ডিজিটাল আর্কাইভ থেকে তথ্য নিশ্চিহ্নকরণ : কাশ্মীরের ‘ইতিহাস বিকৃতি’ ও ‘মুসলিম গণহত্যা’ বৈধকরণে হিন্দুত্ববাদীদের নতুন যুদ্ধকৌশল
হিন্দুত্ববাদী ভারতের কাশ্মীরের ‘ইতিহাস বিকৃতকরণ’ কোন নতুন বিষয় নয়। এটি তাদের বেশ পুরনো অভ্যাস এবং এই কাজে তারা বেশ পারদর্শীও। আর এই কাজটি তারা এতটাই সুনিপুন ভাবে আঞ্জাম দেয় যে, আজ বিশ্বের অনেক মানুষের কাছেই অজানা কাশ্মীরের আসল ইতিহাস। সাংস্কৃতিক আচার-অনুষ্ঠান, নাটক-সিনেমা, গান-বাজনা থেকে শুরু করে সাংবাদিকতা, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রতিরক্ষা- প্রতিটি আলাদা আলাদা ফ্রন্টেই তারা আজ যুদ্ধরত কাশ্মীরি মুসলিমদের বিরুদ্ধে। আর এখন কাশ্মীরের ইতিহাস মুছে দিতে এরই মধ্যে তারা বেছে নিয়েছে এক নতুন কৌশল।
বর্তমানে কাশ্মীরের ডিজিটাল আর্কাইভ থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী সহ প্রশাসনের সকল কুকীর্তির নিউজ-প্রতিবেদন সমূহ মুছে দিয়েছে তারা। তাদের উদ্দেশ্য হল কাশ্মীরের ‘ইতিহাস বিকৃতি’ করা, কাশ্মীরি মুসলিমদের গণহত্যাকে বৈধ করা এবং সেই সাথে আগামী প্রজন্মের সামনে নিজেদের কাশ্মীরের ইতিহাসের ‘নায়ক’ হিসেবে তুলে ধরা।
কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন বাতিলের পর সেখানকার মুসলিমদের প্রায় সকল মৌলিক অধিকার থেকেই বঞ্চিত করে রেখেছে হিন্দুত্ববাদী ভারত। শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের পর কেড়ে নেওয়া হয়েছে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাটুকুও। যারাই উগ্র মোদি সরকার কিংবা তাদের সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে, যারাই হিন্দুত্ববাদীদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছে, তারাই আখ্যায়িত হয়েছে ‘সন্ত্রাসী’ নামে। বিনা অপরাধে তাদের করা হয়েছে গ্রেপ্তার, গুম কিংবা বিচার বহির্ভূতভাবে খুন।
কাশ্মীরের ডিজিটাল আর্কাইভ থেকে হিন্দুত্ববাদী ভারতীয়দের মানবাধিকার লঙ্ঘন সহ আরও বিভিন্ন অপকর্মের ব্যপারে করা বিভিন্ন সংবাদ-প্রতিবেদন সমূহ মুছে ফেলাকে কাশ্মীরি সাংবাদিকরা দেখছেন ‘ওয়ার অন মেমরি’ বা ‘স্মৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ হিসেবে। আর সাংবাদিকদের এমন নামকরণ খুবই স্বাভাবিক। কারণ ইতিমধ্যেই কাশ্মীরি মুসলিমদেরকে সংখ্যালঘু হিসেবে চিহ্নিত করে তাদেরকে গণহত্যার মাধ্যমে নিশ্চিহ্নকরণের সকল পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছে হিন্দুত্ববাদীরা। এখন বাকী আছে শুধু কাশ্মীরে নিজেদের সকল অপকর্মের প্রমাণ সমূহ ধ্বংস করে দেওয়া। যেটা তারা করছে ডিজিটাল আর্কাইভ থেকে সকল প্রতিবেদন ও সংবাদ মুছে দেওয়ার মাধ্যমে। এছাড়াও কাশ্মীরি মুসলিমদের আওয়াজ যেন বহির্বিশ্ব শুনতে না পায়, সেটা নিশ্চিত করতে দখলদার হিন্দুত্ববাদীরা জারি রেখেছে কাশ্মীরি সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার এবং বিভিন্ন কাশ্মীরি নিউজ এজেন্সি বন্ধ করার প্রক্রিয়া।
কাশ্মীরি মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা, হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা এবং কাশ্মীরে নিজেদের গণহত্যাকে বৈধকরণের জন্য যত ধরণের প্রচেষ্টা আছে, তার কোন কিছুই বাদ রাখছে না হিন্দুত্ববাদী ভারত। পরবর্তী প্রজন্মকে নিজেদের হিন্দুয়ানী আদর্শে আদর্শায়িত করার মাধ্যমে তাদের নিজেদের দিকে মেরুকরণ করে, তারা চায় একটি নতুন ইতিহাস গড়তে। আর সেটা একমাত্র সম্ভব নিজেদের পূর্বের কালো ইতিহাসের অবশিষ্ট সকল চিহ্ন ধ্বংস করার মাধ্যমে। কারণ একটি জাতির জন্য তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলো সে জাতির যুব সমাজ। আর কোন জাতিকে যদি কেউ ধ্বংস করতে চায়, তাহলে সবার আগে দরকার সে জাতির যুবসমাজকে ধ্বংস করা। আর যুবসমাজ ধ্বংসের অন্যতম একটি হাতিয়ার হলো তাদেরকে এমন এক ইতিহাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, যেখানে তারা নিজেদের জানবে একটি ‘কাপুরুষ’ জাতি হিসেবে। যেখানে দমনকারীকেই তারা গ্রহণ করবে নিজেদের বন্ধু বা প্রভু হিসেবে।
কাশ্মীরের গণহত্যা থামানো, হিন্দুত্ববাদীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন প্রতিরোধ করা এবং কাশ্মীরি যুবসমাজ সহ সারা বিশ্বকে কাশ্মীরি মুসলিমদের আসল ইতিহাস জানানোর জন্য এখনই সময় বিশ্বের সকল মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। কারণ হিন্দুত্ববাদীরা আজ ঐক্যবদ্ধ। মুসলিমদের নিশ্চিহ্ন করতে তারা নিয়ে রেখেছে সকল প্রস্তুতি। তাই মুসলিমদেরও এখন দরকার যার যার অবস্থান থেকে কাশ্মীরি মুসলিমদের পক্ষে আওয়াজ তোলা, হিন্দুত্ববাদীদের এক একটি প্রোপ্যাগান্ডার চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সবার সামনে তাদের আসল রূপ উন্মোচিত করার। আর সেই সাথে আমাদের মুসলিম বিশ্বের সকল আলেম-উলামা এবং মুসলিম চিন্তাবীদদের দরকার নিজেদের মাঝে তুচ্ছ দলাদলি ভুলে একত্রিত হওয়ার। না হলে সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন কাশ্মীরি মুসলিমদেরকেও বরণ করে নিতে হবে উইঘুর মুসলিমদের ভাগ্য।
প্রতিবেদক : আবু-উবায়দা
হিন্দুত্ববাদী ভারতের কাশ্মীরের ‘ইতিহাস বিকৃতকরণ’ কোন নতুন বিষয় নয়। এটি তাদের বেশ পুরনো অভ্যাস এবং এই কাজে তারা বেশ পারদর্শীও। আর এই কাজটি তারা এতটাই সুনিপুন ভাবে আঞ্জাম দেয় যে, আজ বিশ্বের অনেক মানুষের কাছেই অজানা কাশ্মীরের আসল ইতিহাস। সাংস্কৃতিক আচার-অনুষ্ঠান, নাটক-সিনেমা, গান-বাজনা থেকে শুরু করে সাংবাদিকতা, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রতিরক্ষা- প্রতিটি আলাদা আলাদা ফ্রন্টেই তারা আজ যুদ্ধরত কাশ্মীরি মুসলিমদের বিরুদ্ধে। আর এখন কাশ্মীরের ইতিহাস মুছে দিতে এরই মধ্যে তারা বেছে নিয়েছে এক নতুন কৌশল।
বর্তমানে কাশ্মীরের ডিজিটাল আর্কাইভ থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী সহ প্রশাসনের সকল কুকীর্তির নিউজ-প্রতিবেদন সমূহ মুছে দিয়েছে তারা। তাদের উদ্দেশ্য হল কাশ্মীরের ‘ইতিহাস বিকৃতি’ করা, কাশ্মীরি মুসলিমদের গণহত্যাকে বৈধ করা এবং সেই সাথে আগামী প্রজন্মের সামনে নিজেদের কাশ্মীরের ইতিহাসের ‘নায়ক’ হিসেবে তুলে ধরা।
কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন বাতিলের পর সেখানকার মুসলিমদের প্রায় সকল মৌলিক অধিকার থেকেই বঞ্চিত করে রেখেছে হিন্দুত্ববাদী ভারত। শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের পর কেড়ে নেওয়া হয়েছে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাটুকুও। যারাই উগ্র মোদি সরকার কিংবা তাদের সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে, যারাই হিন্দুত্ববাদীদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছে, তারাই আখ্যায়িত হয়েছে ‘সন্ত্রাসী’ নামে। বিনা অপরাধে তাদের করা হয়েছে গ্রেপ্তার, গুম কিংবা বিচার বহির্ভূতভাবে খুন।
কাশ্মীরের ডিজিটাল আর্কাইভ থেকে হিন্দুত্ববাদী ভারতীয়দের মানবাধিকার লঙ্ঘন সহ আরও বিভিন্ন অপকর্মের ব্যপারে করা বিভিন্ন সংবাদ-প্রতিবেদন সমূহ মুছে ফেলাকে কাশ্মীরি সাংবাদিকরা দেখছেন ‘ওয়ার অন মেমরি’ বা ‘স্মৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ হিসেবে। আর সাংবাদিকদের এমন নামকরণ খুবই স্বাভাবিক। কারণ ইতিমধ্যেই কাশ্মীরি মুসলিমদেরকে সংখ্যালঘু হিসেবে চিহ্নিত করে তাদেরকে গণহত্যার মাধ্যমে নিশ্চিহ্নকরণের সকল পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছে হিন্দুত্ববাদীরা। এখন বাকী আছে শুধু কাশ্মীরে নিজেদের সকল অপকর্মের প্রমাণ সমূহ ধ্বংস করে দেওয়া। যেটা তারা করছে ডিজিটাল আর্কাইভ থেকে সকল প্রতিবেদন ও সংবাদ মুছে দেওয়ার মাধ্যমে। এছাড়াও কাশ্মীরি মুসলিমদের আওয়াজ যেন বহির্বিশ্ব শুনতে না পায়, সেটা নিশ্চিত করতে দখলদার হিন্দুত্ববাদীরা জারি রেখেছে কাশ্মীরি সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার এবং বিভিন্ন কাশ্মীরি নিউজ এজেন্সি বন্ধ করার প্রক্রিয়া।
কাশ্মীরি মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা, হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা এবং কাশ্মীরে নিজেদের গণহত্যাকে বৈধকরণের জন্য যত ধরণের প্রচেষ্টা আছে, তার কোন কিছুই বাদ রাখছে না হিন্দুত্ববাদী ভারত। পরবর্তী প্রজন্মকে নিজেদের হিন্দুয়ানী আদর্শে আদর্শায়িত করার মাধ্যমে তাদের নিজেদের দিকে মেরুকরণ করে, তারা চায় একটি নতুন ইতিহাস গড়তে। আর সেটা একমাত্র সম্ভব নিজেদের পূর্বের কালো ইতিহাসের অবশিষ্ট সকল চিহ্ন ধ্বংস করার মাধ্যমে। কারণ একটি জাতির জন্য তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলো সে জাতির যুব সমাজ। আর কোন জাতিকে যদি কেউ ধ্বংস করতে চায়, তাহলে সবার আগে দরকার সে জাতির যুবসমাজকে ধ্বংস করা। আর যুবসমাজ ধ্বংসের অন্যতম একটি হাতিয়ার হলো তাদেরকে এমন এক ইতিহাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, যেখানে তারা নিজেদের জানবে একটি ‘কাপুরুষ’ জাতি হিসেবে। যেখানে দমনকারীকেই তারা গ্রহণ করবে নিজেদের বন্ধু বা প্রভু হিসেবে।
কাশ্মীরের গণহত্যা থামানো, হিন্দুত্ববাদীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন প্রতিরোধ করা এবং কাশ্মীরি যুবসমাজ সহ সারা বিশ্বকে কাশ্মীরি মুসলিমদের আসল ইতিহাস জানানোর জন্য এখনই সময় বিশ্বের সকল মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। কারণ হিন্দুত্ববাদীরা আজ ঐক্যবদ্ধ। মুসলিমদের নিশ্চিহ্ন করতে তারা নিয়ে রেখেছে সকল প্রস্তুতি। তাই মুসলিমদেরও এখন দরকার যার যার অবস্থান থেকে কাশ্মীরি মুসলিমদের পক্ষে আওয়াজ তোলা, হিন্দুত্ববাদীদের এক একটি প্রোপ্যাগান্ডার চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সবার সামনে তাদের আসল রূপ উন্মোচিত করার। আর সেই সাথে আমাদের মুসলিম বিশ্বের সকল আলেম-উলামা এবং মুসলিম চিন্তাবীদদের দরকার নিজেদের মাঝে তুচ্ছ দলাদলি ভুলে একত্রিত হওয়ার। না হলে সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন কাশ্মীরি মুসলিমদেরকেও বরণ করে নিতে হবে উইঘুর মুসলিমদের ভাগ্য।
প্রতিবেদক : আবু-উবায়দা