Announcement

Collapse
No announcement yet.

ইসলামের দায়ীদের দুর্নাম রটনা: শালীন জবাবের একটি কৌশলী পন্থা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ইসলামের দায়ীদের দুর্নাম রটনা: শালীন জবাবের একটি কৌশলী পন্থা

    ইসলামের দায়ীদের দুর্নাম রটনা: শালীন জবাবের একটি কৌশলী পন্থা



    অন্ধ ভক্তি আর অন্ধ অনুকরণের বিরুদ্ধে আমরা যত কিছুই বলি না কেন, সাধারণ মুসলমানদের মাঝে একটি মাত্রা পর্যন্ত এ বিষয়টা অবশ্যই কাজ করে। একটা মানুষের প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধা ও নির্ভরতা তখনই কেউ অনুভব করে যখন তার প্রশংসা শুনতে পায়। মানুষের সহজাত প্রবণতাকে পুঁজি করে বাতিলপন্থীরা সত্যপন্থীদের দুর্নাম রটিয়ে থাকে মানুষের মনে তাদের সম্পর্কে কু-ধারণা সৃষ্টি করার জন্য। যদিও যুগ যুগ ধরে এটাই প্রমাণিত যে, একমাত্র আল্লাহর অনুগ্রহে সত্যের অপ্রতিরোধ্য শক্তির দরুন বাতিলপন্থীদের এমন কাজ সত্যপন্থীদের জন্য সুফল ছাড়া আর কিছু বয়ে আনে না। কিন্তু তবুও আল্লাহর হুকুমের ভেতর থেকে বস্তুবাদী উপায় মাধ্যম অবলম্বন করা শরীয়তের নির্দেশনা। তাই ইসলামের প্রকৃত দায়ীদের চরিত্রে বাতিলপন্থীদের অযাচিত কলঙ্ক লেপন আর এর দরুন সেসব দায়ীদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অনবহিত সাধারণ মুসলমানদের মনে সংশয় সৃষ্টির প্রতিকারে সর্বতোভাবে শালীনতা রক্ষা করে আবেগ নির্ভর না হয়ে বাতিলপন্থীদের জবাব দানের একটি কৌশলগত পন্থা এখানে আলোচনা করছি। আল্লাহ তাআলা সর্বোত্তম তৌফিক দাতা!!

    যদি ইসলামের দায়ীদের কারো মাঝে সত্যিকার অর্থে কোন ত্রুটি থাকে, যদি তাঁর ব্যক্তিগত অথবা পারিবারিক জীবনে কিংবা এমন কোন ক্ষেত্রে যার সঙ্গে তাঁর নিখাদ আন্তরিকতাপূর্ণ বিশুদ্ধ ইসলামী দাওয়াতের কোন সম্পর্ক নেই, জীবনের তেমনি কোন অধ্যায়ে কোন ভুল-ভ্রান্তি থেকে থাকে, (আর একজন মানুষের পক্ষে এমনটা ঘটাই স্বাভাবিক) তবে সেগুলোর পক্ষে সাফাই গাওয়ার কোন যৌক্তিকতা আমরা দেখতে পাই না। বরঞ্চ এমন কাজ করাকে অন্ধভক্তি বলা হবে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এক্ষেত্রে এগুলোকে পুঁজি করে কোন বাতিলপন্থী তার বিশুদ্ধ দাওয়াতকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইলে এ ব্যাপারটা পরিস্কার করে দেয়াটাই যথেষ্ট যে, ব্যক্তির দাওয়াতি কার্যকলাপের সঙ্গে ত্রুটির কোন সম্পর্ক নেই। এই পোস্টে আমার মূল আলোচ্য বিষয় এই পয়েন্টকে ঘিরে নয়।

    আমার আলোচনা হচ্ছে সেসব বাহ্যিক ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে, যেগুলো প্রকৃত অর্থে শরীয়তের দৃষ্টিতে এবং সামাজিকভাবেও তেমন কোনো ভুলই নয়। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে এবং বাতিলপন্থীদের অপপ্রচারে সেটাকে ত্রুটি বলে মনে হয়।

    এক্ষেত্রে আমাদেরকে যেটা করতে হবে, দাওয়াতের স্বার্থে এবং সবচেয়ে বড় কথা ইসলামী অনুশাসনের কারণে কোন প্রকার অশালীন পন্থা অবলম্বন করা যাবে না। গালিগালাজের তো প্রশ্নই আসে না। বরং এসবের দ্বারা দাওয়াতের ক্ষতি হবে।
    আমাদেরকে প্রথমেই তাকাতে হবে নববী জীবনের দিকে। আমাদেরকে বুঝতে হবে, কোরআন ও ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা আর তারই প্রতিচ্ছবি হচ্ছে নববী জীবন। তাই জবাব দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা নববী জীবন থেকে কোনো না কোনো সূত্র অবশ্যই পেয়ে যাবো। নববী জীবনের ওই সূত্রকে কাজে লাগিয়ে ইসলামের যে দায়ীকে অকারণে কিংবা বলা যায় বাহ্যিক ত্রুটির কারণে—প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে, ঠিক সে জাতীয় কোন একটি বাহ্যিক ত্রুটি (!) তুলে ধরে আমরা দেখাতে চাইবো যে, বাতিল পন্থীরা যেটাকে ত্রুটি হিসেবে দেখাতে চাচ্ছে সেটা আদতে কোন ত্রুটি নয় কারণ নবী জীবনে এমন ত্রুটির (!) উপস্থিতি রয়েছে।

    কিছু উদাহরণ দেই। ইসলামের কোন দায়ীর কারণে কখনো যদি অন্য কেউ বিপদে পড়ে আর দায়ী ব্যক্তি বিপদ মুক্ত থাকে, আর এটাকে বাতিলপন্থীরা যদি ত্রুটি হিসেবে এভাবে প্রচার করতে থাকে যে, 'অন্যদেরকে বিপদে ফেলে নিজে ইসলামের খেদমত দেখাচ্ছে', তখন আমরা বিচিত্র ভঙ্গিমায় ক্ষুরধার উপস্থাপনায় দেখাতে পারি, হযরত সুমাইয়া রাদিয়াল্লাহু আনহা-কে যখন শহীদ করে দেয়া হয়, আবু তালেবের কারণে তখন পর্যন্ত নবীজিকে ﷺ তেমন একটা উল্লেখযোগ্য হারে কিংবা বলতে গেলে একেবারেই আবু জাহেলের কাছে শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়নি। আত্মরক্ষার জন্য কোন দা'য়ী ব্যক্তি যদি আত্মগোপন করে আর সেটা নিয়ে যদি মশকরা করা হয়, তাহলে নবীজির ﷺ আত্মগোপনের ঘটনা আমাদের সবার সামনে। কোন দায়ী ব্যক্তি যদি বৈধ পন্থায় কিছুটা ছলচাতুরী অবলম্বন করে, তবে হিজরতের রাতে হযরত আলীকে নিজ বিছানায় শুতে বলার নববী ঘটনা আমাদের সবার সামনে। এভাবে বলে শেষ করা যাবেনা।
    এক্ষেত্রে বাতিলপন্থীদেরকে চূড়ান্ত রকম চপেটাঘাত করার জন্য ঘটনাগুলো তুলে ধরার যে পন্থাটি বিশেষভাবে বিবেচ্য, জানিনা তা কতটুকু উচিত হবে কিন্তু বিবেকবানদের বিবেককে নাড়া দেয়ার জন্য পন্থাটি খুবই উপযোগী বলে মনে হচ্ছে। আর তা হচ্ছে—বাতিল পন্থীরা যে যে বাক্যে, যে যে পন্থায়, যে যে ভঙ্গিমাতে, যে ধরনের উপস্থাপনায় ইসলামের কোন দায়ী ব্যক্তিকে অকারণে প্রশ্নবিদ্ধ করবে, ঠিক সেই সেই বাক্যে, সেই সেই পন্থায়, এবং সেই সেই ভঙ্গিমায় এবং সেই একই ধরনের উপস্থাপনায় নবী জীবনের কোন ঘটনাকে তুলে ধরা। এতে বিবেকবানরা বুঝতে পারবে, বাতিলপন্থীদের এসব অকারণ সমালোচনা আর প্রশ্নবাণ পক্ষান্তরে যেন নবী চরিত্রকেই আঘাত করছে। এই পন্থার দরুন খুবই অল্প কথায় গালিগালাজ এড়িয়ে—শালীনতা রক্ষা করে—অপবাদ আরোপকারীদেরকে শায়েস্তা করা যাবে ইনশা-আল্লাহ তা'আলা!

    সর্বোপরি আল্লাহপাক সঠিক পথের দিশা দানকারী!!

    إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَسْتَحْىِۦٓ أَن يَضْرِبَ مَثَلًا مَّا بَعُوضَةً فَمَا فَوْقَهَا فَأَمَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ فَيَعْلَمُونَ أَنَّهُ ٱلْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ وَأَمَّا ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ فَيَقُولُونَ مَاذَآ أَرَادَ ٱللَّهُ بِهَٰذَا مَثَلًا يُضِلُّ بِهِۦ كَثِيرًا وَيَهْدِى بِهِۦ كَثِيرًا وَمَا يُضِلُّ بِهِۦٓ إِلَّا ٱلْفَٰسِقِينَ
    অর্থঃ আল্লাহ পাক নিঃসন্দেহে মশা বা তদুর্ধ্ব বস্তু দ্বারা উপমা পেশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। বস্তুতঃ যারা মুমিন তারা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করে যে, তাদের পালনকর্তা কর্তৃক উপস্থাপিত এ উপমা সম্পূর্ণ নির্ভূল ও সঠিক। আর যারা কাফের তারা বলে, এরূপ উপমা উপস্থাপনে আল্লাহর মতলবই বা কি ছিল। এ দ্বারা আল্লাহ তা’আলা অনেককে বিপথগামী করেন, আবার অনেককে সঠিক পথও প্রদর্শন করেন। তিনি অনুরূপ উপমা দ্বারা অসৎ ব্যক্তিবর্গ ভিন্ন কাকেও বিপথগামী করেন না।

  • #2
    মুহতারাম ভাই,আপনি সময় পেলে নিয়মিত লিখবেন ইনশাআল্লাহ।আপনার লোখার অপেক্ষায় থাকি।
    সুন্দর একটা বিষয় তুলে ধরেছেন।আর এ বিষয়টা বাস্তবায়ন করতে গেলে প্রয়োজন মনোযোগীভাবে উদ্ভাবনী দৃষ্টি নিয়ে সীরাত পাঠ করা।আল্লাহ আমাদেরকে তাওফিক দান করুন।

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ, উপকারী কথা। উত্তম চিন্তা-ভাবনা। বারাকাল্লাহু ফিক।
      এতে চিন্তাশীলদের জন্য চিন্তার খোরাক রয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।
      “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

      Comment


      • #4
        মাশা আল্লাহ ভাই।
        আল্লাহ সুবঃ ইলমের দীর্ঘতা আরো বাড়িয়ে দিক।আমীন

        Comment


        • #5
          সালমান রুমি ভাইয়ের লেখাটার উপর কিছু সংযোজন করছি।
          উপস্হাপনা অনেক বড় একটা বিষয়।সহজ,হৃদয়গ্রাহী,মনোযোগ আকর্ষণকারী উপস্হাপনা দায়ীর সাফল্যের সম্ভাবনাকে আরো বাড়িয়ে দেয়।একজন সৃজনশীল দায়ী সুন্নাহর আলোকে নতুন নতুন উত্তম উপস্হাপন পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।

          আমার খুবই ভালো লাগে-ডা.ইয়াদ আল কুনাইবি হাফিজাহুল্লার কাজগুলো।শায়খ নিত্যনতুন চমৎকার সব উদ্ভাবনী পদক্ষেপ নিয়ে তাওহিদের বার্তাকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।এই রমাদানেও দেখলাম শায়খ নতুন সিরিজ করেছেন-কুরআনুল কারীম নিয়ে ধারাবাহিক কুইজ প্রতিযোগিতা-"মুসাবাকাতু তিবইয়ানান লি কুল্লি শাইই।"

          এটার মধ্য দিয়ে তিনি ইসলামী মূল্যবোধ খুব আকর্ষণীয় পন্হায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন।শায়খের এটাই প্রথম না,অসংখ্য উদ্ভাবনী চিন্তাসম্পন্ন এপিসোডগুলোর আলোচ্য বিষয়, ভাষা, এবং উপস্হাপনা দায়ীদের জন্য উত্তম খোরাক।

          একবার মিম্বারুত তাওহিদ ওয়াল জিহাদে লুইস আতিয়্যাতুল্লাহ হাফিজাহুল্লার একটা প্রবন্ধ পড়েছিলাম-যেখানে শায়খ নাসির আল ফাহাদ ফাক্কাল্লাহু আসরাহুর একটি প্রোগ্রামের ভূয়সী প্রসংশা করেছেন তিনি।

          এখন সংগ্রহে নাই,তাই সরাসরি উদ্ধৃতি দিতে পারছিনা-যতটুকু মনে পড়ে-শায়খ নাসির আল ফাহাদ একটা প্রোগ্রামের মাধ্যমে হাস্য-রসিকতা করে বিভিন্ন মাসআলা পরিষ্কার করতেন।যেমন-ও আচ্ছা!!এতদিনে জানতে পারলাম যে কুফরের যত প্রতিবন্ধকতা আছে-তার মধ্যে সবচে বড় হল রাষ্ট্রনায়ক হয়ে যাওয়া।আপনি রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে যেতে পারলে-(আপনি যতই কুফরী করেন) কোন কুফরীর কি সাধ্য আছে আপনাকে স্পর্শ করবে??

          তো যাই হোক-সহজে বোঝানোর জন্য উদ্ভাবনী উপস্হাপনা প্রসংশনীয়।
          তবে এ ক্ষেত্রে কয়েকটা বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরী।শব্দচয়নে খুবই সতর্কতা কাম্য।

          আরো একটা বিষয়ে সতর্কতা কাম্য- বাতিলপন্হী যাদের কুতর্ক করার অভ্যাস আছে তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তর্কে জেতার জন্য মূল বিষয় থেকে মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করে।শব্দচয়নে কোনো অসতর্কতা হলে-সেটা ফলাও করে প্রচার করবে।কথাকে কাটছাট করে বিকৃত করে উপস্হাপন করবে।লজিক্যাল ফ্যালাসি বাতিলপন্হীদের একটা ফ্যাশন হয়ে দাড়িয়েছে।কারণ তাদের তো দলীলের কোনো পুজি নাই।

          শায়খ ইসমাইল শহীদ রহঃ এর মত আশেকে রাসুলকে আহমদ রেজা খান বেরলভী কাফের বলে প্রচার করেছে " তাকবিয়াতুল ইমান" কিতাবের একটি ইবারত ব্যাবহার করে।
          তো,সালমান রুমি ভাই যে উপস্হাপনা পদ্ধতির কথা বলেছেন-মাশাআল্লাহ উত্তম উদ্ভাবনী চিন্তা।কিন্তু প্রয়োগের ক্ষেত্রগুলো খেয়াল করে বুঝে উত্তম শব্দচয়ন জরুরী।সেটা সম্ভব না হলে বা অপপ্রচার সফল হওয়ার আশংকা থাকলে-স্বাভাবিক শৈলী গ্রহণ করাই বাঞ্চনীয়।

          Comment


          • #6
            মাশা'আল্লাহ! 'সালমান রুমী ও উবাদা ইবনুস সামিত' ভাইদের লেখাগুলো পড়ে খুবই উপকৃত হলাম। আল্লাহ ভাইদের কাজকে কবুল করুন,আমীন।
            বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
            কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

            Comment

            Working...
            X