প্রিন্স হ্যারির অপরাধ এবং বিশ্ববাসীর নীরবতা!
ব্রিটিশ রাজ পরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি। কিছুদিন আগে তার কিছু বক্তব্য মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। হ্যারি বলেছে, আফগানিস্তানে ২৫জন আফগানিকে হত্যা করেছে সে। তার দৃষ্টিতে, নির্যাতিত নিহত আফগানিরা হলেন দাবার গুটির মতো। তাদের হত্যা করে সে অনুতপ্ত নয়, লজ্জিতও নয়। হ্যারির এমন বর্বর মন্তব্য এবং আফগানিস্তানে তার অপরাধের আত্মস্বীকারোক্তি মানুষের মাঝে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
আফগান ব্যক্তিত্বদের সাথে যোগাযোগ কমিশনের বিশিষ্ট সদস্য আনাস হক্কানি বলেছেন, “তোমরা এই খেলায় হেরে গেছো। আমি আশা করি, মানব-ইতিহাস এই অপরাধকে স্মরণ রাখবে।”
আফগানিস্তান ইসলামি ইমারতের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, “তারা (দখলদাররা) আফগানিস্তানে এসেছিল মানুষের রক্ত ঝরানোর আনন্দ উপভোগ করতে। দুর্ভাগ্যবশত এটা পশ্চিমাদের দাবিকৃত সমগ্র মানবতা ও মানবাধিকারের বিরুদ্ধবাদী বিষয়। তারা সর্বদা অন্য দেশের মানুষকে অপমান করে, অন্যদের রক্ত ঝরিয়ে আনন্দ পায়। আর সাম্প্রতিক স্বীকারোক্তি কেবল প্রিন্স হ্যারির মুখোশই উন্মোচন করেনি, এটা উন্মোচন করেছে আফগানিস্তানে আসা সব দখলদারের মুখোশ। এই দখলদারেরা আমাদের দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে।”
প্রিন্স হ্যারি তার আত্মজীবনী নিয়ে প্রকাশিত নতুন বইয়ে উত্তেজক কথাবার্তা লিখেছে।
হ্যারির বক্তব্যের ব্যাপারে তুরস্কের পার্লামেন্টের স্পিকার মুস্তফা শিনতপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আল-জাজিরা গত সোমবার তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম হুররিয়াতের বরাতে জানিয়েছে যে, জনাব শিনতপ হ্যারির প্রতি বলেছেন, “তুমি কে? তুমি কি নির্ধারণ করতে পেরেছিলে যে মৃত লোকগুলো মানুষ ছিল কি না? আফগানিস্তানে তুমি কী করেছো? কীসের খোঁজে গিয়েছ সেখানে?”
শিনতপ আরও বলেছেন যে, বিংশ শতাব্দী ছিল মানব ইতিহাসের এক রক্তাক্ত বছর। ইউরোপীয়রা গণহারে মানুষকে হত্যা করেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তারা অন্তত ২০ মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হত্যা করেছে আরও প্রায় ৭৫ মিলিয়ন কিংবা ১০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে।
হ্যারির মন্তব্য ব্রিটিশ বাহিনীকেও প্রভাবিত করেছে। ব্রিটিশ বাহিনী বলেছে, হ্যারির বক্তব্য উত্তেজনাপূর্ণ। তার মন্তব্য এই দেশকে আরও বিপদের মুখে ঠেলতে পারে এবং এর নিরাপত্তাকে ফেলতে পারে হুমকির মুখে। সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আমেরিকায় ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপালনকারী একজন বলেছে, সে প্রিন্স হ্যারিকে তার বক্তব্য স্পষ্ট করার পরামর্শ দেবে।
যদি বিশ্ব নেতারা তাদের দাবিতে সত্যবাদী হয়, তবে মানবাধিকারের নামে কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিটি সংগঠনের উচিত হ্যারির মতো অপরাধীর বিচার করা। প্রিন্স হ্যারি এবং তার মতো যেসব অপরাধী দীর্ঘ ২০ বছরের দখলদারিত্বের সময় নিরপরাধ আফগানিদের রক্ত ঝরিয়েছে, তাদেরকে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করা। আর বিচারের পূর্বে যেই পরিবারগুলোর সদস্যকে তারা হত্যা করেছে, যাদের অর্থনীতিকে তারা বর্বরোচিতভাবে ধ্বংস করেছে, ঐ পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তবে এটা সম্ভব নয়। কারণ কুফফার বিশ্বের মানবাধিকারের নামে এসব দাবি কেবলই প্রতীকী। কখনোই তারা প্রকৃতপক্ষে এগুলো বাস্তবায়ন করে না।
তবে বিশ্ববাসীর মনে রাখা উচিত, প্রিন্স হ্যারির নাম আফগানিস্তানের ইতিহাসে একজন খারাপ ও অপরাধী হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে। আফগানিস্তানের ভবিষ্যত প্রজন্মকে দেখানো হবে যে, পশ্চিমা অপরাধীরা এখানে উন্নতির জন্য আসেনি, বরং এমন অমানবিক কার্যক্রম চালানোর জন্য এসেছে।
প্রিন্স হ্যারির এমন বক্তব্য নিশ্চিতভাবেই আফগানিস্তানের যুব সমাজকে শত্রুদের থেকে তাদের নিপীড়িত ও নিরপরাধ ভাই-বোনদের পক্ষে প্রতিশোধ নিতে উৎসাহিত করবে।
তথ্যসূত্র :
1. Prince Harry’s Crimes and Silence of the world
– https://tinyurl.com/bdekkect
ব্রিটিশ রাজ পরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি। কিছুদিন আগে তার কিছু বক্তব্য মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। হ্যারি বলেছে, আফগানিস্তানে ২৫জন আফগানিকে হত্যা করেছে সে। তার দৃষ্টিতে, নির্যাতিত নিহত আফগানিরা হলেন দাবার গুটির মতো। তাদের হত্যা করে সে অনুতপ্ত নয়, লজ্জিতও নয়। হ্যারির এমন বর্বর মন্তব্য এবং আফগানিস্তানে তার অপরাধের আত্মস্বীকারোক্তি মানুষের মাঝে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
আফগান ব্যক্তিত্বদের সাথে যোগাযোগ কমিশনের বিশিষ্ট সদস্য আনাস হক্কানি বলেছেন, “তোমরা এই খেলায় হেরে গেছো। আমি আশা করি, মানব-ইতিহাস এই অপরাধকে স্মরণ রাখবে।”
আফগানিস্তান ইসলামি ইমারতের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, “তারা (দখলদাররা) আফগানিস্তানে এসেছিল মানুষের রক্ত ঝরানোর আনন্দ উপভোগ করতে। দুর্ভাগ্যবশত এটা পশ্চিমাদের দাবিকৃত সমগ্র মানবতা ও মানবাধিকারের বিরুদ্ধবাদী বিষয়। তারা সর্বদা অন্য দেশের মানুষকে অপমান করে, অন্যদের রক্ত ঝরিয়ে আনন্দ পায়। আর সাম্প্রতিক স্বীকারোক্তি কেবল প্রিন্স হ্যারির মুখোশই উন্মোচন করেনি, এটা উন্মোচন করেছে আফগানিস্তানে আসা সব দখলদারের মুখোশ। এই দখলদারেরা আমাদের দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে।”
প্রিন্স হ্যারি তার আত্মজীবনী নিয়ে প্রকাশিত নতুন বইয়ে উত্তেজক কথাবার্তা লিখেছে।
হ্যারির বক্তব্যের ব্যাপারে তুরস্কের পার্লামেন্টের স্পিকার মুস্তফা শিনতপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আল-জাজিরা গত সোমবার তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম হুররিয়াতের বরাতে জানিয়েছে যে, জনাব শিনতপ হ্যারির প্রতি বলেছেন, “তুমি কে? তুমি কি নির্ধারণ করতে পেরেছিলে যে মৃত লোকগুলো মানুষ ছিল কি না? আফগানিস্তানে তুমি কী করেছো? কীসের খোঁজে গিয়েছ সেখানে?”
শিনতপ আরও বলেছেন যে, বিংশ শতাব্দী ছিল মানব ইতিহাসের এক রক্তাক্ত বছর। ইউরোপীয়রা গণহারে মানুষকে হত্যা করেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তারা অন্তত ২০ মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হত্যা করেছে আরও প্রায় ৭৫ মিলিয়ন কিংবা ১০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে।
হ্যারির মন্তব্য ব্রিটিশ বাহিনীকেও প্রভাবিত করেছে। ব্রিটিশ বাহিনী বলেছে, হ্যারির বক্তব্য উত্তেজনাপূর্ণ। তার মন্তব্য এই দেশকে আরও বিপদের মুখে ঠেলতে পারে এবং এর নিরাপত্তাকে ফেলতে পারে হুমকির মুখে। সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আমেরিকায় ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপালনকারী একজন বলেছে, সে প্রিন্স হ্যারিকে তার বক্তব্য স্পষ্ট করার পরামর্শ দেবে।
যদি বিশ্ব নেতারা তাদের দাবিতে সত্যবাদী হয়, তবে মানবাধিকারের নামে কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিটি সংগঠনের উচিত হ্যারির মতো অপরাধীর বিচার করা। প্রিন্স হ্যারি এবং তার মতো যেসব অপরাধী দীর্ঘ ২০ বছরের দখলদারিত্বের সময় নিরপরাধ আফগানিদের রক্ত ঝরিয়েছে, তাদেরকে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করা। আর বিচারের পূর্বে যেই পরিবারগুলোর সদস্যকে তারা হত্যা করেছে, যাদের অর্থনীতিকে তারা বর্বরোচিতভাবে ধ্বংস করেছে, ঐ পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তবে এটা সম্ভব নয়। কারণ কুফফার বিশ্বের মানবাধিকারের নামে এসব দাবি কেবলই প্রতীকী। কখনোই তারা প্রকৃতপক্ষে এগুলো বাস্তবায়ন করে না।
তবে বিশ্ববাসীর মনে রাখা উচিত, প্রিন্স হ্যারির নাম আফগানিস্তানের ইতিহাসে একজন খারাপ ও অপরাধী হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে। আফগানিস্তানের ভবিষ্যত প্রজন্মকে দেখানো হবে যে, পশ্চিমা অপরাধীরা এখানে উন্নতির জন্য আসেনি, বরং এমন অমানবিক কার্যক্রম চালানোর জন্য এসেছে।
প্রিন্স হ্যারির এমন বক্তব্য নিশ্চিতভাবেই আফগানিস্তানের যুব সমাজকে শত্রুদের থেকে তাদের নিপীড়িত ও নিরপরাধ ভাই-বোনদের পক্ষে প্রতিশোধ নিতে উৎসাহিত করবে।
মূল লেখক : হামযা হুসাইনি
অনুবাদক ও সংকলক : সাইফুল ইসলাম
[ইসলামি ইমারতের অফিসিয়াল সাইট থেকে অনুদিত]
অনুবাদক ও সংকলক : সাইফুল ইসলাম
[ইসলামি ইমারতের অফিসিয়াল সাইট থেকে অনুদিত]
তথ্যসূত্র :
1. Prince Harry’s Crimes and Silence of the world
– https://tinyurl.com/bdekkect