আসলে কৌশলে কিছু পরিবর্তন হতে পারে। যেমনঃ
- সে এসে আগের প্রশ্নকারীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবে।
- নিজেকে উন্মাদ বা বোকা প্রমাণ করে এমন কাজ আসামীর সামনে করবে।
- সরাসরি কাইনেসিক ইন্টারভিউ নিবে, তারপর চূড়ান্ত ধাক্কা দিবে।
- তারপর আপনার উপস্থিতির কথা ভুলে গিয়ে মোবাইল ব্যবহার শুরু করবে। এভাবে ঘণ্টা পার করে ফেলবে। তারপর অপ্রাসঙ্গিক বিরক্তিকর আলোচনা শুরু করবে, যতক্ষণ না আপনি নিজে আলোচনা মামলার বিষয়ে না নিয়ে আসবেন। কিন্তু প্রশ্নকারী এই টপিক উপেক্ষা করা শুরু করবে যতক্ষণ না আসামী উতকণ্ঠা থেকে মুক্ত হতে স্বীকারোক্তি দেয়।
- অথবা সে আপনার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকবে। এটাকে pregnant silence method বলে। এতে ব্যক্তির উপর অস্বস্তি ও মানসিক চাপের সৃষ্টি হয় এবং সে নীরবতা ভাঙতে কথা বলা শুরু করে।
পুলিশকে সহযোগিতা
একজন পুলিশ যদি আপনার বাসা, অফিসে যায় কিংবা ফোন করে কথা বলতে চায়। আপনি কি রাজি হবেন? অভিজ্ঞতা বলছে, নিরপরাধ এবং পাকা অপরাধীরাও রাজি হবে। এতে অপরাধীদের জন্য একটি ঝুঁকি তৈরি হয়। যেমনঃ
- একবার এক দরজায় গিয়ে গোয়েন্দা দাবি করে, আমি জানি তোমার কাছে অমুকের পিস্তল আছে। তুমি সেটা আমাকে দাও। বেচারা, একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ঘরের পিছনে নিয়ে সেটা সমর্পণ করেছিল। এজন্য আমরা বইয়ের শুরুতেই তিনটি মূলনীতি বলেছি।
- মাদক ব্যবসায়ীদের দরজায় ক্রেতা সেজে মাদক কিনতে চেয়ে লেখক অসংখ্যবার সফল হয়েছে। (অনেক ক্ষেত্রে, আপনার অবর্তমানে পুলিশ আপনার বাড়ি গিয়ে বলবে, আপনার হাজবেন্ডের আজকে একটা (বোমার) টাইমার সার্কিট দেয়ার কথা। আমরা সেটা নিতে এসেছি। আপনার স্ত্রী তা দিল না, কিন্তু বলল, আচ্ছা, ভেতরে বসুন। ব্যস! ফেসে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট)
কোন পুলিশ তদন্তের সাথে আপনার সাথে যোগাযোগ করাটা ঝুকিপূর্ণ। আপনি অপরাধী কিনা সেটা জরুরি না। পুলিশ শুধু কেস ক্লোজ করতে চায়। তাই থানায় দেখা করতে বলা মানে, আপনাকে রিমান্ডে নেয়া হবে।
এই অবস্থায় ঝামেলা এড়াতে চাইলে, তার পোশাকের প্রশংসা করে আপনার উকিলের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বলুন যে, আপনার উকিল বলেছেন যে, সরাসরি তার সাথে কথা বলতে । কপাল ভাল থাকলে এই গোয়েন্দা আপনার পিছু ছেড়ে দিবে অথবা আপনার নামে ওয়ারেন্ট জারি করবে।
প্রতিদিন যে পরিমাণ মামলার কাগজ টেবিলে জমা হয়, তার সামান্যই সমাধান করা হয় । আর মাস গেলে বেতনও তেমন পাওয়া যায় না। তাই তার সাথে প্রথম সাক্ষাৎ এড়াতে পারলেই সে আপনাকে ত্যাগ করে অন্য সহজ শিকার খুজবে। তবে আপনার নামে নিকটবর্তী থানায় আগেই কোন অপরাধের ফিরিস্তি থাকলে বেচে থাকা যাবে না। তাছাড়া অধিকাংশ তদন্তকারী অফিসারের কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থাকায় সহজে পিছু ছাড়ানো যায় না। আর আপনার যেহেতু দাড়ি-টুপি আছে, আপনাকে এত সহজে ছাড়বে না। তাই পরবর্তী অনুচ্ছেদে যান।
উপদেশ: কখনোই পুলিশের সাথে কথা বলবেন না।
অধ্যায় ৫
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ
আপনি ভাবতে পারেন যে, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ নেই। কিন্তু লাভ আছে। এক পুলিশ আরেক পুলিশের বিরুদ্ধে সবসময়ই লেগে থাকে সফলতার খ্যাতি নিজের নামে লিখিয়ে নেয়ার জন্য।
আবার আলাদা প্রশাসনিক পুলিশ রয়েছে পুলিশের কুকর্ম তদন্তের জন্য। একই কর্মকর্তার নামে একাধিক অভিযোগের ইতিহাস থাকলে প্রশাসনিক পুলিশ আগমন করে। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উৎপাদন করা ছাড়া এই প্রশাসনিক পুলিশের কোন কাজ নেই। সারাদিন টেবিলে বসে অভিযোগ প্রসব করে পেটের ভুড়ি গরম করাই তাদের কাজ।
করণীয়:
- স্থানীয় প্রশাসনিক পুলিশের দপ্তরে যান।
- আপনার সাথে তদন্তকারী গোয়েন্দার কি কি কথোপকথন হয়েছে যেগুলোর সাথে আপনার বিরোধ রয়েছে সেগুলো বলুন। তবে মিথ্যা বলবেন না, ভুয়া প্রমাণ তৈরি করবেন না; তাহলে আরও ফেসে যাবেন।
- কাগজে লিখুন
- নোটারী করুন।
- অফিসের বড় স্যারের কাছে বা তার চামচার কাছে যান।
- বলুন যে, আপনি অমুক অফিসারের নামে তদন্ত করাতে চান। নতুবা আপনি আরও সিনিয়র প্রশাসনিক ভুড়ির টেবিলে যাবেন।
মনে রাখবেন, ছোট ভুরির লোকেরা বড় ভুরিকে ভয় পায়। কারণ বড় ভুরি তার অধীনের ছোট ভুরি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না জানলে ভুরি গরম হয়ে যাবে।
- আপনার উকিলের ভিজিটিং কার্ড দেখান এবং বলুন যে, পরের বার আপনি আপনার উকিলকে সাথে নিয়ে আসবেন।
উকিলরা তাদের ভুরি কমিয়ে নিজের ভুরি বাড়াতে পেনশনের টাকাও খেয়ে নিবে।
ফলাফল: এবার পুলিশ স্বয়ং পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে ব্যস্ত থাকবে।
ফাযায়েল:
- গোয়েন্দা নিজেই আরেক তদন্তে ব্যস্ত থাকবে।
- প্রশাসনিক পুলিশ গোয়েন্দাকে চাপ দিবে। এমনকি খুনের মামলাতেও তারা জনগণকে হয়রানি করতে নিষেধ করার রেকর্ড আছে।
- রাষ্ট্রপক্ষের উকিল চায় না যে, কোন অফিসারের বিরুদ্ধে অসদাচারণের তদন্ত চলমান থাকুক।
রাযায়েল:
- আপনি এবার ঘৃণার পাত্রে পরিণত হবেন। থানার সব পুলিশ আপনাকে চিনে ফেলবে।
- গোয়েন্দার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে আপনাকে ভাল মতো আপ্যায়ন করার চেষ্টা করবে। সেক্ষেত্রে আপনি আবার অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
- একদিন না একদিন সে আপনাকে আবার ফাসানোর চেষ্টা করবে।
মনে রাখবেন, ভাল হয় যদি অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জড়িত করা যায়। পুলিশে ধরলে র্যাবের কাছে, ডিজিএফআই, সিআইডি, পিআইবি, পিবিআই সর্বত্র চেষ্টা করুন। এতে কোন না কোন ভুরিতে ঢেউ উঠবেই। প্রয়োজনে সাংবাদিকদের ব্যবহার করুন। আজকাল কয়েক হাজার টাকা দিয়েই জাতীয় দৈনিকে সংবাদ বের করা যায়। অন্তত সরকার বিরোধী মিডিয়াকে তো ব্যবহার করাই যায়। এই পদ্ধতিতে বাংলাদেশের দুই জন প্রখ্যাত আলেম ও একাধিক জেনারেল লাইনের ভাইকে গিলে ফেলতে চাইলেও বমি করে দিতে বাধ্য হয়েছে র্যাব। যদিও তারা মানহাযী নয়, এবং জেনে বুঝে কাজটা তার আত্মীয়স্বজনরা করে নি। তারা অবশ্যই আল্লাহর রহমত প্রাপ্ত ছিলেন।
মনে রাখবেন, প্রশাসনিক পুলিশ মাঠ পর্যায়ে কাজ করে অভ্যস্ত না। তাই সাধারণ স্বাভাবিক তদন্ত কার্যক্রমকেও অভিযোগ পত্রে হয়রানি হিসাবে উল্লেখ করা যায়। আর এটাই গোয়েন্দার পক্ষে খণ্ডণ করা মুশকিল। তবে ভুকেও মিথ্যা বলবেন না।
আমাদের বুযুর্গদের দেখুন তারা মিথ্যা থেকে কিভাবে বেচে থাকত। মীরাটে হযরত গাংগুহী রাহ:-কে ম্যাজিস্ট্রেট জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার কাছে বন্দুক আছে? তিনি তসবীহ দানা দেখিয়ে বললেন,এটাই আমাদের অস্ত্র।
মাওলানা কাসেম নানুতুভী রাহ:-কে মসজিদে ঘেরাও করে ফেলা হল। পুলিশ তাকে চিনতো না। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, মাওলানা কাসেম কোথায়? তিনি উঠে দাড়িয়ে একটু সরে গিয়ে বললেন যে, একটু আগে এখানেই বসে ছিল।
অনেক ভাই জিহাদে মিথ্যা বলা জায়েজ মনে করে ঢালাওভাবে মিথ্যা বলা শুরু করে। বিষাক্ত পদার্থের কিছু না কিছু প্রতিক্রিয়া আছে। প্রয়োজনে অভিযোগপত্রে ধোয়াশাচ্ছন্ন শব্দ ব্যবহার করুন।
বাস্তব উদাহরণ
একবার পুলিশ একটি জানালা ভাঙ্গা দেখতে পায়। নিচেই ঝোপের কাছে এক ব্যক্তি শুয়ে ছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল যে, সে জানালা চুরি করার জন্য ভেঙেছে কিনা। সে অস্বীকার করে এবং জানায় যে, সে রাস্তায় থাকে; তার বাড়িঘর নেই। তাই সে সেখানে শুয়ে আছে। কে জানালা ভেঙেছে তা সে জানে না। পুলিশ কথা শোনার পর একটি ফাঁদ পাতলো। সে তার সহকর্মী কে পাঠালো যেন সে কোন সাক্ষী খুঁজে আনে। সহকর্মী নিকটবর্তী একটি দোকানের মালিককে পাশের গলি থেকে নিয়ে এলো। দোকানদার কিছুই বলেনি শুধু তাকে যেভাবে শিখিয়ে দেয়া হয়েছিল সেভাবে দূর থেকে আসামির দিকে আঙুল তুলে ইশারা করে এবং মাথা নাড়িয়ে কিছু বলার অভিনয় করে। ব্যাস, এতেই আসামি স্বীকার করে নেয়।
দ্বিতীয় উদাহরণ,
পুলিশ জানে কিভাবে আপনাকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে এবং আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী জোগাড় করতে হবে। থানায় এমন অনেক অভিযোগকারী আসে এবং ঘোরাফেরা করে যারা তাদের উপর জুলুম করেছে এমন ব্যক্তিকে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না। তাই পুলিশ এমন একজনের কাছে যাবে এবং বলবে, তোমার মোবাইল চুরি হয়েছে। আমি এমন একজনকে জানি, যে মোবাইল চুরি করে। তোমার মোবাইল কে নিয়েছে তা খুঁজে পাওয়া না গেলেও এরকম হাজার চোরের একজনকে তো শাস্তি দেয়া দরকার। তাই তুমি এর বিরুদ্ধে সাক্ষী দাও। এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে এবং প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগকারী আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে প্রস্তুত হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে আসামীকে মারধর করার চেষ্টাও করেছে। আপনার সাথেও এরকম হতে পারে। পুলিশ কোন সেকুলারকে বলবে , দেখো। অমুক জঙ্গি হামলায় মারা গেছে। আসল অপরাধী ধরা যাচ্ছে না। কিন্তু আমি এমন অনেক ইসলামপন্থীকে চিনি, যারা একই রকম মতাদর্শ ধারণ করে। এদের শাস্তি দিলেও অন্তত অমুকের আত্মা শান্তি পাবে। সুতরাং তুমি সাক্ষী দাও। অতঃপর আগের ঘটনার মত এই ব্যক্তি সাক্ষী দেয়ার অভিনয় করবে যেন আপনার স্বীকারোক্তি নেয়া যায়।