হাসপাতালেও অভিযান : কাশ্মীর যেন এক মৃত্যুপুরী
উইলিয়াম ডব্লিউ বেকার এর গ্রন্থ “Kashmir, Happy Valley, Valley of Death থেকে অনুদিত।
আমেরিকান এই লেখক ১৯৯৪ সালে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করেন।
ডাক্তারদের বাছাইকৃত তিনটি বড় হাসপাতালেই অভিযান চালায় ভারতীয় সেনারা। এই অভিযানগুলো হাসপাতালে ডাক্তারদের অবৈধ অস্ত্র রাখা এবং স্বাধীনতাকামীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগেই চালানো হয়। এই অভিযান চালানোর সময় হাসপাতালগুলি পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। অভিযান চলাকালীন হাসপাতালের কর্মীদেরকে রোগীদের সেবা দান থেকে বিরত রাখা হয়। সকল কর্মীদের তাদের কোয়ার্টার এবং অফিসে আটকে রাখা হয়, যার দরুন হাসপাতালের গুরুতর রোগীদের অস্ত্রোপচার করার টেবিলেই মৃত্যুর জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা অভিযান চালানোর নাম করে তারা (ভারতীয় সেনারা) প্রায়ই রোগীদের ওপরেও শারীরিক নির্যাতন চালাতো। ঠিক এমনই একটি ঘটনার ভুক্তভোগী ৪৫ বছর বয়সী মিস্ পারভীনা শেইখ, যিনি ছিলেন একজন ক্যান্সারের রোগী। তিনি এবং তাঁর সাথে অন্যান্য গুরুতর রোগীদের বেড ঘোরাতে থাকে তারা। এমনকি রোগীদের মনিটর, ইন্ট্রাভেনাস লাইন এবং ক্যাথেটারগুলিও শিরা থেকে ছিঁড়ে ফেলা হয়। উচ্চস্বরে হাসতে হাসতে তারা রোগীদের জিজ্ঞাসা করতে থাকে “অস্ত্রগুলি কোথায়?”। কিন্তু রোগীদের আর্তচিৎকারে ঢাকা পড়ে যায় তাদের হাসিগুলো।
পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী জনাব আব্দুল-রহিম বিপাকীয় অ্যাসিডোসিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সাথে সাথে লিভার এবসেসের রোগেও ভুগছিলেন। তিনি ছিলেন লাইফ সেভিং আই/ভি লাইনে। যখন তাঁকে বেড সহ বারবার ঘোরানো হচ্ছিলো তখন তাঁর আই/ভি লাইনটি ছিঁড়ে ফেলা হয়। প্রায় এক ঘন্টা তাঁর ওপর এমন নিপীড়ন চালায় ভারতীয় সেনারা। সে সময় কর্তব্যরত একজন চিকিৎসককে পুনরায় তাঁর আই/ভি লাইনটি চালু করতেও বাধা দেওয়া হয়। যার ফলে তিনি মারাত্মক কার্ডিয়াক এরেস্টের শিকার হন।
লেখক হাসপাতালের ছয়টি পরিবারের সাথে দেখা করেছিলাম যাদের কেউ না কেউ ভারতীয় সেনাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গিয়েছেন। তবে যেই অস্ত্র সংরক্ষণ এবং স্বাধীনতাকামীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে হাসপাতালগুলোতে অভিযান চালানো হয় তার কোন কিছুই সেখানে পাওয়া যায় নি। এমনকি ডাক্তাররা এবং হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীরাও কখনও কোন স্বাধীনতাকামীদের ইচ্ছাকৃতভাবে সেখানে লুকিয়ে রাখে নি। ‘সন্দেহভাজন মুজাহিদিনদের’ তারা অস্ত্রোপচারের পরপরই ধরে নিয়ে যেত। কখনও কখনও তাদের অস্ত্রোপচার চলাকালীন অবস্থাতেই নিয়ে যাওয়া হতো। তাদের অনেকেই আর কখনও ফিরে আসে নি। যারা ফিরে এসেছিলো তারাও ছিলো প্রায় মৃত।
কাশ্মীরে ভারতীয় দখলদার বাহিনীর হিংস্রতার সামান্য কিছু নমুনামাত্র এই ঘটনায় উঠে এসেছে। এমন শত-সহস্র ঘটনাই গত কয়েক দশক ধরে এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। আর সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ ব্যতীত হিন্দুত্ববাদীদের কবল থেকে কাশ্মীর তথা ভারতীয় মুসলিমদের মুক্তির আর ভিন্ন কোন উপায় নেই বলে মনে করেন ইসলামি চিন্তাবীদগণ।
অনুবাদক ও সংকলক : ওবায়দুল ইসলাম
তথ্যসূত্র : https://tinyurl.com/2rtb3c4k
উইলিয়াম ডব্লিউ বেকার এর গ্রন্থ “Kashmir, Happy Valley, Valley of Death থেকে অনুদিত।
আমেরিকান এই লেখক ১৯৯৪ সালে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করেন।
ডাক্তারদের বাছাইকৃত তিনটি বড় হাসপাতালেই অভিযান চালায় ভারতীয় সেনারা। এই অভিযানগুলো হাসপাতালে ডাক্তারদের অবৈধ অস্ত্র রাখা এবং স্বাধীনতাকামীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগেই চালানো হয়। এই অভিযান চালানোর সময় হাসপাতালগুলি পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। অভিযান চলাকালীন হাসপাতালের কর্মীদেরকে রোগীদের সেবা দান থেকে বিরত রাখা হয়। সকল কর্মীদের তাদের কোয়ার্টার এবং অফিসে আটকে রাখা হয়, যার দরুন হাসপাতালের গুরুতর রোগীদের অস্ত্রোপচার করার টেবিলেই মৃত্যুর জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা অভিযান চালানোর নাম করে তারা (ভারতীয় সেনারা) প্রায়ই রোগীদের ওপরেও শারীরিক নির্যাতন চালাতো। ঠিক এমনই একটি ঘটনার ভুক্তভোগী ৪৫ বছর বয়সী মিস্ পারভীনা শেইখ, যিনি ছিলেন একজন ক্যান্সারের রোগী। তিনি এবং তাঁর সাথে অন্যান্য গুরুতর রোগীদের বেড ঘোরাতে থাকে তারা। এমনকি রোগীদের মনিটর, ইন্ট্রাভেনাস লাইন এবং ক্যাথেটারগুলিও শিরা থেকে ছিঁড়ে ফেলা হয়। উচ্চস্বরে হাসতে হাসতে তারা রোগীদের জিজ্ঞাসা করতে থাকে “অস্ত্রগুলি কোথায়?”। কিন্তু রোগীদের আর্তচিৎকারে ঢাকা পড়ে যায় তাদের হাসিগুলো।
পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী জনাব আব্দুল-রহিম বিপাকীয় অ্যাসিডোসিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সাথে সাথে লিভার এবসেসের রোগেও ভুগছিলেন। তিনি ছিলেন লাইফ সেভিং আই/ভি লাইনে। যখন তাঁকে বেড সহ বারবার ঘোরানো হচ্ছিলো তখন তাঁর আই/ভি লাইনটি ছিঁড়ে ফেলা হয়। প্রায় এক ঘন্টা তাঁর ওপর এমন নিপীড়ন চালায় ভারতীয় সেনারা। সে সময় কর্তব্যরত একজন চিকিৎসককে পুনরায় তাঁর আই/ভি লাইনটি চালু করতেও বাধা দেওয়া হয়। যার ফলে তিনি মারাত্মক কার্ডিয়াক এরেস্টের শিকার হন।
লেখক হাসপাতালের ছয়টি পরিবারের সাথে দেখা করেছিলাম যাদের কেউ না কেউ ভারতীয় সেনাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গিয়েছেন। তবে যেই অস্ত্র সংরক্ষণ এবং স্বাধীনতাকামীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে হাসপাতালগুলোতে অভিযান চালানো হয় তার কোন কিছুই সেখানে পাওয়া যায় নি। এমনকি ডাক্তাররা এবং হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীরাও কখনও কোন স্বাধীনতাকামীদের ইচ্ছাকৃতভাবে সেখানে লুকিয়ে রাখে নি। ‘সন্দেহভাজন মুজাহিদিনদের’ তারা অস্ত্রোপচারের পরপরই ধরে নিয়ে যেত। কখনও কখনও তাদের অস্ত্রোপচার চলাকালীন অবস্থাতেই নিয়ে যাওয়া হতো। তাদের অনেকেই আর কখনও ফিরে আসে নি। যারা ফিরে এসেছিলো তারাও ছিলো প্রায় মৃত।
কাশ্মীরে ভারতীয় দখলদার বাহিনীর হিংস্রতার সামান্য কিছু নমুনামাত্র এই ঘটনায় উঠে এসেছে। এমন শত-সহস্র ঘটনাই গত কয়েক দশক ধরে এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। আর সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ ব্যতীত হিন্দুত্ববাদীদের কবল থেকে কাশ্মীর তথা ভারতীয় মুসলিমদের মুক্তির আর ভিন্ন কোন উপায় নেই বলে মনে করেন ইসলামি চিন্তাবীদগণ।
অনুবাদক ও সংকলক : ওবায়দুল ইসলাম
তথ্যসূত্র : https://tinyurl.com/2rtb3c4k