Announcement

Collapse
No announcement yet.

রাশিয়ার উপর পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবরোধ: নতুন অর্থব্যবস্থার সম্ভাবনা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • রাশিয়ার উপর পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবরোধ: নতুন অর্থব্যবস্থার সম্ভাবনা

    রাশিয়ার উপর পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবরোধ: নতুন অর্থব্যবস্থার সম্ভাবনা

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে পশ্চিমারা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র ও অংশীদারেরা ইতিমধ্যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব কঠিন অর্থনৈতিক ও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে। এ ছাড়া তারা কার্যকরভাবে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আটকে দিয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি রাশিয়ার ওপর একটি বিরাট আঘাত।

    সুইজারল্যান্ড তার ব্যাংকে গচ্ছিত অন্য দেশের অর্থ সাধারণত জব্দ করে না। কিন্তু সেই দেশটিও রাশিয়ার সম্পদ জব্দ করে মস্কোর ওপর নতুন আরোপিত নিষেধাজ্ঞায় অংশ নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

    তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়া ডলার থেকে নিজেকে অনেকটা সরিয়ে রেখে তার রিজার্ভকে বৈচিত্র্যময় করেছে। ডলারের বিকল্প হিসেবে রাশিয়া আগে থেকেই চীনের রেনমিনবি এবং অন্য কয়েকটি দেশের মুদ্রায় তাদের রুবল ভাঙিয়ে রিজার্ভ গড়েছে। এটি না হলে রাশিয়াকে প্রচণ্ড অর্থনৈতিক চাপে পড়তে হতো।

    রাশিয়া অর্থনৈতিক লড়াই মোকাবিলা করতে যে পদক্ষেপই নিয়ে থাকুক না কেন, পশ্চিমের তথা প্রায় গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক কেন্দ্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেসব ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা ভবিষ্যতের আর্থিক বিষয় এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রাব্যবস্থার জন্য কী বয়ে আনবে, সেটিও এক গুরুতর প্রশ্ন।

    রাশিয়ার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার তাৎক্ষণিক প্রভাব হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত আধিপত্য সামনে উঠে আসছে। আর্থিক নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়া যত চাপে পড়ছে, বিশ্বের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব তত বেশি ধরা পড়ছে।

    এটি এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অনেক উদীয়মান অর্থনীতির দেশকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে তোলার গতানুগতিক পদ্ধতির বিকল্প খুঁজতে বাধ্য করছে।

    ১৯৯৭-৯৮ সালে এশিয়ায় যে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছিল, তা অনেক দেশকে এ ধরনের বিকল্প পন্থা উপলব্ধি করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। এখন রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে এবং সে কারণে দেশটি তার বৈদেশিক মুদ্রাকে রুবলে রূপান্তর করার ক্ষমতা হারিয়েছে। এ কারণে ডলারের রিজার্ভ বাড়ানোর প্রচলিত কৌশলটি এখন রাশিয়াকে উপকৃত করতে পারছে না।

    একই কথা চীনের ক্ষেত্রেও খাটে। রাশিয়ার মতো চীনও যদি পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে গিয়ে আগ্রাসী পদক্ষেপ নেয়, তাহলে পশ্চিমারা কী অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেবে, তা নতুন করে ভেবে দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনে অভিযান চালিয়েছে, একইভাবে চীন যদি তাইওয়ানের ওপর হামলা করে, তাহলে বৈশ্বিক অর্থব্যবস্থা থেকে চীনকে অংশত হলেও বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে ভাবা হয়। এ কারণে কিছু দেশ পশ্চিমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন মুদ্রাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা যায় কি না তা নিয়ে ভাবছে। যদি চীনা মুদ্রা রেনমিনবি, রুশ মুদ্রা রুবল, এবং অন্য কয়েকটি মুদ্রা অন্যান্য দেশে ডলারের মতো বিপুল পরিমাণে জমানো ও ভাঙানোর যোগ্য হয়ে উঠত, তাহলে তা আরেকটি বিকল্প আন্তর্জাতিক মুদ্রাব্যবস্থা চালু করত। সেটি হলে রাশিয়া এখন যেভাবে বেকায়দায় পড়েছে, তা তাকে পড়তে হতো না।

    উল্লেখ যে, চীন-রাশিয়া ও অন্যরা পশ্চিমা অর্থনৈতিক আগ্রাসন থেকে বাঁচতে যে পদক্ষেপই নেক না কেন- এ বিষয়ে মুসলিমদের গুরুত্ব দিয়ে বুঝা উচিত যে, পশ্চিমা জোট বা চীন-রাশিয়া জোট উভয় পক্ষেই ইসলাম ও মুসলিমদের প্রশ্নে চিরাচরিত শত্রু৷ মুসলিমরা যে দিকেই যাক না কেন প্রত্যেকেই নিজেদের স্বার্থের বিপক্ষে পৌঁছালে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করবে এতে কোন সন্দেহ নেই। আমেরিকা আফগানিস্তানের রিজার্ভ আটকে দেয়ার মধ্য দিয়ে এটি আরও স্পষ্ট হয়েছে।

    এজন্য পশ্চিমা অর্থব্যবস্থার পরিবর্তে মুসলিমদের কোরআন সুন্নাহভিত্তিক সোনা ও রুপার অর্থব্যবস্থা গড়ে তুলার আহ্বান জানিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞ আলিমরা।

    লেখক: ইউসুফ আল-হাসান

    তথ্যসূত্র:
    ______

    Will Sanctioning Russia Upend the Monetary System?-


    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org
Working...
X