উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আগামী মার্চে দু'বছর পূর্ণ করবে যোগী আদিত্যনাথ। সেই খুশিতে নিজেই টুইট করে নিজের রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কথা বলেছে। শেয়ার করতে গিয়ে নিজের গুণগান গাইল হিন্দুত্ববাদী মুখ্যমন্ত্রী।
সংবাদ মাধ্যম ‘এই সময়’ নিউজের বরাতে জানা যায়,
গত বৃহস্পতিবার প্রথম টুইটে যোগী আদিত্যনাথের দাবি, তাঁর শাসনকালে রাজ্যে কোনও দাঙ্গা হয়নি।
मार्च में मेरे शासनकाल के दो वर्ष पूरे होंगे। मेरे अब तक के शासन में, कोई दंगा नहीं हुआ है।
— Yogi Adityanath (@myogiadityanath) 1546504343000
দ্বিতীয় টুইটে তাঁর দাবি, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার দারুণ উন্নতি হয়েছে। সমস্ত সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে তাঁর সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। রাজ্যবাসীরা নিজেদের অত্যন্ত নিরাপদ বলে মনে করেন।
हमने संगठित किस्म के अपराध पर एक हद तक काबू पा लिया है। हमने कानून के राज को मजबूत बनाया है। पारिवारिक झगड़े या नि… https://t.co/dPBri90UVi
— Yogi Adityanath (@myogiadityanath) 1546504410000
যোগীর এমন দাবি অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাঁর প্রথম টুইটটি ২ হাজার বার রিটুইট হয়েছে। পরেরটিও ২৪৮ বার রিটুইট হয়েছে। যদিও তথ্য ও পরিসংখ্যান বলছে, এই দাবি একেবারেই বেমানান।
কেননা উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে বিজেপি সরকার ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ক্ষমতায় এসেছে। হিন্দুত্ববাদের অন্যতম মুখ যোগীর রাজ্যে গো-হিংসা সংক্রান্ত ঘটনায় বাকী সব রাজ্যকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। ফ্যাক্টচেকার ডট ইন নামক এক সংস্থা চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। দেশের সবচেয়ে জনবহুল এই রাজ্যেই সমস্ত দেশের মোট গো-হিংসা সংক্রান্ত ঘটনার ৬৯ শতাংশই ঘটেছে ।
তাদের তথ্যানুযায়ী ২০১৮ সালে সারা দেশে ২১টি হিংসার ঘটনা ঘটেছে। তাতে মারা গিয়েছেন ১০ জন। যার মধ্যে সারা দেশের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ গরু সংক্রান্ত হিংসা ও হামলায় ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। সারা দেশের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ এক নম্বরে আছে। এরাজ্যে এবছর ৪ জন মারা গিয়েছে। পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও গতবছরে পশ্চিমবঙ্গে ৫ জন গো-হিংসার ঘটনায় মারা গিয়েছিল। ফলে ২০১৭ সালে বাংলা প্রথম নম্বরের শিরোপা পেয়েছিল।
২০১৭ সালের মার্চে আদিত্যনাথ সরকারে আসার আগে উত্তরপ্রদেশে পাঁচটি গো-হিংসা সংক্রান্ত ঘটনা ঘটে। তারপরে এবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১টি হিংসার ঘটনা ঘটেছে। যা সারা দেশে সর্বোচ্চ।
কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশে ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিং মারা যায়, গো-রক্ষকদের হাতে। ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে। এই পুলিশ ইনস্পেক্টর গো-রক্ষকদের হাতে মারা যাওয়া মুহম্মদ আখলাকের খুনের তদন্ত করছিল।
Yogi Adityanath
हमने संगठित किस्म के अपराध पर एक हद तक काबू पा लिया है। हमने कानून के राज को मजबूत बनाया है। पारिवारिक झगड़े या निजी दुश्मनी के कुछ मामलों को छोड़ दें तो फिर पूरे प्रदेश में अब लोग सुरक्षित हैं।
তার রাজ্যেই সমস্ত দেশের মোট গো-হিংসা সংক্রান্ত ঘটনার ৬৯ শতাংশই ঘটেছে ।
পরিসংখ্যান বলছে--
২০১৭-র মে মাসে, তাঁর শপথ নেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই শাহরানপুরে জাতিবিদ্বেষের জেরে একজন নিহত হন। বহু মানুষ আহত হয়েছিলেন।
২০১৮-র জানুয়ারি মাসে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কাশগঞ্জে গোষ্ঠীহিংসার ঘটনা সামনে আসে। এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
গত বছরের ডিসেম্বরে বুলন্দশহরে গো-হত্যা নিয়ে বিক্ষোভে তিনজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে একজন পুলিশ অফিসার।
২০১৮ শেষ হওয়ার মুহূর্তে গাজিপুরে অশান্তি হয়। মৃত্যু হয় একজনের। NCRB-র পরিসংখ্যান এও বলছে যে, গত বছর ভারতে সংঘটিত ৯৩টি হিংসার ঘটনার মধ্যে ২৭টি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে।
এরইসঙ্গে ২০১৭ সালে যোগী ক্ষমতায় আসার পর ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৫৪০ জন আহত হয়েছেন বিভিন্ন সন্ত্রাসের ঘটনায়। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তথ্যসূত্রও বলছে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ২০১৭ সালে সবচেয়ে উপরে ছিল উত্তরপ্রদেশের নাম।