Announcement

Collapse
No announcement yet.

ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ৯/১১ নিয়ে বিবৃতি : কমেন্টবক্সে বাংলাদেশের আপামর জনগণের মার্কিন আগ্রাসনবিরোধী ট্রল

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ৯/১১ নিয়ে বিবৃতি : কমেন্টবক্সে বাংলাদেশের আপামর জনগণের মার্কিন আগ্রাসনবিরোধী ট্রল




    ৯/১১ এর ২৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে গত ১১ই সেপ্টেম্বর অফিসিয়াল ফেসবুক পোস্টে নিহত আমেরিকানদের সম্মানে শোকবার্তা জানিয়েছে বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। তবে, অসংখ্য আগ্রাসন ও গণহত্যার অনুঘটক আমেরিকার এই দ্বিচারিতামূলক শোকবার্তাকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ব্যাপক হাস্যরস, ট্রল ও বিদ্রূপের মধ্য দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জুড়ে এই নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে নানান মিম, কৌতুক ও তির্যক মন্তব্য।

    এই বিবৃতিকে সাধারণ মানুষ ‘রাজনৈতিক অভিনয়’ ও ‘ভণ্ডামি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “৯/১১-এ আমেরিকা কান্নাকাটি করে, অথচ তারাই আফগানিস্তান ও ইরাকে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যুর কারণ।”

    অপর একজন ট্রাম্প ও বাইডেনের ছবি ব্যবহার করে একটি মিম শেয়ার করেছেন, যেখানে লেখা— “২৪ বছর পরও নিহতদের ১,১০০ জনের পরিচয় অজানা; কিন্তু নতুন যুদ্ধের পরিকল্পনা সম্পূর্ণ!”

    একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেন, “তোদের জন্য আরেকটা ৯/১১ দরকার৷ তোরা এই পৃথিবীতে অশান্তির মূল কারণ। তোরাই ফিলিস্তিনকে ধ্বংসস্তূপ বানিয়েছিস। তোদের পরিণতি হবে খুব ভয়াবহ ইনশাআল্লাহ।”

    কমেন্টে যে কয়জন শোকবার্তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তাদেরকে উদ্দেশ্য করেও আমেরিকান ‘ভিসালোভী’, ‘চাকর’ ইত্যাদী তীর্যক মন্তব্য করা হয়েছে।

    বাঙ্গালি মুসলমানদের এমন প্রতিক্রিয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখযোগ্য:

    ১. ৯/১১ কেন্দ্রিক মার্কিনীদের দ্বিচারিতা: ৯/১১-পরবর্তী সময়ে তথাকথিত “সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ” এর নামে ইরাক ও আফগানিস্তানে ব্যাপক বেসামরিক হত্যাকাণ্ড ঘটায় মার্কিন সন্ত্রাসীরা। তাই শান্তি ও নিরাপত্তার নামে দেয়া মার্কিন দূতাবাসের এই বিবৃতি অনেকের কাছেই এখন পরিহাসের বিষয়।

    ২. অমীমাংসিত প্রশ্ন: ৯/১১ হামলায় নিহতদের মধ্যে ১,১০০ জনের পরিচয় এখনও অজানা। যুক্তরাষ্ট্রের মত সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দাবিদার একটি দেশে এত দীর্ঘ সময় পরেও এমন অমীমাংসিত প্রশ্ন বিদ্রূপের খোরাক যোগানো স্বাভাবিক একটি ব্যাপার।

    ৩. ষড়যন্ত্র তত্ত্ব: অনেকেই বিশ্বাস করেন ৯/১১ হামলার নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব স্বার্থ জড়িত ছিল। যদিও এর সপক্ষে কোনও প্রমাণ নেই। তবু এই ধারণা সামাজিক মাধ্যমে হাস্যরসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

    সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমের ভূমিকা
    ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার) ও ইনস্টাগ্রামে ৯/১১ ইস্যুতে নেটিজেনরা ব্যাপকভাবে অংশ নিয়েছেন। অনলাইন মিমের মধ্যে অন্যতম ছিল—

    “আমেরিকার ৯/১১ শোক বনাম বৈশ্বিক শোক”: যেখানে ৯/১১ হামলায় নিহতদের সংখ্যা এবং অপরদিকে ইরাক-আফগানিস্তানে নিহত বেসামরিক জনগণের সংখ্যা তুলনা করা হয়েছে।

    “বিবৃতি বনাম বাস্তবতা”: স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন রাজনীতিবিদদের বক্তব্যের পাশে বিদ্রূপ করে গুয়ান্তানামো-বে কারাগার ও মার্কিন ড্রোন হামলার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

    উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল-কায়েদার পরিকল্পনায় আমেরিকার পেন্টাগন ও টুইনটাওয়ারে হামলা পরিচালিত হয়। এই হামলায় ২,৯৯৭ জন নিহত, ৬,০০০ এর অধিক মানুষ আহত হয় এবং ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক অবকাঠামো ও সম্পদ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় বলে জানা যায়। যা ছিল মূলত মুসলিম-দেশসমূহে আমেরিকার চলমান অপরাধের প্রতিশোধ।

    ১৯৪৮ সাল থেকে আমেরিকার সমর্থনে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের উপর নির্যাতন, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন মুসলিম প্রধান দেশে আমেরিকার মুসলমানদের স্বার্থ বিরোধী অবস্থান, আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ, আমেরিকার পূর্ণ সমর্থনে ফিলিস্তিনে চলমান নৃশংসতা এবং বিশ্বব্যাপী মার্কিনীদের মুসলিম বিদ্বেষমূলক নীতি প্রভৃতি কারণে ৯/১১ এর হামলাকে বহু মানুষ যৌক্তিক এবং ন্যায্য প্রতিশোধ হিসেবে সমর্থন জানাচ্ছেন।

    ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের শোকবার্তার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের প্রতিবাদী হাস্যরস ও বিদ্রূপ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, মার্কিনীদের নোংরা পররাষ্ট্রনীতি আজ কারও অজানা নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তাদের দ্বিচারিতা আজ সর্বসাধারণের নিকট সমালোচনা ও ঘৃণার পাত্র হয়ে উঠেছে।
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org
Working...
X