ছেলে খুনের মামলা তুলে না নিলে পরিবারের অন্যান্যদেরও খুনের হুমকি বজরং সন্ত্রাসীদের
কয়েক মাস আগে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দলের সন্ত্রাসীরা কর্ণাটকে মুসলিম যুবক সমীর শাহপুরকে নির্মমভাবে খুন করে। এখন আবার নিহত মুসলিমের বাবাকে মামলা তুলে না নিলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে তারা।
১৯ বছর বয়সী সমীর শাহপুর এবং ২২ বছর বয়সী শমশির খান পাঠান। কর্ণাটকের নারাগুন্ডের দুই বন্ধু। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা তাদের উপর নির্মমভাবে হামলা চালায়। হামলায় সমীরের মৃত্যু হয়েছিল। গুরুতর আহত অবস্থায় বেঁচে যায় শমশির।
সন্তানকে হারানোর শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি ৫২ বছর বয়সী সুভানসাব শাহপুর। এরই মাঝে ১৪ আগস্ট, যখন তিনি কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন, তখন গেরুয়া সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার হুমকি দেয়।
তিনি বলেছেন, “হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তিনজন লোক আমার পথ আটকিয়ে ঘিরে ধরে। তারা মুসলিম বিরোধী গালি দিচ্ছিল। তিনজনেরই বয়স ২০/২১ এর মাঝামাঝি। তারা আমার সাথে দুর্ব্যবহার করা শুরু করে। এমনকি তারা আমাকে আঘাত করারও চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমি নিজেকে রক্ষা করেছি।”
“তাদের মধ্যে একজন আমাকে হুমকি দেয়, আমি সমীরের হত্যাকাণ্ডে বজরং দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে যে এফআইআর দায়ের করেছি তা প্রত্যাহারের জন্য। যদি তা না করি, তারা আমার অন্য দুই ছেলেসহ আমাদের মেরে ফেলবে। আমাদেরও একই পরিণতি হবে বলে হুমকি দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি যখন আমার পরিবারকে হুমকির ঘটনাটি বলি, তখন সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ে। কিন্তু, আমি এফআইআর প্রত্যাহার করব না। আমি আমার ছেলে সমীরের খুনের বিচার চাই।”
জনাব সুবহানসাব যিনি একজন দিনমজুর, তিনি এখন তার স্ত্রীকে নিয়ে চিন্তিত। কেননা তার স্ত্রী বাড়িতে সারাদিন একা থাকেন।
মুসলিম যুবক সমীর শাহপুরের খুনের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের অধিকাংশকেই আটক করতে পারেনি হিন্দুত্ববাদী পুলিশ। যাদেরকে সমালোচনার ভয়ে আটক করেছিল, তারাও জামিনে বের হয়ে গেছে।
জনাব সুবহান সাহেবকে হুমকিদাতাদের মাঝে একজন বজরং দলের সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাকেও পরদিনই হিন্দুত্ববাদী আদালত জামিন দিয়ে দিয়েছে। অপরাধীরা খুন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার পরও জামিনে বেরিয়ে যাওয়ায় মুসলিম পরিবারটি এখন খুব বেশি আতঙ্কে আছেন।
যেকোন সময় তারা হিন্দুত্ববাদীদের খুনের টর্গেটে পরিণত হতে পারেন। সমীরের বন্ধু শমশীর যিনি বজরং দলের সদস্যদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, “আমি ভয় ও আতঙ্কে আছি যে, তাদের পরবর্তী লক্ষ্য আমি হতে পারি।”
শামশির একটি স্টুডিওতে ফটোগ্রাফার হিসাবে কাজ করেন। তিনি বলেন,আমি এখন কাজে যেতেও ভয় পাই। মনে হয় কেউ কেউ আমার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকাচ্ছে। এই বুঝি আমাকে খুন করবে।
ভারতে এখন প্রত্যেক মুসলিম এমনি আতঙ্কের মাঝে দিনাতিপাত করছেন। যেকোন সময় হিন্দুত্বববাদীরা তাদের জান মালের উপর হামলা চালাতে পারে। মুসলিম নারীদেরকে তুলে নিয়ে গণগর্ষণ করে খুন করতে পারে। হিন্দুত্ববাদীরা জানে, এগুলো করলেও আইন আদালত তাদের পক্ষেই রায় দিবে। যা তাদেরকে আরো বেশি মুসলিম রক্তপিপাসু বানিয়ে দিচ্ছে।
এই জুলুমের নাগপাশ ছিন্ন করতে তাই মুসলিমদেরকে নববী মানহাজ ও আদর্শে ফিরে আসতে আহব্বান জানিয়ে আসছেন হক্কানী উলামায়ে কেরাম। তাঁরা বলছেন, উপমহাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি স্পষ্টতই এই বার্তা দিচ্ছে যে, হিন্দুত্ববাদীদের সাথে মুসলিমদের সংঘাত এখন অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
তথ্যসূত্র:
——
1. “Withdraw case against Bajrang Dal members”: Father of lynched Karnataka Muslim man faces death threats
– https://tinyurl.com/73mp35wa
কয়েক মাস আগে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দলের সন্ত্রাসীরা কর্ণাটকে মুসলিম যুবক সমীর শাহপুরকে নির্মমভাবে খুন করে। এখন আবার নিহত মুসলিমের বাবাকে মামলা তুলে না নিলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে তারা।
১৯ বছর বয়সী সমীর শাহপুর এবং ২২ বছর বয়সী শমশির খান পাঠান। কর্ণাটকের নারাগুন্ডের দুই বন্ধু। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা তাদের উপর নির্মমভাবে হামলা চালায়। হামলায় সমীরের মৃত্যু হয়েছিল। গুরুতর আহত অবস্থায় বেঁচে যায় শমশির।
সন্তানকে হারানোর শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি ৫২ বছর বয়সী সুভানসাব শাহপুর। এরই মাঝে ১৪ আগস্ট, যখন তিনি কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন, তখন গেরুয়া সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার হুমকি দেয়।
তিনি বলেছেন, “হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তিনজন লোক আমার পথ আটকিয়ে ঘিরে ধরে। তারা মুসলিম বিরোধী গালি দিচ্ছিল। তিনজনেরই বয়স ২০/২১ এর মাঝামাঝি। তারা আমার সাথে দুর্ব্যবহার করা শুরু করে। এমনকি তারা আমাকে আঘাত করারও চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমি নিজেকে রক্ষা করেছি।”
“তাদের মধ্যে একজন আমাকে হুমকি দেয়, আমি সমীরের হত্যাকাণ্ডে বজরং দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে যে এফআইআর দায়ের করেছি তা প্রত্যাহারের জন্য। যদি তা না করি, তারা আমার অন্য দুই ছেলেসহ আমাদের মেরে ফেলবে। আমাদেরও একই পরিণতি হবে বলে হুমকি দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি যখন আমার পরিবারকে হুমকির ঘটনাটি বলি, তখন সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ে। কিন্তু, আমি এফআইআর প্রত্যাহার করব না। আমি আমার ছেলে সমীরের খুনের বিচার চাই।”
জনাব সুবহানসাব যিনি একজন দিনমজুর, তিনি এখন তার স্ত্রীকে নিয়ে চিন্তিত। কেননা তার স্ত্রী বাড়িতে সারাদিন একা থাকেন।
মুসলিম যুবক সমীর শাহপুরের খুনের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের অধিকাংশকেই আটক করতে পারেনি হিন্দুত্ববাদী পুলিশ। যাদেরকে সমালোচনার ভয়ে আটক করেছিল, তারাও জামিনে বের হয়ে গেছে।
জনাব সুবহান সাহেবকে হুমকিদাতাদের মাঝে একজন বজরং দলের সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাকেও পরদিনই হিন্দুত্ববাদী আদালত জামিন দিয়ে দিয়েছে। অপরাধীরা খুন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার পরও জামিনে বেরিয়ে যাওয়ায় মুসলিম পরিবারটি এখন খুব বেশি আতঙ্কে আছেন।
যেকোন সময় তারা হিন্দুত্ববাদীদের খুনের টর্গেটে পরিণত হতে পারেন। সমীরের বন্ধু শমশীর যিনি বজরং দলের সদস্যদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, “আমি ভয় ও আতঙ্কে আছি যে, তাদের পরবর্তী লক্ষ্য আমি হতে পারি।”
শামশির একটি স্টুডিওতে ফটোগ্রাফার হিসাবে কাজ করেন। তিনি বলেন,আমি এখন কাজে যেতেও ভয় পাই। মনে হয় কেউ কেউ আমার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকাচ্ছে। এই বুঝি আমাকে খুন করবে।
ভারতে এখন প্রত্যেক মুসলিম এমনি আতঙ্কের মাঝে দিনাতিপাত করছেন। যেকোন সময় হিন্দুত্বববাদীরা তাদের জান মালের উপর হামলা চালাতে পারে। মুসলিম নারীদেরকে তুলে নিয়ে গণগর্ষণ করে খুন করতে পারে। হিন্দুত্ববাদীরা জানে, এগুলো করলেও আইন আদালত তাদের পক্ষেই রায় দিবে। যা তাদেরকে আরো বেশি মুসলিম রক্তপিপাসু বানিয়ে দিচ্ছে।
এই জুলুমের নাগপাশ ছিন্ন করতে তাই মুসলিমদেরকে নববী মানহাজ ও আদর্শে ফিরে আসতে আহব্বান জানিয়ে আসছেন হক্কানী উলামায়ে কেরাম। তাঁরা বলছেন, উপমহাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি স্পষ্টতই এই বার্তা দিচ্ছে যে, হিন্দুত্ববাদীদের সাথে মুসলিমদের সংঘাত এখন অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
তথ্যসূত্র:
——
1. “Withdraw case against Bajrang Dal members”: Father of lynched Karnataka Muslim man faces death threats
– https://tinyurl.com/73mp35wa