Announcement

Collapse
No announcement yet.

কল্যাণ আছে কোন কাজে? by হুজাইফা

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কল্যাণ আছে কোন কাজে? by হুজাইফা

    PDF Download Links

    https://archive.org/details/KollanAcheKonKaje
    http://www.mediafire.com/file/21cc4s..._kaje.pdf/file
    https://sabercathost.com/9w16/kollan_ache_kon_kaje.pdf


    بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

    কল্যাণ আছে কোন কাজে ?


    সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি মানব জাতির জন্য পথ প্রদর্শক কিতাবের ব্যবস্থা করেছেন। স্বলাত ও সালাম বর্ষিত হোক এই উম্মতের শিক্ষক, আল্লাহর বান্দা ও তার রসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি। ইসলামের প্রথম *যুগ থেকে এখন পর্যন্ত যত ঈমানদার ভাই ও বোন কষ্ট সহ্য করে হলেও কল্যাণের পথকে বেছে নিয়েছেন আল্লাহ তাদের কৃতকর্মের ত্রুটি বিচ্যুতিকে ক্ষমা করে দিন এবং তদের মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে দিন, আর আমাদেরকেও কল্যাণের পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমীন।

    আমরা কোন কাজে ক্ষতিগ্রস্ত হলে পরে চিন্তা করি কোনটি করা উচিত ছিল। আর যারা বারবার ক্ষতির সম্মুখীন হয় তারা কল্যাণের পথ কোনটি তা জানতে চায় এবং সে পথে চলতে চায়, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তার পক্ষ থেকে দেয়া পথপ্রদর্শক কিতাবে ভাল- মন্দ স্পষ্ট বিবৃত করেছেন। তাই ভালটা গ্রহণ করা উচিত আর মন্দটা পরিত্যাগ করা জরুরী।

    আদম সন্তানের প্রতি দয়ালু মহাজ্ঞানী আল্লাহ বলেন,
    وَلْتَكُنْ مِنْكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ [٣:١٠٤]
    আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা কল্যাণের দিকে আহবান করবে এবং ভাল কাজের আদেশ করবে ও মন্দ কাজে নিষেধ করবে, আর তারাই হলো সফলকাম। (সূরা আলে ইমরান ৩:১০৪)

    এ আয়াতের আলোকে ঈমানদারদের মধ্যে একটি দল থাকা প্রয়োজন যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে আহবান করবে, যারা ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ করবে। আর কল্যাণের দিকে আহবানকারী, ভাল কজের নির্দেশদাতা ও মন্দ কাজে নিষেধকারীরাই সফলকাম হবে।
    কল্যাণের দিকে আহবানকারীদের জন্য সুখবর সুনিশ্চিত এটা মহান আল্লাহর দেয়া কিতাব থেকে স্পষ্ট এখন প্রশ্ন হচ্ছে কল্যাণ আছে কোন কাজে? আসুন জেনে নেই কল্যাণ আছে কোন কাজে-
    মহাজ্ঞানী আল্লাহ সূরা হজ্জে বলেন-

    ذَٰلِكَ وَمَنْ يُعَظِّمْ حُرُمَاتِ اللَّهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَهُ عِنْدَ رَبِّهِ ۗ
    এটাই বিধান। আর কেউ আল্লাহর নিষিদ্ধ বিধানাবলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে পালনকর্তার নিকট তা তার জন্যে উত্তম। (সূরা হজ্জ ২২:৩০)

    সাইয়েদ কুতুব শহীদ তার রচিত ‘তাফসীর ফী যিলালিল কুরআন’ এ এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, বস্তুত আল্লাহর নিষিদ্ধ জিনিসগুলোর সম্মান করার অর্থ এই যে, তার নিষিদ্ধতা লংঘন করা যাবেনা। এটা আল্লাহর কাছে উত্তম কাজ। এটা সাধরণ বিবেক ও অনুভূতির কাছে এবং বাস্তবতার *দৃষ্টিতেও উত্তম। যে মানুষের বিবেক নিষিদ্ধ জিনিসগুলোকে এড়িয়ে চলে, সে পবিত্রতাকামী বিবেকবান মানুষ। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর নিষিদ্ধ জিনিসকে মেনে চলে তাকেই মানব সমাজ নিরাপদ, ঝুঁকিহীন ও অনাগ্রাসী ব্যক্তি মনে করে। এধরনের লোকরা যেখানে কর্তৃত্ব চালায় সেটা হয়ে থকে শান্তি, নিরাপত্তাপূর্ণ স্থান। (তাফসীর ফী যিলালিল কুরআন, আল কোরআন একাডেমী লন্ডন কতৃক বাংলায় প্রকাশীত ১১তম সংস্করণ, পৃষ্ঠাঃ ২২৩,২২৪)

    আল্লাহর পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকার মধ্যে কল্যাণ নিহিত, তা একই সাথে জাগতিক ও পরকালীন। উদাহরণ স্বরূপ-

    (ক) শুয়োরের মাংস মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর এবং এটি ফিতা কৃমির জীবানু বহন করে এবং আরো ক্ষতিকারক দিক আছে। বৈজ্ঞানিকভাবেও এটি ক্ষতিকারক প্রমানিত। আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী এটি হারাম।

    আল্লাহর নিষিদ্ধ বিধানাবলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক কেউ এর থেকে বিরত থাকলে সেই ব্যক্তি যেমন শুয়োরের মাংসের জাগতিক অনিষ্টতা থেকে বেঁচে গেল তেমনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তার নিষিদ্ধতা লংঘন না করলে এর বিনিময় আল্লাহ তাকে পরকালে দান করবেন।
    (খ) তেমনি মদ, বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুযায়ী মদ পান করলে মানুষের পাকস্থলীর কার্যকরী ক্ষমতা কমে যায় দীর্ঘকাল পান করার ফলে তা যকৃত পচনের কারন হয়। আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী এটি হারাম।
    সুতরাং কেউ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তার পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ এই জিনিস থেকে বিরত থাকলে সে একই সাথে জাগতিক ও পরকালীন উভয়ক্ষেত্রে কল্যাণ প্রাপ্ত হবে।
    (গ) পানির পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলা বা তাতে ফুঁ দেয়া নিষেধ-
    ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্নিত। তিনি বলেন,
    রসূলুল্লহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পানির পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলতে অথবা তাতে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। (হাসান সহীহ, সুনান আবূ দাঊদ, প্রকাশনাঃ আল্লামা আলবানী একাডেমী, হাঃ ৩৭২৮)
    রসূলুল্লহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের খেয়াল খুসির অনুসরণ করেন না সুতরাং ওহীর বিধান অনুযায়ী এটা নিষেধ। আর এ কালের আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুযায়ী মানব নিঃশ্বাস দুষিত বাতাস বহন করে।
    সুতরাং আল্লাহর পক্ষথেকে যে জীবন বিধান দেয়া আছে এতে যা যা নিষিদ্ধ তা থেকে বিরত থাকার মাঝেই কল্যাণ সেটা হোক না সামাজিক আচার আচরণগত, পানাহার, ব্যবসা বানিজ্য, জৈবিক কার্যাবলী এক কথায় আমাদের জীবনের সর্বস্তরে যা যা নিষেধ করা আছে তা থেকে বিরত থাকার মাঝেই কল্যাণ।
    এসব বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রকাশ পাওয়ার বহু পূর্বেই আল্লাহ মানুষের জন্য এসব হারাম ঘোষণা করেছেন, এরকম আরও অনেক বিষয় আছে যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা হারাম ঘোষণা করেছেন, আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়াবলী থেকে বিরত থাকার মাঝেই কল্যান। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়াবলী থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আমরা ইহকালে ও পরকালে উভয়কালেই কল্যাণ পেতে পারি তবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তার বিধান পালন করতে হবে, জাগতিক ফায়দাকে এখানে লক্ষ্য উদ্দেশ্য বানানো যাবে না, কেউ সারাদিন না খেয়ে থাকলে তার সিয়াম (রোজা) হবে না। তা অবশ্যই আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হতে হবে। অন্যথায় উত্তম বিনিময় মিলবে না। কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য ছাড়া তার জীবনটাও যদি দিয়ে দেয় তবুও তার উত্তম বিনিময় ‘ন্যায় বিচারক আল্লাহ’ দিব্নেনা আর সামান্য ক্ষুধার্থ থাকা বা কোন জিনিস থেকে বিরত থাকার বিনিময় তো দূরের কথা।
    দ্বীন পালন কারতে হবে এক মাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অংশিদার মুক্তভাবে আর তার পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ বিষয়গুলো থেকে অবশ্যই বিরত থাকাতে হবে এর মাঝেই কল্যাণ।

    সূরা সফ্ফ এ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরও বলেন-

    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَىٰ تِجَارَةٍ تُنْجِيكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ [٦١:١٠
    হে মুমিনগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিবো, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?
    تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ [٦١:١١]
    তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা জিহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্যে কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে। (সূরা সফ্ফ ৬১:১০,১১)

    এ আয়াতদুটি থেকে স্পষ্ট যে আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি ঈমান এবং জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার মাঝে কল্যাণ নিহিত, যদি তোমরা জানতে এ কথা বলার মাধ্যমে মহান আল্লাহ এ বিষয়ে আরও উৎসাহিত করেছেন।


    সূরা তাওবায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরও বলেন-

    انْفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ [٩:٤١]
    তোমরা বের হয়ে পড় স্বল্প বা প্রচুর সরঞ্জামের সাথে এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে, এটাই তোমাদের জন্যে কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে। (সূরা তাওবাহ ৯:৪১)

    এ আয়াতে মহাদাতা আল্লাহ জানিয়েছেন, সরঞ্জাম হালকা হোক আর প্রচুর হোক মাল ও জান দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার মাঝেই কল্যাণ নিহিত। এখানে লক্ষণীয় বিষয় যে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’য় এতো অধিক কল্যাণ নিহিত যে তাতে বের হওয়াটাই কল্যানকর এতে সরঞ্জাম যে পরিমানই থাকনা কেন, এমনকি সম্পদ ও *জীবনের চেয়েও।

    দুনিয়ার জীবনে সম্পদের গুরুত্ব অনেক, আর জীবনের গুরুত্ব তার থেকে বেশী কিন্তু জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’য় অংশগ্রহণকারী মুজাহিদীনদেরকে আল্লাহ যে পুরস্কার দান করবেন তা দুনিয়ার সম্পদ ও জীবনের চেয়েও উত্তম ও কল্যাণকর। আসুন জিহাদ ফি সাবিল্লিাহ’য় অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে প্রতিযোগিতা করি জান্নাত পাওয়ার প্রতিযোগিতা ও মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের প্রতিযোগিতা যা তিনি জান্নাতিদেরকে দান করবেন।

    সূরা নাহলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরও বলেন-
    وَلَا تَشْتَرُوا بِعَهْدِ اللَّهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۚ إِنَّمَا عِنْدَ اللَّهِ هُوَ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ [١٦:٩٥]
    তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করো না; আল্লাহর কাছে যা আছে সেটাই তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা জানতে।
    (সূরা নাহল ১৬:৯৬)
    বান্দার উচিত আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করা, আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার পূর্ণ করার মাঝেই কল্যাণ নিহিত।

    ঈমানদারদের উচিত মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকা, জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা ও আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করা কল্যাণ এর মধ্যেই নিহিত।
    আল্লাহ আমাদের সকলকে তার পক্ষ থেকে দেয়া হিদায়াত গ্রন্থ অনুসারে আমল করার তাওফিক দান করুন এবং আমাদেরকে তারপক্ষ থেকে কল্যাণ দান করুন। আমীন............
    হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও প্রার্থনা শ্রবণকারী।
    দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর বান্দা ও তার রসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি। আল্লাহ তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করুন। আমীন............
    সমস্ত প্রশংসা অংশিদারমুক্ত এক আল্লাহ’র জন্য, আমি সাক্ষ্য *দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন কল্যাণ ও অকল্যান দাতা নেই তার কাছেই আমি তাওবাহ ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

    রচনায়: হুজাইফা
    পরিবেশনায়: saifullah media
Working...
X