আত তিবয়ান পাবলিকেশন্স মিডিয়া পরিবেশিত
“‘তাওহীদের পতাকাবাহীদের প্রতি।।
এর থেকে– চতুর্থ পর্ব
“‘তাওহীদের পতাকাবাহীদের প্রতি।।
এর থেকে– চতুর্থ পর্ব
যেহেতু ফলাফল আল্লাহর হাতে সেহেতু পরিণতি ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে কিন্তু কাজের ভিত্তি এবং পদ্ধতি সবসময় একই
তাগুতের সাথে সংগ্রামে আমরা কি ফলাফল দেখতে পাব, তা আল্লাহই ভালো জানেন; অতীত মু’মিনরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিণতি পেয়েছে, কিন্তু তাদের কাজের ভিত্তি সবসময়ই একই ছিল।
নূহ (আঃ) এবং তাঁর অনুসারী মু’মিনদের রক্ষা করা হয়েছিল এবং কাফেরদের ধ্বংস করা হয়েছিল। ইব্রাহীম (আঃ) এবং তাঁর অনুসারী মু’মিনরা অত্যাচারিত হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ ইব্রাহীম (আঃ)-কে রক্ষা করেন এবং তাগুতকে ধ্বংস করেন। মুসা (আঃ) তৎকালীন দুর্ধর্ষ তাগুত ফেরাউনের বিরুদ্ধে বিজয়ী হতে পারেন নি। আল্লাহ তাকে আদেশ দিলেন মু’মিনদের সাথে নিয়ে ভোর বেলায় গোপনে পালিয়ে যেতে। ফেরাউন তার বাহিনী নিয়ে মু’মিনদের ঘিরে ফেললো, কিন্তু মুসা (আঃ) এর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে তার রব তাদের সাথেই আছেন এবং অবশ্যই তিনি কোন একটি উপায় বাতলে দিবেন। তারপর মু’মিনরা পালাতে সক্ষম হয় এবং ফেরাউন ধ্বংস হয়। আসহাবুল উখদুদের ঘটনায় মু’মিনরা ছিল একেবারেই দুর্বল, তারপরও তারা তাগুতকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। তাদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। আর আসহাবুল কাহাফের যুবকেরা দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও তাগুতকে প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং তাদের ঈমান রক্ষা করার জন্য পালিয়ে যাবার সুযোগ পেয়েছিল। তারা এক গুহায় আশ্রয় নেয়। ৩০০ বছর অথবা ৩০৯ বছরের ঘুম থেকে জেগে তারা তাদের মধ্য থেকে একজনকে পাঠায় খাবার আনতে। তারা ভেবেছিল তারা বড়জোর একদিন কি দুইদিন ঘুমিয়েছে, তাই খাবার আনতে গিয়ে তারা সাবধান ছিল পাছে কেউ তাদের চিনে ফেলে এবং তাদের শিরকের জন্য বাধ্য করে।
“উহারা যদি তোমাদের বিষয় জানতে পারে তবে তোমাদেরকে প্রস্তারাঘাতে হত্যা করবে অথবাতোমাদেরকে উহাদের ধর্মে ফিরাইয়া নিবে এবং সেক্ষেত্রে তোমরা কখনই সাফল্যলাভ করবে না।” (সূরা কাহাফ ১৮:২০)
সাহাবা (রাঃ)-গণ এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ ছিলেন নির্যাতিত এবং অকল্পনীয় অত্যাচারের শিকার। এই নির্যাতনের মাঝেও রাসূল ﷺ সাহাবাদের সবর করতে বলতেন। যেমন, তিনি বলেছেন, “ধৈর্য্য ধর, হে ইয়াসিরের পরিবার! কারণ তোমাদের জন্য জান্নাত অপেক্ষা করছে”, অনুরূপভাবে “তোমাদের পূর্বের মানুষদের মাঝে, কাউকে কাউকে ধরে মাটিতে পুতে রেখে তার মাথা থেকে করাত দিয়ে দুইভাগ করা হয়েছে, লোহার চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে তার হাড় থেকে মাংস আলাদা করে ফেলা হয়েছে; কিন্তু তারপরও সে তার ঈমান থেকে একচুলও সরেনি।” যারা দ্বীনের আনসার হতে চায় এমন লোকদের রাসূল ﷺ খুঁজছিলেন, তিনি তায়িফে গিয়েছিলেন এবং অন্যান্য গোত্রের কাছেও। কিন্তু বনু থাকিফ (তায়িফের অধিবাসী) উনাকে ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করলো এবং তাদের বাচ্চাদের দিয়ে রাসূলের দিকে পাথর মারালো। এই সময়ই রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছিলেন, “হে আল্লাহ তোমার কাছেই আমি আমার দুর্বলতার জন্য অভিযোগ করছি।” আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীর জন্য নুসরাহর ব্যবস্থা করার আগে তাকে মিরাজে নিয়ে গেলেন। তারপর অবশেষে, ইয়াসরিবের কিছু মানুষ দাওয়াহ কবুল করলো এবং মুসয়াব ইবনে উমাইরের সাহায্যে ইয়াসরিবের ঘরে ঘরে ইসলামের বার্তা পৌঁছে গেলো এবং তারপর নবী ﷺ-কে তারা নুসরাহ দিলো। সাহাবারা গোপনে হিজরত শুরু করলেন। অবশেষে রাসূলুল্লাহ ﷺ-ও আল্লাহর সাহায্যে কাফিরদের হত্যা প্রচেষ্টাকে ফাঁকি দিয়ে আবু বকর (রাঃ)-কে সাথে করে হিজরত করলেন। জিহাদের আয়াত নাযিল হওয়ার আগ পর্যন্ত মু’মিনদের ধৈর্য ধরে সব অত্যাচার সহ্য করতে বলা হয়েছিল। তারপর শুধু তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ অনুমোদন করা হলো যারা মু’মিনদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবে। শেষে, আল্লাহ আদেশ দিলেন সব মুশরিকদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করতে, যখনই হারাম মাসগুলো অতিবাহিত হয়ে যাবে এবং যতক্ষণ না সব ফিতনা দূর হয়ে কেবলমাত্র আল্লাহর দেয়া দ্বীনই টিকে থাকে। সাহাবারা আল্লাহর আদেশ পালন করলেন এবং ইসলামের তলোয়ার তাগুত এবং শিরকের রাজত্বকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে মানুষকে জাহিলিয়াতের অন্ধকার থেকে ইসলামের আলোতে নিয়ে আসলো। মুসলিমের মাঝে যতদিন তাওয়াক্কুল ও ইখলাস ছিল এবং যতদিন তারা আল্লাহকে সেইভাবে ইবাদত করেছে ও ভয় করেছে, যেভাবে করা উচিত- ততদিন পর্যন্ত তারা একের পর এক বিজয় পেতেই থাকলো। আর যখনই তারা এই গুণগুলো হারিয়ে ফেললো, দুনিয়ার প্রতি ঝুঁকে পড়লো এবং অহংকারী হয়ে উঠলো তখনই আল্লাহ তাদের উপর সেই মর্যাদা উঠিয়ে নিলেন যা পূর্ববর্তী প্রজন্মের মুসলিমরা পেয়েছিল।
সুতরাং যা আগেও উল্লেখ করা হয়েছে – পূর্বের মু’মিনরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ফলাফল ভোগ করেছে, কিন্তু তাদের ভিত্তি ছিল একই। তারা যত দুর্বলই হোক না কেন, তাওহীদের দাওয়াহ ছিল সবসময়ই উচ্চতর ও প্রবল। তাগুতকে প্রত্যাখ্যান এবং আল-ওয়ালা ও আল-বারাআ হলো দ্বীনের ভিত্তি এবং শাহাদাহর শর্ত ও স্তম্ভ। আমরা আমাদের দাওয়াকে হালকা করবো না, বা এটাকে গোপনও রাখবো না। বরং, তাগুত যদি আমাদের অত্যাচার করতে বা হত্যা করতে শুরু করে, তাহলে দাওয়াহ আরো জোরেশোরে চালাতে হবে। ইনশা-আল্লাহ এই দাওয়াহকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিবেন এবং আমাদের জন্য যেমন চান তেমন পরিণতি দেবেন। একই সাথে ক্বিতালের জন্য আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে হবে, এবং যখনই আমাদের সামর্থ্য হবে তখন ক্বিতাল করতে হবে। কারো কারো একটা ভুল ধারণা আছে যে, ক্বিতালের জন্য প্রস্তুতি নেয়াটাও নিষিদ্ধ। যদি তাদের ধারণা সত্যি হয়, তাহলে এটা কিভাবে সম্ভব যে আনসাররা নুসরাহ দিতে প্রস্তুত ছিল (যদি তাদের ক্বিতালের প্রস্তুতি না থাকে)? আনসাররা কি আকাবার দ্বিতীয় বাইয়াতের দিন রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর কাছে জিহাদের অনুমতি চাননি? (ইবনে ইসহাকের লেখা সীরাত দেখুন) তার উত্তরে রাসূল ﷺ কি বলেছিলেনঃ “না, আগে ইসলামী রাষ্ট্র শক্তিশালী হোক”। না! তিনি একথা বলেননি। বরং তিনি বলেছেন, “আমাদের উপর এমন কোন হুকুম আসেনি।” অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ ﷺ ওহীর মাধ্যমে যা হুকুম পেয়েছেন তাই তামিল করেছেন। পরে যখন জিহাদের হুকুম দিয়ে ওহী আসলো, তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, “এখন (সময় হয়েছে) ওদের উপর আক্রমণ করার, ওরা এখন থেকে আর আমাদের হামলা করতে আসবে না। বরং আমরাই ওদের দিকে আমাদের বাহিনী নিয়ে এগিয়ে যাব।” (বুখারী)
রাসূলুল্লাহ ﷺ আরো বলেছেন, “কিয়ামতের আগে আমাকে পাঠানো হয়েছে তরবারি হাতে যতক্ষণ পর্যন্ত না কোন শরীক ছাড়াই এক আল্লাহর ইবাদত করা হচ্ছে। আমার বর্শার ছায়ায় আমার জন্য রাখা হয়েছে জীবিকা এবং আমার শত্রুর জন্য আছে অপমান এবং লাঞ্ছনা।” (মুসনাদে আহমেদ)
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “আমাকে মানুষের সাথে যুদ্ধ করতে বলা হয়েছে যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং মুহাম্মাদ ﷺ আল্লাহর রাসূল, তারা সালাত কায়েম করে এবং যাকাত আদায় করে। আর তারা যদি এটা করে, তাহলে তাদের জান ও মাল আমার কাছ থেকে নিরাপদ, শুধুমাত্র ইসলামের শরীয়াহর দাবী ব্যতীত; আর তাদের হিসাব আল্লাহর কাছে।” (মুসলিম)
এখনও যেহেতু জিহাদ এবং ক্বিতালের আয়াত জারি আছে, তখন আমরা কিভাবে হিজরতের আগে রাসূলূল্লাহ ﷺ এর অবস্থাকে দুর্বল অবস্থায় জিহাদ না করার দলিল হিসেবে বর্ণনা করতে পারি? কোথাও কি এমন কোন স্পষ্ট দলিল আছে যে, দারুল ইসলাম না থাকলে তাগুতকে অপসারণ করতে জিহাদ করা যাবে না? অথচ তাফসীরের একটি উসূল হলো সার্বজনীন আয়াতের অর্থকে সর্বসময়ে এবং পরিস্থিতিতে অভিন্নভাবে বুঝতে হবে এবং ব্যবহার করতে হবে, যদি না অন্য কোন স্পষ্ট দলিল দ্বারা এই অর্থকে কোন নির্দিষ্ট সময় বা পরিস্থিতির জন্য সীমাবদ্ধ করা হয়। জিহাদ ও ক্বিতালের ব্যাপারে যে আয়াত এবং হাদিসগুলো রয়েছে সেগুলোর হুকুম এবং উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট নয় কি?
“তাদের চুক্তির পর তারা যদি তোমাদের দ্বীন সম্বন্ধে বিদ্রূপ করে তবে কাফিরদের প্রধানদের সহিত যুদ্ধ কর; এরা এমন লোক যাদের কোন প্রতিশ্রুতি রইল না; যেন তারা নিবৃত্ত হয়।” (সূরা তাওবা ৯:১২)
“তোমরা তাদের সহিত যুদ্ধ করবে। তোমাদের হস্তে আল্লাহ উহাদেরকে শাস্তি দিবেন, উহাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন, উহাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন ও মু’মিনদের চিত্ত প্রশান্ত করবেন, এবং তিনি উহাদের অন্তরের ক্ষোভ দূর করবেন। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা তার প্রতি ক্ষমাপরায়ণ হন, আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” (সূরা তাওবা ৯:১৪-১৫)
যদি কোন স্থানে তাগুতকে হঠানোর মতো মুসলিমদের হাতে শক্তি থাকে, তাহলে কি বলতে পারবে যে, নুসরাহ পাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা জিহাদ করবে না এবং তাগুতকে বহাল তবিয়তে থাকতে দিবে? না, কারণ এটা রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর কথার সম্পূর্ণ বিপরীতে যায় “কিয়ামতের আগে তরবারি হাতে আমাকে পাঠানো হয়েছে যতক্ষণ না কোন শরীক ছাড়াই আল্লাহর ইবাদত করা হয়।” এবং এ কথা আল্লাহর কথারও বিরুদ্ধে যায়ঃ
“এবংতোমরা তাদের বিরুদ্ধে ক্বিতাল করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবংআল্লাহর দ্বীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যদি তারা বিরত হয় তবে তারাযা করে আল্লাহ তো তার সম্যক দ্রষ্টা।” (সূরা আনফাল ৮:৩৯)
সুতরাং মুসলিমদের অন্তত ক্বিতাল করার জন্য প্রস্তুতিটুকু অবশ্যই নিতে হবে, কারণ এটাই আল্লাহর হুকুম।
“তোমরা তাদের মুকাবিলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ব-বাহিনী প্রস্তুত রাখবে এতদ্বারা তোমরা সন্ত্রস্ত করবে আল্লাহর শত্রুকে, তোমাদের শত্রুকে এবং এতদ্ব্যতীত অন্যদেরকে যাহাদেরকে তোমরা জান না, আল্লাহতাহাদেরকে জানেন। আল্লাহর পথে তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে উহার পূর্ণপ্রতিদান তোমাদেরকে দেয়া হবে এবং তোমাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।” (সূরা আনফাল ৮:৬০)
“উহারা বাহির হতে চাইলে নিশ্চয়ই ইহার জন্য প্রস্তুতির ব্যবস্থা করত, কিন্তু উহাদের অভিযাত্রা আল্লাহর মনঃপূত ছিল না। সুতরাং তিনি উহাদেরকে বিরত রাখেন এবং উহাদেরকে বলা হয়, যারা বসে আছে তাদের সহিত বসে থাক।” (সূরা তাওবা ৯:৪৬)
আল্লাহ যদি চান, তাহলে তিনি এই প্রস্তুতির ভিতর দিয়েই আমাদের তাঁর দ্বীনের আনসার হওয়ার জন্য তৈরি করবেন।
‘আল্লাহর সন্তুষ্টির সন্ধানে’ (in pursuit of allah’s pleasure) বইটির লেখকগণের বক্তব্য কতই না সত্যঃ “জিহাদের বিষয়ে আলোচনা করতে আমার দুঃখ হয়।” আমি ভাইবোনদের অনুনয় করছি, আপনারা ঐ বইয়ের জিহাদ অধ্যায়টি পড়ুন। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের তাদের মতো করে দিয়েন না যারা নিজেরা জিহাদ থেকে সরে থাকে এবং অন্যদেরও জিহাদ করতে নিষেধ করে। কারণ, ক্বিতালের মাধ্যমেই আল্লাহ আমাদের অপমান থেকে মুক্ত করে মর্যাদার আসন দেন। ক্বিতাল এবং এর প্রস্তুতিই হলো শয়তানের অনুসারীদের ভয় দেখানোর একমাত্র উপায়। আমরা আজ কতটা নিচে নেমে গিয়েছি যে, শুকর ও বানরের উত্তরসূরিরা এখন আমাদের বোনদের অপমান করার স্পর্ধা পোষণ করে? আমাদের আলেমগণ, যাঁরা নবীদের উত্তরসূরি, তাঁদের বন্দী করার সাহস দেখায়? আমাদের উপর এই অপমান নেমে এসেছে কারণ আমরা আল্লাহর হুকুম পালন করিনি – অর্থাৎ ক্বিতালের প্রস্তুতি নেইনি যার মাধ্যমে শত্রুদের ভীত সন্ত্রস্ত করা যাবে।
“সুতরাং তারা আল্লাহর হুকুমে উহাদেরকে পরাভূত করল; দাউদ জালূতকে হত্যা করল, আল্লাহতাকে রাজত্ব ও হিম্মত দান করলেন এবং যা তিনি ইচ্ছা করলেন তা তাকে শিক্ষাদিলেন। আল্লাহ যদি মানবজাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন তবেপৃথিবী বিপর্যস্ত হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ জগতসমূহের প্রতি অনুগ্রহশীল।” (সূরা বাকারা ২:২৫১)
ইমাম আল-হালিমী তাঁর সুয়াব-আল-ঈমান বইতে লিখেছেনঃ
‘আল্লাহ সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি যদি মু’মিনদের দ্বারা কাফিরদের দমন না করে রাখতেন অথবা মু’মিনদের দ্বীন রক্ষা করার ও কাফির বাহিনীকে ধ্বংস করার কর্তৃত্ব না দিতেন – তাহলে পৃথিবীতে কুফরের রাজত্ব কায়েম হতো এবং সত্য দ্বীন হারিয়ে যেতো। এখান থেকেই প্রমাণ হয় যে, ইসলামের টিকে থাকার কারণ হলো জিহাদ আর এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় অবশ্যই ঈমানের একটি স্তম্ভে হওয়ার উপযুক্ত।’
ইবনে উমর (রাঃ) বর্ণনা করেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি, “তোমরা যদি নিজেদের মধ্যে ব্যবসা করতে থাকো, আর ষাঁড়ের লেজের পেছনে চলতে থাকো, এবং কৃষক হিসেবে থেকেই সন্তুষ্ট হয়ে যাও এবং জিহাদ ভুলে যাও; তাহলে আল্লাহ তোমাদের উপর অপমান চাপিয়ে দিবেন যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের দ্বীনে ফিরে যাও।” (আবু দাঊদ – সহীহ)
এই হাদীসের অর্থ হলো, যদি মানুষ ব্যবসা, কৃষিকাজ বা এরকম অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে জিহাদকে অবহেলা করে, তাহলে আল্লাহ তাদের উপর তাদের শত্রুদের চাপিয়ে দেবেন যারা তাদের জন্য অপমান বয়ে আনবে যা কখনো দূর করা যাবে না, যতক্ষণ না তারা তাদের আসল কাজ অর্থাৎ কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ, তাদের প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন, দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করা, মু’মিনদের বিজয়ী করা, আল্লাহর বাণীকে উচ্চে তুলে ধরা, কুফর এবং কাফিরদের অপমানিত করা, ইত্যাদিতে ফিরে যায়। এই হাদীস থেকে দেখা যাচ্ছে যে, জিহাদ ত্যাগ করা মানে ইসলাম ত্যাগ করা, কারণ রাসূল ﷺ বলেছেন, “যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের দ্বীনে ফিরে যাও।”
আবু বকর (রাঃ) বলেন, “যদি মানুষ জিহাদ ছেড়ে দেয়, তাহলে আল্লাহ তাদের উপর সবধরনের আযাব দিবেন।” (তাবারানি, নির্ভরযোগ্য সূত্র)
ইবনে আসাকির বলেন, যখন আবু বকর খলিফা হলেন তখন উনি মিম্বারে দাঁড়িয়ে বললেন, “যদি মানুষ জিহাদ ছেড়ে দেয়, তাহলে আল্লাহ তাদের উপর দরিদ্রতা চাপিয়ে দিবেন।”
আরও পড়ুন
তৃতীয় পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------ পঞ্চম পর্ব