Announcement

Collapse
No announcement yet.

তানযীমের উপর কয়েকটি আপত্তি- আমার পক্ষ থেকে জবাব ও ভাইদের তাসহিহ কামনা করছি!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • তানযীমের উপর কয়েকটি আপত্তি- আমার পক্ষ থেকে জবাব ও ভাইদের তাসহিহ কামনা করছি!

    তানযীমের উপর কয়েকটি আপত্তি
    উলূমুল হাদীস অধ্যায়নরত এক তালিবুল ইলম লেখককে তানযীমের শুভাকাঙক্ষী মনে করে তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় জানতে চেয়েছে। লেখক নিজের সাধ্যানুযায়ী উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কোনো আহলে ইলমের কাছে উত্তর যদি ভুল প্রমাণিত হয়, তাহলে কমেন্টে সঠিক উত্তর জানানোর জন্য বিশেষ অনুরোধ রইল:
    প্রশ্ন:১: আমাদের ভাইয়েরা বলে থাকেন যে, ‘‘আমরা তাকফির করি জামাআতগতভাবে অর্থাৎ মাজমুয়ী হাইসিয়তে এরা (তাগুতী বাহিনী) কাফের, তবে ফরদান ফরদান কাফের না’’- এখন প্রশ্ন হল,
    (ক) তাকফিরের কোন ইল্লতটা তাদের সবার মাঝে বিদ্যমান যার কারনে তারা সবাই কাফের?
    (খ) এ ধরনের কোন সুরত শরিয়তে আছে কিনা যেখানে আমভাবে সবাইকে একটি হুকুম দেওয়া হবে। আবার এই হুকুমটাই খাসভাবে ঐ আম-এর আওতাভুক্ত কোন ফরদ কে দেওয়া হয় না?

    প্রশ্নের উত্তরগুলো নিম্নরূপ:
    ১. ক. আমরা সাধারণত এদেশের এমপি-মন্ত্রী এবং তাদের হেফাজতকারী বাহিনীর সদস্যদেরকে আমভাবে তাকফীর করে থাকি। এখানে দুই ধরণের লোক আছে। এক. এমপি-মন্ত্রী যারা কুফরী আইন তৈরি করে এবং মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়। দুই. এমপি-মন্ত্রী এবং কুফরী আইনের পাহারাদার সশস্ত্রবাহিনী। আমরা প্রত্যেক এমপি-মন্ত্রীকে ফরদান ফরদান কাফের মনে করি। কারণ, তারা সরাসরি কুফরে আকবার তথা ‘তাশরী বিগাইরে মা আনযালাল্লাহ’-তে লিপ্ত এবং তাদের মধ্যে তাকফীরের প্রতিবন্ধক কোনো বিষয় নেই। তবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে নির্বাচন করে যারা সংসদে যায় তাদের তা’বীলের কারণে আমরা তাদেরকে তাকফীর করি না, কাফের বলি না।
    আর এমপি-মন্ত্রীদের হেফজতকারী এবং তাদের হুকুমের গোলাম সশস্ত্রবাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের উপরও এমপি-মন্ত্রীদের হুকুমই আরোপিত হবে। অর্থাৎ আমভাবে তাদেরকেও তাকফীর করা হবে। কারণ, তারা ‘তাশরী বিগাইরি-মা-আনযালাল্লাহ’ এর ক্ষেত্রে এমপি-মন্ত্রীদের সাহায্যকারী এবং সহযোগী। যেমনিভাবে হত্যাকারী এবং হত্যায় সাহায্যকারী উভয়ের হুকুম একই হয় যদিও অপরাধ ভিন্ন ভিন্ন, ঠিক তেমনিভাবে শরীয়ত বিরোধী আইন রচনাকারী এবং তার পাহারাদারের হুকুম একই যদিও উভয়ের অপরাধ ভিন্ন ভিন্ন ।
    তবে হ্যাঁ, আমরা নির্দিষ্টভাবে সশস্ত্র বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে তাকফীর করি না। কারণ, তাদের কারো কারো মধ্যে তাকফীরের প্রতিবন্ধক বিষয় পাওয়া যায় (যেমন, জাহালাত), তাই তাকে নিদির্ষ্টভাবে কাফের বলা যাবে না। আবার কারো কারো মধ্যে কোনো প্রতিবন্ধক বিষয় পাওয়া যায় না, তাই তাকে নির্দিষ্টভাবেই তাকফীর করা যাবে। কিন্তু যাদের মধ্যে প্রকৃত-অর্থেই তাকফীরের প্রতিবন্ধক বিষয় বিদ্যমান রয়েছে, তাদেরকে যেহেতু অন্যদের থেকে আলাদা করা যাচ্ছে না এবং আলাদা করার দায়িত্বও আমাদের নয়, তাই যতদিন পরযন্ত তারা ঐ কাফের গোষ্ঠির সাথে থাকবে, ততদিন ব্যাপকভাবে তাদেরকে কাফের-মুরতাদই গণ্য করা হবে এবং কাফের-মুরতাদের আচরণই তাদের সাথে করা হবে।
    তাছাড়া সশস্ত্রবাহিনীর প্রত্যেক সদস্য ব্যক্তিগতভাবে কাফের হোক কিংবা না হোক হামলা ও হত্যার হুকুমের ক্ষেত্রে তারা প্রত্যেকেই এমপি-মন্ত্রীদের সমতুল্য। কারণ, তারা প্রত্যেকেই ‘তায়েফায়ে মুমতানেয়া’ (এমন শক্তিধর গোষ্ঠি যারা শরীয়ত পালনে বিরত রয়েছে)-এর সদস্য। তাই এই দৃষ্টিকোণ থেকেও তারা প্রত্যেকেই হত্যার উপযুক্ত। কারণ, কোনো শক্তিধর গোষ্ঠি যদি আল্লাহ তাআলার শরীয়তের মাত্র একটি হুকুম পালনে অস্বীকৃতি জানায় বা বিরত থাকে, তাহলেই তাদের বিরুদ্ধে কিতাল করা ওয়াজিব হয়ে যায়। ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন,
    كل طائفة ممتنعة عن إلتزام شريعة من شرائع الإسلام الظاهرة المتواترة من هؤلاء القوم وغيرهم فإنه يجب قتالهم حتى يلتزموا شرائعه وإن كانوا مع ذلك ناطقين بالشهادتين وملتزمين بعض شرائعه كما قاتل أبو بكر الصديق والصحابة رضى الله عنهم ما نعى الزكاة وعلى ذلك اتفق الفقهاء بعدهم بعد سابقة مناظرة عمر لأبى بكررضى الله عنهما فإتفق الصحابة رضى الله عنهم على القتال على حقوق الإسلام عملا بالكتاب والسنة
    وكذلك ثبت عن النبى من عشرة أوجه الحديث عن الخوارج وأخبر أنهم شر الخلق والخليقة مع قوله تحقرون صلاتكم مع صلاتهم وصيامكم مع صيامهم فعلم أن مجرد الإعتصام بالإسلام مع عدم إلتزام شرائعه ليس بمسقط للقتال فالقتال واجب حتى يكون الدين كله لله وحتى لا تكون فتنة فمتى كان الدين لغير الله فالقتال واجب فأيما طائفة إمتنعت من بعض الصلوات المفروضات أو الصيام أو الحج أو عن إلتزام تحريم الدماء والأموال والخمر والزنا والميسر أو عن نكاح ذوات المحارم أو عن إلتزام جهاد الكفار أو ضرب الجزية على أهل الكتاب وغير ذلك من واجبات الدين ومحرماته التى لا عذر لأحد فى جحودها وتركها التى يكفر الجاحد لوجوبها فإن الطائفة الممتنعة تقاتل عليها وإن كانت مقرة بها وهذا مما لا أعلم فيه خلافا بين العلماء وإنما إختلف الفقهاء فى الطائفة الممتنعة إذا أصرت على ترك بعض السنن كركعتى الفجر والأذان والإقامة عند من لا يقول بوجوبها ونحو ذلك من الشعائر هل تقاتل الطائفة الممتنعة على تركها أم لا فأما الواجبات والمحرمات المذكورة ونحوها فلا خلاف فى القتال عليها . مجموعة الفتاوى:28\503.

    উত্তর: খ. হ্যাঁ, এ ধরনের সূরত শরীয়তে আছে। এই সূরতকে উসূলে ফিকহের পরিভাষায় ‘আম মাখসূস মিনহুল বা‘য’ বলা হয়। অর্থাৎ এমন আম হুকুম যার থেকে কিছু ফরদকে খাস করা হয়েছে, আমের হুকুম থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। সূরা বাকারার ২৭৫ আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ ‘আর আল্লাহ তাআলা ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা)কে হালাল করেছেন’ আমভাবে প্রত্যেক ব্যবসার উপরই হালাল-এর হুকুম আরোপিত হবে, কিন্তু এই হালাল হওয়ার হুকুম থেকে এমন কিছু ব্যবসাকে খাস করে বাদ দেওয়া হয়েছে যে ব্যবসা শরীয়তসম্মত নয়। শরীয়ত ব্যবসা জায়েয হওয়ার জন্য যেসব শর্ত নির্ধারন করে দিয়েছে, সে সব শর্ত যে ব্যবসা বা ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে পাওয়া যাবে না তা এই হালাল-এর হুকুম থেকে বাদ অর্থাৎ তা হারাম। ঠিক তেমনিভাবে তাগুতী বাহিনীর উপর আমভাবে কুফর ও রিদ্দাহ-এর হুকুম আরোপ হবে, কিন্তু যাদের মধ্যে ‘মাওয়া নেয়ে তাকফীর’ পাওয়া যাবে, তাদেরকে কুফর এর হুকুম থেকে খাস করা হবে। তাকেরকে কাফের বা মুরতাদ বলা হবে না। কিন্তু ভিন্ন আরেক কারণ তথা কাফের-মুরতাদদের সাথে সহাবস্থানের কারণে তারা মুজাহিদীনের হামলা থেকে রেহাই পাবে না।
    দলের প্রত্যেক সদস্যের হাকীকী হুকুম একরকম না হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ তআলা দলের মধ্যে উপস্থিত প্রত্যেক সদস্যের সাথে দুনিয়াবী ক্ষেত্রে একই রকম আচরণ করে থাকেন। এ মর্মে সহীহ বুখারীতে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে হাদীসটি এবং ফাতহুল বারী থেকে ইবনে হাজার রহ. এর ব্যাখ্যা তুলে ধরা হল:
    حدثنا محمد بن الصباح حدثنا إسماعيل بن زكرياء عن محمد بن سوقة عن نافع بن جبي
    ر بن مطعم قال حدثتني عائشة رضي الله عنها قالت
    : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ( يغزو جيش الكعبة فإذا كانوا ببيداء من الأرض يخسف بأولهم وآخرهم ) . قالت قلت يا رسول الله كيف يخسف بأولهم وآخرهم وفيهم أسواقهم ومن ليس منهم ؟ . قال ( يخسف بأولهم وآخرهم ثم يبعثون على نياتهم ) اخرجه البخارى برقم:2012
    قال ابن حجر فى الفتح: قوله ببيداء من الأرض في رواية مسلم بالبيداء وفي حديث صفية على الشك وفي رواية لمسلم عن أبي جعفر الباقر قال هي بيداء المدينة انتهى والبيداء مكان معروف بين مكة والمدينة تقدم شرحه في كتاب الحج قوله يخسف بأولهم واخرهم زاد الترمذي في حديث صفية ولم ينج اوسطهم وزاد مسلم في حديث حفصة فلا يبقى الا الشريد الذي يخبر عنهم واستغنى بهذا عن تكلف الجواب عن حكم الأوسط وأن العرف يقضي بدخوله فيمن هلك أو لكونه آخرا بالنسبة للأول واولا بالنسبة للاخر فيدخل قوله وفيهم اسواقهم كذا عند البخاري بالمهملة والقاف جمع سوق وعليه ترجم والمعنى أهل اسواقهم أو السوقة منهم وقوله ومن ليس منهم أي من رافقهم ولم يقصد موافقتهم ولأبي نعيم من طريق سعيد بن سليمان عن إسماعيل بن زكريا وفيهم اشرافهم بالمعجمة والراء والفاء وفي رواية محمد بن بكار عند الإسماعيلي وفيهم سواهم وقال وقع في رواية البخاري اسواقهم فاظنه تصحيفا فإن الكلام في الخسف بالناس لا بالأسواق قلت بل لفظ سواهم تصحيف فإنه بمعنى قوله ومن ليس منهم فيلزم منه التكرار بخلاف رواية البخاري نعم أقرب الروايات إلى الصواب رواية أبي نعيم وليس في لفظ اسواقهم ما يمنع أن يكون الخسف بالناس فالمراد بالأسواق أهلها أي يخسف بالمقاتلة منهم ومن ليس من أهل القتال كالباعة وفي رواية مسلم فقلنا أن الطريق يجمع الناس قال نعم فيهم المستبصر أي المستبين لذلك القاصد للمقاتلة والمجبور بالجيم والموحدة أي المكره وبن السبيل أي سالك الطريق معهم وليس منهم والغرض كله أنها استشكلت وقوع العذاب على من لا إرادة له في القتال الذي هو سبب العقوبة فوقع الجواب بان العذاب يقع عاما لحضور أجالهم ويبعثون بعد ذلك على نياتهم وفي رواية مسلم يهلكون مهلكا واحدا ويصدرون مصادر شتى وفي حديث أم سلمة عند مسلم فقلت يا رسول الله فكيف بمن كان كارها قال يخسف به ولكن يبعث يوم القيامة على نيته أي يخسف بالجميع لشؤم الأشرار ثم يعامل كل أحد عند الحساب بحسب قصده قال المهلب في هذا الحديث أن من كثر سواد قوم في المعصية مختارا أن العقوبة تلزمه معهم قال واستنبط منه مالك عقوبة من يجالس شربة الخمر وأن لم يشرب وتعقبه بن المنير بان العقوبة التي في الحديث هي الهجمة السماوية فلا يقاس عليها العقوبات الشرعية ويؤيده آخر الحديث حيث قال ويبعثون على نياتهم وفي هذا الحديث أن الأعمال تعتبر بنية العامل والتحذير من مصاحبة أهل الظلم ومجالستهم وتكثير سوادهم الا لمن اضطر إلى ذلك.
    এই হাদীস ও তার ব্যাখ্যা দ্বারা স্পষ্টভাবে বুঝা যায়, দুনিয়ার শাস্তির ক্ষেত্রে মূল অপরাধী এবং সহযোগীর শাস্তি এক ও অভিন্ন। শাস্তির হুকুম আমভাবে সকলকে শামিল করবে। কিন্তু আখেরাতে এদের মধ্য থেকে এমন কিছুকে খাস করে বাদ দেওয়া হবে যারা প্রকৃত অর্থে অপরাধীদের সাথে ছিল না অর্থাৎ তাদের কাজ-কর্মকে পছন্দ করত না। তাদেরকে ভালবাসত না। কিন্তু দুনিয়াবী কিছু ফায়দা হাসিলের জন্য তাদের সাথে অবস্থান করেছিল।
    ২ নং প্রশ্ন: খেলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দলোন করার জন্য কি তাকফীর করা আবশ্যক?
    উত্তর: হ্যাঁ, খেলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করার জন্য তাকফীর করা আবশ্যক। খেলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছাড়া স্বাভাবিক হালতেও তাকফীর করা তথা কাফেরকে কাফের এবং মুরতাদকে মুরতাদ আখ্যায়িত করা জরুরী বিষয়। আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা ইরশাদ করেন:
    هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ فَمِنْكُمْ كَافِرٌ وَمِنْكُمْ مُؤْمِنٌ
    করেন: ‘ তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের মধ্য থেকে কেউ কাফের আর কেউ মুমিন’ (তাগাবুন:২)
    যেহেতু মানুষের মধ্য থেকে কিছু কাফের আর কিছু মুমিন, আর আল্লাহ তাআলা মুমিনের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখতে বলেছেন এবং কাফেরদের সাথে শত্রুতার সম্পর্ক রাখতে বলেছেন, তাই সমাজে মুমিন ও কাফেরের অবস্থান স্পষ্ট হওয়া জরুরী। যেন মুমিনকে চিনে নিয়ে তার সাথে বন্ধুত্ব, ভালবাসা ও কল্যাণকামিতার আচরণ করা যায়, আর কাফেরকে চিনে নিয়ে তার সাথে শত্রুতা বিদ্বেষ ও কঠোর আচরণ করা যায়। ইরশাদ হচ্ছে:
    يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَ
    تَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ.الممتحنة:1
    يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ.النساء:144
    يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَنْ يَرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ذَلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ (54) إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ (55) وَمَنْ يَتَوَلَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا فَإِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْغَالِبُونَ (56) يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَكُمْ هُزُوًا وَلَعِبًا مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ أَوْلِيَاءَ وَاتَّقُوا
    اللَّهَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ (57) المائدة
    এসব আয়াত দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হল যে, মুমিনগণ শুধু মুমিনদের সাথেই বন্ধুত্ব স্থাপন করতে পারবে; কাফেরদের সাথে পরবে না। কে মুমিন আর কে কাফের সেটা যদি পরিষ্কার না হয়, তাহলে এই বিধান কী ভাবে আদায় হবে? এমনিভাবে আল্লাহ তাআলা কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার এবং কঠোর ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে:
    يَاأَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ. التوبة:73
    মুসলিম সমাজে মুসলিমবেশে যেসব কাফের, মুরতাদ ও মুনাফেক অবস্থান করছে, তাকফীরের মাধ্যমে যদি তাদের অবস্থান সাধারণ মুমিনদের কাছে স্পষ্টরূপে তুলে ধরা না হয়, তাহলে মুমিনগণ কীভাবে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনা করবে এবং তাদের সাথে কঠোরনীতি অবলম্বন করবে?
    শরীয়ত কায়েমের যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার আগেই পরিষ্কারভাবে আমাদের শত্রু কে? মিত্র কে? সেটা বুঝে নেওয়া জরুরী। যোদ্ধার অন্তরে যদি তার শত্রু-মিত্র নিয়ে সংশয়-সন্দেহ থাকে, তাহলে সে সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করতে পারবে না। তাই মুমিন যোদ্ধার কাছে তার শত্রু ও মিত্র স্পষ্ট হওয়া অত্যন্ত জরুরী বিষয়। যাতে সে শত্রুকে চিনেনিয়ে শত্রুর হামলা থেকে সতর্ক থাকতে পারে এবং শত্রুর কুটচাল থেকে বাঁচতে পারে। আর প্রয়োজনের সময় মিত্রের কাছে সাহায্য-সহযোগিতা কামনা করতে পারে। আশ্রয় গ্রহণ করতে পারে আর এসব তাকফীর ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ, তাকফীর দ্বারা-ই মুমিন থেকে কাফের এবং কাফের থেকে মুমিন আলাদা হয়ে যাবে এবং কাফের ও মুমিনদের-শিবির স্পষ্টভাবে পৃথক হয়ে যাবে।
    তাছাড়া নবীজী সা. বলেছেন,
    من بدل دينه فاقتلوه
    ‘যে মুসলিম তার ধর্ম ত্যাগ করে (মুরতাদ হয়ে যায়) তাকে হত্যা কর’ বুখারী হাদীস নং-৩০১৭
    মুসলিমনামধারী কোনো ব্যক্তি যদি তার কথা বা কাজের কারণে দ্বীনত্যাগী মুরতাদের পরিণত হয়, তাহলে তাকে তাকফীর করা তথা মুরতাদ বলে আখ্যায়িত করা জরুরী। কারণ, তাকে মুরতাদ আখ্যায়িত করার উপর অনেক হুকুম নির্ভর করে। যেমন, তাকে হত্যা করা, তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া, তার সাথে সব রকমের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিন্ন করা, ওয়ারিশ না হওয়া, সে মুমতানি/শক্তিধর গোষ্ঠির হলে তার বিরুদ্ধে কিতাল করা, তার স্ত্রী-সন্তান গোলাম-বাঁদি হওয়া ইত্যাদি। তাই বুঝা গেল মুসলিম যদি নিজের কথা বা কাজের দ্বারা মুরতাদ হয়ে যায়, তাহলে তাকে মুরতাদ আখ্যায়িত করা অত্যন্ত জরুরী বিষয়।
    আরো জেনে রাখা উচিত যে, কাফেরকে কাফের বলাও সহীহ ঈমানের জন্য জরুরী বিষয়। যাদের কাফের হওয়ার বিষয়ে কোনো শুবাহ-সন্দেহ নেই তাদেরকে যদি কেউ কাফের না বলে/বা কাফের মনে না করে, তাহলে তার ঈমান থাকবে না। বরং সেও কাফেরে পরিণত হবে। যেমন, কেউ যদি হিন্দু বা খ্রিষ্টানকে কাফের মনে না করে, বরং তাদেরকেও মুমিন-মুসলিম মনে করে, তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে। এটা এমন একটা মাসআলা যে ব্যাপারে আহলে ইলমগণের ইজমা রয়েছে। এমনিভাবে কাদিয়ানীদেরকে যদি কেউ মুসলিম মনে করে; কাফের মনে না করে সেও কাফের হয়ে যাবে। কারণ, কাদিয়ানী মতাদর্শ কুফর হওয়ার ব্যাপারে কোনো মুসলিমের শুবাহ-সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই। তাই মুসলিমদের ঈমান বাঁচানোর স্বার্থেই আমাদেরকে তাকফীর করতে হবে। কাদিয়ানীসহ আল্লাহর শরীয়ত পরিবর্তন, পরিহার, শরীয়তের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন এবং শরয়ী আইন নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপের মত জঘন্য প্রকাশ্য কুফরীতে যারা লিপ্ত তারাও যে কাফের সেটাও মুমিনদেরকে জানাতে হবে, তাদের জানতে হবে, যেন আল্লাহর শত্রুকে আমরা নিজেদের বন্ধু না বানিয়ে ফেলি এবং কাফেরকে মুসলিম বলে নিজের ঈমানকে ধ্বংসের সম্মুখীন না করি। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেফাজত করেন। সঠিক সামুঝ দান করেন।আমীন।
    ইমাম সুফিয়ান বিন উয়াইনা রহ. বলেছেন,
    القران كلام الله عز وجل من قال مخلوق فهو كافر ومن شك فى كفره فهو كافر. رواه عبد الله ابن الامام احمد فى السنة برقم 25 بسند صحيح. كما فى الرسالة الثلاثينية.
    ইমাম আবু বকর ইবনুল আইয়্যাশ রহ. কে ঐ সব লোকদের হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল, যারা বলে কুরআন মাখলুক। তিনি উত্তরে বললেন,
    كافر ومن لم يقل انه كافر فهو كافر. اسناده صحيح. كما فى الرسالة الثلاثينية
    মক্কার প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস সালামা বিন শাবীব (মৃত্যু২৪৭ হি.)নাইসাপুরী থেকেও উপরিউক্ত নীতি বর্ণিত আছে। ইবনে হাজার রহ. আততাহযীব-এ বলেন, দাউদ বিন হাসান আল-বায়হাকী বলেছেন আমার কাছে পৌঁছেছে যে, হুলওয়ানী (হুসাইন বিন আলী বিন মুহাম্মাদ আলহুযালী আল খল্লালী) বলেছেন,
    لا اكفر من وقف فى القران. قال داود فسألت سلمة بن شبيب عن الحلوانى فقال: يرمى فى الحش, من لم يشهد بكفر الكافر فهو كافر. كما فى الرسالة الثلاثينية
    বি.দ্র. এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানার জন্য কয়েকটি কিতাব পড়ে দেখার অনুরোধ রইল:
    ১. ইকফারুল মুলহিদীন-আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী রহ.
    ২. ঈমান আওর কুফর কুরআন কি রওশনিমেঁ- (জাওয়াহেরুল ফিকহের শুরুতে) মুফতী শফী রহ.
    ৩. আততাওহীদ ওয়াশ শিরক ওয়া আকসামুহু- আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হা.
    ৪. কিতাবুল জিহাদ (মাজমুআতুল ফাতাওয়া থেকে) শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.।
    ৫. শরহু উসূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ- হাফেজ আবুল কাসিম হেবাতুল্লাহ লালকায়ী।

    প্রশ্ন নং:৩ ‘তাওহিদের আহ্বান’ ও ‘অতি জযবাতি তরুণ’ কিতাব দু‘টি কি আমাদের তানযীমের মুখপাত্র?
    উত্তর: না। উল্লেখিত কিতাব দু‘টি আলকায়েদা উপমহাদেশ বাংলাদেশ শাখা (আনসার-আলইসলাম)এর মুখপাত্র নয়। বরং কিতাব দু‘টি আল-কায়েদার আকীদা-মানহাজ পছন্দকারী দুইজন আলেম ব্যক্তিগত উদ্যোগে লিখেছেন। আমাদের জানামতে তানযীমের সাথে এই কিতাবের কোনো সম্পর্ক নেই। আর কিতাব দু‘টির মধ্যে মৌলিক কোনো ভুল আছে বলে আমাদের জানা নেই। যদি কারো নজরে মৌলিক কোনো ভুল ধরা পড়ে তাহলে সে দলীলের আলোকে খণ্ডন করতে পারে।









  • #2
    আল্লাহ আপনাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন,আমিন।

    Comment

    Working...
    X