Announcement

Collapse
No announcement yet.

শক্তির উৎস নির্ধারনঃ যুদ্ধ বিজয়ের অর্ধেক

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • শক্তির উৎস নির্ধারনঃ যুদ্ধ বিজয়ের অর্ধেক

    শত্রুর মূলকেন্দ্র নির্ধারন

    প্রত্যেকটা যুদ্ধ বা সংগ্রামে, বিভিন্ন ভাবে ও বিভিন্ন পদ্ধতিতে অনেক চেষ্টা ব্যয় করা হয়। তবে এই ক্ষেত্রে বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহর যুদ্ধগুলোতে অনেক প্রচেষ্টা অগুরুত্বপূর্ন কাজে ব্যয় হয়, যেগুলোর কোন প্রভাব থাকে না। অনেক সময় ভুল পথে চেষ্টা ব্যয় হতে থাকে। এই সমস্যা সৃষ্টির কারণ অনেকঃ

    • আন্দোলনে লিপ্ত সংগঠনে ফাটল ও ভাঙ্গন থাকা, এমনকি কখনো তা একই অঞ্চলে হতে পারে।
    • নেতৃত্বের দুর্বলতা, ঐক্য ধরে রাখা ও শৃংখলার ক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতা কম থাকা।
    • অধিকাংশ সময় যুদ্ধের জন্যে বাস্তবিক অর্থে যোগ্য সংগঠন, দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত অবকাঠামো বা সাথীদের চেইন, সাথীদের কাজ ও দায়িত্ব সমূহে ধারাবাহিকতা ও শৃঙ্খলা না থাকার ফলে এমন সমস্যা হয়।
    • পরিকল্পনার ক্ষেত্রে অবহেলা করা। বিশেষ ভাবে সামরিক পরিকল্পনা গুলোতে নেতার পক্ষ থেকে গাফিলতির ফলে এমন সমস্যা হয়। যা তাদের জামাতের দুর্বলতার অনেক বড় একটি কারণ।


    তাই সফলতা অর্জন এবং ভুল থেকে বাচার জন্যেঃ

    - সর্বোচ্চ সাধ্যানুযায়ী যুদ্ধকারী অংশগুলোর মাঝে ঐক্য ও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা আবশ্যক। চাই সেটা একই জামাতে হোক বা পূরা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে হোক। ঐক্য ধরে রাখা সহজতার জন্যে সর্বদা নিকটবর্তি থাকার চেষ্টা করে যাওয়া।

    - এমন কিছু উত্তম নেতা তৈরি করা আবশ্যক। যাদের পর্যাপ্ত জ্ঞান, ব্যক্তিগত যোগ্যতা এবং বুদ্ধিমত্তা থাকবে, যার দ্বারা তারা যুদ্ধের পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিকভাবে যুদ্ধ ও আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে পারে।

    - সদস্যদের সম্পর্ক, শৃঙ্খলা, শক্তিশালী যোগাযোগ ও অবকাঠামো বা চেইন টিকিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা।

    এই জামাত গুরুত্বহীন দাতব্য সংস্থা বা সামাজিক সংঘঠনের মত নয়। বরং এখানে কঠিন শৃঙ্খলার সাথে ও খুব সুক্ষ্মভাবে কাজ করতে হবে, কেননা একমাত্র এই সমস্ত পদক্ষেপের মাধ্যমেই সফলতা আসা সম্ভব। অন্যদিকে যাদের মধ্যে কোন শৃঙ্খলা নেই বরং বিশৃঙ্খলায় পূর্ণ তারা অবশ্যই ব্যর্থ হবে, তাদের যতই সক্ষমতা থাকুক।

    যুদ্ধের পরিকল্পনা ধাপসমূহ

    যে কোন যুদ্ধ ও সংগ্রামের জন্য পরিকল্পনা কয়েকটি স্তরে হয়ে থাকেঃ

    • প্রথমত- আবশ্যকীয় তথ্যগুলো পূর্নভাবে সংগ্রহ করা
    • দ্বিতীয়ত- তথ্যগুলোকে বিশ্লেষণ করা এবং গবেষণা করা
    • তৃতীয়ত- বর্তমান অবস্থার একটি চিত্র তুলে ধরা যাকে 'অবস্থা পর্যালোচনা' বলা হয়
    • চতুর্থত- আমাদের অবস্থা ও শত্রুর অবস্থা পরিমাপ করে আমাদের সক্ষমতা, শক্তি, সামরিক লক্ষ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের উপযোগী স্ট্রেটেজি বা কৌশল ঠিক করা।
    • পঞ্চমত- ছোট ছোট লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে ধাপে ধাপে মূল লক্ষ্যে পৌছানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা। সেই সাথে প্রত্যেকটি মারহালায় গৃহিত স্বিদ্ধান্তের বাহিরেও ভিন্ন সম্ভাবনাগুলোকে সর্বদা ফিকিরে রাখে।


    যখন কোন যুদ্ধ, লড়াই বা বিপ্লবের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় তখন আমাদের সামনে বিভিন্ন ধরনের ও প্রকৃতির লক্ষ্য সামনে চলে আসে। একজন নেতার দায়িত্ব হচ্ছে যুদ্ধের কৌশলগত টার্গেটে পৌঁছানোর সবচেয়ে উপযুক্ত লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করা। তবে এই ক্ষেত্রে আবশ্যই আমাদের বর্তমান যুদ্ধের শক্তি ও সক্ষমতা পরিমাপ করতে হবে, এমনকি শত্রুর মূল শক্তির বিরোদ্ধে কতটুকু সক্ষমতা তাও পরিমাপ করেই লক্ষ্য নির্ধারন করতে হবে।

    কারন অনেক সময় কারো কাছে বিশাল শক্তি ও সক্ষমতা থাকলেও তা থেকে কার্যকরী ও প্রয়োগযোগ্য শক্তি কম থাকে, তাই তা দিয়ে নির্ধারিত টার্গেট বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। অর্থাৎ কাজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গিয়ে দেখা যায় কাজের জন্যে নিজেদের কাছে থাকা সমস্ত সৈন্য ও শক্তি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

    তখন এই সমস্যার সমাধানে কমান্ডারকে এগিয়ে আসতে হয়। এই অবস্থায় পরিকল্পনা গ্রহনের যোগ্যতা ও স্ট্রেটেজিক বা যুদ্ধের কৌশলগত বিদ্যার গ্রুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। কারন তখন সমস্যা সমাধানে কৌশলগত টার্গেটগুলোকে পূনরায় নির্ধারন করতে হয় এবং তা বাস্তবায়নের উপযুক্ত পরিকল্পনা গ্রহন করতে হয়। যাতে করে হাতে ব্যবহারযোগ্য যতটুকু শক্তিই আছে তার মাধ্যমে সেই তাকাজা বা টার্গেটগুলো বাস্তবায়ন করা যায়।

    পূর্বের আলোচনা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যার নাম ছিল “কেন্দ্রবিন্দু বা মূল ফোকাস"। এটা অনেকটা 'মানুষের অন্তর' এর মত। ক্বলব হচ্ছে মানুষের সবকিছুর উৎস বা কেন্দ্রবিন্দু, যাকে কেন্দ্র করে সারা শরীর পরিচালিত হয়। এখন যদি কারো অন্তর ভাল থাকে, তাহলে কখনো খারাপ কাজে লিপ্ত করলেও আবার ফিরে আসে। আর কারো অন্তর যদি খারাপ থাকে, আপনি তার বিভিন্ন কাজ শুধরিয়ে দিলেও সে আবার খারাপে ফিরে যাবে। যেমনটা ক্বলবের ব্যপারে বর্নিত হাদীসে স্পষ্ট এসেছে।

    ঠিক তেমনি ভাবে, যুদ্ধে শত্রুর উপর আক্রমনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য হবে তাদের মূলকেন্দ্র বা উৎস, যা ধ্বংস ও দখলের মাধ্যমে শত্রুর উপর বিজয় অর্জন করা সম্ভব হবে।

    তাই কোন যুদ্ধের পরিকল্পনা করার সময় সর্বপ্রথম শত্রুর কেন্দবিন্দু বা উৎস চিহ্নিত করতে হবে অতঃপর আক্রমণ করে তা ধ্বংস করে দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে সর্বোত্তম কৌশলে ও সর্বোচ্চ দ্রুততার সাথে হামলা করে ধ্বংস করা আবশ্যক।

    যুদ্ধের বিভিন্ন ধাপে মূল ফোকাস ভিবিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। কিছু আছে পূরা যুদ্ধের কৌশলগত মূল লক্ষ্য, যা প্রধান কমান্ডার শত্রুকে পূর্ন পরাজিত করার পরিকল্পনার সময় গ্রহণ করবে। অন্যদিকে প্রত্যেকটা সাধারন আক্রমণ ও ছোট অঞ্চলেও কিছু কিছু মূল ফোকাস থাকে যা সামগ্রিক পরিকল্পনায় মূল ফোকাস হয় না।

    প্রত্যেকটা রাষ্ট্রের সামরিক কৌশলগত মূলকেন্দ্র ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এর কারণ হল, রাষ্ট্রের ভিন্নতা, প্রশাসনিক ভিন্নতা, জনগণের ধ্যান-ধারণার ভিন্নতা, রাজনৈতিক নানান কিছুর ভিন্নতা, ভৌগলিক ও অর্থনৈতিক ভিন্নতা। যা যুদ্ধ বা আন্দোলনের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে।

    আমরা প্রাচীন যুগের যুদ্ধবিদ্যার একটি কিতাব থেকে কিছু অংশঃ

    ((যুদ্ধবাজ দুই দলের মূল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সর্বদা প্রত্যেকের মনে রাখা আবশ্যক। মূল বিষয়ের মধ্যে একটা হচ্ছে, নিজেদের বাহিনীর একটা মূলকেন্দ্র নির্ধারন করা, যাকে কেন্দ্র করেই বাহিনীর সমস্ত শক্তি ও কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ঠিক তেমনি শত্রুর উপর হামলার প্রস্তুতি ও আক্রমনের ক্ষেত্রেও আবশ্যকীয় হচ্ছে, মূল ফোকাস হবে তাদের মূলকেন্দ্রের দিকে, যেখান থেকে তাদের সবকিছু পরিচালিত হয়))

    যুদ্ধের ক্ষেত্রে মূলকেন্দ্র হচ্ছেঃ

    • সামরিক সেনাবাহিনী - আর এটাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে
    • রাজধানী - যে রাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ হয়ে থাকে
    • রক্ষাকারী শক্তি - ছোট রাষ্ট্রসমূহ যারা বড় শক্তির উপর নির্ভরশীল
    • সামষ্টিক স্বার্থ - যুদ্ধে জোটবদ্ধ রাষ্ট্রেগুলোর ক্ষেত্রে সবার মূল স্বার্থে আঘাত করা
    • মূল কমান্ডার ও বুদ্ধিজীবী ব্যক্তি - বিপ্লবী রাষ্ট্রসমূহে
    • যখন শত্রু তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলবে তখন খুব দ্রুত ও সর্বোচ্চ শক্তি ব্যয় করে হামলা করা আবশ্যক
    • আবার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার সুযোগ না দেওয়া আবশ্যক
    • যদি যেকোন একটা শত্রুকে আঘাত করে সকল শত্রুকে পরাভূত করা সম্ভব হয়, তাহলে সেটাই করতে হবে। এবং এই আক্রমনটাই হবে পূরা যুদ্ধের মূল টার্গেট বা লক্ষ্য। আর এই ক্ষেত্রে শত্রুর উপর আক্রমনটা হবে তাদের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে।


    উল্লেখ্যঃ আমাদের শক্তি পর্যাপ্ত হওয়া আবশ্যক এবং আমাদের রাজনৈতিক লক্ষ স্পষ্ট হওয়া উচিত যাতে এক শত্রুকে ধ্বংস করা অন্যদেরকে আমাদের উপর টেনে না আনে।

    প্রথম কাজঃ যুদ্ধ পরিকল্পনার ক্ষেত্রে শত্রুর মূল কেন্দ্রগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং যথাসম্ভব সবগুলো এক কেন্দ্রে পরিণত করার চেষ্টা করতে হবে।
    দ্বিতীয় কাজঃ দ্রুত ও অগ্রগামী সেনাদের মাধ্যমে শত্রুর মূলকেন্দ্রে সর্বোচ্চ শক্তিশালী আক্রমনের পূর্ন প্রস্তুতি নিশ্চিত করা।


    শত্রু বাহিনীর কেন্দ্রগুলোকে একটি মূল কেন্দ্র বানানো নির্ভর করেঃ

    • শত্রুর রাজনৈতিক শক্তিকে বিক্ষিপ্ত করে দেওয়া
    • যুদ্ধের ময়দানে যেখানে সৈন্যরা কাজ করে থাকে


    পূর্বে কৌশলগত অবস্থান থেকে শত্রু বাহিনীর মূলকেন্দ্রের বিভিন্ন ধরন সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ধরুন কোন রাষ্ট্রের প্রশাসন টিকে আছে নেতা অথবা কমান্ডারের উপর ভিত্তি করে। যখন সে নিহত হবে তখন শত্রুবাহিনী পরাজিত হবে, আমাদের আনুগত্য স্বীকার করে নিবে এবং যুদ্ধের ইচ্ছা হারিয়ে ফেলে। ইতিহাসে এটার অনেক উদাহরণ রয়েছে। পূর্ব জামানা থেকে আজ পর্যন্ত অনেক প্রশিক্ষিত দুঃসাহসী বাহিনীও পরাজিত হয়েছে শুধুমাত্র তার কমান্ডারের মৃত্যুতে। যদিও তাদের শক্তির মূল অংশ তখনো টিকে ছিল ও ধ্বংস হয়ে যায়নি।

    আবার এমন কিছু রাষ্ট্র রয়েছে যার প্রশাসনিক মূল ভিত্তি হচ্ছে রাজধানী। এমন যুদ্ধের উদাহরণ হচ্ছে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে জার্মানির যুদ্ধ পরিকল্পনা। তাদের টার্গেট ছিল সর্বোচ্চ দ্রুত পদ্ধতিতে প্যারিসে পৌঁছে যাওয়া এবং তা দখল করে নেওয়া। ফ্রান্স সেনাদের প্রত্যেককে ময়দানে পরাজিত করা ছাড়াই।

    আবার এমন কিছু রাষ্ট্র রয়েছে, যারা পরিপূর্ণভাবে রক্ষাকারী শক্তির উপর নির্ভর করে। এজন্য এ সমস্ত রাষ্ট্র দখল করা বা সেনাদেরকে ধ্বংস করে দেওয়ার দ্বারা পরাজিত করা যায় না। কেননা এটা তো শুধু তার রক্ষাকারী শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধের শুরু। এমন উদাহরণ হচ্ছে, ইরাকি বার্থ পার্টি মাধ্যমে কুয়েত রক্ষা করা। এবং বর্তমান ও পূর্বের অসংখ্য রাষ্ট্র যারা আমেরিকা-ভারত বা অন্য কোন শক্তির উপর নির্ভর করে চলে।

    শত্রুর মূলকেন্দ্র নিয়ে পূর্বে আলোচিত বিষয়ের সব উদাহরণ দিলে অনেক ধীর্ঘ হয়ে যাবে। এখানে আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে স্ট্রেটেজিক ক্ষেত্রে শত্রুর মূলকেন্দ্র বুঝার ব্যপারে ব্যাপারে ব্যাপক ধারণা স্পষ্ট করা।


    এখানে গুরুত্বের সাথে একটি বিষয় বুঝা আবশ্যক, শত্রুর মূলকেন্দ্র সম্পর্কে জানা শুধু বৃহৎ স্ট্র্যাটেজিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয় বরং একেবারে ছোট কোনো সংঘর্ষেও এটা বুঝা প্রয়োজন।
    উদাহরণত; কোন সামরিক ঘাঁটি দখল করা টার্গেট নেয়া হল, যেখানে ৫০ জন সৈন্য, কিছু স্বল্প অস্ত্র ও দুইটি ট্যাংক আছে। তারা এমন দুটি ভবনে অবস্থান করছে যা অনেক উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। এই আক্রমনে কৌশলগত দিক থেকে আমরা বলব, এই ঘাটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে শত্রুর সেই দুটি ট্যাংক। তাই আমাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এই দুইটাকে ধ্বংস করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা-প্রচেষ্টা করা আবশ্যক। কারন অন্যথায় তাদের পক্ষে ট্যাংক দিয়ে আমাদের প্রচুর ক্ষয়-ক্ষতি করে ফেলা সম্ভব, তাদেরকে তেমন কোন ক্ষতি করা ছাড়াই।

    সরাসরি যুদ্ধ ফ্রন্টে শত্রুর মূলকেন্দ্র থাকে তাদের সেনাবাহিনী, তবে তাদের মধ্যে আপনি সর্বদাই কিছু ফাটল ও বিচ্ছিন্নতা দেখবেন। এই ক্ষেত্রে যুদ্ধের মূল টার্গেট হবে তাদের এগুলোকে ধ্বংস করে দেয়া, এর জন্য সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করতে হবে। ইহার উদাহরণ হচ্ছে পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধে ইরাকি বাহিনীর মধ্যে ফাটল ছিল, যার ফলে আমেরিকার ইরাকে আক্রমণ করে ধ্বংস করে দেয়া পর্যন্ত তারা অনেক অংশে ভিবিক্ত ছিল ও তাদের মূল সামরিক শক্তি নিষ্ক্রিয় রেখেছিল। এই প্রসিদ্ধ ঘটনা বিস্তারিত ভাবে উপসাগরীয় যুদ্ধের ইতিহাসে লেখা আছে।

    বর্তমানে যুদ্ধেগুলোতে যুদ্ধবিমান সেনাবাহিনীর মূল শক্তির কেন্দ্র হিসেবে পরিগনিত হয়। তাই এগুলো ধ্বংস করা, নষ্ট করা বা দখল করা সামরিক কমান্ডারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হয়ে যায়। স্থলযুদ্ধে ট্যাংক বা কামান মূল কেন্দ্র হিসেবে গণ্য হয়। বর্তমান যুদ্ধ সমূহে এই দুইটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র।

    আবার অনেক সময় শত্রুর মূলকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায় ভৌগলিক কোন স্থান, যেমনটা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে স্ট্রেটেজিক ক্ষেত্রে রাজধানীর গুরুত্ব। আবার কখনো ফ্রন্ট লাইনে বা ট্যাকটিক্যেল দিক থেকে কিছু অঞ্চল মূলকেন্দ্র হিসেবে গণ্য হয়। এবং সেই স্থান দখল করার মাধ্যমে শত্রু দ্রুত পরাজিত হয়। উদাহরণত, সীনা উপদ্বীপে পাহাড়ের সংকির্ন গিরিখাদ গুলো, দামেস্কের কাসিয়ুন পাহাড়, আফগান ও পাকিস্তান সীমান্তে খাইবার উপত্যকাসহ আরো অনেক অঞ্চল রয়েছে। তবে এগুলো অনেক সময় যুদ্ধে পরিস্থিতির সাথে পরিবর্তিত হতে থাকে।

    পূর্বে আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যুদ্ধের পরিকল্পনা ক্ষেত্রে মূল হচ্ছে, শত্রু বাহিনীর মূলকেন্দ্র চিহ্নিত করতে পারা। এই জন্যেই মূলকেন্দ্র বুঝা ও সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারা প্রত্যেক যুদ্ধ পরিকল্পনাকারীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত।

    প্রত্যেকটা যুদ্ধ, ফ্রন্টলাইন ও আন্দোলনের বিভিন্ন অবস্থা অনুধাবন ও সমস্ত দিক যাচাই করে মূলকেন্দ্র চিহ্নিত করার মাধ্যমে বিজয়ের দিকে পরিকল্পনার অর্ধেক রাস্তা অতিক্রম করে ফেলব। আর তখন বাকি থাকবে শুধু দ্বিতীয় অর্ধেক অর্থাৎ প্রত্যেক অবস্থার উপযোগী অস্ত্র ব্যবহার করে সেই শক্তির মূলকেন্দ্রটাকে ধ্বংসের করে ফেলা।

    মূল- খালেদ মুসা, তিবয়ান।

    চলবে ইনশাআল্লাহ ...


  • #3
    সবগুলি পর্ব একত্রে পিডিএফ করে দিলে অনেক উপকার হবে, ইনশাআল্লাহ

    Comment


    • #4
      অনলাইন জিহাদ ভাই এর সাথে একমত। খুবই তথ্যবহুল উপকারী লেখা। জাঝাকাল্লাহু খাইরান। লিখাটা শেষ করে পিডিএফ আকারে দিতে পারেন এবং যদি সম্ভব হয় আধুনিক যুদ্ধ বিষয়ক বইগুলো নাম উল্লেখ করে দিয়েন যাতে আমরা সেগুলো থেকেও উপকৃত হতে পারি। আল্লাহ আপনার ইলম ও সময়ে বারাকাহ দান করুন। আমীন।

      Comment


      • #5
        সবগুলো পর্ব একত্রে পিডিএফ করে একটি বই আকারে বের করার অনুরোধ।
        ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

        Comment


        • #6
          মাশাআল্লোহ ॥
          একটি গুরুত্বপূর্ণ ও উপকারী
          প্রবন্ধ সিরিজ। সামরিক বিষয়ে
          এরকম আরও প্রবন্ধ সিরিজ চাই!
          আল্লাহ তা'য়ালা আসান করুন!

          Comment


          • #7
            মাশাআল্লাহ, গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী একটা সিরিজ পড়লাম
            ৫ পর্ব পড়েছি, চলবে দিয়েছেন। কিন্তু তারপরের পর্ব আর খুঁজে পেলাম না

            Comment


            • #8
              এতো চমৎকার একটা সিরিজ, পরের পর্বগুলো না দেখায় তৃপ্তির মধ্যে অতৃপ্তি চলে এলো... তবে মোটামুটি বিশ্বশক্তির ব্যপারে এমন ব্যপক ধারনা আগে কখনো পাই নাই।

              এই টপিকটিকে স্টিকি করার অনুরোধ জানাচ্ছি ভাই, বিবেচনা করে দেখবেন মেহেরবানী করে...

              আর পরের পর্বগুলো সংগ্রহ করে দিতে পারলে ভালো হয়...

              Comment

              Working...
              X