ভারতের পরাজয় উদযাপন করায় সাত কাশ্মীরি শিক্ষার্থী আটক
কাশ্মীরের গান্দেরবালে অবস্থিত শের-ই-কাশ্মীর ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজির সাতজন কাশ্মীরী মুসলিম শিক্ষার্থীকে আটক করেছে ভারতীয় পুলিশ। তাদের অপরাধ, তারা ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের হারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
ফাইনাল খেলায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের পরাজয়কে কেন্দ্র করে অ-কাশ্মীরি ছাত্রদের সাথে প্রথমে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় এক ছাত্র ১৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্সেস এবং পশুপালন বিভাগে অধ্যয়নরত সাত মুসলিম ছাত্রের নামে মামলা করে। পরদিন ২০ নভেম্বর ঐ কাশ্মীরি ছাত্রদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গান্ডারবালের পুলিশ সুপার নিখিল বোরকার ঐ সাতজন ছাত্রকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ঐ সাতজন কাশ্মীরী ছাত্র বর্তমানে পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে।
অথচ, ছাত্রদের মধ্যে কোনও ধরণের সহিংসতা বা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
অভিযোগপত্রে ঐ হিন্দু ছাত্রটি বলছে যে, ভারতকে সমর্থন করায় মুসলিম ছাত্ররা তাকে নিয়ে মজা করেছে এবং হুমকি দিয়েছে।
তবে হাস্যকর বিষয় হচ্ছে, অভিযোগকারীরা শুধুমাত্র হোস্টেলের ভিতরে শ্লোগান দেওয়ার একটি ভিডিও প্রদর্শন করেছে। পুলিশের কাছে জমা দেওয়া সেই ভিডিও ফুটেজে অন্ধকারের মধ্যে ছাত্রদের শ্লোগান শোনা যাচ্ছে শুধু।
নিউজ চ্যানেল স্ক্রলের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছাত্রদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের ১৩ ধারা এবং জনসাধারণের সাথে অসদাচরন ও অপরাধমূলক ভয়-ভীতি প্রদর্শন সম্পর্কিত ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫ এবং ৫০৬ নং ধারার অধীনে মামলা করা হয়েছে।
কাশ্মীরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলার কারণে স্থানীয় মুসলিম শিক্ষার্থী এবং অ-স্থানীয় হিন্দু শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা এই প্রথম নয়। ২০২১ সালেও পুলিশ বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের অধীনে মেডিকেল কলেজের ছাত্র এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। তখন টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি ক্রিকেট দল জয় লাভ করেছিল।
২০১৬ সালেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ভারত হেরে যাওয়ার পর শ্রীনগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির মুসলিম এবং অস্থানীয় হিন্দু ছাত্ররা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। অকাশ্মীরি ছাত্ররা তখন স্থানীয় কাশ্মীরি ছাত্রদের সাথে সহিংস সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
মূলত এখানে খেলায় হার-জিতের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হল মুসলিমবিদ্বেষ চরিতার্থ করা। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে প্রতীয়মান হয় যে, মুসলিমদের প্রতি আক্রোশ চরিতার্থ করার সুযোগ হিসেবেই উগ্র হিন্দুরা খেলায় হার-জিত উদযাপনের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসে।
আর মুসলিম ছাত্ররাও যে ভারতের পরাজয়ে আনন্দ উদযাপন করে, সেটিকেও মূলত ভারতের আগ্রাসন ও হিন্দুদের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দুর্বলতম প্রতিবাদের অংশ বলেই মনে করা হয়।
তথ্যসূত্র:
——-
1. Seven Kashmiri students arrested after row over celebrating India’s World Cup loss (Scroll)
– https://tinyurl.com/mvtr22pk
কাশ্মীরের গান্দেরবালে অবস্থিত শের-ই-কাশ্মীর ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজির সাতজন কাশ্মীরী মুসলিম শিক্ষার্থীকে আটক করেছে ভারতীয় পুলিশ। তাদের অপরাধ, তারা ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের হারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
ফাইনাল খেলায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের পরাজয়কে কেন্দ্র করে অ-কাশ্মীরি ছাত্রদের সাথে প্রথমে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় এক ছাত্র ১৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্সেস এবং পশুপালন বিভাগে অধ্যয়নরত সাত মুসলিম ছাত্রের নামে মামলা করে। পরদিন ২০ নভেম্বর ঐ কাশ্মীরি ছাত্রদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গান্ডারবালের পুলিশ সুপার নিখিল বোরকার ঐ সাতজন ছাত্রকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ঐ সাতজন কাশ্মীরী ছাত্র বর্তমানে পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে।
অথচ, ছাত্রদের মধ্যে কোনও ধরণের সহিংসতা বা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
অভিযোগপত্রে ঐ হিন্দু ছাত্রটি বলছে যে, ভারতকে সমর্থন করায় মুসলিম ছাত্ররা তাকে নিয়ে মজা করেছে এবং হুমকি দিয়েছে।
তবে হাস্যকর বিষয় হচ্ছে, অভিযোগকারীরা শুধুমাত্র হোস্টেলের ভিতরে শ্লোগান দেওয়ার একটি ভিডিও প্রদর্শন করেছে। পুলিশের কাছে জমা দেওয়া সেই ভিডিও ফুটেজে অন্ধকারের মধ্যে ছাত্রদের শ্লোগান শোনা যাচ্ছে শুধু।
নিউজ চ্যানেল স্ক্রলের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছাত্রদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের ১৩ ধারা এবং জনসাধারণের সাথে অসদাচরন ও অপরাধমূলক ভয়-ভীতি প্রদর্শন সম্পর্কিত ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫ এবং ৫০৬ নং ধারার অধীনে মামলা করা হয়েছে।
কাশ্মীরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলার কারণে স্থানীয় মুসলিম শিক্ষার্থী এবং অ-স্থানীয় হিন্দু শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা এই প্রথম নয়। ২০২১ সালেও পুলিশ বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের অধীনে মেডিকেল কলেজের ছাত্র এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। তখন টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি ক্রিকেট দল জয় লাভ করেছিল।
২০১৬ সালেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ভারত হেরে যাওয়ার পর শ্রীনগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির মুসলিম এবং অস্থানীয় হিন্দু ছাত্ররা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। অকাশ্মীরি ছাত্ররা তখন স্থানীয় কাশ্মীরি ছাত্রদের সাথে সহিংস সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
মূলত এখানে খেলায় হার-জিতের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হল মুসলিমবিদ্বেষ চরিতার্থ করা। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে প্রতীয়মান হয় যে, মুসলিমদের প্রতি আক্রোশ চরিতার্থ করার সুযোগ হিসেবেই উগ্র হিন্দুরা খেলায় হার-জিত উদযাপনের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসে।
আর মুসলিম ছাত্ররাও যে ভারতের পরাজয়ে আনন্দ উদযাপন করে, সেটিকেও মূলত ভারতের আগ্রাসন ও হিন্দুদের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দুর্বলতম প্রতিবাদের অংশ বলেই মনে করা হয়।
তথ্যসূত্র:
——-
1. Seven Kashmiri students arrested after row over celebrating India’s World Cup loss (Scroll)
– https://tinyurl.com/mvtr22pk